সালাত কাকে বলে: ইসলাম ধর্মে ফরজ ইবাদত হিসেবে গণ্য, বান্দা আল্লাহ তায়ালা’র সন্তুষ্টি আদায় এবং দোয়া, ক্ষমা ও রহমত কামনার উদ্দেশ্যে যে ইবাদত করে থাকে তাকে সালাত বলে।
সালাত ইসলামের ফরজ ইবাদত হিসেবে গণ্য হলেও এমন কিছু সালাত রয়েছে যেগুলো আমরা ওয়াজিব, সুন্নত এবং নফল হিসেবে পালন করি।
ইসলামে ফরজ সালাত আদায় করা যেমন দরকারের ঠিক অনুরূপভাবে ওয়াজিব, সুন্নত এবং নফল নামাজ আদায় করা আমাদের জন্য প্রয়োজন।
হাদিস থেকে পাওয়া যায়, কোন ব্যক্তি যদি ফরজ সালাতের হিসাব সঠিক পথে দিতে না পারে তাহলে অন্যান্য নামাজ থেকে তা যোগ করে দেওয়া হবে। আর এইভাবে যোগ করে দেওয়ার ফলে আমাদের সালাতের হিসাব ক্ষমা হয়ে যেতে পারে এবং আমরা জান্নাতে প্রবেশ করতে পারি।

মুসলমান হিসেবে আমাদের প্রত্যেকের উপর সালাত আদায় করা ফরজ এবং সেই সাথে এই সালাতে কায়েম করার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। প্রায় বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সালাত কায়েম করার কথা বলা হয়েছে যেখানে কায়েম অর্থ হচ্ছে প্রতিষ্ঠা করা অর্থাৎ সালাত প্রচারের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
আর এ সালাত কায়েম করার মাধ্যমে আমরা অন্যকে সাবধান করে ফেলতে পারি এবং সেই সাথে নিজে নেকি অর্জন করতে পারি। অর্থাৎ সালাত কায়েম করার চেষ্টায় যদি আমরা রাস্তায় বের হয় তাহলে আমাদের প্রতি কদমে একটি করে সওয়াব লেখা হবে এবং গুনাহ হবে।
আমরা যে সালাত সম্পর্কে জানলাম, সেই সালাত আদায় করার কিছু নিয়ম রয়েছে এবং আমাদেরকে অবশ্যই নিয়ম মেনে সালাত আদায় করতে হবে। আর এই নিয়মগুলো সম্পর্কে জানা অবশ্যই আমাদের প্রয়োজন কেননা যেহেতু সালাত হচ্ছে ফরজ ইবাদত এবং নিয়ম অনুযায়ি আমল করতে হবে।
সালাত আদায়ের নিয়ম সমূহ
এই সালাত আদায় করার জন্য আমাদেরকে কিছু ধাপ অবলম্বন করতে হবে বা কাজ করতে হবে যা সালাতের নিয়মের অন্তর্ভুক্ত। আর অবশ্যই সঠিক মত সালাত আদায় করার জন্য আমাদেরকে এই সকল নিয়ম অবলম্বন করেই নামাজ পড়তে হবে।
আমাদেরকে এই সকল নিয়ম সম্পর্কে অবগত হতে হবে যেগুলোর মাধ্যমে আমরা যথাযথভাবে সালাত আদায় করতে পারি।
নিচে উল্লেখযোগ্য কিছু সালাত আদায়ের নিয়ম সমূহ উপস্থাপন করা হলো:
- নিজে পবিত্র ও পরিষ্কার এবং জামা কাপড় পবিত্র ও পরিষ্কার রাখতে হবে।
- সঠিক নিয়ম অনুসরণ করে সালাত আদায়ের পূর্বে অজু করতে হবে।
- সালাত আদায়ের জন্য একটি পবিত্র এবং পরিষ্কার স্থান বাছাই করতে হবে।
- উপযুক্ত স্থানে সালাত আদায় করার পূর্বে এর নিয়ত বেঁধে নিতে হবে।
- তারপর প্রথম রাকাতে সানা পড়ার মাধ্যমে সালাত শুরু করতে হবে।
- এরপর প্রথমে সূরা ফাতিহা এবং তারপর অন্য একটি সূরা মিলিয়ে পড়তে হবে।
- প্রতির আঘাতে এই প্রথমে সূরা ফাতিহা পড়া বাধ্যতামূলক এবং তার সাথে অন্যান্য সূরা মিলিয়ে পড়া।
- এরপর রুকুতে যেতে হবে এবং রুকু থেকে উঠে দাঁড়াতে হবে।
- এরপর সিজদায় যেতে হবে এবং সিজদা থেকে উঠে পুনরায় সিজদা দিতে হবে।
- দুই সিজদার মাঝখানে একবার দাঁড়াতে হবে এবং কিছু সময় অপেক্ষা করতে হবে।
- পরিপূর্ণভাবে ওয়াজিব গুলো মানতে হবে সালাত আদায় করার সময়।
- এইভাবে দুই রাকাত সালাত আদায় করার পর প্রথম বৈঠকে অথবা দুই রাকাত নামাজ হলে শেষ বৈঠকে বসতে হবে।
- প্রথম বৈঠকের ক্ষেত্রে শুধুমাত্র আত্তাহিয়্যাতু পাঠ করলেই হয়ে যাবে তবে শেষ বৈঠকের ক্ষেত্রে দুরুদ শরীফ ও দোয়া মাসুরা পাঠ করতে হবে।
- অবশেষে সালাম দেওয়ার মাধ্যমে সালাতের সমাপ্তি ঘটাতে হবে।
এগুলো হলো সালাত আদায়ের কিছু নিয়ম এবং অবশ্যই আমাদেরকে সালাত আদায় করার জন্য এই সকল নিয়ম অবলম্বন করতে হবে।
আর যদি আমরা নিয়ম অবলম্বন না করে তাহলে দেখা যাবে আমাদের নামাজ সঠিক মত আদায় হয় না।
শেষ কথা:
সালাত কাকে বলে এবং সালাত আদায়ের নিয়মের উপর ভিত্তি করে যতগুলো তথ্য দেওয়া হয়েছে তার প্রত্যেকটি গুরুত্বপূর্ণ।
আর অবশ্যই সালাত আদায় করার জন্য আমাদের দেওয়া তথ্যগুলো আপনাকে অবলম্বন করতে হবে যেগুলোর মাধ্যমে সালাত আদায় শক্তিশালী হবে।
আবার সালাত আদায় করার মাঝে কিছু ওয়াজিব থাকে যে ওয়াজিব গুলো বাদ হয়ে গেলে আমাদেরকে সাহু সিজদা দিতে হবে সালাত শুদ্ধ করার জন্য। আমরা মুসলমান এবং আমাদেরকে অবশ্যই এই সালাত যথারীতি আদায় করতে হবে এবং রহমত ও দোয়া কামনা করতে হবে।
এই সালাত বলতে দোয়া করাকে বোঝানো হয় যেখানে আমরা আল্লাহ তাআলার নিকট হতে ক্ষমা, রহমত ও দোয়া পেয়ে থাকে।
সালাতে যেহেতু দোয়ার অন্তর্ভুক্ত তাই অবশ্যই আমাদেরকে আল্লাহর দরবারে দোয়া মঞ্জুরের জন্য এই সালাত ঈমানের সাথে আদায় করতে হবে।
আমরা যতই আমল করি না কেন কিন্তু যদি সালাত আদায় না করে তাহলে এর কোন মূল্য নেই এটি বিভিন্ন আলেমদের হতে আমরা জানতে পারি। তাই অবশ্যই আপনাদেরকে আমাকে সালাত আদায় করতে হবে এবং সঠিক মত নিয়ম অবলম্বন করে সালাত আদায়ের জন্য শক্তিশালী করতে হবে।
আর যেহেতু নিশ্চয়ই সালাত পারে আমাদেরকে সকল পাপ কাজ থেকে বিরত রাখতে তাই, ইহার মাধ্যমে আমরা পাপ মুক্ত থাকতে পারবো।
যখন আমরা নিজেকে পাপ মুক্ত করে রাখতে পারব তখন আল্লাহর নিকট প্রিয় বান্দা এবং সাথে জান্নাতে প্রবেশের উপযোগী হতে পারব।
আরও পড়ুন: সালাত শব্দের অর্থ কি?