শর্করা জাতীয় খাবার কি কি এ বিষয়ে নিয়ে অনেকেই আছে যারা জানার জন্য আগ্রহ পেশ করে থাকি। অনেকে আছে যারা শর্করা জাতীয় খাদ্য ত্যাগ করার জন্য এর তালিকা জানতে চায় এবং অনেকেই আছে যারা শর্করা গ্রহণ করার জন্য এর খাদ্য তালিকা জানতে চায়।
নিচে শর্করা জাতীয় খাবার কি কি তার একটি উল্লেখযোগ্য তালিকা উল্লেখ করা হলো:
- ভাত: প্রতি ১০০ গ্রাম এর মধ্যে ৭৭.৯ গ্রাম।
- রুটি: প্রতি ১০০ গ্রাম এর মধ্যে ৪৯.৭ গ্রাম।
- মটর ডাল: প্রতি ১০০ গ্রাম এর মধ্যে ৪৮.৩ গ্রাম।
- তেজপাতা: প্রতি ১০০ গ্রাম এর মধ্যে ৪৮.৭ গ্রাম।
- গুঁড়ো দুধ (ননী ছাড়া): প্রতি ১০০ গ্রাম এর মধ্যে ৪৯.৮ গ্রাম।
- পাউরুটি: প্রতি ১০০ গ্রাম এর মধ্যে ৫৫.৬ গ্রাম।
- খেসারি ডাল: প্রতি ১০০ গ্রাম এর মধ্যে ৫৫.৫ গ্রাম।
- ছোলার ডাল: প্রতি ১০০ গ্রাম এর মধ্যে ৪৯.২ গ্রাম।
- মিষ্টি তেঁতুল: প্রতি ১০০ গ্রাম এর মধ্যে ৬০.৮ গ্রাম।
- মুগ ডাল: প্রতি ১০০ গ্রাম এর মধ্যে ৬০.৯ গ্রাম।
- মাসকলাই ডাল: প্রতি ১০০ গ্রাম এর মধ্যে ৬১.৮ গ্রাম।
- লাল আটা: প্রতি ১০০ গ্রাম এর মধ্যে ৬২.২ গ্রাম।
- সাদা আটা: প্রতি ১০০ গ্রাম এর মধ্যে ৭০.৩ গ্রাম।
- সুজি বা গম: প্রতি ১০০ গ্রাম এর মধ্যে ৭০.৬ গ্রাম।
- ময়দা: প্রতি ১০০ গ্রাম এর মধ্যে ৭৩.১ গ্রাম।
- চিড়া: প্রতি ১০০ গ্রাম এর মধ্যে ৭৯.২ গ্রাম।
- মুড়ি: প্রতি ১০০ গ্রাম এর মধ্যে ৮২.৭ গ্রাম।
- খৈ: প্রতি ১০০ গ্রাম এর মধ্যে ৮৭.০ গ্রাম।
- মধু: প্রতি ১০০ গ্রাম এর মধ্যে ৮১.১ গ্রাম।
- চিনি: প্রতি ১০০ গ্রাম এর মধ্যে ৯৯.৫ গ্রাম।
শর্করা জাতীয় খাবার খাওয়ার সময় আমাদেরকে সতর্ক থাকতে হবে বিশেষ করে ডায়াবেটিস রোগীদের একটু বেশি সচেতন থাকতে হবে। এই খাদ্য উপাদানটি শরীরের মধ্যে রক্তের সুগার লেভেল দ্রুত বৃদ্ধি করে থাকে। সচেতন থাকার জন্য আপনারা উপরে উল্লেখিত নিয়ম অনুসারে শর্করা গ্রহণ করুন।
মানব দেহের শর্করার ক্ষতিকর প্রভাব
আমরা হয়তোবা মনে করতে পারি যে শর্করা শুধুমাত্র আমাদের শরীরের সর্বদা উপকার ডেকে আনে এবং শক্ত চাহিদা পূরণ করে। তবে আপনি যদি এমন ধারণা পেশ করে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনি নিতান্তই ভুল ভাবছেন বা ভুল ধারণা করে আছেন।
কেননা শর্করা যে শুধু আমাদের উপকার করে এমনটা না বরং এটি আমাদের অনেক ক্ষতি সাধন করে যা বলার নয়। তবে আপনিও যেন শর্করা সম্পর্কে এই ক্ষতিকর দিকগুলো জানতে পারেন এবং নিজেকে সুরক্ষিত রাখতে পারেন তাই উল্লেখ করবো।
উল্লেখযোগ্য কিছু শর্করার ক্ষতিকর প্রভাব নিচে উল্লেখ করা হলো:
- রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বাড়িয়ে দেয় এবং গ্লুকোজের পরিমাণ অস্বাভাবিক করে দেয়।
- ইনসুলিন নিঃসরণের পরিমাণ কমিয়ে ফেলতে পারে।
- শরীরের মধ্যে অতিরিক্ত চর্বি উৎপাদনের ক্ষেত্রে শর্করা বিশেষভাবে দায়ী।
- অস্বাভাবিকভাবে রক্তচাপ বৃদ্ধির ক্ষেত্রে শর্করা কাজ করে।
- শরীরের মধ্যে হাই প্রোটিন উৎপাদন করার ফলে শরীর তা গ্রহণ করতে সক্ষম হতে পারে না।
- শরীরের মধ্যে অতিরিক্ত পরিমাণ কার্বোহাইড্রেটের বৃদ্ধির ফলে শরীরে অস্বাভাবিক কিছু ঘটনা ও সমস্যা উপলব্ধি হয়।
- আপাতদৃষ্টিতে শরীরের কাঠামো বৃদ্ধি পেলেও অভ্যন্তরীণ শক্তি কমিয়ে ফেলে।
- অভ্যন্তরীণ শক্তি বলতে গিয়ে শর্করা দেড় হজম শক্তি বা বিপাক প্রক্রিয়া কমিয়ে ফেলে।
এগুলো হলো শর্করার কিছু ক্ষতিকর প্রভাব এবং এর প্রভাব গুলো আমাদের শরীরে অনেক বেশি হতে সাধন করে থাকে। আর ডায়াবেটিস রোগীদের কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করা যায় কেননা তারা শর্করা সহজে হজম করতে পারে না এবং অসুবিধায় পড়ে।
তবে যাই হোক না কেন শর্করা একটি খাদ্যের উপাদান এবং এই খাদ্য অনেক বেশি ক্ষতিকর যদি বেশি পরিমাণে গ্রহণ করা হয়। তাই আপনার শরীর এবং স্বাস্থ্য কিরূপ অবস্থায় আছে তার উপর ভিত্তি করে সঠিক অনুপাতে আপনাকে শর্করা গ্রহণ করতে হবে সুস্থ থাকার জন্য।
শেষ কথা:
শর্করা জাতীয় খাবার কি কি এবং শর্করা জাতীয় খাবারের কিছু বিশেষ তথ্য নিয়ে আজকের এই পোস্টটি উল্লেখ করা হয়েছে। শর্করা হচ্ছে খাদ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান এবং সুষম খাদ্য পরিপূর্ণ করার জন্য শর্করা কিছু অংশ খাদ্য তালিকায় রাখতে হবে।
তবে এই শর্করা যে সর্বদা আমাদেরকে গ্রহণ করতে হবে উপকার পাওয়ার জন্য এমনটি না বরং এর কিছু ক্ষতিকর দিক রয়েছে। তাই ক্ষতিকর দিকের উপর বিবেচনা করে আপনাকে আমাকে সঠিক অনুপাতে এবং সঠিক সময় শর্করা গ্রহণ করতে হবে।
অত্যাধিক হারে শর্করা গ্রহণ করার ফলে দেখা যাবে যে বদহজম বা অন্যান্য বিশেষ বিশেষ সমস্যা দেখা দিতে পারে শরীরে। শুধুমাত্র বদহজম এর জন্য আপনারা শুরু করা খাবেন না এমন না বরং ইহার কারণে অনেক জটিল রোগের সৃষ্টি হয় তাই শর্করা পরিমাণ মতো খাবেন।
খাদ্যের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান শর্করা তবে এর কিছু ক্ষতিকর দিক থাকার কারণে আপনাকে এই উপাদান সঠিক মাপে খেতে হবে। শর্করা বলতে যে শুধুমাত্র ভাত কিংবা চালকে বোঝানো হবে এমনটি না বরং শর্করার আরো অনেক উৎস রয়েছে যেগুলো সম্পর্কে আমি উল্লেখ করেছি।
আরও পড়ুন: শর্করা কাকে বলে?