সংক্রামক রোগ কাকে বলে: যে রোগ রোগাক্রান্ত জীবের শরীর হতে বিভিন্ন মাধ্যমে অন্যান্য সুস্থ জীবের দেহে ছড়িয়ে পড়ে তাকে সংক্রামক রোগ বলে। এক কথায় বলতে গেলে, যখন কোন রোগ বিভিন্ন মাধ্যমে অন্যান্য সুস্থ জীবে ছড়িয়ে পড়ে তাকে সংক্রামক রোগ বলে।
অর্থাৎ সংক্রামক রোগ হচ্ছে এমন একটি রোগ যা খুব সহজে আশেপাশে থাকা যেকোনো প্রাণীর মধ্যে ছড়িয়ে পড়তে পারে। আবার এই সংক্রামক রোগের রয়েছে বিভিন্ন প্রকারভেদ এবং প্রকারভেদ অনুযায়ী এদের রয়েছে নিজস্ব ক্ষমতা।

আমাদের শরীরে বিভিন্ন সময় জ্বর আসে তবে এই জ্বর এর মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন প্রকারভেদ। কিছু কিছু জ্বর এমন রয়েছে যেগুলো সংক্রামক ঘটাতে পারে এবং অন্যান্য জীবকে আক্রান্ত করে অসুস্থ করে ফেলতে পারে।
সংক্রামক রোগের উদাহরণ দিতে গেলে একটি পোস্ট তারা সকল রোগের নাম উল্লেখ করা বেশ জটিল। কেননা এমন অনেক ধরনের সংক্রামক রোগের কথা উল্লেখ পাওয়া যাবে যেগুলো বিভিন্ন মাধ্যমে এক প্রাণী থেকে অন্য প্রাণীতে ছড়িয়ে পড়ে।
সংক্রামক রোগের লক্ষণ
আমাদের শরীরে সংক্রামক রোগ হয়েছে কিনা তা চিহ্নিত করার জন্য আমাদেরকে কিছু লক্ষণ অনুভব করতে হবে রোগ সনাক্ত করতে।
সংক্রামক রোগের যেহেতু কিছু লক্ষণ রয়েছে সেহেতু আমরা খুব সহজে এই লক্ষণগুলো দ্বারা সংক্রামক রোগ হয়েছে বুঝতে পারব।
আর এই সকল লক্ষণগুলো দ্বারা আমরা এটা বুঝতে পারবো যে আমাদের সংক্রামক রোগ হয়েছে কিনা তার চিকিৎসা। আর যখন আমরা বুঝতে পারবো যে আমাদের সংক্রামক রোগ হয়েছে তখন আমরা খুব সহজে বিরত থাকার মাধ্যমে অন্যকে সুরক্ষা দিতে পারব নিজের রোগ থেকে।
সংক্রামক রোগের উল্লেখযোগ্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণের নিচে উল্লেখ করা হলো:
- সংক্রামক রোগ এর ফলে জ্বর জ্বর ভাব অনুভূত হয়।
- শরীরের মধ্যে সবসময় ক্লান্তি ভাব বিরাজ করে ।
- রোগীর ক্ষুধা হ্রাস পায়।
- রোগীর ওজন কমে যায়।
- শরীরে ঠাণ্ডা অনুভূত হয় বা ঠাণ্ডা লাগে।
- শরীরে ব্যথা অনুভূত হয়।
- কারো কারো চামড়ায় দাগ দেখা যায়।
- বিভিন্ন পেশীতে ব্যথা অনুভূত হয়।
- কারো কারো আবার ঘন ঘন পায়খানা বা ডায়রিয়া হয়।
- মাথায় ব্যথা অনুভূত হয়।
আপনি যদি চিন্তিত থাকেন যে আপনার শরীরের সংক্রামক রোগ হয়েছে কিনা তাহলে চিন্তার কোন কারণ নেই। কেননা উপরোক্ত লক্ষণগুলো দ্বারা আপনি নিজের শরীরের দিকে চিন্তা করে পরীক্ষা করুন যে লক্ষণ প্রকাশ পেয়েছে কিনা আপনার শরীরে।
যদি লক্ষ্য করেন উপযুক্ত লক্ষণ আপনার শরীরে রয়েছে তাহলে বুঝবেন আপনি সংক্রামক রোগে আক্রান্ত। আর যদি লক্ষণ গুলো প্রকাশ না পায় তাহলে বুঝে নিবেন, আপনার অন্য রোগে আক্রান্ত বা আপনি সুস্থ আছেন।
সংক্রামক রোগের কারণ
আমাদের শরীরে সংক্রামক রোগ আক্রমণ করে এবং এ আক্রমণ করার পেছনে এই রোগের কারণ রয়েছে। অর্থাৎ সংক্রামক রোগের কারণ রয়েছে যে কারণগুলো দ্বারা আমাদের শরীরের মধ্যে সংক্রামক রোগ প্রবেশ করে রোগ ছড়ায় অসুস্থ করে।
আর এজন্য আমাদেরকে সংক্রামক রোগের কারণ জানতে হবে যেন আমরা নিজেকে বিরত রাখতে পারি সংক্রামক রোগ থেকে। আর আপনিও যদি সংক্রামক রোগ থেকে নিজেকে বাঁচাতে চান তাহলে অবশ্যই আমাদের দেওয়া কারণগুলো প্রথমে জেনে নিন নিচ থেকে।
নিচে উল্লেখযোগ্য কিছু সংক্রামক রোগ আক্রমণের কারণ উল্লেখ করা হলো:
- রোগা আক্রান্ত ব্যক্তির বিভিন্ন জিনিস ব্যবহার করা।
- বাঁশি পচা বা দূষিত খাদ্য গ্রহণের মাধ্যমে।
- মশা মাছির মাধ্যমে রোগ ছড়িয়ে পড়তে পারে।
- কুকুরের মাধ্যমে রোগ ছড়িয়ে পড়তে পারে।
- বিভিন্ন প্রাণীর মাধ্যমে রোগ ছড়িয়ে পড়তে পারে।
- দূষিত পানি হতে হতে রোগ ছড়িয়ে পড়তে পারে।
- হাঁচি কাশির মাধ্যমে এক ব্যক্তির রোগ অন্য ব্যক্তিদের সঞ্চালিত হয়।
- একজনের ব্যবহার করা ইনজেকশন কিংবা ব্লেড অন্যজনের জন্য ব্যবহার করার কারণে।
এগুলো হলো মূল কারণ যেগুলোর কারণে আমাদের শরীরে বিভিন্ন মাধ্যমে সংক্রামক রোগ ছড়িয়ে পড়ে।
তবে এরা বাহিরেও কিছু কারণ থাকতে পারে যেগুলোর মাধ্যমে আপনার শরীরে সংক্রামক রোগ ছড়াতে পারে খুব সহজে।
উপরে উল্লেখিত যে কয়েকটি কারণ উল্লেখ করা হয়েছে সেগুলো থেকে বেঁচে থাকতে পারলে আর অন্য কোন কারণ সম্পর্কে জানার প্রয়োজন হবে না। বর্তমান সময়ের সংক্রামক রোগ মূলত উপরে উল্লেখিত কারণ গুলোর জন্য ছড়িয়ে থাকে এবং মানুষ ও জীব আক্রান্ত।
সংক্রামক রোগের প্রতিকার
আমরা যখন সংক্রামক রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ে তখন এর সঠিক প্রতিকার বা মুক্তি পাওয়ার উপায় সম্পর্কে জানতে চাই। আর আপনি যেন সঠিক প্রতিকার পেতে পারেন আপনার সংক্রামক রোগের জন্য আমরা এখানে সংক্রামক রোগের প্রতিকার দিব।
যে প্রতিকারগুলো দ্বারা আপনারা খুব সহজে আপনাদের সংক্রামক রোগের সুস্থ করতে পারেন বা দূর করতে পারেন স্বাস্থ্য সুরক্ষা। আর স্বাস্থ্য সুরক্ষার ক্ষেত্রে সংক্রামক রোগ সকল প্রতিকার ও প্রতিরোধ করার উপায় গুলো অবশ্যই আপনাকে জানিয়ে দেওয়া আমার কর্তব্য।
তাই চলুন জেনে নেই গুরুত্বপূর্ণ কিছু সংক্রামক রোগের প্রতিকার সম্পর্কে, যেগুলো জানা আমাদের প্রয়োজন:
- একজনের ব্যবহার করা জিনিস অন্যজন ব্যবহার না করা।
- ময়লা আবর্জনা নির্দিষ্ট স্থানে ফেলা।
- পরিবেশকে দূষিত না রাখা।
- হাঁচি কাশি আসলে মুখে রুমাল দেওয়া।
- সাবান বা বিভিন্ন এন্টিসেপটিক দিয়ে শরীর পরিষ্কার করা।
- বিভিন্ন খাবার খাওয়ার আগে ভালো মতো হাত ধৌত করে নেওয়া।
- দূষিত পানি পান না করা আর দূষিত পানি থেকে বিরত থাকা।
আপনি যদি শুধুমাত্র এই কয়েকটি প্রতিকার সুষ্ঠুভাবে নিজের জীবনে পরিচালনা করতে পারেন তাহলে সুস্থ থাকবেন। মূলত এখানে যে সকল প্রতিকার উল্লেখ করা হয়েছে সেগুলো সংক্রামক রোগ আক্রমণের কারণ এর উপর ভিত্তি করে তৈরি করা।
অর্থাৎ সংক্রামক রোগের কারণ থেকে মুক্তি পাওয়া মানে আপনি সংক্রামক রোগের আক্রমণ থেকে মুক্তি পাওয়া একই কথা।
আর এই কারণে আমরা উপরে কিছু প্রতিকার উল্লেখ করেছি যেগুলো অবলম্বন করলে আপনি সুস্থ থাকতে পারবেন সংক্রামক রোগ থেকে।
আরও পড়ুন: রোগ কাকে বলে?