শিক্ষা সফর কি: জ্ঞান লাভের উদ্দেশ্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বাইরে ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক স্থানে ভ্রমণ করার নাম শিক্ষা সফর। শিক্ষা সফর এর মাধ্যমে শিক্ষার্থী ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক স্থানে ভ্রমণ করার মাধ্যমে দেশের ঐতিহ্য ও সাংস্কৃতিক ইতিহাস নিয়ে জ্ঞান অর্জন করতে পারে।
পাঠ্য বইয়ের বাইরে জ্ঞান লাভ করার যে প্রক্রিয়া রয়েছে ভ্রমণ করার মাধ্যমে সেই ভ্রমণরত জ্ঞান অর্জনের প্রক্রিয়াটি হচ্ছে শিক্ষা সফর। অর্থাৎ জ্ঞান লাভের উদ্দেশ্যে নিজস্ব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বাইরে ভ্রমণ করার মাধ্যমে জ্ঞান লাভের উদ্দেশ্যে বের হওয়ার প্রক্রিয়াকে শিক্ষা বলে।

বিভিন্ন সময়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষার্থীদের কে বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানে নিয়ে যাওয়া হয় যেন তারা সেখানকার বা সেই স্থানের জ্ঞান অর্জন করতে পারে। আর নিত্য নতুন স্থানে ভ্রমণ করে নতুন জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা অর্জন করার প্রক্রিয়া যে উদ্দেশ্য দ্বারা সংঘটিত হয় এর প্রক্রিয়া হচ্ছে শিক্ষা সফর।
তবে শিক্ষা সফরে বের হওয়ার জন্য আমাদেরকে উপযুক্ত জায়গা বা স্থান নির্বাচন করতে হবে যেখানে আমরা সুস্পষ্ট জ্ঞান অর্জন করতে পারে। আর শিক্ষা সফর করার জন্য একটি বিশেষ স্থাপন নির্বাচন করার জন্য বিশেষ কিছু দিকের ওপর ভিত্তি করে স্থানটি নির্বাচন করা হয়ে থাকে শিক্ষা সফরের জন্য।
শিক্ষা সফরের জন্য দর্শনীয় স্থান নির্বাচন
আপনি যদি শিক্ষা সফরে যেতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে একটি বা আপনার প্রতিষ্ঠানকে একটি সুনির্দিষ্ট স্থান জ্ঞান সম্পন্ন স্থান নির্বাচন করতে হবে। অর্থাৎ এমন একটি স্থান নির্বাচন করতে হবে যেখানে গেলে আমরা সঠিক মত যেকোন তথ্য পেতে পারবো এবং নিজের জ্ঞান, অভিজ্ঞতা ও দেশ পরিচিতি বাড়াতে পারবো।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হতে শিক্ষা সফর করার জন্য অবশ্যই একটি ভাল মানের দর্শনীয় স্থান নির্বাচন করা অপরিহার্য। কতিপয় নিয়ম অবলম্বন করে একটি দর্শনীয় স্থান নির্বাচন করা সম্ভব হয়, যেমন:
- যে স্থান নির্বাচন করবেন সেখানকার পরিবেশ সম্পর্কে অনলাইন থেকে জ্ঞান অর্জন করা।
- নির্বাচন করা স্থানে কোন ধরনের জ্ঞানমূলক ও ঐতিহাসিক তথ্য লুকিয়ে আছে কিনা সে সম্পর্কে লক্ষ্য রাখা।
- এমন স্থান নির্বাচন করা যেখানে শিক্ষার্থীদের কোন ধরনের ঝুঁকির সৃষ্টি না হয়।
- ভ্রমনের জন্য নির্বাচনকৃত স্থানে পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা উপস্থিত থাকা।
- দেশের ঐতিহ্য বর্তমান সময় পর্যন্ত রক্ষা করে ধরে আছে এমন স্থান নির্বাচন করা বেশি ভালো।
- নির্বাচন কৃত স্থানে জাদুঘর কিংবা অন্যান্য ফলক সংরক্ষণকারী দর্শনের স্থান থাকলে বেশি ভালো হয়।
এগুলো হলো কিছু বৈশিষ্ট্য যেগুলোর উপর ভিত্তি করে আমাদেরকে শিক্ষা সফরের জন্যে স্থান নির্বাচন করতে হবে ভ্রমন করার জন্য।
শিক্ষা সফর বলতে ভ্রমন করাকে বোঝানো হয়, যার মাধ্যমে শিক্ষার্থী বিশেষ জ্ঞান অর্জন করতে পারে এবং অর্জন করে নতুন অভিজ্ঞতা।
শিক্ষা সফরে অর্জিত জ্ঞান
আমরা যখন শিক্ষা সফরের উদ্দেশ্যে বের হয় তখন বেশ কিছু জ্ঞান অর্জন করতে পারে এবং নিজের বিবেক বুদ্ধি কাজে লাগানোর ক্ষমতা অর্জন করি। অর্থাৎ শিক্ষা সফরে যাওয়ার মাধ্যমে আমরা অনেক জ্ঞান অর্জন করতে পারি এবং যা আমাদের জ্ঞান ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে পারে ও মন-মানসিকতা ঠিক করতে পারে।
শিক্ষা সফর করার মাধ্যমে আমরা বিভিন্ন ধরনের জ্ঞান ও তথ্য সম্পর্কে তথ্য পেয়ে থাকি, যেমন:
- সমুদ্রে কিংবা সাধু জলে বসবাসকারী প্রাচীন কিছু পশু পাখির দৃশ্য।
- ঐতিহাসিক কিছু দিক নির্দেশনা, ফলক এবং প্রাচীন ভাষার জ্ঞান।
- ঐতিহাসিক দর্শনীয় স্থানের ইতিহাস সম্পর্কে প্রত্যক্ষ জ্ঞান লাভ।
- প্রাচীন বা ঐতিহাসিক আসবাবপত্র ও মালামাল সম্পর্কে জ্ঞান লাভ।
- ঐতিহাসিক দর্শনীয় স্থানের পতন ও ধ্বংস হয়ে যাওয়ার কারণ সম্পর্কে জ্ঞান লাভ।
- বন্যপ্রাণী, সামুদ্রিক প্রাণী, সাধু জলের প্রাণী এবং স্থলে বসবাসকারী প্রাণীর দর্শনীয় জ্ঞান লাভ।
- দর্শনীয় স্থানের পরিবেশ, ভূ প্রকৃতি এবং জনগণ সম্পর্কে জ্ঞান লাভ।
- দর্শনীয় স্থানের বিখ্যাত বিষয়বস্তু সম্পর্কে প্রত্যক্ষ জ্ঞান লাভ।
- দর্শনীয় স্থানের স্থানীয় বাসিন্দাদের কথা বলার প্রকৃতি এবং জীবনধারা সম্পর্কে জ্ঞান লাভ।
- দর্শনীয় স্থানে বাসিন্দাদের পালন করা বিভিন্ন ধর্ম ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান সম্পর্কে জ্ঞান লাভ, ইত্যাদি।
এগুলো হলো বিশেষ কিছু জ্ঞান যেগুলো আমরা শিক্ষা সফরে ভ্রমণ করার মাধ্যমে বা যাওয়ার মাধ্যমে নিজের মাথায় আয়ত্ত করতে পারে। অর্থাৎ ইহার দ্বারা একটি স্পষ্টভাবে বোঝা যায় যে আমরা অনেক বেশি সৃজনশীলতা মনোভাব জাগ্রত করতে পারে শুধুমাত্র এই শিক্ষা সফরের উদ্দেশ্যে বের হওয়ার মাধ্যমে।
শিক্ষা সফরের গুরুত্ব
অনেকেই আছে যারা শিক্ষার সফর করতে বেশি আগ্রহী নয় এবং এর মূল কারণ হলো তারা শিক্ষা সফরের গুরুত্ব সম্পর্কে জানে না। কেননা সে যদি শিক্ষা সফরের গুরুত্ব সম্পর্কে জানতে তাহলে সে অবশ্যই যে কোন মূল্যে শিক্ষা সফর করার জন্য অনেক বেশি চেষ্টা করত।
শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষা সফরের গুরুত্ব অপরিসীম, নিচে শিক্ষা সফরের কতিপয় গুরুত্ব উল্লেখ করা হলো:
- শিক্ষার্থীর প্রতিষ্ঠান জ্ঞান বৃদ্ধির সাথে সাথে দেশভিত্তিক জ্ঞান বৃদ্ধি হয়।
- শিক্ষার্থী তার নিজ দেশের ঐতিহ্য ও ইতিহাস সম্পর্কে অবহিত হয়।
- শিক্ষার্থীদের জ্ঞান বৃদ্ধি হয় এবং জীবনধারার পদ্ধতির সম্পর্কে অবগত হয়।
- শিক্ষার্থীদের মন মানসিকতার বিকাশ ঘটে এবং সামাজিক মূল্যবোধ বৃদ্ধি পায়।
- শিক্ষার্থী দেশের অন্যান্য বিশেষ কিছু দর্শনীয় স্থানের জ্ঞান লাভ করতে উদ্যোগী হয়।
- শিশু অনুপ্রেরিত হয় এবং দেশের জন্য উন্নয়ন ও বড় কিছু করার চিন্তা ভাবনা করে।
শিক্ষা সফর কি এবং শিক্ষা সফরের গুরুত্ব সমূহ এখানে উল্লেখ রয়েছে যার মাধ্যমে আমরা শিক্ষা সফরে যাওয়ার চেষ্টা করতে পারি। আর অবশ্যই আমাদেরকে শিক্ষা সফরে যাওয়া উচিত কেননা এর মাধ্যমে আমাদের মন মানসিকতা ঠিক হয়ে যায় এবং যেকোনো বিষয়ে মনোযোগ বৃদ্ধি পায় জ্ঞান অর্জনের জন্য।
আরও পড়ুন: শিক্ষা অর্থ কি?