সুশাসন কি: দেশের মধ্যে নির্ভুল, দক্ষ এবং কার্যকরী শাসন হচ্ছে সুশাসন। যে শাসন ব্যবস্থায় জবাবদিহিতা, স্বচ্ছতা, বৈধতা, স্বাধীন বিচার বিভাগ, বাক স্বাধীনতা, কার্যকর সংসদ, আইনি শাসন এবং সাম্য বিদ্যমান থাকে সেই শাসন হচ্ছে সুশাসন।
এই সুশাসন শব্দটির বা সুশাসন কথাটির সংজ্ঞা হচ্ছে বহুমাত্রিক এবং এই সুশাসন বিষয়টি বেশ কিছু বিষয়কে বুঝায়। এই সুশাসন বিষয়টি নিয়ে আরো কিছু সংজ্ঞা রয়েছে যেগুলো আমরা এখন জানবো।
ম্যাককরনী, হ্যালফ্যানি এবং রড্রিগেজ বলেছেন যে, রাষ্ট্রের সাথে সুশীল সমাজের, জনগণের সাথে শাসিত সরকারের, শাসকের শাসিতের সুসম্পর্কই হচ্ছে সুশাসন। এককথায় এখানে বুঝিয়েছেন যে জনগণের সাথে সরকারের সুসম্পর্ক থাকলে এবং জনগণ তাদের ন্যায্য অধিকার পেলে সেই শাসন হবে সুশাসন।
অনুন্নত এবং উন্নয়নশীল দেশগুলোর দিক থেকে বিবেচনা করে বিশ্বব্যাংক সুশাসন সম্পর্কে একটি সুন্দর সংজ্ঞা প্রদান করেছেন।
বিশ্ব ব্যাংকের মতে সুশাসন হচ্ছে এমন একটি প্রক্রিয়া যেখানে উন্নয়নের লক্ষ্যে একটি দেশের অর্ধনৈতিক এবং সামাজিক সম্পদের ব্যবস্থাপনার জন্য ক্ষমতা প্রয়োগ করা হয়।
এই সুশাসন হচ্ছে অংশগ্রহণমূলক দায়িত্বশীল, স্বচ্ছ এবং মেয়ে সঙ্গত ব্যবস্থার নাম যা আইনের শাসনকে নিশ্চিত করে থাকে।
আর এই সুশাসন বিষয়টিকে দেশের সরকারের উচ্চতর একটি দক্ষতা হিসেবে বিবেচনা করা হয়ে থাকে।
একটি দেশের উন্নয়নের জন্য, একটি দেশের মধ্যে সুশান্তি এবং সুখ ফিরিয়ে নিয়ে আসার জন্য অবশ্যই সুশাসন জরুরী।
কোন দেশের মধ্যে যদি সুশাসন ব্যবস্থা সঠিকভাবে পরিচালিত থাকে তাহলে সে দেশের দুর্নীতি হবে না।
আর দুর্নীতি হচ্ছে কোন দেশের উন্নয়নের জন্য সবচেয়ে বড় বাধা এবং সবচেয়ে বড় হুমকি যা সুশাসনের মাধ্যমে দূর হবে। আর আমাদের বাংলাদেশও এই দুর্নীতির কবল থেকে রেহাই পেতে পারেনি আমাদের প্রয়োজন দুর্নীতিমুক্ত দেশ।
দুর্নীতি মুক্ত দেশ গঠনের জন্য অবশ্যই অবশ্যই সুশাসন জরুরী এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর আইন জারি করা জরুরী।
আমাদের দেশের মধ্যে যদিও কিছুটা সুশাসন প্রতিষ্ঠিত আছে এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর আইন পরিচালিত হয়েছে।
সুশাসন কাকে বলে?
সরকারের জবাবদিহিতা, স্বচ্ছতা ও জনগণের অংশগ্রহণের ভিত্তিতে শাসন কার্য পরিচালনা করাকে সুশাসন বলে। সুশাসনের জন্য সবচেয়ে বড় এবং সবচেয়ে বেশি যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে তা হলো দেশের সরকার।
শুধু সরকার এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে তা নয় দেশের বিচার বিভাগ এবং সাধারণ মানুষের সুশাসন সম্পর্কে দায়িত্ব রয়েছে।
সর্বক্ষেত্রে সবদিক দিয়ে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা এবং দুর্নীতিমুক্ত দেশ ও সমাজ গড়া আমাদের সকলের দায়িত্ব ও কর্তব্য।
সাধারণভাবে বলা যায় যে, সুশাসন বলতে রাষ্ট্রের সাথে সুশীল সমাজের, সরকারের সাথে শাসিত জনগণের, শাসকের সাথে শাসিতের সম্পর্ক।
আর অবশ্যই অবশ্যই রাষ্ট্র পরিচালনায় শাসন ব্যবস্থা হচ্ছে একটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য রাষ্ট্রের সকল নির্বাহী কর্মকর্তা এবং কর্মচারীগণ শাসনকার্য পরিচালনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য সরকারি কর্মচারী এবং কর্মকর্তা গ্রহণ যদি তাদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করে তাহলে দ্রুত সুশাসন প্রতিষ্ঠা হওয়া সম্ভব।
একটি রাষ্ট্রের সকল কার্যক্রম যখন সুন্দর সুষ্ঠু এবং নিয়ম-শৃঙ্খলা মাকে পরিচালিত হয় তখন সুশাসন প্রতিষ্ঠার দিকে দেশ এগিয়ে যায়।
আর গৃহীত নীতিমালা, কর্মকাণ্ড, পরিকল্পনা প্রণয়ন, আয়-ব্যায় ভালো হলে সুশাসন আরো একধাপ এগিয়ে যায়।
সর্বশেষ বিচার ব্যবস্থা সহ সকল জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও জনগণের অবগতি, প্রবেশ অধিকার এবং অংশগ্রহণ নিশ্চিত হলে সুশাসন নিশ্চিত হয়। এই কথাটি নিশ্চিত ভাবে বুঝা যাচ্ছে যে জনগণের অংশ গ্রহণের মাধ্যমে সুশাসন নিশ্চিত হবে।
যদি কোন দেশের মধ্যে সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হয় এবং সেই সাথে জনগণের অংশগ্রহণ না থাকে তাহলে সেটি সুশাসন হবে না।
সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য অবশ্যই জনগণের স্বার্থ জনগণের উন্নয়ন এবং দেশের উন্নয়ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
কোন দেশের জনগণ যদি সুশাসন ব্যবস্থার সাথে জড়িত হয় এবং তাদের প্রবেশ অধিকার এবং অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা যায় তাহলে সে দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হবে। দেশের মধ্যে সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য অবশ্যই অবশ্যই চাই সঠিক পরিকল্পনা এবং সঠিক বিচার ব্যবস্থা।
আর সুশাসন কি থেকে শুরু করে এতক্ষণ পর্যন্ত যা জানলাম তা থেকে সুশাসন সম্পর্কে সংজ্ঞা হিসেবে বলা যায়।
দেশের মধ্যে স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতার মাধ্যমে যে শাসন ব্যবস্থা পরিচালিত হয় তার নাম সুশাসন।
সুশাসন বলতে কী বোঝায়?
সুশাসন বলতে বোঝানো হয় এমন শাসনব্যবস্থাকে যার মাধ্যমে আইনের শাসন, জবাবদিহিতা এবং স্বচ্ছতা ঠিক থাকে। আর সেই সাথে সম্পূর্ণ বিচার বিভাগের স্বাধীনতা এবং জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত থাকে।
এই সুশাসন কি: সুশাসন হচ্ছে এমন একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে ক্ষমতা সুষ্ঠু চর্চা এবং ক্ষমতার সুষ্ঠু ব্যবহার করা হয়।
এই শাসন প্রক্রিয়ার মধ্যে স্বাধীনভাবে জনগণ অংশগ্রহণ করতে পারে তারা সরকারি নীতি ও কর্মকান্ডের সঙ্গে অবগত হতে পারে।
আর এইসবের পাশাপাশি নারী-পুরুষ অর্থাৎ জনগণ তাদের স্বাধীনভাবে মতামত প্রদান করতে পারে।
সুশাসনের মাধ্যমেই জনগণের মানবিক অধিকার নিশ্চিত হয় এবং এর মাধ্যমেই জনগণের অধিকার নিশ্চিত হতে পারে।
জনগণের সন্তুষ্টি এবং দেশের সার্বিক উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন এই সকল বিষয়ে সুশাসনের মানদন্ড হিসেবে বিবেচিত। উন্নত বিশ্বের সাথে তাল মিলাতে এবং দেশকে উন্নত করতে সুশাসনের কোন বিকল্প নেই।
সুশাসনের ভিত্তি হচ্ছে রাষ্ট্রের কর্মকাণ্ডে ধর্ম, বর্ণ, গোত্র, নারী পুরুষ, সকল নাগরিকের সমান অধিকার এবং উন্নয়ন নিশ্চিত করা।
আর রাষ্ট্রের সার্বিক উন্নয়নের জন্য নাগরিক এবং তাদের দ্বারা পরিচালিত উন্নয়ন কার্যক্রমকে গতিশীল করা।
সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য অবশ্যই রাষ্ট্রের মধ্যে একটি স্বচ্ছ আইন থাকতে হবে আর এই আইন প্রত্যেকের জন্য সমান ভাবে প্রয়োজন হবে।
সরকার থেকে শুরু করে গরিব মানুষ প্রত্যেকের জন্যই এই আইন সমান এবং আইন ভঙ্গের শাস্তি সমান।
আর এই আইনের শাসনকে সঠিকভাবে পরিচালিত করতে হবে এবং সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে।
সকল অন্যায় ও অনৈতিক বিষয়কে আইনের আওতায় আনতে হবে এবং আইনের মাধ্যমে এগুলো সমাধান করতে হবে।
এই সুশাসন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে অবশ্যই অবশ্যই সৃজনশীলতা বা দক্ষতা জরুরী কিন্তু এগুলো আবশ্যিক বিষয় নয়। আর সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য অন্তরায় বা বাঁধা হচ্ছে দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি এবং পক্ষপাতিত্ব।
সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য ন্যায়বিচার জরুরী ন্যায়বিচার ছাড়া সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নয়।
তাই বিচার ব্যবস্থা কে ঠিক হতে হবে এবং সর্বক্ষেত্রে সর্বদিকে নিয়ে বিচার করতে হবে।
শেষ কথা
আশা করি আমাদের এই পোস্টটি এতক্ষণ পর্যন্ত পড়ার মাধ্যমে আপনি বুঝতে পেরেছেন সুশাসন কি? আমি আপনাকে সম্পূর্ণরূপে ব্যাখ্যা করে এবং প্রতিটি আলাদা আলাদা সংজ্ঞা প্রদান করে বুঝানোর চেষ্টা করেছি।
এখানে আমি এই প্রশ্নটির উত্তর দিতে গিয়ে বেশ কয়েকটি সংজ্ঞা প্রদান করেছি যেগুলো আপনি আপনার পরীক্ষায় ব্যবহার করতে পারেন।
এই ব্যবহারিতার সংজ্ঞা সমূহের কিছু সংজ্ঞা রয়েছে অনেক ছোট যেগুলো না ব্যবহার করাই ভালো।
আর আপনার পরীক্ষায় যদি নাম বা সংজ্ঞা নাম উল্লেখ করে প্রশ্ন আসে তাহলে আপনাকে ওই সংখ্যাগুলোই প্রদান করতে হবে। উপরে উল্লেখিত অন্য কোন সংজ্ঞা প্রদান করলে আপনার উত্তর ভুল হবে এবং আপনি নাম্বার পাবেন না।
আরও পড়ুন: মুদ্রাস্ফীতি কি?