শিক্ষানবিশ কি: শিক্ষানবিশ হচ্ছে এমন একটি শিক্ষা ব্যবস্থা যেখানে কর্মভিত্তিক প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়, নির্দিষ্ট একটি ভাতা নির্ধারণ করার মাধ্যমে।
এককথায়, কর্মভিত্তিক প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে যেখানে একটি নির্দিষ্ট পেশা ও বাণিজ্যের জন্য প্রয়োজনীয় সকল দক্ষতা প্রদানের সাথে সাথে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ আয় বা উপার্জন প্রদান করা হয় তাই শিক্ষানবিশ।
শিক্ষানবিশ হচ্ছে এমন একটি শিক্ষা প্রণয়ন ব্যবস্থা যেখানে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করার সাথে সাথে শিক্ষার্থী উপার্জন করতে সক্ষম হয়।
প্রকৃতপক্ষে, শিক্ষানবিশ হলো নির্দিষ্ট একটা চাকরি বা পেশার উপর প্রশিক্ষণ গ্রহণের একটি কোর্স,যার মাধ্যমে শিক্ষানবিশ একটি চুক্তির মধ্যে আবদ্ধ হয় নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত উক্ত পেশার জন্য প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে।
এই শিক্ষানবিশ এর মাধ্যমে শিক্ষার্থী নিজের দক্ষতা বৃদ্ধি করতে পারে উপযুক্ত কাজের উপর এবং সেই সাথে উপার্জন করতে পারে।
অর্থাৎ দক্ষতা অর্জন করার পাশাপাশি উপার্জন করার মত যে ব্যবস্থা রয়েছে সে ব্যবস্থাটির নাম হচ্ছে শিক্ষানবিশ।
শিক্ষানবিশ এর প্রকারভেদ
এই সকল শিক্ষানবিসের আবার কিছু কিছু প্রকারভেদ রয়েছে এবং এই প্রকারভেদ গুলোর যোগ্যতা অনুযায়ী হিসাব করা হয়।
আপনি যদি একজন শিক্ষানবিশ হতে চান অথবা শিক্ষানবিশ সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করতে চান তাহলে অবশ্যই এই সকল প্রকারভেদ জানতে হবে।
শিক্ষানবিশদেরকে তাদের প্রশিক্ষণ গ্রহণ এর পদ্ধতির উপর ভিত্তি করে চার ভাগে ভাগ করা হয়েছে। এগুলো হলো:
- ট্রেড শিক্ষানবিশ: যে শিক্ষানবিশ টেকনিক্যাল অফিসার এর জন্য প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে।
- স্নাতক শিক্ষানবিশ: স্নাতক ডিগ্রি অর্জনের পর শিক্ষানবিশ যে পদের জন্য প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে।
- টেকনিশিয়ান শিক্ষানবিশ: মোবাইল, ল্যাপটপ ও অন্যান্য ইলেকট্রনিক ডিভাইসের উপর চাকরির জন্য প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে যে সকল শিক্ষানবিশ।
- বৃত্তিমূলক শিক্ষানবিশ: জাতীয় শিক্ষানবিশ প্রশিক্ষণ পদ্ধতি হচ্ছে বৃত্তিমূলক শিক্ষানবিশ।
এগুলো হলো শিক্ষান বিষয়ে কিছু প্রকারভেদ এবং এই প্রকারভেদ গুলো যোগ্যতা অনুযায়ী বিভিন্নভাবে ভাগ করা হয়েছে।
কেননা যিনি স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করবে তার যে শিক্ষানবিশ পদ্ধতি হবে তা অবশ্যই অন্যান্য শিক্ষার সাথে ভিন্নতর হবে।
আর এই ভিন্নতার উপর ভিত্তি করে আমরা শিক্ষানবিশকে ভাগ করেছি যেন যোগ্যতা অনুযায়ী প্রত্যেকটি শিক্ষা থেকে বিভিন্নভাবে দক্ষতা অর্জন করানো সম্ভব হয়। দক্ষতা অর্জন করার সাথে সাথে উপার্জন করার মত যে সুযোগ-সুবিধা পাওয়া যায় সে সুযোগ সুবিধাই হচ্ছে শিক্ষানবিশ এর সুযোগ সুবিধা।
শিক্ষানবিশ এর ভাতা প্রদান পদ্ধতি
শিক্ষানবিজ্ঞান যে টাকা উপার্জন করেন দক্ষতা অর্জন করার সাথে সাথে সে উপার্জনকৃত টাকাকে ভাতা হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। অর্থাৎ এই ক্ষেত্রে একজন শিক্ষানবিশ দিয়ে টাকা বা অর্থ উপার্জন করে সেটি হয়ে থাকে ভাতা অনুযায়ী।
আর যোগ্যতা অনুযায়ী এই ভাতার পরিবর্তন হয় বিভিন্ন ক্ষেত্রে শিক্ষানবিশ এর উপর ভিত্তি করে এবং যোগ্যতা ও দক্ষতার উপর ভিত্তি করে। অর্থাৎ আপনি শিক্ষানবিশ হিসেবে প্রবেশ করেছেন এবং আপনার বেশিদিন হয়নি এক্ষেত্রে আপনার ভাতা নির্ধারিত হবে।
আমরা পূর্বে জেনেছি যে শিক্ষানবিশদেরকে প্রশিক্ষণ দেওয়া অবস্থায় নির্দিষ্ট একটি ভাতা প্রদানের মাধ্যমে তাদেরকে এ প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। এক্ষেত্রে শিক্ষা বৃন্তদেরকে যে পদ্ধতি অবলম্বন করে ভাতা প্রদান করা হয়, সেগুলো হলোঃ
- প্রতিমাসে একবার করে ভাতা প্রদান করা হয়।
- শিক্ষানবিশের প্রশিক্ষণ পদ্ধতির ওপর ভিত্তি করে ৭ থেকে ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত ভাতা প্রদান করা হয়।
- ভাতা হিসেবে তার বাসাভাড়া প্রদান করা হয় নির্দিষ্ট পরিমাণে।
- এছাড়া খাওয়া খরচ হিসেবে অর্থ দৈনিক প্রদান করা হয়। এছাড়াও অনেক ধরনের শিক্ষানবিশ প্রশিক্ষণ খাদ্য প্রদান করা হয় ভাতা হিসেবে।
এগুলো হলো শিক্ষানবিশ ভাতা প্রণয়ন পদ্ধতির কিছু সাধারণ তথ্য এবং এ অনুযায়ী প্রত্যেক শিক্ষানবিশকে ভাতা প্রদান করা হয়ে থাকে।
তবে এই ভাতার পরিমাণ সকলের জন্য সমান না বরং শিক্ষানবিশে প্রবেশ করার সময় এবং দক্ষতার উপর ভিত্তি করে বাড়তে থাকে।
অর্থাৎ আপনার শিক্ষানবিশ হয়ে দক্ষতা অর্জন করার বেশি দিন হয়নি এক্ষেত্রে আপনার ভাতা কম হবে এবং যদি দক্ষতা বেশি হয় তাহলে ভাতা বেশি হবে। আর দক্ষতা তখনই বেশি হবে যখন আপনি বেশি দিন ধরে শিক্ষানবিশ হিসেবে নিয়োগ হয় যোগ্যতা অর্জন করবেন।
শিক্ষানবিশ কি এবং শিক্ষানবিশ এর প্রকারভেদ ও ভাতা প্রাণয়ন পদ্ধতি নিয়ে আজকের এই পোস্টটিতে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছি, ধন্যবাদ।
আরও পড়ুন: শিক্ষা ক্রম কি?