যৌগমূলক কাকে বলে: একাধিক মৌলের একাধিক পরমাণু বা আয়ন পরস্পরের সাথে যুক্ত হয়ে যে ধনাত্মক বা ঋণাত্মক আধান বিশিষ্ট পরমাণু গুচ্ছ তৈরি করে, তাকে যৌগমূলক বলে। প্রত্যেকটি যৌগমূলক এক একটি মৌলের আয়নের ন্যায় আচরণ করে থাকে।
এই যৌগমূলক ধনাত্মক কিংবা ঋণাত্মক যেকোনো আধান বিশিষ্ট হতে পারে এবং এটি নির্ভর করে তার আধানের উপর। যদি যৌগমূলক গঠনের সময় একাধিক মৌলের একাধিক পরমাণু ঋণাত্মক পরমাণু গুচ্ছ তৈরি করে তাহলে অবশ্যই যৌগমূলক হবে ঋণাত্মক।
যৌগমূলক গুলো সাধারণত একটি পরমাণুর মধ্যে আচরণ করে থাকে আবার যদি কখনো এরা বিক্রিয়া অংশগ্রহণ করে তাহলে অপরিবর্তিত থাকে।
তাহলে এখান থেকে এটি স্পষ্টভাবে বোঝা গেল যে যৌগমূলক এর নাম যদিও বা যৌগ হিসেবে আমরা তারপর মূলক ব্যবহার করেছি।
কিন্তু প্রকৃতপক্ষে যখন একটি যৌগমূলক গঠন হয় তখন একটি পরমাণুর মতো আচরণ করে থাকে এবং শুধু এটি পরমাণুগুচ্ছ হয়।
আমরা এখন বলতে পারি যে যৌগমূলক তো একাধিক পরমাণু দ্বারা গঠিত হয় তাহলে এটি কেন একটি মৌলের মত আচরণ করবে। এর উত্তরা সহজ কেননা যৌগমূলক একই মৌলের একাধিক পরমাণু দ্বারা গঠিত হয় এবং এ কারণে একটি মৌল থাকার জন্য উক্ত মৌলের আচরণ করে।
তবে এখন চলুন আমরা দেখে নেই কিভাবে একটি যৌগমূলকের যোজনী বের করতে পারে এবং হিসাব করতে পারি আমরা।
যৌগমূলকের যোজনী বের করার নিয়ম
আমরা যদি সঠিক নিয়ম অবলম্বন না করে তাহলে আমরা সঠিকভাবে যৌগমূলকের যোজনী বের করতে পারবো না। আর যৌগমূলকের যোজনী বের করতে না পারার কারণে আমরা কোন যৌগমূলক সম্পর্কে ধারণা পেতে পারবো না এবং কাজা লাগাতে পারবো না উক্ত যৌগমূলক।
তাই একটি যৌগমূলক কে কাজে লাগানোর জন্য আমাদেরকে প্রথমে উক্ত যৌগমূলকের যোজনী বের করে নিতে হবে।
একটি যৌগমূলকের যোজনী বের করাতে অবশ্যই আপনাকে আমাকে সঠিক নিয়ম অবলম্বন করতে হবে যে নিয়মে যৌগমূলকের যোজনী বের হয়।
যৌগমূলকের যোজনী বের করার নিয়ম নিচে উল্লেখ করা হলো:
- প্রথমেই আপনার প্রশ্নপত্রে আসা বা আপনার সামনে আসা যৌগমূলকের কেন্দ্রীয় পরমাণু নির্ণয় করতে হবে।
- পরবর্তীতে কেন্দ্রীয় পরমাণুর যোজনী বা যোজ্যতা ইলেকট্রন কত তা নির্ণয় করতে হবে।
- এরপর কেন্দ্রীয় পরমাণুর জারণ মান কত তা মনে রাখতে হবে বা বের করে নিতে হবে।
- কেন্দ্রীয় পরমাণু এবং সেই সাথে যৌগমূলকে উপস্থিত অন্যান্য মৌল গুলোর জারণ মান বের করতে হবে।
- জারণ মান বের করার পর কোন মৌলগুলো কয়টি পরিমাণে যুক্ত আছে তা দ্বারা জারণ মানের সাথে গ্রহণ করতে হবে।
- এভাবে মান বসার পর সমান-সমান চিহ্ন দিয়ে যে কোন একটি প্রতীক (x) আপনি বসাতে পারেন।
- এবং এরপর শুধুমাত্র ছোট্ট একটি ক্যালকুলেশন করার মাধ্যমে আপনি যোজনী বের করতে পারবেন যৌগমূলকের।
এগুলো ছিল কিছু নিয়ম যে নিয়মগুলো অবলম্বন করে আপনি খুব সহজে যে কোন যৌগমূলকে যোজনী বের করতে পারেন। আর যোজনে বের করার পর উক্ত যৌগমূলকের ধর্ম সম্পর্কে জানার মাধ্যমে খুবই সহজে যৌগমূলক নিয়ে কাজ করতে পারেন বা লিখতে পারেন।
উপসংহার:
যৌগমূলক কাকে বলে এবং যৌগমূলক এর যোজনী বের করার নিয়মের উপর ভিত্তি করে পোস্টটি তথ্য দিয়ে সাজানো।
আর বিজ্ঞান বিভাগ ও রসায়ন নিয়ে পড়ায় আপনাকে যে সকল যৌগমূলক নিয়ে ধারণা রাখতে হবে তার মধ্যে এই দুইটি প্রাধান্য।
কেননা যৌগমূলক নিয়ে গবেষণা করতে গেলে প্রথমে এর সংজ্ঞা জানতে হয় যে কেন এটিকে যৌগমূলক বলা হয়। এবং এরপর যৌগমূলক নিয়ে যেকোনো ধরনের গবেষণা করার জন্য আমাদের প্রয়োজন হবে এর যোজন এর অর্থাৎ যৌগমূলকের যোজনীর।
আর যেহেতু একাধিক যৌগমূলকের একাধিক যোজনী থাকতে পারে তাই আমাদেরকে এটি মুখস্থ রাখার মতো পরিশ্রম করার দরকার নেই।
কেননা আমরা খুবই সহজে নিয়ম অবলম্বন করার মাধ্যমে যে কোন যৌগমূলকের যোজনী বের করে হিসাব করতে পারি।
সর্বশেষে একটি কথা বলতে চাই, যৌগমূলক হচ্ছে একই মৌল নিয়ে গঠিত যৌগ যেখানে একই মৌলের পরমাণু গুচ্ছ ভাবে অবস্থান করে। আর অবশ্যই এক্ষেত্রে যৌগমূলকটির যাবতীয় বৈশিষ্ট্য রাসায়নিকভাবে একটি মৌলের মত আচরণ করে থাকে।
আরও পড়ুন: শিখা পরীক্ষা কাকে বলে?