যাকাত শব্দের অর্থ কি? যাকাতের সংজ্ঞা, পরিচয় এবং বিধি-বিধান

যাকাত শব্দের অর্থ কি: যাকাত শব্দের অর্থ হলো বৃদ্ধি, উন্নতি, পরিশুদ্ধি, পবিত্রতা এবং পরিচ্ছন্নতা। অর্থাৎ যাকাত দেওয়ার মাধ্যমে সম্পদের পবিত্রতা অর্জন হয় এবং তার বৃদ্ধি ঘটে। যাকাত হচ্ছে ফরজ ইবাদত তবে সকলের ফরজ জন্য নয় এবং এটি ইসলামের মূল পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে একটি।

ইসলাম সম্পূর্ণরূপে যাকাতকে প্রাধান্য দিয়েছে এবং অবশ্যই এর জন্য আপনাকে নির্দিষ্ট পরিমাণ সম্পদের মালিক হতে হবে।

অর্থাৎ আপনি যদি যাকাত দিতে চাচ্ছেন তাহলে অবশ্যই আপনাকে নির্দিষ্ট পরিমাণ সম্পদের মালিক হতে হবে বা প্রয়োজনের অধিক থাকতে হবে।

যাকাতের সংজ্ঞা: নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হওয়ার পর বছরে একবার গরিব-দুঃখীদেরকে নির্দিষ্ট পরিমাণ সম্পদ বন্টন করে দেওয়াকে যাকাত বলা হয়। অবশ্যই আপনাকে যাকাতের জন্য নিসাব পরিমাণ বা প্রয়োজনের অধিক পরিমাণ সম্পদের অধিকারী হতে হবে।

যাকাত শব্দের অর্থ কি
যাকাত শব্দের অর্থ কি?

যদিও হিসাব-নিকাশ অনুযায়ী দেখলে বোঝা যায় যে, যাকাত দেওয়ার ফলে আমাদের সম্পদের পরিমাণ হ্রাস পায়।

কিন্তু বৃদ্ধি করার মালিক আল্লাহ এবং অবশ্যই যাকাত প্রদানের ফলে আপনার সম্পত্তির পরিমাণ বৃদ্ধি পায় এবং সম্পত্তি পবিত্র হয়।

বর্তমানে যদি আবার আমরা যাকাতের থেকে অনেক বেশি অবহেলিত হয়ে পড়েছে কিন্তু এটি অবশ্যই আমাদেরকে যথাযথভাবে আদায় করতে হবে। আমরা যদি এই বিষয়ের উপর অবহেলা করে এবং পরিমাণ মতো যাকাত না দেয় তাহলে অবশ্যই আমাদের সম্পদ পবিত্র হবে না।

আর আমাদের সম্পদ যদি পবিত্র না হয় তাহলে, ওই সম্পদ গ্রহণ করার ফলে আমাদের গুনাহ হতে পারে এবং অন্যের হক নষ্ট হতে পারে। যাকাত হচ্ছে গরীব দুঃখীর হক এবং অবশ্যই আল্লাহ তা’আলা হক নষ্টকারীকে কখনো পছন্দ করেন না, যা হাক্কুল ইবাদতের কঠোর আইন।

ইসলামে যাকাত কখন থেকে ফরজ হয়?

যাকাত সম্পর্কে তথ্য জানার পর এখন একটি বিষয় আমাদেরকে বেশি করে জানতে হবে সেটি হচ্ছে এই যাকাত কখন ফরজ হয়েছে।

অর্থাৎ ইসলামে কি যাকাত পূর্বে থেকে ছিল না নির্দিষ্ট একটি সময় ও জায়গায় এসে ইসলামে যাকাত ফরজ হিসেবে গণ্য হয়েছে।

যাকাত সম্পর্কে সম্পূর্ণ আলোকপাত করতে গেলে এবং জ্ঞান অর্জন করতে গেলে অবশ্যই আমাদেরকে ইসলামে যাকাত কখন ফরজ হয়েছে তা জানতে হবে। আর অবশ্যই সকল তথ্য জানার পর আপনাকে যাকাত আদায় করতে হবে যদি আপনি প্রয়োজনের অধিক পরিমাণ সম্পদের অধিকারী হয়ে থাকেন।

নিচে ইসলামের যাকাত কখন থেকে ফরজ হয় তা কয়েকটি পয়েন্ট আকার উল্লেখ করা হলো:

  • ইসলামে যাকাত মক্কা হতে ফরজ হয় বা ফরজের প্রচলন চালু হয়।
  • তবে যাকাতের নিসাব পরিমাণ ও আনুষাঙ্গিক বিষয় নির্ধারণ হয়েছে দ্বিতীয় হিজরীর সময় মদিনায়।
  • মহান রাব্বুল আলামিন কুরআনুল কারীমে একাধিক আয়াতের দ্বারা যাকাতের দিক নির্দেশনা প্রদান করেছেন।
  • অন্যদিকে আমাদের প্রিয় নবী করি (স.) একাধিক হাদিসে যাকাতের গুরুত্ব এবং মহত্ব নিয়ে আলোচনা করেছেন।

অর্থাৎ ইহার দ্বারা একটি স্পষ্ট যে যাকাতের ধারাবাহিকতা প্রথম শুরু হয় মক্কা থেকে এবং এটি অবশ্যই একটি ফরজ ইবাদত।

তবে যাকাত সকলের জন্য ফরজ ইবাদত নয় এবং সকলের জন্য যাকাত আদায় করার অপর কোন হুঁশিয়ারি করা হয়নি।

বরং যাকাত আদায়ের জন্য সবচেয়ে বেশি হুঁশিয়ারি করা হয়েছে ওই সকল ব্যক্তিদেরকে যাদের কাছে আছে নিসাব পরিমাণ সম্পদ। আপনার কাছে যদি নিসাব পরিমাণ সম্পদে থাকে তবে যদি যাকাত না দেন তাহলে কৃপণ হিসেবে গণ্য হবেন এবং কৃপণ কখনো সহজে জান্নাতে যেতে পারবে না।

যাকাতের পরিচয় এবং বিধি-বিধান

যাকাতের সম্পর্কে সকলের ধারণা রয়েছে এবং এই যাকাত আদায়ের জন্য আপনাকে এর পরিচয় সম্পর্কে জানতে হবে।

যাকাত হচ্ছে ইসলামের ফরজ ইবাদত এবং অবশ্যই এটি আপনার জন্য ফরজ হলে তারপর আদায় করতে হবে সঠিকভাবে।

মুসলিম হিসেবে আমাদেরকে যাকাতের সম্পর্কে ও যাকাতের পরিচয় সম্পর্কে ধারণা লাভ করতে হবে। কেননা আপনি যখন, যাকাতের পরিচয় সম্পর্কে ও বিধি-বিধান সম্পর্কে জানতে পারবেন তখন যাকাত আদায় করার জন্য সঠিকভাবে প্রস্তুতি হতে পারবেন।

নিচে উল্লেখযোগ্য কিছু যাকাতের পরিচয় বিশেষভাবে উপস্থাপন করা হলো:

  • যাকাত একটি ফরজ ইবাদত এবং এটি এমন ফরজ ইবাদত যা সকলের জন্য নয়।
  • যাদের সম্পদ আছে প্রয়োজনের অধিক তাদেরকে অবশ্যই উপযুক্ত সম্পদের আড়াই অংশ যাকাত দিতে হবে।
  • ইসলামের চতুর্থতম মূল স্তম্ভ হচ্ছে যাকাত এবং অবশ্যই এটি আমাদেরকে আদায় করতে হবে যদি নির্দিষ্ট পরিমাণ সম্পদ থাকে।
  • আবার যাকাতের ভাগ নেওয়ার জন্য গরীব-দুঃখীদের প্রয়োজন হবে, যা আপনি নিজের হাতে দিতে পারেন।
  • কোন ব্যক্তির যদি প্রয়োজনের অধিক পরিমাণ সম্পদ না থাকে তাহলে সে যদি যাকাত আদায় না করে তাহলে কোন সমস্যা নেই।

এগুলো হলো যাকাতের কিছু পরিচয় এবং এ পরিচয় গুলোর সম্পর্কে আমাদের সকলের ধারণা রাখা প্রয়োজন। যাকাত হচ্ছে ফরজ ইবাদতের অন্তর্ভুক্ত এবং এই ইবাদতের আমরা যারা নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক আছে তাদেরকে যথাযথভাবে সম্পদের পবিত্রতার জন্য আদায় করতে হবে।

যাকাতের বিধি-বিধান: যাকাতের বিধি-বিধান বলতে এটি একটি ফরজ ইবাদত এবং অবশ্যই তাদের ওপর যারা নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক।

যাকাত দেওয়ার বিধান অনুযায়ী আপনাকে আপনার সম্পদের আড়াই অংশ পৃথক করে নিয়ে তা গরীব-দুঃখীদের মাঝে বন্টন করে দিতে হবে।

আরও পড়ুন: সাওম শব্দের অর্থ কি?

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top