সন্ত্রাসবাদ কি: পার্থিব কোন স্বার্থ লাভের আশায় বিশৃঙ্খলা ও তাণ্ডবলীলার মাধ্যমে জনসাধারণের মনে আতঙ্ক সৃষ্টি করা ও তাদের ক্ষতি সাধন করাই হচ্ছে সন্ত্রাসবাদ। ইসলামী শরীয়তের দৃষ্টিতে সন্ত্রাসবাদ অবশ্যই একটি অনৈতিক কার্যকলাপ।
ক্ষমতা দখল করা, রাজ্য জয়, সম্পদের লোভ, খুন-খারাবি, লুটতরাজ এবং অন্যায় ভাবে রক্তপাত ঘটার মাধ্যমে জনসাধারণ মানে আতঙ্ক সৃষ্টি করা হচ্ছে সন্ত্রাসবাদের উদাহরণ।
এই সন্ত্রাসবাদের কারণে আমাদের সমাজে ও রাষ্ট্রে দেখা যায় বিভিন্ন প্রকার অশান্তি ও সেই সাথে দেখা যায় দুর্ভিক্ষ জনিত সমস্যা। আমরা অনেক ক্ষেত্রে সন্ত্রাসবাদের নাম শুনে থাকে কিন্তু ইসলামে এই সন্ত্রাসবাদীর একটি সংজ্ঞা রয়েছে এবং সেই সাথে রয়েছে নির্দিষ্ট কিছু প্রকারভেদ।

সন্ত্রাসবাদ বলতে প্রধানত খারাপ দিক চিন্তা করা হয় কেননা এর মাধ্যমে অশান্তির সৃষ্টি হয় এবং মানুষের জীবন নিয়ে খেলা হয়।
অর্থাৎ সন্ত্রাসবাদের কারণে অনেক পরিবার ধ্বংস হয়ে যায় এবং সেই সাথে মানুষের জীবন তুচ্ছ হয়ে ওঠে বিনষ্ট হয়ে যাওয়ার জন্য।
জীবন নষ্ট করার একমাত্র হুকুম রয়েছে আল্লাহ তায়ালার যিনি কিনা তিনার আদেশে প্রত্যেকটি বান্দাকে নিজের কাছে ডেকে নিয়ে থাকেন। তবে কেউ যদি ইচ্ছাকৃতভাবে অন্য কাউকে হত্যা করে বা হত্যা করার চেষ্টা করে তার অবশ্যই এটি সন্ত্রাসবাদের অন্তর্ভুক্ত হবে এবং বিশৃঙ্খলার মাঝে আল্লাহ তাআলার গজব বর্ষিত হবে।
মূলত এই সন্ত্রাসবাদের কোন সুনির্দিষ্ট টার্গেট থাকে না বরং পার্থিব কোন স্বার্থ লাভের উদ্দেশ্যে বেশিরভাগ সময় সন্ত্রাসবাদের সৃষ্টি হয়। বর্তমানে যেমন সন্ত্রাসবাদ রয়েছে ঠিক অনুরূপভাবে এই সন্ত্রাসবাদের ধারণা অনেক আগে থেকে রয়েছে ইসলাম কখনো বরদাস্ত করে না বা অনুমতি দেনা।
সন্ত্রাসবাদের কারণ কি কি?
আমরা তো সন্ত্রাসবাদ সম্পর্কে জানালাম তবে এই সন্ত্রাসবাদ কি কারণে আমাদের সমাজে বা রাষ্ট্রের সৃষ্টি হয় এর যথাযথ কারণ রয়েছে। অবশ্য আমাদেরকে সন্ত্রাসবাদের সৃষ্টির কারণ সম্পর্কে জানতে হবে যেন আমরা সন্ত্রাসবাদ এই সকল কারণে মাধ্যমে দমন করতে পারি ও শান্তি পেতে পারি।
নির্দিষ্ট একটা কারণ এর জন্য সন্ত্রাসবাদের সৃষ্টি হয় এবং সন্ত্রাসবাদ বলতে যে একটি সংগঠন রয়েছে এমনটি সর্বদা হবে এটি নয়।
বরং সন্ত্রাসবাদ একজন ব্যক্তি দ্বারা হতে পারে তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সন্ত্রাসবাদীদের একটি দল দেখা যায় যা বেশি ভয়ংকর আমাদের জন্য।
নিচে কতিপয় বিশেষ কারণ উল্লেখ করা হলো যেগুলোর জন্য সন্ত্রাসবাদ সৃষ্টি হয়, যথা:
- লোভ লালসা এবং হিংস্র হওয়ার মাধ্যমে সন্ত্রাসবাদ দেখা যায়।
- বলপ্রয়োগ এবং নিজের ক্ষমতা রক্ষায় অন্যকে ভয় দেখানোর উদ্দেশ্যে সন্ত্রাসবাদ সৃষ্টি হয়।
- কোন রাষ্ট্রের ধ্বংস, রাষ্ট্রের অধঃপতন ও দখলে আনার জন্য সন্ত্রাসবাদ সৃষ্টি হয়।
- খুন-খারাবি এবং লুটতরাজ করার মাধ্যমে সন্ত্রাসবাদের সৃষ্টি হয়।
- অন্যায় ভাবে রক্তপাত ঘটানোর মাধ্যমে সন্ত্রাসবাদের সৃষ্টি হয়।
- গণমাধ্যমে নিজেদের ক্ষমতা ও আতঙ্ক সৃষ্টি করার উদ্দেশ্যে সন্ত্রাসবাদ সৃষ্টি হয়।
এগুলো হলো সন্ত্রাসবাদের কিছু কারণ এবং এই সকল কারণে জন্যই মূলত বর্তমানে আমাদের সমাজ ও রাষ্ট্রের সন্ত্রাসবাদ সৃষ্টি হয়েছে।
এই সন্ত্রাসবাদের কারণে দেশ ও সমাজে অশান্তির সৃষ্টি এবং অনেক বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়ে যা আমাদের আর্থিক ও সামাজিক দুর্ভিক্ষের কারণ।
সন্ত্রাসবাদ কত প্রকার ও কি কি?
সন্ত্রাসবাদ কি এবং সন্ত্রাসবাদের কারণ সমূহ জানার পর আমাদেরকে সন্ত্রাসবাদ কত প্রকার হতে পারে তা জানতে হবে। কেননা সন্ত্রাসবাদ সর্বদা মন্দ কাজের জন্য হবে এমনটিও সঠিক নয় কেননা অনেক ক্ষেত্রে আমরা সন্ত্রাসবাদের সঠিক ব্যবহার দেখতে পাই যা ইসলামের বিরুদ্ধে হলেও কিছুটা সঠিক।
যেহেতু ধ্বংস করাকে সন্ত্রাসবাদ বলা হয় কিন্তু বিভিন্ন অত্যাচারের শিকার হলে অত্যাচারে জনগোষ্ঠীরা ধ্বংসলীলা চালু করে মুক্তির জন্য।
এক্ষেত্রে এটি সন্ত্রাসবাদের অন্তর্ভুক্ত তবে কোন গুনাহের কাজ হতে পারে না কেননা মানুষ এক্ষেত্রে নিজের অধিকার আদায়ের জন্য যুদ্ধ করে।
সন্ত্রাসবাদ মূলত তিন প্রকার, তবে আধুনিক এই পৃথিবীতে এসে এটি চার প্রকার লাভ করেছে। যথা:
- বিপ্লবী সন্ত্রাসবাদ।
- উপ-বিপ্লবী সন্ত্রাসবাদ।
- প্রতিষ্ঠা সন্ত্রাসবাদ।
- সাইবার সন্ত্রাসবাদ (আধুনিক পৃথিবীর নতুন সন্ত্রাসবাদ ধারণা)।
এগুলো হলো সন্ত্রাসবাদের কিছু প্রকারভেদ এবং এই প্রকারভেদ গুলো বিভিন্ন পদ্ধতিতে আমাদের মাঝেও শান্তি সৃষ্টি করে থাকে। আর সন্ত্রাসবাদে যেহেতু অবশ্যই একটি অনৈতিক কাজ বা ইসলাম অনুমতি দেনা তাই আমাদেরকে সকল বিষয় থেকে নিজেকে বিরত রাখতে হবে এবং সন্ত্রাসবাদ দূর করার চেষ্টা করতে হবে।
আরও পড়ুন: জিহাদ অর্থ কি?