যোজ্যতা ইলেকট্রন কাকে বলে: কোন মৌলের ইলেকট্রন বিন্যাসে সর্বশেষ কক্ষপথে যে ইলেকট্রন বা ইলেকট্রন সমূহ থাকে তার সংখ্যাকে যোজ্যতা ইলেকট্রন বলা হয়। যোজ্যতা ইলেকট্রন বলতে শুধুমাত্র সর্বশেষ কক্ষপথে অবস্থিত ইলেকট্রনের সংখ্যাকে বোঝানো হয়।
অর্থাৎ পূর্বের অরবিটাল পূর্ণ করার পর পরবর্তী অরবিটালে যে কয়েকটি ইলেকট্রন থাকে তার সংখ্যাই হচ্ছে যোজ্যতা ইলেকট্রন।
আপনি যদি কোন মৌলের যোজ্যতা ইলেকট্রন বের করতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে এর ইলেকট্রন বিন্যাস করতে পারতে হবে বা কিভাবে করে তা জানতে হবে। আর আপনি যদি ইলেকট্রন বিন্যাস সম্পর্কে বা ইলেকট্রন বিন্যাসের সংজ্ঞা না জানেন তাহলে আমাদের সর্বশেষে দেওয়াল লিঙ্ক এর মাধ্যমে তথ্য জেনে নিতে পারেন।

কোন একটি মৌলের যখন আমরা ইলেকট্রন বিন্যাস করি তখন ইলেকট্রন বিন্যাসের সর্বশেষ শক্তিস্তর পর্যন্ত আমরা ইলেকট্রন বসাতে থাকি।
আর যখন আমরা সর্বশেষ শক্তিস্তরে গিয়ে যতগুলো ইলেকট্রন বসাই বা যতগুলো ইলেকট্রন বসাতে পারে তার সংখ্যায় হচ্ছে যোজ্যতা ইলেকট্রন।
যখন মৌলের ইলেকট্রন বিন্যাস করবো তখন সর্বশেষ শক্তিরস্তরে যতগুলো ইলেকট্রন বসাতে পারব তার সংখ্যা হবে যোজ্যতা ইলেকট্রন সংখ্যা।
মনে হয়, আপনাকে যদি উদাহরণ দেওয়া যায় তাহলে আপনি খুবই সহজেই এই যোজ্যতা ইলেকট্রনের ধারণাটি পেতে পারেন।
আর তাই আমরা এখন যোজ্যতা ইলেকট্রনের কিছু উদাহরণ দেখে বোঝা পরবর্তী হেডিং এ আমরা আলোচনা করার চেষ্টা করেছি।
যোজ্যতা ইলেকট্রনের উদাহরণ দাও?
যোজ্যতা ইলেকট্রনের উদাহরণ হিসেবে আমরা পটাশিয়াম এবং অক্সিজেনের নাম দিয়ে উদাহরণ দেখতে পারি। আমরা পটাশিয়াম এবং অক্সিজেন উভয় মৌলের ইলেকট্রন বিন্যাসের সর্বশেষ কক্ষপথে পটাশিয়ামের একটি এবং অক্সিজেনের ছয়টি ইলেকট্রন থাকে।
আর ইলেকট্রন বিন্যাস অনুযায়ী পটাশিয়ামের সর্বশেষ কক্ষপথে একটি ইলেকট্রন থাকায় যোজ্যতা ইলেকট্রন হবে একটি পটাশিয়ামের।
আর ইলেকট্রন বিন্যাস অনুযায়ী অক্সিজেনের সর্বশেষ কক্ষপথে ছয়টি ইলেকট্রন থাকায় যোজ্যতা ইলেকট্রন হবে ছয়টি অক্সিজেনের।
কঠিন উদাহরণের মধ্যে, নাইট্রোজেন এর নাম দিয়ে আমরা কঠিনভাবে যোজ্যতা ইলেকট্রনের উদাহরণ দিতে পারে। ইলেকট্রন বিন্যাস অনুযায়ী নাইট্রোজেনের সর্বশেষ কক্ষপথ হচ্ছে L এবং নাইট্রোজেনের L কক্ষপথে ইলেকট্রন রয়েছে পাঁচটি।
তাই সর্বশেষ কক্ষপথ অনুযায়ী বলা যায় নাইট্রোজেনের যোজ্যতা ইলেকট্রন সংখ্যা হচ্ছে মোট পাঁচটি এবং সর্বশেষ কক্ষপথ L।
এগুলো হচ্ছে যোজ্যতা ইলেকট্রনের উদাহরণ এবং আমরা ইলেকট্রন বিন্যাস করার মাধ্যমে এইভাবে যোজ্যতা ইলেকট্রন পাই।
ইচ্ছে করলে একটি মৌল নির্বাচন করে তার ইলেকট্রন বিন্যাস করে সর্বশেষ শক্তিস্তরের ইলেকট্রন সংখ্যা বের করে যোজ্যতা ইলেকট্রন পেতে পারেন।
তবে এর জন্য আপনাকে, ইলেকট্রন বিন্যাসের নিয়ম অবলম্বন করে ইলেকট্রন বিন্যাস করতে হবে যেন সঠিক যোজ্যতা ইলেকট্রন বের হয়।
তবে এই দিকটি লক্ষ্য রাখবেন যে ইলেকট্রন বিন্যাস করার সময় সর্বশেষ কক্ষপথে পুরোটাই ধরবেন যেন সবগুলো ইলেকট্রন নির্বাচন হয়। এখানে সর্বশেষ কক্ষপথ হচ্ছে সকল কোয়ান্টাম অরবিটালের ইলেকট্রন সংখ্যা সেগুলোর সংখ্যাকে বোঝানো হয় যেগুলো একত্র করে যোজ্যতা ইলেকট্রন হবে।
শেষ কথা:
যোজ্যতা ইলেকট্রন কাকে বলে এ বিষয়ের উপর আমরা উদাহরণ সব ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করেছে আমাদের এই পোষ্টের মধ্যে।
যোজ্যতা ইলেকট্রন হচ্ছে কোন মৌলের ইলেকট্রন বিন্যাসের সর্বশেষ কক্ষপথে অবস্থিত মোট ইলেকট্রন সংখ্যার সমষ্টি।
তবে অবশ্যই এই কথাটি মনে রাখবেন যে সর্বশেষ শক্তিশালী বিদ্যমান ইলেকট্রন কে যোজ্যতা ইলেকট্রন বলা হয় না বরং ইলেকট্রনের সমষ্টিকে বলা হয়। অর্থাৎ আপনি যদি শুধুমাত্র বলেন যে কোন মৌলের ইলেকট্রন বিন্যাসের সর্বশেষ স্তরে অবস্থিত ইলেকট্রন হচ্ছে যোজ্যতা ইলেকট্রন।
তাহলে এই সংজ্ঞাটির একটি ভুল থেকে যায় কেননা একটি শক্তিস্তরে অনেকগুলো ইলেকট্রন থাকতে পারে এটাই স্বাভাবিক।
তাই অবশ্যই যোজ্যতা ইলেকট্রন এর সঙ্গে আমাদেরকে সর্বশেষ কক্ষপথে অবস্থিত ইলেকট্রন সমূহের সমষ্টির কথা বলতে হবে।
এখন কথা হচ্ছে যোজ্যতা ইলেকট্রন বের করার মানে কি, বা রসায়নে যোজ্যতা ইলেকট্রনের গুরুত্ব কতটুকু বা কাজ কতটুকু। মূলত যোজ্যতা ইলেকট্রন দ্বারা আমরা বুঝতে পারি যে উক্ত মৌলে কতগুলো ইলেকট্রন রয়েছে সর্বশেষ কক্ষপথে এবং তা পূর্ণ না অর্থপূর্ণ রয়েছে।
আমরা সর্বশেষ কক্ষপথে অবস্থিত যোজ্যতা ইলেকট্রন বের করি তখন আমরা বুঝতে পারি যে মৌলটি ইলেকট্রন গ্রহণ করবে না ত্যাগ করবে।
এই বিষয়ের উপর ভিত্তি করে বিক্রিয়া নির্ধারণ করা এবং কোন একটি মৌল উপযুক্ত বিক্রিয়ায় নির্ধারণ করা যায় যোজ্যতা ইলেকট্রনের মাধ্যমে।
আরও পড়ুন: ইলেকট্রন আসক্তি কাকে বলে?