রাদারফোর্ডের পরমাণু মডেল ১৯১১ খ্রিস্টাব্দে বিজ্ঞানী রাদারফোর্ড তার আলফা কণার বিচ্ছুরণ পরীক্ষা দ্বারা প্রস্তাবনা করেন। বিজ্ঞানের রাদারফোর্ড হতে প্রস্তাবিত এই মডেলটির সবচেয়ে বড় সাফল্য হচ্ছে নিউক্লিয়াসের সনাক্তকরণ ও এর আবিষ্কার।
তবে রাদারফোর্ড তার পরমাণু মডেলের নিউক্লিয়াস আবিষ্কার করার সময় একটি পরীক্ষা করেছিলেন যে পরীক্ষা বিভিন্ন উপকরণ ব্যবহার হয়েছিল। আর অবশ্যই আমাদের এই সকল উপকরণের নাম জানতে হবে যে সকল উপকরণ ব্যবহার করে রাদারফোর্ড নিউক্লিয়াস আবিষ্কার করেছিলেন।
যেহেতু পরমাণুর গঠন ব্যাখ্যা করতে গিয়ে একটি বড় বিষয় হচ্ছে নিউক্লিয়াস তাই এ নিউক্লিয়াসের আবিষ্কার অনেক বেশি অনুপ্রাণিত করেছিল। আর এ অনুপ্রেরণা ছিল পদার্থ সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানার যার ফলে আমরা বর্তমানে ইলেকট্রন, প্রোটন এবং নিউট্রনের নাম শুনতে পাই।

রাদারফোর্ড তার পরমাণু মডেলের প্রস্তাবনা করার পূর্বে যে পরীক্ষা করেছিল নিউক্লিয়াস আবিষ্কারের জন্য তার উপকরণ সমূহ জানার চেষ্টা করি।
নিউক্লিয়াস আবিষ্কারের সময় রাদারফোর্ডের পরীক্ষায় ব্যবহৃত উপকরণ গুলো হলো:
- তেজস্ক্রিয় মৌল থেকে নির্গত আলফা কণা,
- পাতলা সোনার পাত যার প্রত্য 0.0004 সেন্টিমিটার পুরু,
- জিংক সালফেট এর আবরণ যুক্ত একটি আলো সংরক্ষণকারী পর্দা।
এগুলো হলো রাদারফোর্ডের নিউক্লিয়াস আবিষ্কার এর সময় পরীক্ষায় ব্যবহৃত উপাদান সমূহের নাম সমূহ। আর এই সকল উপকরণ ব্যবহার করে মূলত বিজ্ঞানের রাদারফোর্ড তার মডেলের সাফল্য হিসেবে নিউক্লিয়াস শনাক্ত ও আবিষ্কার করতে পেরেছিলেন।
রাদারফোর্ডের পরমাণু মডেলের সিদ্ধান্ত
আমরা যখন রাদারফোর্ড পরমাণুর মডেলটি সম্পর্কে জানতে পাই তখন রাসায়নিকভাবে একটি সিদ্ধান্ত নিতে পারি বা নেওয়া হয়েছে। আপনি পাঠ্যবইয়ে খুঁজলেই রাদারফোর্ডের এই সিদ্ধান্ত খুঁজে পাবেন তবে সে সিদ্ধান্তগুলো অনেক বড় আকারে থাকার কারণে মুখস্ত করা মুশকিল হয়।
তাই আমি শুধুমাত্র সারকথা উল্লেখ করার মাধ্যমে আপনাকে রাদারফোর্ডের পরমাণু মডেলের সিদ্ধান্তগুলো জানিয়ে দিব। আর আমাদের দেওয়া এই সিদ্ধান্তগুলো আপনি জানার মাধ্যমে খুবই সহজে মুখস্ত করতে পারবেন এবং পরীক্ষার রাদারফোর্ড পরমাণু মডেলের সিদ্ধান্ত দিতে পারবেন।
- পরমাণুর অধিকাংশ স্থানে ফাঁকা এবং এই ফাঁকা স্থানের মধ্যে ইলেকট্রন বিদ্যমান থাকতে পারে।
- আলফা কণা পরীক্ষায় কম সংখ্যক আলফা কণা বিপরীতে ফিরে আসে এবং প্রমাণিত হয় পরমাণুর ভিতরে বিকর্ষণ ধর্ম বিশিষ্ট নিউক্লিয়াস রয়েছে।
- যেহেতু আলফা কণা ধনাত্মক চার্জযুক্ত এবং এক্ষেত্রে বিকর্ষিত হয় তাই পরমাণুর কেন্দ্র হবে ধনাত্মক চার্জযুক্ত।
- ধারে এবং ধনাত্মক চার্জযুক্ত বিকর্ষণ ধর্ম বিশিষ্ট এই কেন্দ্রের নাম দেওয়া হয় নিউক্লিয়াস।
- রাদারফোর্ড মডেল নিউক্লিয়াসের চার্জের পরিমাণের ওপর ভিত্তি করে পারমাণবিক সংখ্যার হিসাব করা যায়, কেননা চার্জ সংখ্যা পারমাণবিক সংখ্যার সমান হয়।
এগুলো ছিল রাদারফোর্ড পরমাণু মডেলের তথ্য অনুযায়ী নেওয়া কিছু সিদ্ধান্ত এবং রাদারফোর্ড পরমাণু মডেলের তথ্য এখান থেকে শেষ নয়।
বরং রাদারফোর্ড পরমাণু মডেলের কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে যে কারণে এই মডেলটি বেশি গ্রহণযোগ্যতা পায়নি চলুন সেই সিদ্ধান্ত জানি।
রাদারফোর্ডের পরমাণু মডেলের সীমাবদ্ধতা
আমরা রাদারফোর্ড পরমাণু মডেল থেকে যেরকম ভাবে সিদ্ধান্ত প্রদান করতে পারে ঠিক অনুরূপভাবে এই মডেলদের কিছু সীমাবদ্ধ রয়েছে। আর এ সীমাবদ্ধতা গুলো আমরা বিভিন্ন প্রকার গবেষণা করার মাধ্যমে বা বিজ্ঞানীরা গবেষণা করার মাধ্যমে জানার জন্য আগ্রহ চেষ্টা করেছে।
আর সঠিকভাবে এই মডেলটি দ্বারা সেই সকল সীমাবদ্ধতা গুলো জানা না পাওয়ার কারণে এই মডেলের কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে।
- পরমাণুতে উপস্থিত নিউক্লিয়াসের সাথে ইলেকট্রনের সম্পর্ককে সৌরজগতের সাথে তুলনা করা হয়েছে যা মোটেও সঠিক নয়।
- কেননা সৌরজগতের সম্পূর্ণ রূপে চার্জে নিরপেক্ষ তবে পরমাণুর মধ্যে রয়েছে চার্জ যুক্ত স্থল।
- ম্যাক্সওয়েলের তথ্য অনুযায়ী চার্জ যুক্ত বস্তু কণা বৃত্তাকার কক্ষপথে ঘুরলে ক্রমাগত শক্তি বিকিরণ করার মাধ্যমে নিউক্লিয়াসের পতিত হবে, আর এ অনুসারে রাদারফোর্ডের পরমাণু মডেল সম্পূর্ণরূপে অস্থায়ী অবস্থা হওয়ার কথা। তবে বাস্তব জীবনে এটি কখনো ঘটে না।
- হাইড্রোজেন পরমাণুর বর্ণালী সম্বন্ধে কোন সুষ্ঠু ব্যাখ্যা ও ধারণা এ মডেল থেকে পাওয়া সম্ভব নয়।
- আবর্তনশীল ইলেকট্রনের শক্তিস্তর বা কক্ষপথের আকার, আকৃতি ও পরিভ্রমণ কাল সম্পর্কে কোন ধারণা পাওয়া যায় না রাদারফোর্ড পরমাণু মডেল থেকে।
- একাধিক ইলেকট্রন বিশিষ্ট পরমাণুর মধ্যে ইলেকট্রন গুলো নিউক্লিয়াসকে কিভাবে পর্যায়ক্রমে পরিভ্রমণ করে এর ধারণা এ মডেল থেকে পাওয়া সম্ভব নয়।
এগুলো হলো রাদারফোর্ড মডেলের সীমাবদ্ধতা এবং রাদারফোর্ড মডেল সম্পর্কে সম্পূর্ণ ধারণা অর্জন করার জন্য সিদ্ধান্ত ও সীমাবদ্ধতা মনে রাখতে হবে।
রাদারফোর্ড পরমাণু মডেলের উপর ভিত্তি করে আজকে আমাদের এই পোস্টটি ছিল এ পর্যন্ত এবং মোটামুটি ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করেছি।
আরও পড়ুন: পরমাণু কাকে বলে?