যমুনা সেতু কত কিলোমিটার: যমুনা সেতুর দৈর্ঘ্য 4.8 কিলোমিটার, সেতুটির প্রস্থ 18.50 মিটার, সেতুটি নির্মাণে ব্যয় হয় 696 মিলিয়ন মার্কিন ডলার।।
২০২২ সালের পূর্বে অর্থাৎ পদ্মা সেতু উদ্বোধন এর পূর্বে বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ সেতু হিসেবে পরিচিত ছিল এই যমুনা সেতুটি।
বর্তমানেও বহুমুখী যোগাযোগ ব্যবস্থা হিসেবে যমুনা সেতুটি অনেক বেশি পরিচিত হয়ে রয়েছে বাংলাদেশের জন্য।
বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের আতাভুক্ত এই সেতুটির পরিপূর্ণ রক্ষণাবেক্ষণ এবং মেরামতের কাজ বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ করে থাকেন। দক্ষিণ এশিয়া মহাদেশের মধ্যে যমুনা সেতুটি দৈর্ঘ্যর দিক দিয়ে ৬ নম্বর দীর্ঘতম সেতুর খেতাব অর্জন করেছে।
যোগাযোগ ব্যবস্থা হিসেবে যমুনা সেতুটি পুরনো হওয়া সত্বেও অনেক বেশি উন্নত।
বর্তমানে যমুনা সেতুর মাধ্যমে পণ্য পরিবহন সহ যাতায়াত ব্যবস্থা হয়েছে অনেক বেশি উন্নত এবং সহজ।
যেহেতু যমুনা নদীর তীরে অর্থাৎ পূর্ব দিকে এই সেতুটি অবস্থিত তাই, এই সেতুটির নাম করা হয় যমুনা সেতু। অপরদিকে, এই সেতুটিকে বঙ্গবন্ধু সেতুর নামে ডাকা হয় কেননা, এই সেতু নির্মাণ কার্য এবং উদ্যোগ প্রথম তিনি গ্রহণ করেছিলেন।
যমুনা সেতুটি যাতায়াত ব্যবস্থা জন্য অনেক বেশি সুবিধাজনক হলেও বর্তমানে এর সেতুটিতে রয়েছে ফাটল জনিত সমস্যা।
ঠিক এ কারণেই প্রতিটি যানবাহনকে সেতুতে ওঠার পর অধিক ধীর গতিতে চলাচল করতে হয় এবং সেতু অতিক্রম করতে হয়।
বিশেষজ্ঞদের মতে ট্রেন চলাচল করার কারণে হয়তোবা এই সকল ফাটল সেতুটিতে দেখা দিয়েছে এবং সেতুটিকে অনেক বেশি ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। কেননা সেতুটি তৈরি করা হয়েছিল একমুখী মিটারগেজ রেলওয়ে যাতায়াত ব্যবস্থার উপর ভিত্তি করে এবং এর জন্য এটিতে পরিমাণ মতো কাঠামো অনুযায়ী উপকরণ ব্যবহার করা হয়েছিল।
তবে পরবর্তীতে এটিতে ব্রডগেজ রেলওয়ে ব্যবস্থা হিসেবে চারটি ট্রেন চলাচল করার সুযোগ তৈরি করে দেয়া হয়েছিল।
এ কারণেই একমুখী কাঠামোর ভিত্তি করে উপকরণ দ্বারা তৈরি করা সেতুটি, চারটি ট্রেনের ওজন এবং পরিবহন সহ্য করতে পারে না।
ঠিক এ কারণেই এই সেতুটিতে দেখা দিয়েছে ফাটল এবং সেতুটির কাঠামো হয়ে গেছে অনেক বেশি দুর্বল ও অবহেলিত।
যমুনা সেতুর দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ কত
যমুনা সেতুর দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ কত: বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের অনুযায়ী যমুনা সেতুর দৈর্ঘ্য ৪.৮ কিলোমিটার (৪৮০০ মিটার) এবং যমুনা সেতুর প্রস্থ ১৮.৫ মিটার।
দেশ স্বাধীন হওয়ার পর মাত্র ১৭ বছরের মাথায় এত বড় একটি পরিকল্পনা বাংলাদেশের দ্বারা সম্পূর্ণ হওয়া ছিল অনেক বেশি অনুপ্রেরণামূলক।
বর্তমানে এই সেতুটির মাধ্যমে যোগাযোগ ব্যবস্থার কিছুটা সুবিধা হয়েছে এবং পণ্য পরিবহন করা হয়েছে সহজ।
সেই সময় এই সেতুটি তৈরি করতে মোট অর্থের প্রয়োজন হয়েছিল $৬৯৬ মিলিয়ন US ডলার (বাংলাদেশী টাকায় হয় ৩ হাজার ৭৪৫ কোটি ৬০ লাখ টাকা) এবং এটি ছিল বাংলাদেশের জন্য অনেক বেশি অনুপ্রেরণামূলক। যমুনা সেতুতে বর্তমানে বহুমুখী যোগাযোগ ব্যবস্থা হিসেবে পরিচিতি অর্জন করেছে এবং মানব জীবনের ঝুঁকি কমিয়েছে।
যখন যমুনা সেতু ছিল না তখন যমুনা অতিক্রম করাতে জীবনে ঝুঁকি নিয়ে পানি দিয়ে চলাচল করতে হতো একটি নৌকা দিয়ে।
বর্তমানে এই ঝুঁকি দূর করে সেতুটির মাধ্যমে খুব সহজে এবং কম সময়ের মাধ্যমে চলাচল করা যায়।
বাংলাদেশের এই সেতুটি বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের হাতে নিয়োগ থাকলেও ফাটল নিয়ে কোন প্রকার উচ্চমানের পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। হয়তোবা এই সেতুটি আমাদের মাঝে আর বেশি দিন থাকবে না কিংবা এই সেতুটি মেরামত করতে হবে।
বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ মেরামত করতে চাইলেও এই সেতুটি মেরামত করা অতটা সহজ না যতটা বলা সহজ।
যদি সেতু মেরামত করার কাজ সহজ হতো তাহলে অবশ্যই বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ কোন না কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করত।
যেহেতু সেতু মেরামত করাটা অনেক বেশি কষ্টসাধ্য এবং হয়তোবা মেরামত করা সম্ভব নয়, তাই বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ এটা নিয়ে বেশি চিন্তা ভাবনা করে না। বরং সুগঠিত কিছু নিয়ম অবলম্বন করার মাধ্যমে সেতুটিকে আগলে ধরে রেখেছেন।
বাংলাদেশের অন্যতম দীর্ঘতম নদীর উপর অবস্থিত এই যমুনা সেতুটি বর্তমানে যোগাযোগ ব্যবস্থা সহ বিদ্যুৎ চলাচল এর মত সুযোগ তৈরি করেছে।
দুই অঞ্চলের মধ্যকার যোগাযোগ ব্যবস্থার ভেদাভেদ দূর করেছে এবং বেশ কয়েকটি অঞ্চলের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করেছে।
যমুনা সেতু কত সালে চালু হয়
যমুনা সেতুটি ১৯৯৮ সালের ২৩ জুন যান চলাচল এবং যোগাযোগ স্থাপন করার জন্য উদ্বোধন ও চালু করা হয়। সে দুটি তৈরি করার পর বিশেষজ্ঞরা ধারণা করেছিল ২৫ বছরের মাথায় গিয়ে টোল আদায় করার মাধ্যমে সেতুর পুরো খরচ উঠে আসবে।
এ বিষয়টি পুরোপুরি ভুল প্রমাণিত করেন মাত্র ৭ বছরের মধ্যে বাংলার জনগণ যমুনা সেতুতে ব্যয় করা অর্থ পরিপূর্ণ করে ফেলে।
বর্তমানেও যমুনা সেতুতে টোল উত্তোলন করা হয় এবং যমুনা সেতু থেকে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্থার কিছুটা স্বাবলম্বী ঘটে।
মাত্র ২৪ বছরে যমুনা সেতুতে ব্যয় করা অর্থের চেয়ে ৩হাজার,৩২৮কোটি,৯৯লাখ টাকা বেশি উত্তোলন করা হয়েছে এবং অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী ঘটেছে।
বঙ্গবন্ধু অর্থাৎ যমুনা সেতুটি তৈরি করতে ত্রুটি পরিলক্ষিত হয়েছে এবং বড় ত্রুটি হলো একমুখী যোগাযোগ ব্যবস্থা হিসেবে রেলপথ সৃষ্টি করা।
আসলে এদিকে চিন্তা করতে হতো যে একমুখী হিসেবে তৈরি করলেও আমাদেরকে উপকরণ বহুমুখী হিসেবে ব্যবহার করতে হবে।
কেননা ভবিষ্যতে গিয়ে যাতায়াত ব্যবস্থার ক্ষেত্রে কোন রকম পরিবর্তন আসার ফলে যেন বহুমুখীতে রূপান্তর করা যায় খুব সহজে। এ বিষয়টির উপর কোন আলোকপাত না করেই একমুখী হিসেবে তৈরি করার পর প্রয়োজনীয় উপকরণ ব্যবহার করা হয়েছিল।
এই কাজের জন্য যমুনা সেতুতে ফাটল দেখা দিয়েছে এবং ফাটলের পরিমাণ ৫০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, যা অবশ্যই আমাদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ।
তবে কতিপয় নিয়ম তৈরি করার ফলে যমুনা সেতুর ভাঙ্গন প্রক্রিয়া স্থগিত রয়েছে এবং বৃদ্ধির হার খুব সীমিত।
যমুনা সেতু ভাঙ্গনের মূল কারণ হলো এর উপকরণ কেননা, এর উপকরণগুলো হচ্ছে খুব সীমিত এবং পরিবহন ব্যবস্থা হচ্ছে অনেক বেশি ওজন সম্পন্ন। একটি রেলপথ অর্থাৎ মিটার স্কেল রেলপথ সম্পন্ন এই সেতুটিকে ব্রডগেজ যাতায়াত ব্যবস্থা হিসেবে তৈরি করা হয়েছে।
ফলস্বরূপ এতে ব্যবহৃত উপকরণগুলো এত চাপ সহ্য করতে পারতেছেনা এবং সেতুটিতে ভাঙ্গন বা ফাটল দেখা দিচ্ছে।
তবে বর্তমানে যানবাহনের স্পিড পরিমাণ মতো কমিয়ে ফেলার ফলে ভাঙ্গন প্রক্রিয়া স্থগিত রয়েছে এবং স্থিতি অর্জন করেছে।
উপসংহার:
যমুনা সেতু কত কিলোমিটার লম্বা এবং এর দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ কত তা জানার আগ্রহ প্রায় সকলেরই থাকে।
বাংলাদেশের জনগণের স্বপ্ন পূরণের জন্য অনুপ্রেরণা মূলক হিসেবে তৈরি করা এই সেতু হচ্ছে যমুনা নদীর উপর বিস্তৃত একটি বড় সেতু।
যমুনা সেতুতে ব্যবহৃত সকল উপকরণ এবং নির্মাণ কাজ শক্তিশালী করার জন্য প্রবাসে মেঘ নিযুক্ত করা হয়েছিল।
বঙ্গবন্ধুর উদ্যোগে এবং বাংলাদেশের জনগণের স্বপ্ন পূরণে তৈরি করা এই সেতু যোগাযোগ ব্যবস্থার মান অনেক বেশি উন্নত সচ্ছল করে তুলেছে।
এই সেতুতে রয়েছে রেলপথের যোগাযোগ ব্যবস্থা সহ অন্যান্য যানমাল এবং বিদ্যুৎ পরিবহনের সুব্যবস্থা।
বর্তমানে সেতুটিতে গতিসীমা নির্দিষ্ট করার ফলে যে কোন ধরনের দুর্ঘটনা হতে যাত্রার জীবন রক্ষা পাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি।
যমুনা সেতু কত কিলোমিটার দৈর্ঘ্য বিশিষ্ট লম্বা এই পোস্টটিতে আমি আপনাদেরকে যমুনা সেতুর কতিপয় উল্লেখযোগ্য তথ্য দেওয়ার চেষ্টা করেছি। আশা করি এই প্রশ্নগুলো আপনাকে যেকোনো সময় যেকোন স্থানে করতে পারে, আপনার মেধা যাচাই করার ক্ষেত্রে।
যমুনা সেতুর আরও একটি উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এই সেতুটি বেশ কয়েকটি জেলার মধ্যে সুসম্পর্ক গড়ে তুলেছে।
আরও পড়ুন: পদ্মা সেতু কত কিলোমিটার?