সমযোজী বন্ধন কাকে বলে: অধাতু এবং অধাতুর মাঝে ইলেকট্রন শেয়ারের মাধ্যমে যে বন্ধন গঠিত হয় তাকে সমযোজী বন্ধন বলে। অর্থাৎ যে বন্ধনের শুধু অধাতু এবং অধাতু নিজেদের মাঝে বন্ধন সৃষ্টি করে থাকে সে সকল বন্ধন হচ্ছে সমযোজী বন্ধন।
সমাযোজী বন্ধনে আবদ্ধ পরমাণু সমূহকে অবশ্যই অধাতু হতে হবে। ধাতু আর অধাতুর মধ্যে কখনো সমযোজী বন্ধন গঠিত হয় না। সমযোজী বন্ধন গঠনের জন্য অবশ্যই দুটি পরমাণুকে অধাতু হতে হবে এবং দুটি পরমাণু দ্বারা সৃষ্টি হবে অধাতু এবং অধাতুর বন্ধন।

আর ধাতুর মধ্যে কখনো সমযোজী বন্ধন সংঘটিত হয় না কারণ এক্ষেত্রে ইলেকট্রন ভাগাভাগি হয়ে যা আয়নিক বন্ধনের অন্তর্ভুক্ত।। এমনকি একটি ধাতু এবং একটি অধাতুর মধ্যে কখনো সমযোজী বন্ধন গঠিত হবে না, সমযোজী বন্ধন গঠনের জন্য অবশ্যই দুটি পরমাণুকে অধাতু হতে হবে।
আমরা তো সমযোজী বন্ধনের ব্যাখ্যা এবং সমযোজী বন্ধনের সংজ্ঞা সম্পর্কে জানালাম তবে এখন আমাদেরকে আরো জানতে হবে। সমাজে যদি বন্ধন সম্পর্কে আমাদেরকে আরো যে সকল বিষয় জানতে হবে সেগুলো হচ্ছে সমযোজী বন্ধন গঠনের শর্ত।
অর্থাৎ কি কি শর্ত পালন করে একটি সমযোজী বন্ধন গঠন হয় এবং অধাতু এবং অধাতু পড়াশোনা সাথে যুক্ত হয়।
সমযোজী বন্ধন গঠনের শর্ত
মূলত সমযোজী বন্ধন গঠনের অনেকগুলো শর্ত রয়েছে। যেগুলো মনে রাখাটাও আমাদের জন্য মুশকিল ব্যাপার।
তবে আমরা যদি মাত্র এই দুটি নিয়ম মনে রাখতে পারি তাহলে আমরা সমযোজী বন্ধনে আবদ্ধ যৌগসমূহকে খুব সহজে চিনতে পারবো।
শর্ত দুটি হল:
১) অধাতু এবং অধাতু সময়ের মাঝে এই বন্ধন গঠিত হবে।
সমযোজী বন্ধন অবশ্যই দুটি অধাতুর মধ্যে হবে। কখনো এটি একটি ধাতু এবং একটি অধাতুর মধ্যে হবে না।
আবার দুটি ধাতব পরমাণুর মধ্যেও কখনো সমযোজী বন্ধন সম্ভব নয়।
এই সমযোজী বন্ধন গঠনের জন্য অবশ্যই দুটি পরমাণুকে অধাতু হতে হবে অধাতু ছাড়া এটি সম্ভব নয়।
সমযোজী বন্ধনে আবদ্ধ পরমাণু সমূহ একে অপরের সাথে দুর্বল ভ্যান্ডারওয়ালস বল দ্বারা যুক্ত থাকে।
২.) ইলেকট্রনের শেয়ারের মাধ্যমে এই বন্ধন গঠিত হবে।
এই সমযোজী বন্ধন শুধুমাত্র ইলেকট্রন শেয়ারের মাধ্যমে সম্ভব হয়। ইলেকট্রন গ্রহণ কিংবা ইলেকট্রন ত্যাগ করা মাধ্যমে এই সমযোজী বন্ধন কখনো সম্ভব হয় না। ইলেকট্রন গ্রহণ ইলেকট্রন অথবা ইলেক্ট্রন ত্যাগ করার মাধ্যমে আয়নিক বন্ধন সংঘটিত হয়।
এই সমযোজী বন্ধন গঠনের সময় অবশ্যই পরমাণুর মধ্যে ইলেকট্রনের শেয়ার হতে হবে আদান-প্রদান নয়।
এখানে পরমাণু সমূহ ইলেকট্রন গুলোকে ভাগাভাগি করার মাধ্যমে যৌগ গঠন করে থাকে।
সমযোজী বন্ধনে আবদ্ধ যৌগসমূহ ইলেকট্রন গুলোকে একসাথে ব্যবহার করে থাকে।
কেননা সেখানে ইলেকট্রন সমূহ শেয়াররত অবস্থায় থাকে। যার কারনে যুদ্ধ পরমাণু সমূহের উভয়ই তা ব্যবহার করতে পারে।
সমযোজী বন্ধনের বৈশিষ্ট্য
আমরা তো সমযোজী বন্ধন গঠনের শর্ত জানলাম এবং এই শর্ত অনুযায়ী অধাতু ও অধাতু মিলে সমযোজী বন্ধন গঠন করে। সমযোজী বন্ধন গঠন করার পর উক্ত বন্ধনে আমরা কিছু বৈশিষ্ট্য দেখতে পাই এবং এ বৈশিষ্ট্যগুলোকে সমযোজী বন্ধন বৈশিষ্ট্য বলে।
নিচে উল্লেখযোগ্য কিছু সমযোজী বন্ধনের বৈশিষ্ট্য সমূহ উল্লেখ করা হলো:
- সমযোজী বন্ধনে আবদ্ধ পরমাণুসমূহ একে অপরের সাথে দুর্বল ভ্যান্ডারওয়ালস বল দ্বারা যুক্ত থাকে।
- সমযোজী বন্ধনে গঠিত যৌগ সমূহ পানিতে অদ্রবণীয়।
- বিদ্যুৎ পরিবহন করে না।
- ইলেকট্রন শেয়ারের মাধ্যমে এই বন্ধন গঠিত হয়।
- আন্তঃআণবিক আকর্ষণ শক্তির মান কম এবং দূরত্ব বেশি।
এগুলো ছিল সমযোজী বন্ধনের কিছু বৈশিষ্ট্য এবং অধাতু ও অধাতু মিলে গঠিত বন্ধনে এ বৈশিষ্ট্য পাওয়া যায় দেখতে। আমি বলব যে সমযোজী বন্ধন কাকে বলে এর উত্তর হলো: অধাতু এবং অধাতু মিলিয়ে গঠিত বন্ধন হচ্ছে সমযোজী বন্ধন।
আরও পড়ুন: আয়নিক বন্ধন কাকে বলে?