শিক্ষার উদ্দেশ্য কি? শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা কি?

আমরা তো প্রতিনিয়ত শিক্ষা অর্জন করে চলেছি কিন্তু শিক্ষার উদ্দেশ্য কি এই বিষয় সম্পর্কে অবগত না। মূলত আমরা শিক্ষার উদ্দেশ্য হিসেবে যেটিকে বুঝে থাকে সেটি হচ্ছে শিক্ষা অর্জন করার পর যোগ্যতা অর্জন করে একটি চাকরিতে পেশাজীবী হয়ে যোগদান করব।

আর এটা অবশ্যই একটা ভুল ধারণা কেননা শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য কখনো এমন নয়। বরং শিক্ষার কিছু লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য রয়েছে যে উদ্দেশ্যসমূহ সম্পর্কে আমাদেরকে জ্ঞান মাথায় রাখার মাধ্যমে শিক্ষা অর্জন করতে হবে শিক্ষিত হওয়ার জন্য।

শিক্ষার উদ্দেশ্য কি
শিক্ষার উদ্দেশ্য কি?

প্রত্যেকটি কর্ম ও কাজের কিছু না কিছু উদ্দেশ্য থাকে এবং উদ্দেশ্য ছাড়া আমরা কোন কাজ করতে চাই না। নিচে শিক্ষার উদ্দেশ্য কি তা উল্লেখ করা হলো:

  • শিক্ষা মানুষের পরিপূর্ণ ব্যক্তিত্ব বিকাশে কাজ করে।
  • শিক্ষা মানুষের মেধার পরিপূর্ণ বিকাশ ঘটায়।
  • মানবাধিকারের প্রতি সচেতন ও শ্রদ্ধাবোধের বিকাশ ঘটায়।
  • নিজের গুরুজন ও মাথায় পিতার প্রতি শ্রদ্ধা প্রদানের প্রতি উদ্বুদ্ধ করে।
  • নিজের জন্মস্থান ও মাতৃভূমির পথে শ্রদ্ধাবোধ এর বিকাশ ঘটায়।
  • শিক্ষা মানুষের মানসিক শক্তি বিকাশে কাজ করে।
  • শিক্ষা সভ্যতার বিকাশ ও সভ্যতার উন্নয়ন করে।
  • শিক্ষা মানুষের অন্ধ জীবনকে আলোর মুখে ফিরিয়ে আনতে পারে।
  • শিক্ষায় মানুষের ভেতরে থাকা সুপ্ত প্রতিভা কে বের করে আনে।
  • শিক্ষা মানুষকে পরিপূর্ণ মানুষ এবং মানুষত্ব জাগরণে কাজ করে।
  • একটি শিক্ষিত মানুষ শিক্ষা গ্রহণের মাধ্যমে দেশ ও সমাজের মুখে গর্ভের বিষয় হয়ে ওঠে।
  • একটি শিক্ষিত মানুষ দ্বারা দেশের উন্নয়ন ও সমাজের উন্নয়ন ঘটানো সম্ভব।

এগুলো হলো শিক্ষার কিছু উদ্দেশ্য এবং এই উদ্দেশ্য গুলো পূরণের জন্যই আমাদেরকে শিক্ষা অর্জন করে শিক্ষিত হতে হবে। আর যদি আপনি চিন্তা করেন যে না আমি শুধুমাত্র আবার যোগ্যতা অর্জন করে চাকরিজীবী হওয়ার জন্য শিক্ষা অর্জন করব সে ক্ষেত্রে এটি প্রকৃত শিক্ষা হবে না।

কেননা প্রকৃত শিক্ষা তো তখনই হবে যখন আপনার মেধার পরিপূর্ণ বিকাশ ঘটবে এবং মানবিক মূল্যবোধ জাগ্রত হয় প্রকাশ পাবে। আমাদের জীবনের শিক্ষার কিছু প্রয়োজনীয়তা রয়েছে যেগুলো সম্পর্কে আমাদের জানা দরকার এবং অনুপ্রেরিত হওয়া দরকার।

শিক্ষানীতি অনুযায়ী শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা কি?

আমরা মূলত নিজেকে শিক্ষিত হওয়ার জন্য শিক্ষা অর্জন করে থাকি এছাড়াও এর আরো অনেক কিছু প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।

শিক্ষা আমাদের যে প্রতিটি জীবনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এবং এই ভূমিকা পালন করার মাধ্যমে প্রয়োজন নিবারণ করে থাকে।

শিক্ষা দ্বারা অর্জিত জ্ঞান থেকে আমরা জীবনের প্রতিটি মুহূর্তে বিভিন্নভাবে উপকৃত হয়ে থাকে। আর এই উপকৃত হওয়ার মাঝে রয়েছে শান্তি প্রতিষ্ঠার একটি কথা যেখানে শিক্ষিত মানুষ কেবলমাত্র পারবে সমাজকে শান্তিময় সমাজ গড়ে তুলতে।

শিক্ষানীতি অনুযায়ী শিক্ষার বিভিন্ন প্রকার প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ রয়েছে, যা আমাদের জানা প্রয়োজন। নিচে শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা সমূহ উল্লেখ করা হলো:

  • রাষ্ট্র ও সমাজের উন্নয়নে শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা অধিক।
  • মানসিক ও মানবিক মূল্যবোধ গঠনের শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।
  • শিশুর জন্য বিকাশের জন্য শিক্ষার প্রয়োজন।
  • মানবাধিকারের প্রতি সচেতন ও শ্রদ্ধাবোধ জাগরণের ক্ষেত্রে শিক্ষার প্রয়োজন।
  • মানুষের জীবন আলোকমুখী করে গড়ে তুলতে শিক্ষার প্রয়োজন।
  • পথ চলার পথে সঠিক নির্দেশনা গ্রহণ করতে শিক্ষার প্রয়োজন।
  • দেশ ও জাতির উন্নয়নের জন্য শিক্ষার প্রয়োজন অধিক।
  • শিশুর মনুষ্যতা জাগরণ করার ক্ষেত্রে শিক্ষার প্রয়োজন রয়েছে।

এগুলো হলো শিক্ষার কিছু প্রয়োজনীয়তা এবং এর প্রয়োজনীয়তার উপর ভিত্তি করে আমরা শিক্ষা অর্জন করে থাকি। আর অবশ্যই শিক্ষা অর্জন করার মাধ্যমে ধীরে ধীরে আমাদের অস্থিরতা কমে যায় এবং মানসিক জ্ঞান বৃদ্ধি পেয়ে সঠিক বিশ্লেষণ করা যায়।

শিক্ষা অর্জন করার মাধ্যমে যখন আপনি আমি সঠিক বিশ্লেষণ করতে পারব তখন উপরক্ত প্রত্যেকটি প্রয়োজনীয়তা নিবারণ হবে।

আর শিক্ষা দ্বারা অবশ্যই আপনারা আমার মানবিক মূল্যবোধ এবং সৃজনশীল মনোভাব জাগ্রত হওয়ার মাধ্যমে সঠিক বিশ্লেষণ করা সম্ভব হবে।

শেষ কথা:

বর্তমানে শিক্ষা অর্জন করার বিষয়টি আমাদের মাঝে অনেক বেশি প্রচলিত হয়েছে এবং আমরা সকলেই শিক্ষা অর্জন করতে পছন্দ করি। আর আমরা এই শিক্ষা অর্জন করে সমাজের দিকে তাকিয়ে কেননা সকলেই শিক্ষিত হচ্ছে দিন দিন তাই।

আর শিক্ষার উদ্দেশ্য কি, না বুঝে অযথা সকল বিষয়ের উপর ভিত্তি করে শিক্ষা অর্জন করার জন্য আমরা এত পিছিয়ে রয়েছি।

বরং আমাদেরকে শিক্ষার আসল উদ্দেশ্য সম্পর্কে অবগত হতে হবে এবং তারপর সে অনুযায়ী নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করতে হবে।

আর এইভাবে শিক্ষা অর্জন করার মাধ্যমে আমরা অবশ্যই জীবনে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করে গড়ে তুলতে পারব। প্রতিষ্ঠিত করে গড়ে তোলা মানে এই নয় যে আপনি আমি ধনী হয়ে গেলাম বরং প্রতিষ্ঠিত হওয়া মানে জীবনকে সঠিক পথে পরিচালনা করা।

অর্থাৎ আপনি আমি যখন শিক্ষার আসল উদ্দেশ্য বুঝে শিক্ষা অর্জন করব তখন নিজেকে সঠিক পথে পরিচালনা করতে পারব।

আর যখন নিজেকে সঠিক পথে পরিচালনা করতে পারব তখন অবশ্যই বড় বড় বাধা-বিপত্তি পেরিয়ে জীবন উন্নত করতে পারব।

আর শিক্ষা অর্জন করার মাধ্যমে যেহেতু সৃজনশীলতা বৃদ্ধি পায় তাই সে ক্ষেত্রে জীবনের কর্মসংস্থানে চিন্তা করতে হবে না। আপনি আপনার সৃজনশীল মনোভাব দিয়ে খুবই সহজে নির্দিষ্ট একটি কর্মসংস্থান বেচে নিয়ে নিজের জীবন অতিবাহিত করে ফেলতে পারবেন।

আরও পড়ুন: ক্যারিয়ার শিক্ষা কি?

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top