রোগ কাকে বলে? রোগ কি? রোগের লক্ষণ, মাধ্যম ও প্রতিকার

রোগ কাকে বলে: কোন জীবের দেহের অথবা মনের  বিশেষ অস্বাভাবিক অবস্থা, যা আমাদের শারীরিক, মানুষিক এবং  কার্যক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে সক্ষম তাকে রোগ বলে।

এক কথায় রোগ বা অসুস্থতা হলো: দেহের বা মনের অস্বাভাবিক অবস্থা, দেহের কোন অংশের স্বাস্থ্য হানি বা অক্ষমতা। কোন জীব বা ব্যক্তি যদি কোন রোগ দ্বারা আক্রান্ত হয় তাহলে আমরা তাকে বলি অসুস্থ। রোগ বলতে স্বাভাবিক অবস্থা থেকে অস্বাভাবিক অবস্থা কে বুঝানো হয়।

রোগ কাকে বলে
রোগ কাকে বলে

অর্থাৎ কোন ব্যক্তি যখন সুস্থ থাকে তখন সে তার সকল কাজ স্বাভাবিকভাবে করতে পারে কিন্তু যখন কোন ব্যক্তি অসুস্থ হয়ে পড়ে তখন তার সকল কাজে অস্বাভাবিকতা বিরাজ করে। তাকে তার দেহের দিক থেকেও স্বাভাবিক লাগে এবং মনের দিক থেকেও অনেক অস্বাভাবিক লাগে। অর্থাৎ রোগ বলতে শরীর এবং মন উভয় অংশের দুর্বলতা ও অসুস্থতাকে বোঝানো হয়।

মূলত বলা যায় যে, রোগ হচ্ছে শারীরিক ও মানসিক উভয় দুর্বলতার মূল কারণ এবং এর মাধ্যমে শান্তি পাওয়া যায় না। অর্থাৎ রোগ হওয়ার মাধ্যমে শারীরিক ও মানসিক দিয়ে কোন প্রকার শান্তি পাওয়া যায় না বরং অশান্তিতে থাকতে হয়।

রোগের লক্ষণ

আমরা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকি। আর এ বিভিন্ন রোগের লক্ষণও হয় বিভিন্ন রকম। ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত রোগীর রোগের লক্ষণ একরকম, আবার জীবাণু দ্বারা আক্রান্ত ব্যক্তির রোগের লক্ষণ অন্যরক্‌ম। তবে কতিপয় কিছু লক্ষণ এখানে উল্লেখ করা হলো:

  • শরীরে ব্যথা অনুভূত হওয়া।
  • জ্বর জ্বর ভাব।
  • মাথা ব্যথা করা।
  • স্বাভাবিকের তুলনায় কম ক্ষুধা লাগা বা কম খাওয়া।
  • ঠান্ডা লাগা বা প্রেসারের কারণে অধিক গরম লাগা।
  • শরীর শুষ্ক বা খুসখুসে হয়ে যাওয়া।
  • শরীর তৈলাক্ত হয়ে যাওয়া।
  • কোন কাজ করতে গিয়ে ক্লান্তি ভাব বিরাজ করা।
  • ঘন ঘন কাশি হওয়া।
  • পেটের সমস্যা হলে পেটের মধ্যে ব্যথা অনুভূত হওয়া।

রোগের আরও অনেক লক্ষণ রয়েছে বিভিন্ন রোগের বিভিন্ন লক্ষণ। যেমন এজমা হলে আপনার শ্বাসকষ্ট হবে অর্থাৎ শ্বাস নিতে কষ্ট হবে। ডায়াবেটিস হলে আপনার ঘন ঘন প্রসাব  হবে।  হৃদরোগ হলে আপনার বুকে ব্যথা অনুভূত হবে।

রোগের আক্রমণের মাধ্যম

যে কোন প্রাণী বা উদ্ভিদ যখন কোন রোগে আক্রান্ত হয় তখন এর পেছনে থাকে সাধারণ ও জটিল কিছু কারণ। যে সকল কারণের জন্য মূলত উদ্ভিদ বা প্রাণে বিভিন্ন রোগের আক্রমণের শিকার হয় এবং অসুস্থ হয়ে পড়ে। এবং শারীরিক ও মানসিক রোগ সৃষ্টির কারণ, বিভিন্ন মাধ্যম দ্বারা আমাদের শরীরে এসে প্রবেশ করে।

নিচে কতিপয় রোগ আক্রমণের মাধ্যম আপনাদের সামনে উপস্থাপন করা হলো:

  • পরিবেশগত বিভিন্ন মাধ্যমে আমরা বিভিন্ন  ভাবে অসুস্থ হতে পারি। এখানে কিছু মাধ্যমের কথা উল্লেখ করা হলো:
  • একজনের ব্যবহারকৃত ব্লেড পুনরায়  অন্য জনের জন্য ব্যবহার করা।
  • একজনের ব্যবহারকৃত ইনজেকশন দিয়ে অন্যজনকে আবার ইনজেকশন দেওয়া।
  • নোংরা আবর্জনা যুক্ত পানি ব্যবহার করা বা নোংরা পানি পান করা।
  • দূষিত এলাকায় বসবাস করা।
  • স্পর্শ। বেশকিছু  রোগ আছে যেগুলো স্পর্শের মাধ্যমে ছড়ায় যেমনঃ ছত্রাক জনিত চর্ম রোগ ।
  • যৌন স্পর্শ। এইডস রোগ যৌনবাহিত রোগ।
  • খাদ্য পানিবাহিত রোগ যেমনঃ কলেরা, ডায়রিয়া।
  • বায়ুবাহিত রোগ যেমনঃ  যক্ষ্মা, নিউমোনিয়া।

এগুলো হলো রোগ সংক্রমণের মাধ্যম যেগুলোর দ্বারা আমরা রোগ আক্রান্ত হয়ে এবং অসুস্থ হওয়ার মাধ্যমে অশান্তি লাভ করি। আপনি এই সকল মাধ্যম হতে আপনার শরীরকে নিরাপদে রাখতে পারেন এবং পরিষ্কার থাকতে পারেন তাহলে অবশ্যই আপনি যে কোন রোগ থেকে মুক্তি পাবেন।

তবে আরো একটি বিষয়ের লক্ষ্য রাখবেন সবচেয়ে বেশি করে সেটি হচ্ছে আঘাত পাওয়ার বিষয়টি। বর্তমানে আঘাতের কারণে জটিল রোগের সৃষ্টি হয় এবং এই সকল রোগের চিকিৎসা অনেক বেশি ব্যায়বহুল ও সময় সাপেক্ষ হয়ে থাকে।

রোগের প্রতিকার এবং প্রতিরোধে করনীয়

নানা কারণে প্রতিটি জীব বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকে এবং রোগে আক্রমণ হওয়ার এই বিষয়টি অনেক স্বাভাবিক। তবে রোগে আক্রান্ত হওয়ার পর এর প্রতিকার ও প্রতিরোধ সম্পর্কে জেনে রাখা অনেক জরুরী সুস্থতার জন্য।

নিচে কতিপয় রোগের প্রতিকার ও প্রতিরোধে করণীয় কিছু কাজ উল্লেখ করা হলো:

  • ময়না আবর্জনা যেখানে সেখানে অর্থাৎ বাসা বাড়ি চলাচলের স্থানে না ফেলা ।
  • শারীরিক কোন অসুস্থতা মনে হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া।
  • দূষণমুক্ত পরিষ্কার পানি পান করা অর্থাৎ পানি ফুটিয়ে পান করা।
  • যে কোন কিছু খাওয়ার আগে সবসময় ভালোমতো হাত পরিষ্কার করে নেওয়া।
  • দূষিত বায়ু থেকে রক্ষার জন্য মাস্ক ব্যবহার করা। 
  • যেখানে সেখানে অর্থাৎ বাসা বাড়ি চলাচলের স্থানে কফ বা থুতু না ফেলা।
  • সব সময় শরীর পরিষ্কার রাখা।
  • আর বেশি বেশি করে গাছ বা বৃক্ষ রোপন করা।

আশা করি রোগ কাকে বলে এবং রোগ সম্পর্কে বিস্তারিত অনেক তথ্য এই পোষ্টের মাধ্যমে উপস্থাপন করতে পেরেছি। শারীরিক অসুস্থতার মূল কারণ এবং বিভিন্ন প্রকার অস্থিরতার মূল কারণ হচ্ছে এই রোগ। রোগ হচ্ছে অসুস্থতা এবং শারীরিক দুর্বলতার মূল কারণ, যার মাধ্যমে মৃত্যু পর্যন্ত ঘটে থাকে।

আর সর্বক্ষেত্রে বলা যায় যে রোগ আমাদের শরীরের জন্য অনেক বেশি ক্ষতিকর এবং সেই সেই সাথে পরিণতি অনেক খারাপ হয়।

আরও পড়ুন: খাদ্য কাকে বলে?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!