হজ্জ শব্দের অর্থ কি: হজ্জ শব্দের অর্থ হলো ইচ্ছা করা, উপস্থিত হওয়া, সংকল্প করা এবং মনোনিবেশ করা ইত্যাদি। প্রায় প্রতি বছর নির্দিষ্ট একটি সময় মানুষ হজ্জ করা উদ্দেশ্যে রওনা হয় এবং মনের মধ্যে যে ইচ্ছে প্রকাশ করে থাকে সে মাধ্যম হচ্ছে হজ্জ।
অর্থাৎ কাবা ঘরে গিয়ে উপস্থিত হওয়ার যে দৃঢ় ইচ্ছা বা পরিকল্পনা রয়েছে সেই পরিকল্পনার নাম হচ্ছে হজ্জ।
আর অবশ্যই মনের মধ্যে সকল ইচ্ছা থাকতে হবে যে আপনি কাবা ঘরে উপস্থিত হওয়ার পর সকল নিয়ম অবলম্বন করবেন হজ্জের।
এই হজ্জ পালন করার জন্য আমাদেরকে আর্থিক এবং দৈহিক উভয় দিক দিয়ে পরিশ্রম করতে হয় হজ পালন করার জন্য। আপনি আমি যদি সঠিক নিয়তে হজ্জ পালন করতে পারে তাহলে অবশ্যই আমাদের জীবনের সকল গুনাহ মাফ হয়ে যেতে পারে জান্নাতি পাথর চুমু খাওয়ার মাধ্যমে।

প্রতি বছর বিভিন্ন দেশ থেকে নির্দিষ্ট একটি সময় হজ্জ পালন করার উদ্দেশ্যে বিভিন্ন ব্যক্তি গমন করে থাকে কাবায়। আর তারপর নির্দিষ্ট নিয়ম অবলম্বন করার মাধ্যমে সকল কিছু সঠিক মত আদায় করার চেষ্টা করে প্রত্যেকটি হজ্জ পালনকারী ব্যাক্তি।
হজ্জ যদি আপনার ওপর ফরজ হয়ে থাকে তাহলে, অবশ্যই আপনাকে কোন বিলম্ব করা যাবে না এবং অতি তাড়াতাড়ি হজ্জ করতে হবে। এর অর্থ এই যে, আপনি যদি সামর্থ্যবান হয়ে থাকেন তাহলে কোন দেরি করার দরকার নেই বরং খুব দ্রুত আপনাকে হজ্জ পালনের উদ্দেশ্যে বের হতে হবে।
আমরা যে হজ্জ আদায় করি বা পালন করে থাকি, সেই হজ্জকে আবার বিভিন্নভাগে ভাগ করা হয়েছে আদায় করার জন্য।
আর এই প্রত্যেকটি হজ্জ আদায় করার ভিন্ন ভিন্ন রকম উপকারিতা, নেকি এবং কল্যাণ রয়েছে যেগুলোর উদ্দেশ্যে মানুষ হজ্জ করে।
হজ্জ কত প্রকার ও কি কি
সময়ের উপর ভিত্তি করে হজ্জের প্রকারভেদ হয় ও আপনি যে সময় হজ করবেন তার উপর ভিত্তি করে হজ্জ উল্লেখ হবে।
কিছু হজ্জ রয়েছে যেগুলো মানুষ নেকি অর্জন করার জন্য করে এবং কিছু হজ্জ নিজের উপর ফরজ হওয়ার কারণে আদায় করে।
আর এই সকল হজ্জ আদায় করার মাধ্যমে একদিকে যেমন নেকি হয় ঠিক অপরদিকে গুনাহ মোচন হয়। অর্থাৎ আপনি যদি নিয়ত করে থাকেন হজ্জ করার তাহলে এই নিয়ত করার মাধ্যমে আপনি আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করতে পারবেন এবং অবশ্যই আপনাকে নিয়ত পূরণ করার চেষ্টা করতে হবে।
হজ্জ প্রধানত তিন প্রকার, এই তিন প্রকার হজ্জ হলো:
- হজ্জে ইফরাদ: এই হজ্জে শুধু হজ্জে হবে কোন ধরনের কুরবানী এবং ওমরাহ হবে না।
- হজ্জে তামাত্তু: এই হচ্ছে প্রথমে ওমরাহ করে হালাল হতে হবে এবং পুনরায় যখন হজ হবে তখন সেই হজ্জ আদায় করবেন।
- হজ্জে কেরান: এই হজ্জ করার সময় ওমরাহ এবং হজ্জ উভয়ের নিয়ত একসঙ্গে করতে হবে।
এগুলো হলো হজ্জের কিছু প্রকারভেদ এবং এই প্রকারভেদ গুলো সম্পূর্ণরূপে সময়ের উপর ভিত্তি করে ভাগ করা হয়েছে। অর্থাৎ আপনি কোন সময় হজ্জ করতে যাবেন এবং সেই সময়ের উপর ভিত্তি করে হজ্জের মান ও বৈশিষ্ট্য নির্ধারিত হবে।
আর হজ্জের এই সকল প্রকারভেদের উপর নিয়তের পরিবর্তন হয় অর্থাৎ আপনি যে হজ করবেন সে হজ্জের উপর নিয়ত করতে হবে।
যেহেতু হজ্জের মধ্যে পার্থক্য বা ভেদাভেদে রয়েছে তাই অবশ্যই আপনার হজ আদায়ের জন্য আপনার নিয়ত ঠিক করে নিতে হবে।
হজ্জের পরিচয়
আমরা যদি হজ কাকে বলে এ বিষয়ে জানি এবং এর পরিচয় সম্পর্কে জানতে না পারে তাহলে অবশ্যই এটি কেমন দেখায়। তাই অবশ্যই আপনাকে আমাকে হজের পর্যায় সম্পর্কে জানতে হবে যেন আমরা সম্পূর্ণ তথ্য পেতে পারে হজ পালনের উপর।
আর হজ বিষয়ে বা হজ্জের পরিচয় জানার মাধ্যমে আমরা ইসলামে এর গুরুত্ব কতটুকু রয়েছে সে সম্পর্কে ধারণা পেতে পারি।
আর আপনি যখন হজের গুরুত্ব সম্পর্কে জানতে পারবেন তখন অবশ্যই সামর্থ্য অর্জন করার মাধ্যমে হজ পালন করার নিয়ত করতে পারবেন।
আপনার জ্ঞান বৃদ্ধি করার উদ্দেশ্যে হজ্জের পরিচয় নিচে উল্লেখ করা হলো:
- ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভ বা ভিত্তির মধ্যে হজ্জ হচ্ছে পঞ্চম তম।
- হজ্জ হচ্ছে আর্থিক এবং দৈহিক উভয় ব্যয় করার মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি আদায়ের একটি ইবাদত।
- হজ্জ হচ্ছে একটি আরবি শব্দ, এর আভিধানিক অর্থ হলো সংকল্প বা ইচ্ছা করা।
- হজ্জ হচ্ছে এমন একটি ইবাদত যা পালন করার জন্য হিজরত, জিয়ারত ও তাওয়াফ করতে হয়।
- হজ্জ সকলের উপর ফরজ নয় বরং ঐ সমস্ত ধনীদের উপর ফরজ যারা পবিত্র মক্কায় যাতায়াত করতে সক্ষম।
- হজ্জ ওই সমস্ত ধনী ব্যক্তিদের উপর ফরজ যারা আর্থিক ও দৈহিক সামর্থ দ্বারা হজ্জ আদায় করতে পারবে।
এগুলো হলো হজের কিছু পরিচয় এবং এ পরিচয় গুলোর মাধ্যমে এটি বোঝা যায় যে ইসলামে হজের গুরুত্ব ও ফজিলত কতটুকু। আর অবশ্যই যেহেতু হজ আদায়ের মাধ্যমে আমাদের গুনাহ মোচন করা সম্ভব হয় সেহেতু অবশ্যই আমাদেরকে হজ্জ আদায় করার চেষ্টা করতে হবে।
ধন্যবাদ, হজ্জ শব্দের অর্থ কি এবং কত প্রকার ও কি কি এ বিষয়ের উপর উল্লেখিত তথ্য জানার জন্য শুভ বিদায়।
আরও পড়ুন: যাকাত কাকে বলে?