হারাম শব্দের অর্থ কি: হারাম শব্দের অর্থ মন্দ, নিষিদ্ধ, অসংগত, অপবিত্র, অনুচিত, বর্জনীয় এবং পরিত্যাজ্য।
হারামের সংজ্ঞা: ইসলামী শরীয়তের পরিভাষায় যে সকল কাজ বা বস্তু কুরআন ও সুন্নাহর দ্বারা স্পষ্ট নির্দেশ অনুযায়ী অবশ্য পরিত্যাজ্য, বর্জনীয় ও নিষিদ্ধ তাকে হারাম বলা হয়।
ইসলামী শরীয়তে এমন অনেকগুলো কাজ রয়েছে যেগুলো করতে গিয়ে আমাদেরকে বাধা প্রদান করা হয়েছে। আর বাধা প্রদান করার ক্ষেত্রে মূল কারণ হলো এই কাজগুলো অবশ্যই মন্দ এবং পরিবেশের মধ্যে বা পরিবারে অশান্তির সৃষ্টি করে থাকে।
যেসকল কাজ মহান আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (স.) স্পষ্টভাবে নিষেধ বা বাধা দিয়েছেন সে সমস্ত কাজ বা বস্তুকে হারাম বলে।
অর্থাৎ ইসলামের শরীয়তের বিধান অনুযায়ী যে সকল কাজ মন্দ বলে আখ্যায়িত করে বিরত থাকার কথা বলা হয়েছে সেগুলো হচ্ছে হারাম। আর অবশ্যই একজন ইসলাম ধর্মের অনুসারে ব্যক্তি হয় আপনাকে আমাকে এই সকল হারাম কাজ হতে বা খাদ্য হতে নিজেকে রক্ষা করতে হবে।
আবার হাদিস থেকে পাওয়া যায় কোন ব্যক্তির মাঝে যদি সামান্য হারামের টুকরা থাকে তাহলে সেই ব্যক্তি জাহান্নামী হবে।
অর্থাৎ অত্যাধিক হারে নয় বরং সামান্য হারাম অন্তরের ভিতর বা শরীরের ভিতর প্রবেশ করলে আমাদের জন্য জাহান্নাম অবধারিত হতে পারে।
হারাম কত প্রকার ও কি কি
সকল হারাম শব্দের অর্থ যে খারাপ বা মন্দ হবে এমনটি না বরং এমন কিছু হারাম শব্দ আছে যেগুলো দ্বারা ভালো কিছু কে বোঝানো হয়। আর এই সকল বিষয়ের উপর ভিত্তি করে হারামকে কয়েকটি ভাগে বিভক্ত করা হয়েছে এবং উপস্থাপন করা হয়েছে।
আপনি যদি হারাম শব্দের অর্থ কি সম্পর্কে সম্পূর্ণ জ্ঞান অর্জন করতে চান তাহলে অবশ্যই এর প্রকারভেদ গুলো সম্পর্কে জানতে হবে।
আর হারামের প্রকারভেদ গুলো জানার মাধ্যমে কন্ঠে আমাদের জন্য ভালো এবং কোনটি আমাদের জন্য মন্দ হবে তার বিবেচনা করতে পারব।
হারামকে প্রধানত দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে, এগুলো হলো:
- মসজিদুল হারাম
- অপবিত্র হারাম
মসজিদুল হারাম: মসজিদুল হারাম বলতে এখানে পবিত্রতাকে উল্লেখ করা হয়েছে এবং মসজিদে কোন খারাপ কাজ করা যাবে না তা উল্লেখ রয়েছে।
এক অর্থে বা এই অর্থে মসজিদুল হারাম বা হারাম শব্দটি পবিত্র হিসেবে ঘোষিত হয়েছে।
অপবিত্র হারাম: অপবিত্র হারাম বলতে সে সমস্ত হারামকে বোঝানো হয়েছে যেগুলো আল্লাহ তা’আলা ও তাঁর রাসূল (স.) সরাসরি নিষিদ্ধ বলে ব্যাখ্যা প্রদান করেছেন। হারামের এই অর্থ দ্বারা অপবিত্র ও পরিত্যাজ্য বলা হয়েছে।
এগুলো হলো হারাম শব্দের কিছু প্রকারভেদ এবং সেই সাথে এই শব্দগুলোর বা প্রকারভেদ গুলোর কিছু বর্ণনা। আর এ বর্ণনাগুলো দ্বারা এটি স্পষ্টভাবে বোঝা যায় যে কোন হারাম শব্দটি আমাদের জন্য ভাল এবং কোন হারাম শব্দটি আমাদের জন্য খারাপ।
হারামের সংখ্যা
কোন কোন কাজগুলো করলে আমরা হারাম কাজ করে ফেলতে পারে এর কিছু সংখ্যা রয়েছে। আর অবশ্যই আপনি যদি হারাম থেকে বাঁচতে চান তাহলে আপনাকে মনে রাখতে হবে যে কোন কাজগুলো করার মাধ্যমে আমরা হারামে লিপ্ত হতে পারি।
নিচে উল্লেখযোগ্য কিছু হারামের সংখ্যা যেগুলো দ্বারা হারাম হয় তা উল্লেখ করা হলো:
- মৃত জীবজন্তু ভক্ষণ করা (ব্যতিক্রম হিসেবে মৃত মাছ খাওয়া হালাল)
- রক্ত পান করা (ব্যতিক্রম হিসেবে হালাল জন্তুর গোস্তে লেগে থাকা রক্ত খাওয়া হালাল)
- মানুষ হয় অন্য মানুষের মাংস ভক্ষণ করা।
- শুকরের ও অন্যান্য শিকারি পাখি যেমন ঈগলের গোশত খাওয়া।
- আল্লাহ ব্যতীত অন্যান্য নামে উৎসর্গকৃত যেকোন হালাল-হারাম পশুর মাংস ভক্ষণ করা।
- নেশা করা বা মদ্যপান করা বা অ্যালকোহল নেওয়া।
- যবেহ না করা, পশুকে অন্য ভাবে হত্যা করে সে প্রচুর মাংস খাওয়া।
- হিংস্র ও শিকারী প্রাণীর মাংস ভক্ষণ করা (যেমন: বাঘ, সিংহ, ভাল্লুক এবং ঈগল)
- বিষাক্ত প্রাণী যেমন: সাপ ও বিচ্ছুর মাংস খাওয়া।
- যে সকল প্রাণী ময়লা আবর্জনা ও অপবিত্র দ্রব্য খেয়ে বেঁচে থাকে তাদের মাংস খাওয়া।
- ঘোড়া, গাধা, খচ্চর, হাতি এবং শুকরের মাংস ভক্ষণ করা।
- সুদ, ঘুষ, জুয়া, চুরি, ডাকতির দ্বারা উপার্জনকৃত অর্থ দ্বারা ভক্ষণ করা।
- তবে যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও ঘুষ দিয়ে কোন কিছু আদায় করা ক্ষতিকর নয়।
- যে সকল পণ্যের ব্যবসা ইসলামে বৈধ সকল ব্যবসার লেনদেন করা, ইত্যাদি।
এগুলো হলো হারামের কিছু সংখ্যা বা হারামের কিছু নাম যেগুলো করলে আমরা হারামের লিপ্ত হতে পারে। আজ যেহেতু ইসলাম অবশ্যই হারাম কাজগুলোকে সম্পূর্ণ নিষেধ করেছেন তাই অবশ্যই আমাদেরকে এই সকল কাজগুলো থেকে নিজেকে বিরত থাকতে হবে।
হারামের ক্ষেত্রে ঘুষ নেওয়া দেওয়ার একটি ব্যাখ্যা রয়েছে যা কিছু কিছু ক্ষেত্রে ভালো বলে আখ্যায়িত হয়। যদি আপনার যোগ্যতা থাকে এবং সবকিছু ঠিক থাকে কিন্তু ঘুষ না দেওয়ার কারণে উপযুক্ত স্থানে পৌঁছাতে পারবেন না বা যেতে পারবেন না।
আপনি যদি ঘুষ দেন এক্ষেত্রে কোন সমস্যা হবে না বা আপনি হারামে লিপ্ত হবেন না কেননা আপনার যোগ্যতা আছে তাই।
আরও পড়ুন: জাজিরাতুল আরব অর্থ কী?