মুদ্রা ধাতু কাকে বলে? মুদ্রা ধাতুর বৈশিষ্ট্য

মুদ্রা ধাতু কাকে বলে: যে সকল ধাতু দিয়ে মুদ্রা তৈরি করা হয় এবং ব্যবসা-বাণিজ্যে বিনিময়ের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহৃত হয় তাকে মুদ্রা ধাতু বলে। প্রাচীনকালে মুদ্রা ধাতুগুলো সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হতো এবং ব্যবসা-বাণিজ্যে বিনিময়ের মাধ্যম হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখত।

পর্যায় সারণির গ্রুপ ১১ নং এ মোট চারটি মৌল রয়েছে এবং এই চারটি মৌল হচ্ছে কপার, সিলভার, গোল্ড এবং রন্টজেনিয়াম।

এ চারটি মৌলের মধ্যে রন্টজেনিয়াম ব্যতীত প্রথম তিনটি মৌল দ্বারা প্রাচীনকালে মুদ্রা বা পয়সা তৈরি করা হতো।

যেহেতু প্রাচীনকালে এই তিনটি মৌল দ্বারা মুদ্রা তৈরি করা হতো এবং ব্যবসা বিনিমার মাধ্যমে হিসেবে ব্যবহৃত হতো তাই এই তিনটি মৌলকে বা ধাতুকে একত্রে মুদ্রা ধাতু বলা হয়।

মুদ্রা ধাতুর উদাহরণ: কপার, সিলভার বা রুপা এবং গোল্ড বা স্বর্ণ।

পর্যায় সারণিতে রয়েছে বিভিন্ন প্রকার মৌলের সমাবেশ যেখানে গ্রুপ এবং পর্যায় ভিত্তিক বিভিন্ন ধরনের বৈশিষ্ট্যের ভেদাভেদ ও মিল রয়েছে। তবে সদৃশ্যের দিক দিয়ে প্রায় প্রত্যেকটি গ্রুপে উপস্থিত প্রত্যেকটি মৌলের মধ্যে রয়েছে গাঠনিক ও রাসায়নিক সাধারণ বৈশিষ্ট্য। আবার পর্যাবৃত্তিক হিসাবে রয়েছে মৌল গুলোর মধ্যে নানা প্রকার বৈশিষ্ট্যগত ভেদাভেদদ এবং গাঠনিক ভেদাভেদ।

মুদ্রা ধাতু কাকে বলে
মুদ্রা ধাতু কাকে বলে?

মুদ্রা ধাতুর অপর নাম কয়েন মেটালস, ইংরেজিতে Coin Metals এবং এগুলো প্রাচীনকাল থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত মুদ্রা তৈরি করা হয়।

তবে বর্তমানে মুদ্রা হিসেবে সিলভারের পরিমাণ বেশি দেখানো হলেও এখানে আসল সিলভার ব্যবহার করা হয় না।

বরং বর্তমানে যে সকল মুদ্রা তৈরি করা হয় সেখানে শুধুমাত্র সিলভারের রাসায়নিক ভাবে প্রলেপ প্রদান করা হয় এবং মুদ্রা গঠন প্রদান করা হয়। মুদ্রা ধাতব বলতেই মুদ্রা তৈরি করতে পারে বা করা হয়েছিল এমন ধাতুকে বোঝানো হয়।

যেহেতু পর্যায় সারণির ১১নং গ্রুপে প্রথম তিনটি মৌল দ্বারা প্রাচীনকালে মুদ্রা তৈরি করা হয়েছে তাই এদেরকে মুদ্রা ধাতু বলা হয়।

পর্যায় সারণিতে মোট চারটি মৌল রয়েছে ১১নম্বর গ্রুপে এবং ১১ নম্বর গ্রুপকে মূলত মুদ্রা ধাতুর গ্রুপ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে।

মুদ্রা ধাতুর বৈশিষ্ট্য

মুদ্রা ধাতু দ্বারা শুধুমাত্র মুদ্রা তৈরি করা যায় এ কথাটি সম্পূর্ণরূপে ভুল কেননা, মুদ্রা ধাতু দ্বারা অলংকার তৈরি করা হয়। আবার বিভিন্ন ক্ষেত্রে মুদ্রা ধাতু দ্বারা বিভিন্ন প্রকার বিক্রিয়া গঠন করা হয় এবং রসায়ন গবেষণা উন্নত করা হয়।

নিচে মুদ্রা ধাতুর কতিপয় বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করা হলো:

  • প্রায় প্রত্যেকটি ধাতুর মতো এদের নিজস্ব বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা ধাতুর সদৃশ।
  • প্রত্যেকটি মুদ্রা ধাতু একটি ইলেকট্রন ত্যাগ করে ধনাত্মক আয়নে পরিণত হতে পারে।
  • এরা দেখে তো অনেক বেশি উজ্জ্বল হয় এবং এদের মধ্যে মরিচা পড়ে না।
  • এদেরকে আঘাত করলে ধাতব শব্দ হয় এবং গাঠনিকভাবে এরা বেশ দৃঢ় হয়ে থাকে।
  • মুদ্রা ধাতু গুলোর প্রত্যেকটি উচ্চ গলনাঙ্ক ও স্ফুটনাঙ্ক বিশিষ্ট হয়ে থাকে।
  • এদের দ্বারা বিভিন্ন প্রকার অলংকার তৈরি করা হয় সাজসজ্জা করার উদ্দেশ্যে।
  • এদেরকে আকৃতি প্রদান করতে গেলে উচ্চ গলনাঙ্ক তাপে সমাহিত করা হয়।

এগুলো হলো মুদ্রা ধাতুর কিছু বৈশিষ্ট্য এবং এ বৈশিষ্ট্য গুলো দ্বারা আমরা খুব সহজে মুদ্রা ধাতুকে চিহ্নিত করতে পারব।

আমাদের সমাজে নানা ধরনের পেশাজীবী মানুষের বাসায় অলংকার রয়েছে এবং এই অলংকার গুলো মুদ্রা ধাতু দ্বারা তৈরি করা হয়।

বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মুদ্রা ধাতু রসায়ন গবেষণা ব্যবহৃত হয়েছে প্রতিরূপ তৈরি করার ক্ষেত্রে অর্থাৎ রাসায়নিকভাবে বা কৃত্রিমভাবে মুদ্রা ধাতু তৈরি করা প্রচেষ্টা। তবে স্বর্ণ বা গোল্ড হচ্ছে এমন একটি মুদ্রা ধাতু যাকে রাসায়নিক বা কৃত্রিমভাবে তৈরি করা অনেক বেশি কষ্টসাধ্য এবং অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে।

শেষ কথা:

মুদ্রা ধাতু নিয়ে আজকের এই পোস্টটি ছিল এপর্যন্ত এবং মুদ্রা ধাতু কাকে বলে বিষয়টি নিয়ে পরিপূর্ণ জ্ঞান দেওয়ার চেষ্টা করেছি।

আশা করি আপনারা এই পোস্টটি পড়ার মাধ্যমে মুদ্রা ধাতু সম্পর্কে সম্পূর্ণ জ্ঞান ও তথ্য অর্জন করতে পেরেছেন।

তথ্য সম্পর্কে অবগত হওয়ার জন্য এবং মুদ্রা ধাতু সম্পর্কে যাবতীয় জ্ঞান অর্জন করার ক্ষেত্রে আমাদের এই পোস্টটি অনেক বেশি জরুরী। মুদ্রা ধাতব বলতে শুধুমাত্র মুদ্রা প্রস্তুত করতে পারে বা মুদ্রা প্রস্তুত করা হয়েছিল এমন ধাতুকে বোঝানো হয় না।

বরং অলংকার সহ নানা ধরনের উন্নত মানের ও দামি আসবাবপত্র তৈরিতে ব্যবহৃত বোঝানো হয়।

কেননা অনেক ক্ষেত্রে আমরা এই সকল ধাতুর ব্যবহার করে থাকি এবং সাজসজ্জা বৃদ্ধি করে থাকি।

আরও পড়ুন: মৃৎক্ষার ধাতু কাকে বলে?

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top