মৌলিক পদার্থ কাকে বলে: যে পদার্থকে ভাঙলে সেই পদার্থ ছাড়া অন্য কোন পদার্থের কণিকা খুঁজে পাওয়া সম্ভব হয় না তাকে মৌলিক পদার্থ বা মৌল বলে। মৌলিক পদার্থের কিছু উদাহরণ হলো হাইড্রোজেন, হিলিয়াম, লিথিয়াম, বেরিলিয়াম, বোরন, কার্বন, নাইট্রোজেন, অক্সিজেন, ক্লোরিন, সোডিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং অ্যালুমিনিয়াম ইত্যাদি।
একটি পদার্থের গঠনে যখন আমরা নির্দিষ্ট একটি মৌলের বৈশিষ্ট্য খুঁজে পাই এবং মূল পদার্থটি উক্ত মৌলের মত আচরণ করে তখন সেটি হয় মৌলিক পদার্থ। অর্থাৎ শুধুমাত্র একটি পদার্থকে ভাঙলে যদি একটি মাত্র মৌল পাওয়া যায় সেক্ষেত্রে ওই পদার্থটি মৌলিক পদার্থ হয় না।
বরং তার মাঝে মৌলের বৈশিষ্ট্য এবং মৌলিক পদার্থের বৈশিষ্ট্য থাকতে হবে যার দ্বারা চিহ্নিত করা যায় এটি মৌলিক পদার্থ। মৌলিক পদার্থের মধ্যে যেহেতু আর অন্য কোন পদার্থের অস্তিত্ব পাওয়া যায় না তাই স্বাভাবিকভাবেই এটির মধ্যে মৌলের সকল ভৌত ও রাসায়নিক গুণ হাজির থাকে।

মৌলিক পদার্থ বলতে বিশুদ্ধ পদার্থকে বোঝানো হয় যার মাধ্যে কোনো ভেজাল থাকে না বিধায় ফিল্টারিং করতে হয় না।
তবে বর্তমানের সর্বক্ষেত্রে মৌলিক পদার্থ ব্যবহার করা হয় না এবং মৌলিক পদার্থ সেরকম ভাবে আমরা চোখে খুব কম দেখতে পাই।
কেননা যদিও বা আমরা সোনার তৈরি অলংকার ব্যবহার করে কিন্তু এই অলংকারের মধ্যে কিছু ভেজাল থাকে যার ফলে এটি মৌলিক পদার্থ হয় না। তবে শুধুমাত্র খাটি সোনা হিসেবে আমরা যে সোনা খনি থেকে পাই সেই সোনার মধ্যেও কিছু অন্যান্য মৌল থাকতে পারে অর্থাৎ ভেজাল থাকতে পারে।
মৌলিক পদার্থের বৈশিষ্ট্য
মৌলিক পদার্থের মধ্যে যে শুধুমাত্র একটি মৌল পাওয়া যাবে এমনটি না বরং এর আরো অনেকগুলো বৈশিষ্ট্য থাকে।
অর্থাৎ কয়েকটি বৈশিষ্ট্য সমন্বয় একটি মৌলিক পদার্থ সৃষ্টি হয় বা আমরা এই কয়েকটি বৈশিষ্ট্য দ্বারা মৌলিক পদার্থ বিবেচনা করতে পারি।
তাই আমাদেরকে মৌলিক পদার্থ শনাক্ত করতে হলে এর বৈশিষ্ট্য জানতে হবে যা এখানে উল্লেখ করবো তাই পড়ে নিবেন। মৌলিক পদার্থের সংজ্ঞা জানার মাধ্যমে আমরা যতটুকু জ্ঞান অর্জন করেছি মৌলিক পদার্থের বৈশিষ্ট্য জানার মাধ্যমে তার চেয়ে বেশি জ্ঞান অর্জন করতে পারব আমরা।
নিচে মৌলিক পদার্থের কিছু গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য আপনাদের মাঝে উল্লেখ করা হলো:
- মৌলিক পদার্থকে ভাঙলে উক্ত পদার্থের উপস্থিতি ছাড়া অন্য কিছু পাওয়া যায় না।
- মৌলিক পদার্থ তিনটি মূল কণিকা এবং একটি নিউক্লিয়ার দ্বারা গঠিত হয়।
- মৌলিক পদার্থ গুলো ধাতু, অপধাতু, অর্ধধাতু এবং অধাতু হতে পারে
- প্রত্যেক মৌলিক পদার্থ বিদ্যুৎ পরিবাহী নয়, ধাতব মৌলসমূহ শুধুমাত্র বিদ্যুৎ পরিবাহী।
- যৌগিক পদার্থ গঠনের ক্ষেত্রে মৌলিক পদার্থ ছাড়া কোন উপায় পাওয়া যায় না।
- যৌগিক পদার্থের গাঠনিক একক মৌলিক পদার্থের কতিপয় মিশ্রণ।
- মৌলিক পদার্থ সম্পূর্ণরূপে একক বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন হওয়ায়, এবং একই প্রজাতির মৌলের বৈশিষ্ট্য বহন করে।
এগুলো হলো মৌলিক পদার্থের কিছু বৈশিষ্ট্য এবং এর বৈশিষ্ট্যগুলো দ্বারা মৌলিক পদার্থ সম্পূর্ণরূপে বিবেচনা করা যায়।
শুধুমাত্র চোখ দিয়ে এবং অন্যের মুখে শুনে কোন পদার্থকে মৌলিক পদার্থ বললে হবে না বরং মৌলিক পদার্থের বৈশিষ্ট্যের থাকেতে হবে।
মৌলিক পদার্থের সংখ্যা কতটি
IUPAC সংস্থা হতে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী মৌলিক পদার্থের সংখ্যা হচ্ছে মোট ১১৮ টি এবং এদের মধ্যে কিছু কৃত্রিম মৌল রয়েছে।
আপনি জানলে অবাক হবেন যে, মানব শরীরে মোট ২৬ ধরনের ভিন্ন ধরনের মৌলিক পদার্থ বিদ্যমান রয়েছে।
অনেকে মৌলিক পদার্থ বা মৌলের সংখ্যা কয়টি এ বিষয় সম্পর্কে ধারণা রাখতে পারেনি মাধ্যমিক স্তরে ভালোভাবে না পড়ার জন্য।
তাই অবশ্যই আপনাকে পর্যায় সারণি থেকে ভালোভাবে মৌলিক পদার্থগুলো জেনে নিতে হবে এবং মৌলিক পদার্থের সংখ্যা ১১৮টি।
আমরা যে ১১৮টি মৌলিক পদার্থ বা মৌল দেখতে পায় তার প্রত্যেকটি প্রাকৃতিক ভাবে খুঁজে পাওয়া যায় না বরং কিছু কিছু মৌলিক পদার্থ কৃত্রিম উপায় তৈরি করা। বর্তমানে আমরা পর্যায় সারণী বা আধুনিক পর্যায় সারণি থেকে মৌলিক পদার্থের সংখ্যার ধারণা পায় যা IUPAC সংস্থা হতে প্রস্তাবিত।
মৌলিক পদার্থ কাকে বলে এবং মৌলিক পদার্থের বৈশিষ্ট্যের উপর পোস্টটিতে রসায়নের আলোকে তথ্য দিয়েছি। আমার দেওয়া তথ্য গুলো অবশ্যই আপনাকে উপকৃত করতে পারবে যদি আপনি মৌলিক পদার্থ সম্পর্কে তৈরি করা আমাদের এই পোস্ট শেষ পর্যন্ত ভালোভাবে দেখে নিতে পারেন তাহলে।
আরও পড়ুন: যোজ্যতা ইলেকট্রন কাকে বলে?