শরিয়ত কাকে বলে? শরিয়ত অর্থ কি? শরিয়তের বিষয়বস্তু ও পরিধি

শরিয়ত কাকে বলে: আল্লাহ এবং তাঁর রাসূল (সা.) মানুষের জীবন পরিচালনার জন্য যে সকল আদেশ-নিষেধ এবং পথ নির্দেশনা প্রদান করেছেন তাকেই শরিয়ত বলা হয়। এক কথায় বলতে গেলে, ইসলামিক আইন কানুন কিংবা বিধি-বিধান সমূহকে সমষ্টিগতভাবে শরিয়ত বলা হয়।

অর্থাৎ শরীয়ত বলতে এমন একটি ব্যবস্থাকে বোঝানো হয়ে যার মাধ্যমে জীবন পরিচালনার সকল নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।

জীবন সহজ ভাবে পরিচালনা করার জন্য এবং হেদায়েতী ভাবে সুন্দর জীবন গড়ে তোলার জন্য শরীয়তের ভূমিকা অপরিসীম।

শরিয়ত কাকে বলে
শরিয়ত কাকে বলে?

জীবন সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করতে এবং কল্যাণ লাভ করার জন্য পরিপূর্ণ নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে যে অংশে তাকে শরীয়ত বলে।

আমরা প্রতিনিয়ত বিভিন্ন কাজে লিপ্ত হই যার কিছু কিছু দিক রয়েছে অনেক ভালো এবং কিছু কিছু দিক রয়েছে অনেক মন্দ।

আর শরীয়ত হচ্ছে এমন একটি ইসলামের অংশ যার দ্বারা মন্দ এবং ভালোর উপর বিচার করে সুষ্ঠু জীবন পরিচালনার রাস্তা দেখিয়ে দেওয়া হয়েছে। আপনি যদি শরীয়ত অবলম্বন করেন তাহলে ইহকাল এবং পরকাল উভয় স্থানে কল্যাণ অশান্তি সহজ লাভ করতে পারবেন।

শরীয়ত শব্দের অর্থ কি?

শরীয়ত শব্দের অর্থ কি: শরিয়ত হলো আরবি শব্দ, শরীয়ত শব্দের অর্থ হলো রাস্তা বা পথ, আইন বা বিধি-বিধান অর্থেও এটি ব্যবহার করা হয়। ব্যাপক অর্থে এই শরিয়ত শব্দের অর্থ হলো এমন সুস্পষ্ট কিংবা সুদৃঢ় পথ যার অনুসরণ করলে মানুষ নিজের জীবনকে সুষ্ঠু সুন্দরভাবে পরিচালনা করতে পারবে  এবং নিজ গন্তব্যে পৌঁছাতে পারে।

এখানে শরীয়ত বলতে যে রাস্তা কে বোঝানো হয়েছে সেটি হচ্ছে উত্তম রাস্তা আপনার আমার উন্নত জীবন পরিচালনার জন্য। মানুষ সর্বদা কল্যাণ লাভ করতে চায় সেটা ইহকাল হক কিংবা পরকাল এবং সেই সাথে লাভ করতে চায় উন্নতি।

শান্তি এবং উন্নতি উভয় লাভ করতে চাইলে পরিপূর্ণরূপে সঠিক নিয়ম অবলম্বন করে জীবন পরিচালনা করতে হবে শরীয়ত হিসেবে।

আর এ সঠিকভাবে জীবন পরিচালনা করার জন্য মুখ্য ভূমিকা পালন করে থাকে শরীয়ত, যা হচ্ছে ইসলামিক বিধান।

উন্নতি বলতে বর্তমান সময়ের মানুষ আমরা অর্থ সম্পদ এবং অন্যান্য মূল্যবান জিনিসকে বেশি প্রাধান্য দিয়ে থাকে। তবে যখন শরীয়তের মধ্যে লিপ্ত হয়ে যাবেন তখন দুনিয়ার সুখ বলতে কি এবং আখিরাতের সুখ বলতে কি এ বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা পাবেন।

আর যখন স্পষ্ট ধারণা পাবেন তখন আপনি যে অবস্থাতে থাকুন না কেন, ওই অবস্থাতেই শুকরিয়া আদায় করে সুখে থাকতে পারবেন।

সুখে থাকতে হলে অর্থ সম্পদের প্রয়োজন হয় না, বরং সুস্থ শরীর এবং সুস্থ মনের প্রয়োজন, যা আল্লাহ তা’আলা দিতে পারেন।

শরিয়তের বিষয়বস্তু ও পরিধি

শরিয়তের বিষয়বস্তু হচ্ছে অত্যন্ত ব্যাপক। শরিয়ত হলো মানবজাতির জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ বা সার্বিক জীবন ব্যবস্থা।মানব জীবনের সমস্ত বিষয়ের নির্দেশনা এবং বিধি-বিধান এতে বিদ্যমান রয়েছে। আর তাই আমরা এখন জানার চেষ্টা করব এই শরীয়তের মধ্যে কি কি বিষয়বস্তু রয়েছে।

কেননা যখন আমরা শরীয়তের বিষয়বস্তু জানতে পারবো তখন খুবই সহজে এর পরে যে সম্পর্কে ধারণা চলে আসবে নিজে নিজেই।

আর তাই চলুন এবার দেখে নেওয়া যাক এই শরীয়তের কিছু বিষয়বস্তু যেগুলো দ্বারা শরীয়ত প্রতিষ্ঠিত হয়েছে মানবজাতির নির্দেশনা স্বরূপ।

বিশ্বাসগত ও প্রয়গিক দিক দিয়ে বিবেচনা করে শরিয়তের বিষয়বস্তুকে প্রধানত তিনটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে, এগুলো হলো:

  • আকিদা অথবা  বিশ্বাসগত বিধি-বিধান।
  • নৈতিকতা {আচার-আচরণ} এবং চরিত্র সংক্রান্ত রীতিনীতি।এবং
  • বাস্তব জীবনের কাজকর্ম সংক্রান্ত নিয়ম কানুন।

মানুষের সাংস্কৃতিক সামাজিক, আর্থ সামাজিক, রাজনৈতিক, সকল কাজই শরিয়তের অন্তর্ভুক্ত। এই শরিয়তের নির্দেশনার বাইরে আর কোন কাজ নেই।

শরীয়ত হচ্ছে এমন একটি বিষয় যার মাধ্যমে জীবন পরিচালনা সম্পূর্ণ দিকনির্দেশনা ও বিধি-বিধান উল্লেখ করা হয়েছে।

সুতরাং বুঝতে পারছেন যেখানে জীবন পরিচালনার সকল বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে তার পরিধি কত বিশাল হতে পারে।

আর এর জন্য বলা যায় যে শরীয়তের পরিধি অনেক বিশাল এবং জীবন পরিচালনায় এর গুরুত্ব রয়েছে অনেক বেশি। জীবন পরিচালনা করতে যাবতীয় দিক নির্দেশনা ও সুষ্ঠু মন-মানসিকতা পরিচালনার ধারাবাহিকতা এখানে উল্লেখ হয়েছে।

সর্বক্ষেত্রে শরীয়ত সম্মেলন বা শরীয়ত এর বিধান অনুযায়ী জীবন পরিচালনা করা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ আমাদের জন্য।

কেননা ইহার মাধ্যমে জীবনে কোন প্রকার অশান্তি বিরাজ করবে না এবং অশান্তি বিরাজ না করার ফলে কল্যাণ লাভ হবে।

আরও পড়ুন: নিফাক শব্দের অর্থ কি?

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top