হজ্জ কাকে বলে: আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে জিলহজ মাসের নির্ধারিত দিনে বা দিন সমূহে, নির্ধারিত পদ্ধতি অবলম্বন করে এবং নির্ধারিত স্থানে তাওয়াফ ও যিয়ারত করাকে হজ্জ বলে। আর অবশ্যই হজ্জ আদায়ের জন্য আপনাকে উপযুক্ত সময়ের মধ্যে হজ্জ করার উদ্দেশ্যে গমন করতে হবে এবং সকল বিধান অবলম্বন করতে হবে।
মূল পাঁচটি স্তম্ভের উপর ভিত্তি করে ইসলামের কিছু কাজ রয়েছে, যেখানে ইসলামের পাঁচ নম্বর স্তম্ভের নাম হচ্ছে হজ্জ আদায় করা।
আর অবশ্যই মুসলমান হিসেবে ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভ পরিপূর্ণরূপে সম্পন্ন করার জন্য আমাদেরকে হজ্জ আদায় করতে হবে।
যদি আপনার কাছে পর্যাপ্ত সম্পদ থাকে এবং আপনি হজ্জ আদায় করার জন্য উপযুক্ত হন তাহলে অবশ্যই আপনাকে এই দায়িত্ব পালনে নিয়তি নিতে হবে। আর আপনি যদি পর্যাপ্ত সম্পদের মালিক হওয়া সত্ত্বেও কৃপণতার কারণে হজ্জ আদায় না করেন তাহলে অবশ্যই আপনার পরিণতি ভয়াবহ হবে।
অনেকেই আছে, যারা পর্যাপ্ত সম্পদের মালিক হয়েছে এবং হজ্জ আদায় করেছে কিন্তু সেই হজ্জ তার জন্য কোন লাভ করতে পারেনি।
মূল কারণ হচ্ছে অনেকেই লোক দেখানোর জন্য এবং নিজেকে সমাজের বুকে হাজী দাবি করার জন্য হজ্জ আদায় করে থাকেন তাই।
তাই অবশ্যই এর সকল বিষয়ের উপর গভীর লক্ষ্য রেখে আমাদের কোন কিছু যেন বৃথা না যায় তাই সঠিক নিয়মে সঠিক মানে হজ্জ আদায় করতে হবে। আর অবশ্যই আপনার মনে হজ্জের সময় কোনো প্রকার দ্বিধা থাকা চলবে না, কেননা সামান্য দ্বিধা বা অবিশ্বাস আপনার ক্ষতি সাধন করতে পারে।
আর হজ্জ আদায় করার জন্য আপনাকে আমাকে কিছু বিধান অবলম্বন করতে হবে যার মধ্যে ফরজ ও ওয়াজিব বিধান রয়েছে।
হজ্জের ফরজ ও ওয়াজিব সংখ্যা কয়টি?
হজ্জ সঠিকমত আদায় করার সময় এবং আল্লাহ তায়ালার নিকট সন্তুষ্টি আদায় করার জন্য কিছু ফরজ ও ওয়াজিব অবলম্বন করতে হয়।
এই সকল ফরজ ও ওয়াজিব অবলম্বন করার মাধ্যমে আমাদের হজ্জ আদায় করার বিষয়টি অনেক বেশি গ্রহণযোগ্য ও মজবুত হয়ে ওঠে।
তাই আপনি যেন সঠিক মত হজ্জের সকল ফরজ ও ওয়াজিব সমূহ আদায় করতে পারেন তাই এখানে সেই ফরজ ওয়াজিবগুলো উল্লেখ করবো। যে ফরজ ও ওয়াজিবগুলো অবলম্বন করার মাধ্যমে আপনি খুব সহজেই আপনার হজ্জ গ্রহণযোগ্যতা পর্যন্ত পৌঁছাতে পারেন।
চলুন তাহলে দেখে নেওয়া যাক উল্লেখযোগ্য কিছু হজ্জের ফরজ ও ওয়াজিব বিধান যা নিচে উল্লেখ করা হলো:
হজ্জের ফরজ:
- আনুষ্ঠানিকভাবে হজ্জের নিয়ত করা বা ইহরাম বাধা।
- নয় জিলহজ্জ আরাফাতের ময়দানে নির্দিষ্ট সময় অবস্থান করা।
- ১০ জিলহজ্জ থেকে ১২ জিলহজ্জ পর্যন্ত যে কোন দিন কাবা শরীফ তাওয়াফ বা জিয়ারত করা।
হজ্জের ওয়াজিব:
- নয় জিলহজ্জ দিবাগত রাতে মুজদালিফা নামক স্থানে নির্দিষ্ট সময়ে অবস্থান করা।
- সাফা ও মারওয়া পাহাড়ের মধ্যবর্তী স্থানে সাঈ বা দৌড়ানো।
- ১০-১১ ও ১২ ই জিলহজ্জ পর্যায়ক্রমে মিনায় তিনটি নির্ধারিত স্থানের সাতটি করে কংকর বা পাথর শয়তানের উদ্দেশ্য করে নিক্ষিপ্ত করা।
- হজ্জের অন্যতম একটি ওয়াজিব হলো কুরবানী করা, যদি তা ঐ সময় পড়ে।
- সুন্নত তরিকা অনুযায়ী মাথা কামানো বা চুল কেটে ফেলা।
- মক্কার বাইরে লোকদের জন্য বিদায় তাওয়াফ করা ওয়াজিব।
- ভুল বা স্বেচ্ছায় হজ্জের মাঝে কোন ওয়াজিব বাদ হয়, তাহলে তার কাফফারা হিসেবে একটি অতিরিক্ত কোরবানি দেওয়া বা দম দেওয়া।
এগুলো হলো হজ্জের কিছু ফরজ ও ওয়াজিব বিধান যেগুলো অবলম্বন করে হজ্জ ঠিকমতো আদায় করতে হয়। আর অবশ্যই আমি সর্বদাই বলব যে আপনি এই সকল বিধান অবলম্বন করুন হজ্জ সঠিকমত আল্লাহর নিকট গ্রহণযোগ্যতা প্রাপ্ত হওয়ার জন্য।
শেষ কথা:
হজ্জ কাকে বলে এবং হজ্জ আদায়ের জন্য প্রয়োজনীয় ফরজ ওয়াজিব ইবাদত সমূহ কি কি আদায় করতে হবে তা এখানে উল্লেখ করা হয়েছে। আর অবশ্যই আপনি যদি সঠিক মতো হজ্জ আদায় করতে চান বা পালন করতে চান তাহলে অবশ্যই হজ্জ আদায়ের এই সকল বিষয় জানতে হবে।
কেননা আপনি কোন বিষয় সম্পর্কে অবগত না থাকলে আপনার হজ্জ সঠিক আদায় নাও হতে পারে এবং দুর্বলতা সৃষ্টি হতে পারে।
আর আপনার হজ্জে যদি দুর্বলতা থেকে যায় তাহলে অবশ্যই এটি আপনার জন্য সঠিক মত কোন সাহায্য করতে কম পারবে।
তবে, যদি কারণবশত আপনার কোন ওয়াজিব বাদ হয়ে যায় বা আপনি আদায় না করতে পারেন তাহলে অবশ্যই এর কাফফারা দিতে হবে। আর হজ্জের কাফফারা হিসেবে আপনি আরও একটি কুরবানী দিতে পারেন যা মূল কুরবানীর সাথে আপনি আরো একটি কুরবানী আদায় করতে পারেন।
আর আপনি উল্লেখিত তথ্য অবলম্বন করার মাধ্যমে ফরজ ও ওয়াজিব সম্পর্কে অবগত হয়ে সঠিক মত হজ্জ আদায় করার চেষ্টা করুন।
ধন্যবাদ, আমাদের সাথে শেষ পর্যন্ত সময় কাটিয়ে হজ্জ পালনের বিষয় সম্পর্কে কিছু সাধারণ জ্ঞান উপলব্ধি করার জন্য এবং ধারণ করার জন্য। তবে অবশ্যই আপনি এখন না হোক যখনই হজ্জ আদায় করতে যাবেন তখন এই সকল নিয়ম সঠিক মত বিবেচনা করে হজ্জ পালন করবেন।
আরও পড়ুন: হজ্জ শব্দের অর্থ কি?