মুদ্রাস্ফীতি কি: সময়ের সাথে সাথে পণ্য ও পরিষেবার দাম স্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পাওয়াই হচ্ছে মুদ্রাস্ফীতি। এই মুদ্রাস্ফীতি কারণে মানুষের ক্রয় ক্ষমতা কমে যায়। মুদ্রাস্ফীতি কারণে আপনি যে পণ্য আগেই ১০০ টাকা কেজিতে পেয়ে যেতেন।
সেই পণ্যই এখন আপনাকে১১০ টাকা বা ১২০ টাকা বা ১৫০ টাকা তার থেকেও বেশি টাকা দিয়ে প্রতি কেজি কিনতে হচ্ছে। আরো সহজ ভাষায় বলতে গেলে বলা যায় যে দেশে সর্বমোট যত সম্পদ আছে তার মূল্য ঐ দেশের মোট মুদ্রা মান বা টাকার সমান।
ধরে নিন যে বাংলাদেশের কাছে মোট ১০০ টাকা আছে। আর দেশের মোট সম্পদ হলো মাত্র ১০ টি আম।
যেহেতু মোট সম্পদের মূল্য, মোট মূল্যমানের সমান, তাই দশটি আমের মূল্য হবে ১০০ টাকা, একটি আমের মূল্য ১০ টাকা করে।
কিন্তু এখন বর্তমানে যদি আরো ৫০ টাকা ছাপানো হয় বা তৈরি করা হয় তাহলে মোট মুদ্রার মান হবে ১০০+৫০=১৫০ টাকা।
আমি কিন্তু আগের ঐ দশটাই আছে কিন্তু টাকার পরিমাণ বেড়েছে। তাহলে এখন ঐ ১০ টি আমের মূল্য হবে ১৫০ টাকা।
যার কারণে বর্তমানে প্রতিটি আমের মূল্য ধরে দাঁড়ালো ১৫ টাকা। যা আগে ছিল ১০ টাকা।সম্পাদনা বাড়িয়ে টাকা তৈরি করার কারনে আমের দাম ১০ টাকা থেকে ১৫ টাকা হয়ে গেল।সহজ ভাষায় বলতে এটি হলো মুদ্রাস্ফীতি।
মুদ্রাস্ফীতি কেন হয়?
মুদ্রাস্ফীতি বহু কারণ রয়েছে যে কারণগুলোর জন্য মূলত প্রত্যেকটি দেশের মধ্যে কম বেশি মুদ্রাস্ফীতি হয়।
তবে সহজ ভাবে বলা হয়, দেশের মোট সম্পদের পরিমান বৃদ্ধি না করে টাকার পরিমাণ বৃদ্ধি করার কারণে মুদ্রাস্ফীতি হয়।
মুদ্রায় স্পীতির কারণে আরো বহু অর্থনৈতিক কাজকর্ম জড়িত থাকে। তার মধ্যে অন্যতম একটি হচ্ছে খেলাপি ঋণ। এই খেলাপি ঋণ বাংলাদেশের অর্থনৈতিক মুদ্রাস্ফীতির অন্যতম কারণ। ব্যাংক থেকে টাকা নিয়ে পরিশোধ না করাকে খেলাপি ঋণ বলে।
ধরে নিন ১০০টাকায় এক ব্যক্তি ২০টাকা ঋণ নিয়েছে, যতক্ষণ ২০টাকা দেশের মধ্যে থাকবে ততক্ষণ দেশের মুদ্রা মানে ১০০টাকায় থাকবে।
অর্থাৎ প্রতিটি আমের মূল্য ১০ টাকায় থাকবে। কিন্তু ওই ব্যক্তি যদি ঋণের ঐ টাকাকে ডলারে কনভার্ট করে।
বিদেশে গিয়ে খরচ করে ফেলে এবং এই ঋণ পরিশোধ করতে না পারে। তাহলে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে বেশ জটিলতার সৃষ্টি হয়ে যায।
প্রথমত ওই ২০ টাকা ডলারের কনভার্ট করার কারণে এই ২০ টাকা এখন আর বাংলাদেশের টাকার মধ্যে নেই।
কিন্তু কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী এখনো বাংলাদেশের কাছে ১০০ টাকা আছে এবং ব্যাংক এটি সর্বদা হিসাব করবে।
কিন্তু প্রকৃতপক্ষে বাংলাদেশের কাছে টাকা আছে ৮০ টাকা। ঐ খেলাপি ২০ টাকার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সরকার আবার ২০ টাকা ছাপায়।
তখন ব্যাংকের ক্ষেত্রে মোট মুদ্রা মান হয়ে যায় ১২০ টাকা। তবে তখন বাংলাদেশের কাছে থাকে মাত্র ১০০ টাকা। এই অতিরিক্ত থাকা দেশ থেকে বের হয়ে যাওয়ার কারণে বা দেশ থেকে নষ্ট হয়ে যাওয়ার কারণে দেশে মুদ্রাস্ফীতি বৃদ্ধি পাচ্ছে।
মুদ্রাস্ফীতি অর্থনৈতিক প্রভাব
এই মুদ্রাস্ফীতি কারণে দেশের মধ্যবিত্ত এবং গরিব শ্রেণীর মানুষের ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয় পণ্য কেনা বেচা করার সময়।
কেননা মুদ্রাস্ফীতির কারণে যেহেতু সম্পদের পরিমাণ বাড়ে না কিন্তু পণ্যের দাম বৃদ্ধি পায় এবং ফলস্বরূপ ক্রয় করা কষ্টসাধ্য হয়।
মানুষের ক্রয় ক্ষমতা তো বৃদ্ধি পায় না কারণ মানুষের আয় তো আগের আয়ের সমানেই থাকে। যদি মানুষের আয় বৃদ্ধি পেত তাহলে এই মুদ্রা ইস্পিত অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে কিংবা মানুষের জীবনযাত্রার ক্ষেত্রে কোন প্রভাব ফেলতে পারত না।
কিন্তু মানুষের আয় বৃদ্ধি পায় না বাট মুদ্রাস্ফীতি বৃদ্ধি পায়। মুদ্রাস্ফীতি বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে অর্থনৈতিকভাবে দেশ দুর্বল হয়ে পড়ে।
কোন দেশ পরিচালনা করাতে যে মূল বিষয়টি লাগে সেটি হলো মুদ্রা, তাই মুদ্রাস্ফীতি দেশ পরিচালনায় বেশ বিরূপ প্রভাব ফেলে থাকে।
আরও পড়ুন: আধুনিক অর্থনীতির জনক কে?