ব্যঞ্জনধ্বনি কাকে বলে? মৌলিক ব্যঞ্জনধ্বনি কয়টি? 

ব্যঞ্জনধ্বনি কাকে বলে: যে ধ্বনি উচ্চারণের সময় শ্বাসবায়ু মুখবিবরের কোথাও না কোথাও গিয়ে বাঁধা পায় এবং স্বরধ্বনির সাহায্য ছাড়া যেগুলো ধ্বনি কখনো উচ্চারিত হতে পারে না তাদেরকে ব্যঞ্জনধ্বনি বলে। উদাহারণে বলা যায়: ক,খ,গ,ঘ, থেকে শুরু করে ৎ,ং,ঃ,ঁ পর্যুন্ত। 

এখন একটু এই সংজ্ঞাটি বুঝিয়ে দেওয়া যাক। আপনি যদি ক বর্ণটি ভালোভাবে উচ্চারণ করেন তাহলে আপনি দেখতে পাবেন যে এই কবর নোটি উচ্চারণ করার সময় আপনার মুখের ভিতর থেকে বেরিয়ে আসা বাতাস আপনার মুখের কোথাও না কোথাও গিয়ে ধাক্কা লাগতেছে। 

যেহেতু আপনার মুখ থেকে বাতাস বেরিয়ে আসার সময় আপনার মুখের কথাও না কোথাও বাধা প্রাপ্ত হচ্ছে তাই এটি হবে ব্যঞ্জনধ্বনি।

কেননা ব্যঞ্জনধ্বনি এর সংজ্ঞা বলা হয়েছে যে মুখ থেকে বাতাস বের হওয়ার সময় কোথাও না কোথাও বাঁধা ভাবে।

ব্যঞ্জনধ্বনি কাকে বলে
ব্যঞ্জনধ্বনি কাকে বলে?

এখন যদি আপনি আবার ক বর্ণটির উচ্চারণের দিকে লক্ষ্য করেন।

তাহলে দেখতে পাবেন যে এই ক বর্ণটি উচ্চারণের জন্য অ এবং ও এর মতো বর্ণের প্রয়োজন হচ্ছে।

আর এই সকল অ এবং ও বর্ণ হচ্ছে স্বরবর্ণ।

আর যেহেতু এই বর্ণ উচ্চারণ করার জন্য স্বর বর্ণের প্রয়োজন হচ্ছে বা স্বরবর্ণের সাহায্য ছাড়া উচ্চারিত হতে পারছে না তাই এটি ব্যঞ্জনবর্ণ। কেননা ব্যঞ্জনবর্ণ কাকে বলে এর উত্তরে বলা হয়েছে যে ব্যঞ্জনবর্ণ স্বরবর্ণের সাহায্য ছাড়া উচ্চারিত হতে পারবে না।

আপনি যদি কোন বর্ণের মধ্যে এই দুটি লক্ষণ দেখতে পারেন তাহলে সেই বর্ণগুলো স্বরবর্ণ হবে না সেগুলো হবে ব্যঞ্জনবর্ণ।

কেননা শুধুমাত্র ব্যঞ্জনবর্ণের জন্যই এই নিয়মগুলো দেওয়া এবং ব্যঞ্জনবর্ণই এই নিয়মগুলো পালন করে থাকে। 

মৌলিক ব্যঞ্জনধ্বনি কয়টি 

বাংলা ভাষার মধ্যে মৌলিক ব্যঞ্জনধ্বনির সংখ্যা হলো ৩০ টি। অর্থাৎ ব্যঞ্জনবর্ণ ৩৯ টি এর মধ্যে ৩০ টি হলো মৌলিক ব্যঞ্জনধ্বনি  আর এই মৌলিক ব্যঞ্জনধ্বনিকে প্রধানত দুইটি ভাগে ভাগ করা হয়ে থাকে এর একটি হলো উচ্চারণ রীতি অনুযায়ী আর অন্যটি হলে উচ্চারণ স্থান অনুযায়ী।

উচ্চারণ রীতি অনুযায়ী ব্যঞ্জনবর্ণ সমূহ কে আবার দুটি মূল ভাগে ভাগ করা হয়েছে। যেগুলো হলো: ঘোষ এবং অঘোষ।

অর্থাৎ এখান থেকে বুঝা যায় যে ব্যঞ্জনবর্ণ সমূহ উচ্চারণের সময় বিশেষ কিছু রীতি সমূহ অনুসরণ করে থাকে। 

এ প্রধান উচ্চারণ রীতি ঘোষকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে, একটিকে বলে মহাপ্রাণ ধ্বনি এবং অন্যকে বলা হয় অল্পপ্রাণ ধ্বনি।

আবার অঘোষ ধনী কে তিনটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। সেগুলো হলো অল্পপ্রাণ, মহাপ্রাণ এবং নাসিক্য। 

আবার উচ্চারণের স্থান অনুযায়ী বর্ণ সমূহকে পাঁচটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। এই পাঁচটি স্থান হলো: কন্ঠ ধ্বনি, তালব্য ধ্বনি, মুর্ধা ধ্বনি, দন্ত ধ্বনি এবং সর্বশেষ অষ্ঠধ্বনি। উচ্চারণের সময় মৌলিক ব্যঞ্জনবর্ণ সময় এই সকল জায়গা থেকে উচ্চারিত হয় এর বাইরে থেকে নয়।

এখানে ছবি প্রদান করেছি যেখান থেকে সুন্দরভাবে দেখতে পাবেন যে কোন বর্ণ কিভাবে উচ্চারিত হচ্ছে এবং কোন জায়গায় উচ্চারিত হচ্ছে।

উচ্চারণের সময় কোন বর্ণ ঘোষ হচ্ছে এবং কোন বর্ণ অঘোষ হচ্ছে।

উচ্চারণের স্থান অনুযায়ী কোন বর্ণটি হচ্ছে মহাপ্রাণ বর্ণ এবং কোন বর্ণটি হচ্ছে অল্পপ্রাণ বর্ণ। আমাদের দেওয়া ছবিটা আপনি এটিও ভালোভাবে দেখতে পাবেন যে কোন বর্ণটি হচ্ছে নাসিক্য বর্ণ। আরে সকল বিষয় সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা লাভ করতে পারবেন।

শেষ কথা:

বাংলা হচ্ছে আমাদের মাতৃভাষা এবং আমাদের পূর্বপুরুষেরা এই মাতৃভাষা বাংলার জন্য তাদের জীবনকে বিসর্জন করে দিয়েছেন।

তাদের রক্তের মাধ্যমে তাদের ত্যাগের মাধ্যমে তাদের জেদের মাধ্যমে আমরা এই মাতৃভাষা পেয়েছি।

বাংলা ভাষা লেখার জন্য ব্যবহৃত হয় কিছু বর্ণের বা চিহ্নের। আর এই বর্ণ সমূহের মধ্যে ব্যঞ্জনবর্ণ হলো একটি প্রধান উপাদান এবং এই ব্যঞ্জনবর্ণতা না থাকলে বাংলা ভাষা উচ্চারণ করা সম্ভব নয়। বাংলা ভাষাকে উচ্চারণ করার জন্য ব্যঞ্জনবর্ণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং খুবই জরুরী।

আমি আপনাদের ব্যঞ্জনধ্বনি কাকে বলে এই বিষয়টি সম্পর্কে বা এই প্রশ্নটি সম্পর্কে সম্পূর্ণ জ্ঞান দিয়েছি।

আর আপনাকে উদাহরণের মাধ্যমে বুঝিয়ে দিয়েছে কিভাবে ব্যঞ্জনবর্ণ বাঁধাপ্রাপ্ত হয় এবং স্বর বর্ণের সাহায্যে উচ্চারিত হয়।

আপনাদের মৌলিক ব্যঞ্জনধ্বনি উচ্চারণের নিয়ম এবং কিভাবে উচ্চারিত হয় আর কোন কোন জায়গায় উচ্চারিত হয় সেগুলো বলে দিয়েছি।

আর উচ্চারণ অনুযায়ী বলে দিয়েছি যে সেই সকল বর্ণ অল্পপ্রাণ হবে না মহাপ্রাণ হবে। 

আরও পড়ুন: বাক্যতত্ত্ব কাকে বলে?

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top