সুন্নাহ শব্দের অর্থ কি? সুন্নাহ কাকে বলে? সুন্নাহের প্রকারভেদ

সুন্নাহ শব্দের অর্থ কি: সুন্নাহ শব্দের অর্থ হলো রীতিনীতি। সুন্নাহকে হাদিস নামে অভিহিত করা হয়। আবার সুন্নাহ হলো আল কুরআনের ব্যাখ্যা স্বরূপ।

জীবন আদর্শ গড়ে তুলতে সুন্নাহ এর গুরুত্ব অপরিসীম এবং ইহার মাধ্যমে জীবন পরিচালনার রীতিনীতি জানা যায়। আর হাদিস অনুযায়ী বলা যায়, কোন ব্যক্তি যদি একটি বিলুপ্তকে জিন্দা করে এবং সে অনুযায়ী আমল করে তাহলে তার আমলনামায় ১০০ শহীদের দেওয়া হবে।

আর বুঝতে পারতেছেন ১০০ শহীদের সওয়াব মানে কতগুলো সওয়াব হবে আপনার আমলনামায়, তাই সুন্নত অবলম্বন করুন।

সুন্নাহ অবলম্বন করার মাধ্যমে আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ স. এর সুপারিশ পাওয়া সম্ভব হবে, সেই কঠোর কিয়ামতের দিন।

সুন্নাহ শব্দের অর্থ কি
সুন্নাহ শব্দের অর্থ কি

আর যেহেতু সুন্নাহ অবলম্বন করার মাধ্যমে আমাদের প্রিয় নবীর উম্মত হওয়া যায় এবং প্রিয় নবীর সুপারিশ লাভ করা যায়।

আমাদের প্রিয় নবী বলেছেন যে, তিনি কখনো তিনার উম্মতকে ছাড়া জান্নাতে প্রবেশ করবেন না বা প্রবেশ করতে চাইবেন না।

আর যেহেতু সুন্নাহ অবলম্বন করার মাধ্যমে আমরা প্রিয় নবীর উম্মত হিসেবে আখ্যায়িত হব, সুতরাং আমাদেরকে ছাড়াও আমাদের প্রিয় নবী জান্নাতে প্রবেশ করবে না। আর ইহার ফলস্বরূপ আমরা প্রিয় নবীর সুপারিশ লাভ করার মাধ্যমে খুব সহজে জান্নাতে প্রবেশ করতে পারব এবং সুখ লাভ করব।

সুন্নাহ কাকে বলে?

সুন্নাহ কাকে বলে: প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সা. এর কর্ম-বাণী এবং সমর্থিত রীতিনীতি সমূহকে সুন্নাহ বা সুন্নত বলা হয়। এক কথায় বলতে গেলে সুন্নাহ হলো আমাদের প্রিয় নবীর কাজকর্ম বাণী এবং তিনার সমর্থিত রীতিনীতি।

যেহেতু প্রিয় নবীর কাজকর্ম, বাণী এবং রীতিনীতি সমূহকে সুন্নাহ বলা হয় এবং আমরা জানি তিনার রীতিনীতি হচ্ছে জীবন আদর্শের প্রতীক।

আর বুঝতে পারছেন আমরা যদি প্রিয় নবীর রীতি-নীতি অনুযায়ী জীবন করি তাহলে অবশ্যই আল্লাহর নিকট প্রিয় পাত্র হয় দাঁড়াতে পারবো। আর যখন আল্লাহ তাআলার নিকট প্রিয় পাত্র হয়ে দাঁড়াতে পারবো তখন অবশ্যই আমাদের পক্ষে কোন অশান্তির কারণ বিরাজ করবে না।

আবার সেই সাথে যখন আমরা সকল রীতিনীতি সঠিক মত অবলম্বন করব তখন অন্যরাও আমাদেরকে দেখে অনুপ্রেরিত হবে।

সুন্নাহ বা সুন্নাত অবলম্বন করার মাধ্যমে আমরা ইহকাল এবং পরকাল উভয় স্থানে শান্তি আর শান্তি লাভ করতে পারব যা অবশ্যই কল্যাণকর। আমরা সকলে কল্যাণ লাভ করতে চাই এবং আল্লাহ তাআলার প্রিয় পাত্র হতে চায় তাই অবশ্যই আপনাকে আমাকে সুন্নাহ অবলম্বন করতে হবে।

আপনি যদি সুন্নাহ অবলম্বন করতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে প্রিয় নবীর দেওয়া পথ অনুযায়ী জীবন পরিচালনা করতে হবে।

আল্লাহ পছন্দ করে ওই বান্দাকে যে নিজের মন মত চলাফেরা করে না বরং প্রিয় নবীর দেখানো পথে জীবন চালনা কর।

সুন্নাহ ও হাদিসের প্রকারভেদ

হাদিস এবং সুন্নাহ একই বিষয় হিসেবে আখ্যায়িত হয়েছে এবং এদের কিছুদ প্রকারভেদ রয়েছে যেগুলো সম্পর্কে জ্ঞান রাখা আমাদের প্রয়োজন।

আপনি যদি সুন্নাহ বা হাদিসের প্রকার সম্পর্কে জানতে চান তাহলে অবশ্যই এই টপিকটি পড়ুন এবং জ্ঞান অর্জন করুন।

হাদিসকে প্রধানত তিনটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে।

১.  কাওলি হাদিস (বাণী সূচক হাদিস),

২.  ফি’লি হাদিস (কাজ সম্বন্ধীয় হাদিস),

৩.  তাকরিরি হাদিস (মৌন সম্মতি জ্ঞাপক হাদিস)।

এগুলো হলো হাদিসের প্রকারভেদ এবং এই হাদিসগুলোর কিছু ব্যাখা রয়েছে যেগুলো সম্পর্কেও আপনারা হয়তো বা জানতে চান।

আপনি যদি এই হাদিস গুলোর ব্যাখ্যা সম্পর্কে জানতে চান বা সংখ্যা সম্পর্কে জানতে চান তাহলে অবশ্যই পোস্টটি শেষ পর্যন্ত পড়ুন।

কাওলি হাদিস

আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বাণী সূচক হাদিসকে কাওলি হাদিস বলা হয়। অর্থাৎ আমাদের প্রিয় নবীর মুখনিঃসৃত বাণী হলো কাওলি হাদিস।

ফি’লি হাদিস

যে হাদিস সমূহে আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাজের বিবরণ প্রকাশ পেয়েছে তাকে কর্মসূচক হাদিস বা ফিল হাদিস বলে।

তাকরির হাদিস

মৌন সম্মতি জ্ঞাপক হাদিস অর্থাৎ আমাদের প্রিয় নবীর অনুমোদন সূচক হাদিস হলো তাকরীর হাদিস। অর্থাৎ আমাদের প্রিয় নবীর সামনে কেউ কোন কথা বলছে বা কেউ কোন কাজ করছে, কিন্তু তাতে আমাদের নবী সে কাজে বাধা দেননি বরং মৌনতা অবলম্বন করেছেন সে সকল হাদিসকে তাকরীর হাদিস বলে।

বিভিন্ন রাবির ব্যাখ্যা অনুযায়ী হাদিস  আরো তিন প্রকার

উপরে আমরা প্রায় তিনটি হাদিস সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করতে সক্ষম হয়েছে তবে হাদিসের আরো কিছু প্রকারভেদ রয়েছে।

যে প্রকারভেদ গুলো সম্পর্কে আমি মনে করে আপনাদেরকে জ্ঞান প্রদান করা আমার পক্ষে ভালো হবে।

হাদিসের আরো কিছু প্রকারভেদ রয়েছে যেগুলো নিচে উল্লেখ করা হলো জ্ঞান বৃদ্ধির জন্য:

১. মারফু হাদিস: মারফু হাদিস বলেতে, যে হাদীস প্রিয় নবী রাসূলুল্লাহ সাঃ পর্যন্ত পৌঁছেছে সে হাদিসকে মারুফ হাদিস বলে।

২. মাওকুফ হাদিস: যে হাদিসের সনদ সাহাবী পর্যন্ত পৌঁছে শেষ হয়েছে প্রিয় নবী পর্যন্ত পৌঁছায়নি সে হাদিসকে মাউকুফ হাদিস বলে।

৩. মাকতু হাদিস: যে সকল হাদীসের সনদ তাবেঈ পর্যন্ত পৌঁছেছে সাহাবীগণ কিংবা রসূল পর্যন্ত পৌঁছায়নি তাদের মাকতু হাদিস বলে।

সুন্নাহ বা হাদিস সম্পর্কে আজকের এই পোস্টটি এ পর্যন্ত এবং আশা করে পরিপূর্ণ তথ্য দিয়ে আপনাদেরকে উপকৃত করতে পেরেছি।

সুন্নাহ হচ্ছে রীতি নীতি যা নবী করীম সাল্লাল্লাহু ওয়া সাল্লাম আমাদেরকে শিখিয়ে গিয়েছেন এবং সে অনুযায়ী পথ চলার নির্দেশ দিয়েছেন।

আমরা যদি আমাদের প্রিয় নবীর দেখানো পথ অনুযায়ী জীবন যাপন করে তাহলে সুন্নতে লিপ্ত হয়ে যাব এবং শাফায়াত লাভ করতে পারব। একবারও সুন্নাহ অনুযায়ী জীবন যাপন করার মাধ্যমে আমরা আল্লাহতালা সন্তুষ্টি অর্জন করতে, এবং এক্ষেত্রে আমাদের জীবন অনেক সহজ হবে।

আরও পড়ুন: শিরক কাকে বলে?

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top