শক্তি কাকে বলে? শক্তির সূত্র

শক্তি কাকে বলে: কোনো ব্যক্তি বা বস্তুর কাজ করার সামর্থ্যকে শক্তি কাকে বলে। বল প্রয়োগ করে কোন স্থির বস্তুকে গতিশীল এবং গতিশীল বস্তুকে স্থির করে, কাজে রূপান্তর করার প্রক্রিয়াকে শক্তি বলে। সহজ ভাষায় বলতে গেলে, কাজ করার সামর্থকেই শক্তি বলা হয়।

আপনি পুরো বল প্রয়োগে একটি বাস ধাক্কা দিলেন কিন্তু বাসটির সরণ ঘটলো না ফলে কোন কাজ সংঘটিত হলো না।

আর ফলস্বরূপ আপনার বল প্রয়োগ করা বৃথা হয়েছে কেননা এক্ষেত্রে কোন শক্তির প্রয়োগ হয়নি।

অর্থাৎ শুধুমাত্র বল প্রয়োগ করাকেই শক্তি বলে না বরং বল প্রয়োগ করে ত্বরণ বা মন্দন ঘটানোর প্রক্রিয়াকে শক্তি বলা হয়।

আপনি বল প্রয়োগ করলেন কিন্তু ইহার দ্বারা কোন কাজ সংঘটিত হইল না এবং ফলস্বরূপ কোন প্রকার শক্তি প্রয়োগ হলো না।

শক্তি কাকে বলে
শক্তি কাকে বলে?

আমরা নানা ধরনের শক্তি দেখতে পাই এবং যে শক্তি দ্বারা কোন কাজ নিয়ন্ত্রিত হয়ে সেটিকে মূলত শক্তি বলা হয়। শক্তির মূল হলো কাজ করা অর্থাৎ কাজ সংঘটিত হলে শক্তি সংঘটিত হবে এবং কাজে সংঘটিত না হলে শক্তি সংঘটিত হবে না।

মনে করেন আপনি আপনার পুরো শক্তি দিয়ে একটি ইটকে তার স্থান পরিবর্তন করালেন এবং এক্ষেত্রে একটি কাজ সংঘটিত হলো অর্থাৎ শক্তির প্রয়োগ হলো। আবার আপনি আপনার পুরো শক্তি ব্যবহার করে একটি বাসকে ঢাকা দিয়ে ত্বরণ বা মন্দন ঘটাতে পারলেন না তাহলে এক্ষেত্রে কোন শক্তি প্রয়োগ হয়নি।

মনে রাখবেন শক্তির কোন সৃষ্টি-ধ্বংস হয় না বরং রূপ পরিবর্তন হয় অর্থাৎ শক্তি প্রয়োগ করার ফলে ত্বরণ থেকে মন্দন ঘটে।

আপাতন দৃষ্টিতে আমরা সকলে মনে করি শক্তি বলতে শুধুমাত্র বল প্রয়োগ করাকে বোঝানো হয় তবে, এই কথাটি মোটেও সত্য না।

বরং বল প্রয়োগ করে কোন কাজ সংগঠিত হওয়ার পর বা কাজ সংগঠিত করার প্রক্রিয়ার নামই হচ্ছে শক্তি।

অথবা কাজ করা সামর্থ্য বা কাজ করার জন্য প্রয়োজনীয় বল কে শক্তি বলা হয়।

শক্তির নিত্যতা সূত্র

শক্তির নিত্যতা সূত্র: শক্তির কোনো প্রকার সৃষ্টি বা ধ্বংস নেই, এটি কেবলমাত্র এক রূপ থেকে এক বা একাধিক রূপে রূপান্তরিত হতে পারে। শক্তির নিত্যতার সূত্র কে অপর ভাষায় বা প্রতিশব্দ হিসেবে শক্তির সংরক্ষণশীলতা সূত্র বলা হয়।

অর্থাৎ শক্তির যেহেতু কোন প্রকার সৃষ্টি-ধ্বংস হয় না সুতরাং ইহার দ্বারা এটি স্পষ্ট যে এটি স্থির থাকে অথবা সংরক্ষণ থাকে।

যেহেতু শক্তি সর্বদা সংরক্ষণ থাকে তাই এটিকে শক্তির সংরক্ষণশীলতার সূত্র বা শক্তির নিত্যতার সূত্র বলা হয়।

শক্তি বলতে বল প্রয়োগ করাকে বোঝানো হয় না বরং বল প্রয়োগ করে কোন কাজ করার সামর্থ্য অর্জন করাকে বোঝানো হয়।

বল করলেই কাজ সংঘটিত হবে এমনটি না বরং শক্তি সংঘটিত হওয়ায় কাজ সম্পন্ন হবে এবং কাজ সম্পন্নে শক্তি সংঘটিত হবে।

শক্তির নিত্য তার সূত্র থেকে শব্দের কোন প্রকার ক্ষয় হয় না বরং মহাকর্ষে যতটুকু শক্তি রয়েছে তা চিরকাল সংরক্ষিত থাকে এবং কোনরূপ পরিবর্তন হয় না। পরিবর্তন হয় না বলতে ভুল হবে বরং এটি স্থির থাকে তবে নিজের রূপ পরিবর্তন করে এক বা একাধিক শক্তিতে।

যেমন চৌম্বক ক্ষেত্র দ্বারা আমরা বিদ্যুৎ তৈরি করতে সক্ষম অর্থাৎ আমরা চুম্বক শক্তিকে কাজের রূপান্তর করে বিদ্যুৎ তৈরি করতে পারতেছে।

আর এক্ষেত্রে শক্তির কোন ক্ষয় হয় না বা ধ্বংস হয় না বরং শক্তিতে এক শক্তি থেকে অন্য শক্তিতে রূপান্তর হচ্ছে।

শক্তি বলতে কাজ করার সামর্থকে বোঝানো হয় এবং কাজ করার সামর্থ্য তখনই হবে যখন শক্তি প্রয়োগ হবে।

আমাদেরকে আমাদের মন থেকে ভ্রান্ত ধারণা দূর করতে হবে এবং শক্তি সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা রাখতে হবে।

শক্তি সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা এটাই যে শক্তি কখনো কাজ ছাড়া সম্পন্ন হয় না এবং যখন কাজ সম্পন্ন হয় তখনই কেবলমাত্র শক্তি সংঘটিত হয়। যেমন আমরা পূর্বে উল্লেখ করেছি যে চৌম্বক ক্ষেত্র থেকে তড়িৎ উৎপন্ন করা হচ্ছে এবং এক্ষেত্রে অবশ্যই কাজ সংঘটিত হচ্ছে। আর কাজ সংঘটিত হওয়ার কারণে শক্তি উৎপন্ন হচ্ছে বা শক্তির প্রভাব বিস্তার পাচ্ছে।

উপসংহার:

শক্তি কাকে বলে এবং শক্তির নিত্যতা সূত্র আশা করি আপনারা পরিপূর্ণ জ্ঞান অর্জন করতে পেরেছেন আমাদের এই পোস্টটি পড়ার মাধ্যমে।

আমি সম্পূর্ণ জ্ঞান প্রদান করার চেষ্টা করেছে এবং আশা করে আপনারা শক্তি সম্পর্কে পরিপূর্ণ জ্ঞান অর্জন করতে পেরেছেন।

তবে এক একটি অবশ্যই আপনাকে মনে রাখতে হবে যে কখন শক্তি সংঘটিত হচ্ছে এবং কখন বল সংঘটিত হচ্ছে।

অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে শক্তি ছাড়া কখনো কাজ সংঘটিত হয় না এবং বল প্রয়োগ করা ছাড়া কখনো শক্তির সংঘটিত হয় না।

অর্থাৎ সম্পূর্ণ ভাষায় বলতে গেলে কাজ এবং শক্তি উভয়ের মূল উৎস হচ্ছে বল কেননা বল ছাড়া কখনো শক্তির সংগঠিত হবে না এবং কাজের সংঘটিত হবে না। তবে শুধুমাত্র বল প্রয়োগ করলে শক্তি স্থির থাকে না বরং বল প্রয়োগ করা কাজ সম্পন্ন করতে হয় তারপর শক্তি উৎপন্ন হয়। এই ছিল শক্তি কাকে বলে নিয়ে একটি খুব সুন্দর পোষ্ট।

আরও পড়ুন: পুষ্টি সমস্যা প্রতিরোধে আমাদের স্লোগান

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top