শাফায়াত কাকে বলে? শাফায়াত কত প্রকার ও কি কি?

শাফায়াত কাকে বলে: বান্দার কল্যাণ, ক্ষমা ও মঙ্গল কামনার জন্য আল্লাহ তাআলার নিকট নবী রাসূলগণ এবং অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিরা যে সুপারিশ করবে, সেই সুপারিশকে আরবি অর্থ অনুযায়ী শাফায়াত বলে।

প্রত্যেকটি বান্দা যেন জান্নাতে প্রবেশ করতে গিয়ে বেশি সুবিধা পায় সে সুবিধা পাওয়ার জন্য আল্লাহ তা’আলা সুপারিশের ব্যবস্থা করেছেন।

আল্লাহ তা’আলা সুপারিশ করার জন্য বিশিষ্ট কয়েক শ্রেণীকে চিহ্নিত করেছেন যারা সুপারিশ করতে পারবেন আল্লাহর নিকট।

আর অবশ্যই সুপারিশ করার মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা তা কবুল করবেন এবং বান্দাকে ক্ষমা করে দিয়ে জান্নাতে প্রবেশ করাতে পারেন।

আর জান্নাতে প্রবেশ করার জন্য সুপারিশ পাওয়ার এই প্রক্রিয়াকে আরবি অর্থ বা আরবি ভাষায় শাফায়াত বলা হয়ে থাকে।

শাফায়াত কাকে বলে
শাফায়াত কাকে বলে?

অর্থাৎ একটি ব্যক্তির জান্নাতে প্রবেশ করবে এবং জান্নাতে প্রবেশ করার জন্য একটি বিকল্প প্রক্রিয়া বা পদ্ধতি হিসেবে শাফায়াত প্রদান করা হয়েছে। অর্থাৎ বান্দা যদি জাহান্নামে যাওয়ার জন্য সনাক্ত হয়ে থাকে তখন উক্ত বান্দা কে জান্নাতে প্রবেশ করানোর জন্য শাফায়াত সাহায্য করতে পারে।

অর্থাৎ একটি ব্যক্তির জাহান্নামে হওয়া সত্বেও শাফায়াতের মাধ্যমে আল্লাহ তালার ক্ষমা পাবে এবং জান্নাত খুব সহজে লাভ করতে সক্ষম হবে।

আর আপনিও যদি আল্লাহ তাআলার ক্ষমা পেতে চান এবং শাফায়াত পেতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে উম্মত হতে হবে।

এর মূল কারণ হলো সবচেয়ে বেশি গ্রহণযোগ্যতা পাবে আমাদের প্রিয় নবীর শাফায়াত এবং আমাদের প্রিয় নবী তার উম্মতের জন্য শাফায়াত করবেন। আর যদি প্রিয় নবীর উম্মত হিসেবে শাফায়েত পেতে চায় তাহলে অবশ্যই প্রিয় নবীর দেখানো পথ ও ধর্ম মেনে জীবন প্রচারণা করতে হবে।

সুপারিশ বা শাফায়াত কত প্রকার ও কি কি

আল্লাহ তাআলার নিকট বান্দার জন্য যে শাফায়েত করা হবে সে শাফায়াতকে আবার বিভিন্ন ভাগে ভাগ করা যায়।

যে ভাগের উপর ভিত্তি করে বিভিন্ন পদ্ধতিতে বান্দা কল্যাণ লাভ করতে পারবে এবং শাফায়াতের মাধ্যমে জান্নাত লাভ করতে পারবে।

তবে অবশ্যই এই কথা মনে রাখতে হবে যে, আল্লাহ তাআলা সকলের শাফায়েত গ্রহণ করবেন না বরং নির্বাচিত কিছু শ্রেণির মানুষের শাফায়াত গ্রহণ করবেন। আর এই সকল মানুষের কথা ইতিমধ্যে আল্লাহ তা’আলা বিভিন্ন ক্ষেত্রে উল্লেখ করেছেন শাফায়াত প্রক্রিয়ার উপর ভিত্তি করে।

কেয়ামতের দিন মহান রব্বুল আলামীনের নিকট বান্দার জন্য তিন রকমের শাফায়াত হবে, যথা:

  1. হিসাব নেওয়ার শাফায়েত: প্রথম শাফায়েত হলো আমাদের রাসূলুল্লাহ (স.) এর, যিনি শাফায়াত করবেন কিয়ামতের হিসাব নিকাশের কাজ শুরু করার জন্য।
  2. সিজদায় পরে শাফায়াত: কেয়ামতের দিন বিচারকার্য শুরু হওয়ার পর বান্দার জন্য রাসূলুল্লাহ (স.) আল্লাহর নিকট সেজদায় পড়ে যাবেন শাফায়াতের জন্য। 
  3. জান্নাতে প্রবেশের পূর্বে শাফায়াত: নবী হযরত মুহাম্মদ (স.) জান্নাতে প্রবেশের পূর্বে জাহান্নামে প্রবেশ প্রত্যেকটি বান্দার জন্য আল্লাহর কাছে শাফায়াত করবেন।

এগুলো হলো শাফায়েতের কিছু প্রকারভেদ বা প্রক্রিয়া যে প্রক্রিয়ায় শাফায়াত করা হবে বান্দার জন্য। তবে অবশ্যই সকল বিষয়ের উপর ভিত্তি করে একথা অবশ্যই সত্য যে আমাদেরকে নির্ধারিত এ সকল স্থানে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সাহায্যের জন্য শাফায়াত লাভ করতে হবে।

শাফায়েত লাভের প্রক্রিয়া সবচেয়ে বেশি যার শাফায়াত গ্রহণ হবে আল্লাহর নিকট তিনি আর কেউ নয় আমাদের প্রিয় নবী মুহাম্মদ (স:)।

তাই অবশ্যই আমাদের পরিচিতি হিসেবে প্রিয় নবীর উল্লেখ থাকতে হবে এবং প্রমাণ প্রদর্শন করার জন্য প্রিয় নবীর পথে চলতে হবে।

সর্বপ্রথম আল্লাহর নিকট কে শাফায়াত করবেন

সেই কঠোর কিয়ামতের দিন প্রত্যেকেই শাফায়াত অর্থাৎ প্রত্যেক নবী শাফায়াত করতে ভয় পাবে। এবং মনে করবে তারা এই শাফায়াত করার যোগ্য না কেননা তাদের কিছু না কিছু ভুল রয়েছে।

সর্বশেষে আমরা সকলে আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (স.) এর নিকট যাব এবং বিচার কার্য শুরু করার জন্য শাফায়াত করতে অনুরোধ করবো। তিনি আমাদের সকলের কথা এবং অনুরোধের মাধ্যমে আল্লাহর নিকট শাফায়েত করবেন বিচারকার্য শুরু করার জন্য।

ইহা দ্বারা এটি প্রমাণ হয়ে যে সর্বপ্রথম আল্লাহর নিকট আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (স.)  শাফায়াত করবেন বান্দার জন্য।

আমাদের প্রিয় নবীর পর অন্যান্য যে সকল শ্রেণীর কথা আল্লাহতালা উল্লেখ করেছেন তারপর তাদের সাফায়েত কবুল করা হবে।

তবে শাফায়াতের সবচেয়ে বেশি শক্তিশালী ও গ্রহণযোগ্যতা পাবে শুধুমাত্র আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (স:) এর।

আমাদেরকে সর্বদাই চেষ্টা করতে হবে যেন আমরা আমাদের প্রিয় নবীর শাফায়াত লাভ করতে পারে এবং পরকালীন জীবন সুখময় করি।

আর এ কথা সর্বদা মনে রাখবেন যে আল্লাহ তাআলার ক্ষমা ও অনুগ্রহ ছাড়া বান্দা জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না সহজে।

অর্থাৎ যে যতই ভালো আমল করুক না কেন, সর্বক্ষেত্রেই আল্লাহ তায়ালার ক্ষমা ও অনুগ্রহ পাওয়ার মাধ্যমে সে জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে। আর এই বিষয়ের উপর একটি হাদিসও রয়েছে যে কিনা এক গ্লাস পানির জন্য নিজের অর্ধেক জীবনের অর্জন করা নেকি নষ্ট করে ফেলেছিল।

অর্থাৎ আমাদেরকে জান্নাতে প্রবেশ করতে হলে, আল্লাহ তাআলার ক্ষমা, অনুগ্রহ ও শাফায়াত কবুলের বিষয় উপস্থিত থাকতে হবে।

ধন্যবাদ, শাফায়াত কাকে বলে এই বিষয়ে তৈরি করা পোস্টটিতে আমাদের মাঝে শেষ পর্যন্ত নিজের জ্ঞান অর্জন প্রচেষ্টা চালানোর জন্য।

আরও পড়ুন: হজ কাকে বলে?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!