সহকারী কোয়ান্টাম সংখ্যা কাকে বলে? উত্তর দাও

সহকারী কোয়ান্টাম সংখ্যা কাকে বলে: কোন একটি ইলেকট্রন প্রধান শক্তিস্তরের মধ্যে কোন উপশক্তিস্তরে অবস্থান করতেছে এর মান নির্ণয় করতে ব্যবহৃত সংখ্যাকে সহকারী কোয়ান্টাম সংখ্যা বলা হয়। অর্থাৎ ইলেকট্রনের উপশক্তিস্তর এর অবস্থান সংখ্যাগুলোকে সহকারী কোয়ান্টাম সংখ্যা বলে।

আমরা সহকারী বলতে সাহায্য করাকে বোঝাই, তবে রসায়নে মৌলের ক্ষেত্রে এটিকে উপশক্তিস্তর হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে।

প্রত্যেকটি ইলেকট্রন মৌলের মধ্যে প্রধান শক্তিস্তরের মধ্যে অবস্থান করলেও এরা পর থেকে আবার উপশক্তিস্তরের মধ্যে ভাগ হয়ে থাকে। অর্থাৎ প্রধান শক্তিরস্তরের মধ্যে যে সকল উপশক্তিস্তর রয়েছে সেগুলোতে মৌলের ইলেকট্রনসমূহ নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে সজ্জিত থাকে।

সহকারী কোয়ান্টাম সংখ্যা কাকে বলে
সহকারী কোয়ান্টাম সংখ্যা কাকে বলে?

প্রত্যেকটি মৌল প্রধান কোয়ান্টাম সংখ্যার মধ্যে নিজের ইলেকট্রন ধারণ করে এবং এই ইলেকট্রন গুলো পরবর্তীতে সহকারী কোয়ান্টাম সংখ্যা সজ্জিত হয়। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, মৌল হচ্ছে একটি দেশ এবং প্রধান কোয়ান্টাম সংখ্যা হচ্ছে উক্ত দেশের শহর এবং সহকারী কোয়ান্টাম সংখ্যা হচ্ছে গ্রাম/পল্লী।

হয়তোবা, অনেকেই আছে যারা এই উদাহরণের অর্থ বুঝলো না এবং মৌলের সাথে উদাহরণ কিভাবে জড়িয়ে আছে তা বুঝতে পারল না।

আসলে দেশ বলতে উদাহরণ হিসেবে আমরা মৌলকে একটি দেশ হিসেবে বিবেচনা করেছি। তারপর দেশে কয়েকটি শহর থাকতে পারে এবং অনুরূপভাবে একটি মৌলের কয়েকটি অরবিটাল থাকতে পারে। আবার সর্বশেষে একটি শহরে কয়েকটি গ্রাম থাকতে পারে এবং ঠিক অনুরূপভাবে একটি অরবিটালে কয়েকটি উপশক্তিস্তর থাকতে পারে।

সহকারী কোয়ান্টাম সংখ্যাকে কি দ্বারা প্রকাশ করা হয়?

একটি মৌলে কয়েকটি বা একাধিক উপশক্তিস্তর বা সহকারে কোয়ান্টাম সংখ্যা থাকতে পারে এবং সেখানে ইলেকট্রন সজ্জিত থাকতে পারে।

তবে আমরা লেখার সময় কিংবা বলার সময় এই সহকারে কোয়ান্টাম সংখ্যাগুলোকে কয়েকটি প্রত্যেক দ্বারা প্রকাশ করে থাকে।

অর্থাৎ কয়েকটি প্রতীক ব্যবহার করে আমরা সহকারী কোয়ান্টাম সংখ্যা গুলোকে খুব সহজেই সূচিত করে থাকে। সহকারী কোয়ান্টাম সংখ্যা কাকে বলে এ বিষয়ে জানার পর অবশ্যই আমরা এটিকে কিভাবে উপস্থাপন করতে পারি তা এখানে জেনে নেব। 

সহকারে কোয়ান্টাম সংখ্যাকে এদের ইলেকট্রন ধারণ ক্ষমতার উপর ভিত্তি করে চারটি নামে প্রকাশ করা হয় যথা: s, p, d, f. নিচে এদের ইলেকট্রন ধারণ ক্ষমতা উল্লেখ করা হলো:

  • s এর ইলেকট্রন ধারণ ক্ষমতা: 2।
  • p এর ইলেকট্রন ধারণ ক্ষমতা: 6।
  • d এর ইলেকট্রন ধারণ ক্ষমতা: 10।
  • f এর ইলেকট্রন ধারণ ক্ষমতা: 14।

এগুলো হলো সহকারী কোয়ান্টাম সংখ্যার ধারন ক্ষমতা এবং সূচিত করার উপর ভিত্তি করে আমরা বলতে পারে প্রত্যেকের ধারণ ক্ষমতা ভিন্ন।

এই সহকারী কোয়ান্টাম সংখ্যার ভূমিকা কতটুকু বা এর ব্যবহার কতটুকু চলুন এ বিষয় নিয়ে কিছু আলোচনা করা যাক এরপর।

ইলেকট্রন বিন্যাসের সরকারি কোয়ান্টাম সংখ্যার ভূমিকা?

মৌলের ইলেকট্রন বিন্যাসের সহকারী কোয়ান্টাম সংখ্যার ভূমিকা অপরিসীম কেননা, সম্পূর্ণ ইলেকট্রন বিন্যাস কোয়ান্টাম সংখ্যার উপর নির্ভর করে তৈরি করা হয়। ইলেকট্রন বিন্যাস করার সময় আমরা কতিপয় ধাপ অবলম্বন করে এবং উক্ত ইলেকট্রন বিন্যাসে সহকারে কোয়ান্টাম সংখ্যার প্রতীক বসাই।

প্রথমে প্রধান কোয়ান্টাম সংখ্যা, পরে সহকারী কোয়ান্টাম সংখ্যা এবং সর্বশেষে সহকারী কোয়ান্টাম সংখ্যার মান বসিয়ে ইলেকট্রন বিন্যাস সম্পন্ন করে।

ঠিক এইভাবে করেই আমরা ইলেকট্রন বিন্যাসের সময়সহকারী কোয়ান্টাম সংখ্যা ও এর মান ব্যবহার করে ইলেকট্রন বিন্যাসম্পন্ন করি।

সুতরাং দেখা গেল যে, ইলেকট্রন বিন্যাসে সহকারে কোয়ান্টাম সংখ্যার ভূমিকা অপরিসীম এবং অতি গুরুত্বপূর্ণ।

শুধুমাত্র ইলেকট্রন বিন্যাসের জন্যই যে সহকারী কোয়ান্টাম সংখ্যার ভূমিকা অনেক বেশি রয়েছে এ কথাটি বলা সঠিক হবে না। কেননা এটি শুধুমাত্র আমরা ইলেকট্রন বিন্যাস করার মাধ্যমে বুঝতে পারতেছি তবে, একটি মৌলের ইলেকট্রন সঠিকমত বিন্যস্ত থাকার জন্য সরকারি কোয়ান্টাম সংখ্যা প্রয়োজন।

যেহেতু, সহকারী কোয়ান্টাম সংখ্যা বলতে উপশক্তিস্তরকে বোঝানো হয় এবং একটি অরবিটালের উপশক্তিস্তর এর কিছু ভূমিকা রয়েছে।

ভূমিকা গুলার মধ্যে সবচেয়ে বড় ভূমিকা হচ্ছে, ইলেকট্রন গুলো নির্দিষ্টের নিয়মে সাজানো থাকে এবং কোন প্রকার উলটপালট হয়ে যায় না।

এবং মৌলের মধ্যে উপস্থিত ইলেকট্রন গুলোর উলটপালট না হওয়ার কারণে মৌলটির কাঠামো সর্বদা একইভাবে বিরাজ থাকে।

সহকারী কোয়ান্টাম সংখ্যার মান

আমরা তো পূর্বে জেনেছি যে একটি সহকারী কোয়ান্টাম সংখ্যায় কতগুলো ইলেকট্রন ধারণ ক্ষমতা রয়েছে তার উপর ভিত্তি করে কিছু তথ্য। কিন্তু এই সকল উপশক্তিস্তর বা সহকারী কোয়ান্টাম সংখ্যার কিছু মান রয়েছে যার উপর ভিত্তি করে উক্ত উপ শক্তিস্তরের শক্তি নির্ণয় করা সম্ভব।

উপশক্তিস্তর অর্থাৎ সহকারী কোয়ান্টাম সংখ্যাগুলোর ইলেকট্রন ধারণ ক্ষমতার সাথে সাথে নিজস্ব কিছু মান রয়েছে।

যার দ্বারা শক্তির স্তরের শক্তি ও ক্ষমতা সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। সহকারী কোয়ান্টাম সংখ্যার মান গুলোর নিচে উল্লেখ করা হলো:

  • s এর মানে হলো ০ (শূন্য)।
  • p এর মানে হলো ১ (এক)।
  • d এর মানে হলো ২ (দুই)।
  • f এর মানে হলো ৩ (তিন)।

এগুলো হলো ভিন্ন কিছু মান যা সহকারী কোয়ান্টাম সংখ্যার মধ্যে বিদ্যমান থাকে এবং পরবর্তীতে তা ব্যবহার করা হয়।

আর এই সকল মান ও ধারণ ক্ষমতার ওপর ভিত্তি করে মৌলে উপস্থিত ইলেকট্রন গুলো সঠিক স্থানে অবস্থান করে আবর্তিত হয়।

আরও পড়ুন: প্রধান কোয়ান্টাম সংখ্যা কাকে বলে?

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top