মুমিন কাকে বলে: যে ব্যক্তির মধ্যে ঈমান আছে তাকে মুমিন বলা হয়। ব্যাপক অর্থে, আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলের উপর ঈমান আনার পর শরীয়ত মোতাবেক জীবন পরিচালনা কারীকে মুমিন বলা হয়।
ইসলামে যাবতীয় বিষয়ের উপর বিশ্বাস রেখে, নিয়ম অনুযায়ী আমল করে এবং আল্লাহর নিকট অনুগত্য প্রকাশ করে সুন্নত মোতাবেক জীবন পরিচালনা কারী ব্যক্তিকে মুমিন বলা হয়। ঈমান ছাড়া কখনো ইসলাম ধর্মে প্রবেশ করা যায় না এবং মুমিন না হওয়া পর্যন্ত কখনো মুসলমান হওয়া যায় না।
অর্থাৎ মুমিন হওয়ার পর সেই ব্যক্তিকে মুসলমান বলা হবে এবং ঈমান আনার পর, সে অনুযায়ী আমল করে মুমিন হওয়া যাবে।

মুমিন কাকে বলে: বলতে গেলে মুমিন এবং মুসলমান যাই হোক, প্রত্যেকটির ক্ষেত্রে একটি বিষয় অবধারিত এবং সেটি হলো ঈমান।
ইসলাম ধর্মের মূল বিষয় হচ্ছে ঈমান বা বিশ্বাস অর্থাৎ বিশ্বাস না থাকলে কখনোই একজন ব্যক্তি মুমিন বা মুসলমান হতে পারে না। আল্লাহ তাআলা আমাদের সৃষ্টিকর্তা এবং তিনি আমাদের নিকট সর্বশ্রেষ্ঠ ব্যক্তি হিসেবে রাসূলকে পাঠিয়েছেন এ বিষয়ে বিশ্বাস থাকা হচ্ছে ঈমান।
বিশ্বাস থাকার পর বা আনার পর আল্লাহ হতে প্রেরিত রাসুল দ্বারা দিক-নির্দেশনা অনুযায়ী জীবন পরিচালনা কারীকে মুমিন বলা হয়।
মুমিনের ১০ টি বৈশিষ্ট্য
আমরা তো মুমিন সম্পর্কে জানলাম যে মুমিন কাকে বলে, তবে এই মুমিন হওয়ার জন্য কিছু বৈশিষ্ট্য রয়েছে। যে বৈশিষ্ট্য গুলো দ্বারা আমরা একজন মুমিনকে চিহ্নিত করতে পারি এবং সেই সাথে আমরা নিজেরাই মুমিন হতে পেরেছি কিনা তা চিহ্নিত করতে পারে।
মুমিনের মাঝে অনেকগুলো বৈশিষ্ট্য থাকতে পারে এবং এই বৈশিষ্ট্যগুলো অবশ্যই আমাদের প্রত্যেকটি মুমিনের মাঝে বিদ্যমান থাকে।
তবে মুমিনের যাবতীয় বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করা একটি পোস্টের মধ্যে আমাদের পক্ষে কষ্টকর হওয়ায় আমরা দশটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করব মুমিনের।
মুমিনের ১০ টি বৈশিষ্ট্য:
- মুমিন ব্যক্তি কখনো মিথ্যার আশ্রয় নেয় না এবং মিথ্যাকে আশ্রয় দেয় না।
- মুমিন ব্যক্তির জীবনাদর্শ হয় অনেক বেশি উন্নত এবং অনুপ্রেরিত করার যোগ্য।
- মুমিন ব্যক্তি সর্বদাই সত্যের পথে জীবন পরিচালনা করে এবং কল্যাণ লাভ করে।
- মমিন ব্যক্তি পরিপূর্ণরূপে ঈমান আনে এবং ঈমান আনার পর কোন পাপ কাজে লিপ্ত হয় না।
- মুমিন ব্যক্তিরা কখনো পাপ কাজকে আশ্রয় দেয় না এবং পাপ কাজ দেখলে বাধা প্রদান করে।
- মুমিন ব্যক্তিরা তাদের পুরো জীবন সত্যবাদিতার উপর ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠিত করে এবং সার্থক হয়।
- মুমিন ব্যক্তিরা অন্যের দুঃখ কষ্ট দেখে স্থির থাকতে পারে না এবং সাহায্য করার চেষ্টা করে।
- মুমিন ব্যক্তিরা ইসলামের যাবতীয় বিষয় এবং হুকুম পরিপূর্ণরূপে পালন করতে সক্ষম হবে।
- মুমিন ব্যক্তির আচরণ হবে বিনম্র এবং সুশীল আদর্শ সম্পূর্ণ এবং ন্যায়পরায়ণতা যুক্ত।
- মুমিন ব্যক্তির চরিত্রে কোন বিতর্ক থাকবে না এবং কোন প্রকার ঝামেলায় যুক্ত থাকবে না।
এগুলো ছিল কিছু বৈশিষ্ট্য যা প্রত্যেকটি মুমিনের মাঝে বিদ্যমান থাকে এবং এগুলো হলো বিশেষ কিছু মুমিনের বৈশিষ্ট্য। যে বৈশিষ্ট্য গুলো অবশ্যই প্রত্যেকটি মুসলমানের মধ্যে থাকতে হবে এবং সেই সাথে নম্র ভদ্র হয় সমাজে নিজের আচার-আচরণ প্রয়োগ করতে হবে।
বর্তমানে নিজেকে মুমিন বলে দাবি করে না এমন মুসলমান পাওয়া কষ্টকর কিন্তু বৈশিষ্ট্যের দিক দিয়ে এরা অধিকাংশ সঠিক হয় না।
অর্থাৎ মুমিন মুখ দিয়ে বললে আমাদের হবে না বরং কাজ, ব্যবহার এবং বৈশিষ্ট্য দ্বারা প্রকাশ করতে হবে মুমিনের দিক।
প্রকৃত মুমিন কারা?
প্রকৃত মুমিন কারা এ প্রশ্নটি একটি সহজ উত্তর হল যে ব্যক্তির মাঝে মুমিনের সকল বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান তারাই প্রকৃত মুমিন। অর্থাৎ যারা মুমিন ব্যক্তির মতো আচরণ প্রদর্শন করে বা প্রদর্শন করার চেষ্টা করে বা তারা হচ্ছে মুমিন ব্যক্তি।
আর আমরা খুব সহজে একজন মুমিন ব্যক্তিকে চিহ্নিত করতে পারব এবং এর জন্য আমাদের দেওয়া বৈশিষ্ট্য গুলো দেখতে হবে।
অর্থাৎ যাকে আমরা মুমিন বলতে চিহ্নিত করতে চাই তার মাঝে আমাদের দেওয়া বৈশিষ্ট্য গুলো সাদৃশ্য চেক করতে হবে।
যদি দেখতে পাই যে উপযুক্ত ব্যক্তির মাঝে আমাদের দেওয়া বৈশিষ্ট্য গুলো সাদৃশ্য রয়েছে তাহলে অবশ্যই উক্ত ব্যক্তিটি মুমিন হবে। তবে যদি বৈসাদৃশ্য লক্ষ্য হয় তাহলে অবশ্যই আমাদেরকে বুঝতে হবে যে উক্ত ব্যক্তিটি শুধুমাত্র মুখ দিয়ে মুমিন বলে কিন্তু আসলে মুমিন নয়।
ইসলামে প্রত্যেকটি মানুষ দীক্ষিত হতে পারবে এবং এর জন্য উক্ত ব্যক্তিকে মুমিন বা মুসলমান হতে হবে যা বিশ্বাস দ্বারা হয়।
আর বিশ্বাস কিসের উপর হবে এটি খুব সাধারণ বিষয় কেননা, বিশ্বাস একমাত্র হতে হবে ইসলামিক যাবতীয় বিষয় ও আল্লাহর উপর।
বিশ্বাসের ক্ষেত্রে ইসলামিক যাবতীয় বিষয় বলতে নবী-রাসূল, ফেরেশতা মাখলুকাত এবং আল্লাহর প্রধান ক্রীত সকল প্রকরণের কথা বলা হয়েছে। আর অবশ্যই আমাদেরকে এই সকল বিষয়ের উপর বিশ্বাস করতে হবে যে সবকিছু স্রষ্টা আল্লাহ এবং তিনি আমাদের সাহায্যের জন্য এগুলো তৈরি করেছেন।
আরও পড়ুন: মুসলিম শব্দের অর্থ কি?