সাওম শব্দের অর্থ কি? সাওমের সংজ্ঞা ও পরিচয়

সাওম শব্দের অর্থ কি: সাওম শব্দের অর্থ হলো বিরত থাকা বা ধৈর্য ধারণ করা ইত্যাদি। সাওম পালন করার মাধ্যমে বান্দার আত্মিক উৎকর্ষ সাধিত হয়। সাওম হচ্ছে একটি ইবাদত এবং এই ইবাদত পালন করার মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা আমাদের মন সঠিকভাবে পরীক্ষা করতে পারেন।

এই সাওম এর আরেকটি ডাক নাম হচ্ছে রোজা এবং দীর্ঘ এক বছর পেরিয়ে আমাদের মাঝে একটি মাস আসে এবং এই মাসে রোজা পালন করতে হয়। দীর্ঘ এক মাস সাওম বা রোজা পালন করার মাধ্যমে আমরা আল্লাহ তাআলার কাছ থেকে নিজের গুনাহ মাফ করে নিতে পারি।

আবার এই সাওমের মাসকে তিনটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে যেখানে রহমত, বরকত এবং মাগফিরাত পাওয়া যায়। আর সাওম মাসের রোজা আল্লাহ তাআলার নিকট অনেক বেশি প্রিয় হয়ে থাকে এবং বান্দাকে নিজের ঈমানের পরীক্ষা যথাযথভাবে দিতে হয় এই মাসে।

সাওম শব্দের অর্থ কি
সাওম শব্দের অর্থ কি?

এমনটি ব্যাখ্যা পাওয়া যায় যে, ওই ব্যক্তির চেয়ে হতভাগা আর কেউ নেই, যে দীর্ঘ একটি সাওম মাস পেল কিন্তু জীবনের গুনাহ মাফ করাতে পারল না। অর্থাৎ ইহার দ্বারা এতে বোঝা যায় যে সাওম একটি আমলের মাস এবং এই মাসে আমাদেরকে নিজের গুনাহ মাফ করে নিতে হবে।

আল্লাহ তায়ালা সবচেয়ে বেশি যদি দোয়া কবুল করে থাকেন কোন মাসে তার মধ্যে সাওম মাস অন্যতম দোয়া কবুলের মাস। এই সাওম মাসে বান্দাকে নিজে ধৈর্যের পরীক্ষা দিতে হয় এবং সেই সাথে ফুটে উঠে বান্দার মধ্যেকার ঈমানের পরিচয় যা আল্লাহ তাআলা হতে লুকিত থাকবে না।

এই সাওম শব্দের অর্থ কি এ বিষয়ে তো জানলাম কিন্তু সাওমের সংজ্ঞা এবং পরিচয় সম্পর্কে আমাদের এখনো জানা বাকি রয়েছে।

আর অবশ্যই সাওমের সংজ্ঞা ও পরিচয় সম্পর্কে জানার মাধ্যমে আমরা নিজেকে সাওম পালন করতে অনুপ্রেরিত করতে পারব।

সাওমের সংজ্ঞা ও পরিচয়

সাওমের সংজ্ঞা: সেহেরী সম্পন্ন করার মাধ্যমে সূর্য উদয়ের পূর্ব থেকে সূর্যাস্তের সময় পর্যন্ত আল্লাহ তাআলার ভয়ে পানাহার থেকে সন্তুষ্টি আদায় প্রক্রিয়াকে সাওম বলা হয়। আর অবশ্যই আপনাকে সাউন্ড পালনের জন্য সূর্যাস্তের পর ইফতারের সম্পন্ন করতে হবে এবং পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায় করতে হবে।

এটি তো ছিল সাওমের সংজ্ঞা কিন্তু এই সালামের কিছু পরিচয় রয়েছে যে পরিচয় গুলো জানার মাধ্যমে আমরা অনুপ্রেরিত হব।

সাওম হচ্ছে আমাদের বান্দার জন্য ঢালস্বরূপ যার মাধ্যমে আমরা সুরক্ষা পেয়ে থাকি।

নিচে উল্লেখযোগ্য কিছু সামের বৈশিষ্ট্য সমূহ আপনাদের মাঝে প্রদান করা হলো:

  • সাওম হচ্ছে ধৈর্যের পরীক্ষা এবং এখানে বান্দাকে আল্লাহর সন্তুষ্টি আদায়ের জন্য পানাহারে থাকতে হয়।
  • ইসলামের ঢাল স্বরূপ হিসেবে যে আমলটির কথা বলা হয়েছে সে আমলটির নাম হচ্ছে সাওম বা রোজা।
  • বান্দার মধ্যে ঈমান কতটুকু আছে তার মজবুতে পরীক্ষা করার জন্য সাওম অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
  • দোয়া কবুলের মাস হচ্ছে সাওম আদায়ের মাস এবং এই মাসে আল্লাহ তায়ালা বান্দার গুনাহ মাফ করতে বেশি পছন্দ করেন।
  • সাওম পালনের মাধ্যমে আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি অর্জন করা যায় এবং সেই সাথে ঈমান মজবুত করা সম্ভব হয়।

এগুলো হলো সাওম বা রোজার কিছু পরিচয় এবং এই পরিচয় গুলোর মাধ্যমে আমরা সাওম সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারি।

ঈমান মজবুত করার ক্ষেত্রে সাওম মাসকে প্রাধান্য দেওয়ার মূল কারণ এই মাসে শয়তান বন্দী থাকে এবং আমরা ধোকায় পড়ি না।

আর শয়তানের কোন ধোকার মধ্যে না থাকার কারণে আমরা নিজের মূল ঈমানকে ফুটিয়ে তুলতে পারি এবং যথারীতি রোজা পালন করতে পারি। রমজান মাসে রোজা পালন করা প্রত্যেকটি ব্যক্তির উপর ফরজ এবং এই আমলটিতে কোন অবহেলা করা যাবে না আমাদের সবাইকে।

সাওম রাখার নিয়ম

আমরা তো সাওম সম্পর্কে অনেক কিছু জানালাম তবে রোজা বা সাওম রাখার নিয়ম কি এর সম্পর্কে কোন তথ্য জানালাম না। আর অবশ্যই সাওম পালন করার জন্য আমাদেরকে কিছু নিয়ম অবলম্বন করতে হবে এবং বিরত থাকার মাধ্যমে সাওম সম্পন্ন করতে হবে।

প্রত্যেক ইবাদতের কিছু নিয়ম রয়েছে এবং অনুরূপভাবে সাওম পালনের ক্ষেত্রে বা রোজা রাখার ক্ষেত্রে কিছু নিয়ম রয়েছে।

অবশ্যই আমাদেরকে এই সকল নিয়মের উপর ভিত্তি করে সাওম রাখতে হবে এবং সেই সাথে আল্লাহর উপর বিশ্বাস থাকতে হবে।

নিচে সাওম রাখার নিয়ম সমূহ আপনাদের মাঝে উপস্থাপন করা হলো:

  • সুবহে সাদিক অর্থাৎ ফজরের নামাজের পূর্বে সেহেরী সমাপ্ত করতে হবে।
  • সেহেরী সমাপ্ত করার পর সাওম পালন করার উদ্দেশ্যে মন থেকে নিয়ত নিতে হবে।
  • এরপর ফজরের নামাজের পর বা সুবহে সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত পানাহার বা বিরত থাকতে হবে।
  • বিরত থাকতে হবে বলতে পানাহার, চক্ষু হেফাজত, ইজ্জত হেফাজত এবং ইন্দ্রিয় তৃপ্তি থেকে পৃথক থাকাকে বোঝায়।
  • সূর্যাস্ত যাওয়ার পর সাওম ভঙ্গের উদ্দেশ্যে নিয়ত বা দোয়া করতে হবে।
  • নিয়ত বা দোয়া পাঠ করার পর বিসমিল্লাহ বলে ইফতার শেষ করতে হবে।
  • ইফতার শেষ হওয়ার মাধ্যমে আপনার সাওম পরিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়ে যাবে।

এগুলো হলো সাওম রাখার কিছু নিয়ম এবং অবশ্যই আপনাকে সাওম পালন করার জন্য এই সকল নিয়ম অবলম্বন করতে হবে। আর একথা অবশ্যই মনে রাখবেন যে যদি সঠিকভাবে নিয়ম অবলম্বন করা না হয় তাহলে সাওম পালন করা আপনার জন্য বৃথা হতে পারে।

সাওম শব্দের অর্থ কি এবং সাওমের সংজ্ঞা ও পরিচয় সম্পর্কে যতগুলো তথ্য প্রদান করা হয়েছে আশা করি তা অর্জন করেছেন।

আর অবশ্যই সাওম যথাযথভাবে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য পালন করা প্রয়োজন কেননা এটি ইসলামের ফরজ ইবাদত হিসেবে গণ্য হয়েছে।

আরও পড়ুন: সালাত শব্দের অর্থ কি?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!