বৃত্তিমূলক শিক্ষা কি: বৃত্তিমূলক শিক্ষা হলো এমন একটি শিক্ষা যার দ্বারা শিক্ষার্থীদের হাতে কলমে বাস্তবে কাজের মাধ্যমে কোন বিশেষ বৃত্তি সম্পর্কে জ্ঞান ও দক্ষতা প্রদান করা হয়।
অর্থাৎ যে শিক্ষা কোন শিক্ষার্থীকে কোন কাজের মাধ্যমে জীবিকা অর্জনের উপযোগী জ্ঞান ও দক্ষতা দান করে, তাকে বৃত্তিমূলক শিক্ষা বলে।
যে সকল শিক্ষা অর্জনের মাধ্যমে শিক্ষার্থী নিজের জীবিকা নির্বাহের জন্য নির্দিষ্ট কাজ হাতে-কলামের শিখতে পারে সেই শিক্ষাকে বৃত্তিমূলক শিক্ষা বলে। বর্তমান বাংলাদেশের বৃত্তিমূলক শিক্ষার গুরুত্ব অনেক বেশি হয়ে উঠেছে এবং ইহার মাধ্যমে বেকারত্বের হার কমতেছে।
বেকারত্বের হার দিন দিন কমানোর জন্য এবং প্রত্যেকটি শিক্ষার্থীকে নির্দিষ্ট জীবিকা প্রদানের জন্য বৃত্তিমূলক শিক্ষা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আবার সেই সাথে এই বৃত্তিমূলক শিক্ষা অর্জন করার মাধ্যমে শিক্ষার্থী দেশের জন্য নিত্য নতুন উন্নয়নমূলক কাজ সম্পন্ন করতে পারে।
দেশের বেকারত্বের হার কমার মাধ্যমে অর্থনৈতিক ব্যবস্থা অনেক বেশি সচ্ছল হবে এবং সেই সাথে কর্মসংস্থান সমস্যা দ্রুত ঠিক হবে। আর এই সকল বিষয়ের উপর ভিত্তি করে বৃত্তিমূলক শিক্ষায় উপযুক্ত জীবিকা নির্ধারণের জন্য শিক্ষার্থীকে নির্দিষ্ট কিছু কাজ হাতে কলমে শিখিয়ে দেওয়া হয়।
জীবন প্ররোচনা করতে সর্বক্ষেত্রে চাকরি প্রয়োজন হবে এমনটি না বরং হাতের কিছু বিদ্যা বা কর্মসংস্থানের জন্য কিছু কাজ জানা থাকলে যথেষ্ট। আর বৃত্তিমূলক শিক্ষা অর্জনের মাধ্যমে বেকারত্বের হার কমতে থাকে এবং শিক্ষার্থীরা নিজেকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য নিজের কর্মসংস্থান নিজে তৈরি করে।
বৃত্তিমূলক শিক্ষার উপযোগিতা উল্লেখ করো
বৃত্তিমূলক শিক্ষার উপযোগিতা বলতে এই শিক্ষা দ্বারা শিক্ষার্থীদের কি পরিবর্তন হয় সেটিকে বোঝানো হয়। আর এই বৃত্তিমূলক শিক্ষা গ্রহণের মাধ্যমে একজন শিক্ষার্থীর কিরূপ পরিবর্তন হয় বা উপযোগী দেখা যায় তা যদি জানতে চান তাহলে অবশ্যই পোস্টটি পড়ুন।
এই বৃত্তিমূলক শিক্ষা অর্জন করার মাধ্যমে একজন শিক্ষার্থীর মাঝে বিভিন্ন ধরনের উপযোগী দিক আমরা লক্ষ্য করতে পারি। আর এই উপযোগী দিকগুলো শিক্ষার্থীর নিজের জীবনে এবং সমাজের উন্নয়নে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
জ্ঞান ও দক্ষতা ভিত্তিক বৃত্তিমূলক শিক্ষার উপযোগিতা নিচে উল্লেখ করা হলো:
- শিক্ষার্থীকে স্বনির্ভর হতে সাহায্য করে থাকে।
- শিক্ষার্থীকে যেকোনো ধরনের শ্রম করার বিষয়ে উৎসাহিত করে।
- শিক্ষার্থীর অন্তরে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির বিকাশ ঘটায়।
- শিক্ষার্থীর চাহিদা পলিতে সম্পন্ন করতে সাহায্য করে।
- বিশেষজ্ঞ কিংবা অভিজ্ঞ রূপে শিক্ষার্থী গড়ে ওঠে।
- প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তি হিসেবে শিক্ষার্থীদের পরিচিতি প্রদান।
- ব্যতিক্রমী শিক্ষার্থীদের জীবনে প্রতিষ্ঠা প্রদান করা।
- শিক্ষার্থীর জীবন তাগিদে কর্মসংস্থান ব্যবস্থার সুযোগ করে দেওয়া।
- দেশ এবং জাতির উন্নয়নে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে উন্নয়ন করা।
- ব্যবহারিক যে কোন কাজে জ্ঞান ও দক্ষতা প্রদান করা।
- মানব সম্পদের উন্নয়ন ঘটাতে পরিপূর্ণ মেধার বিকাশ ঘটানো।
এগুলো হলো বৃত্তিমূলক শিক্ষার কিছু উপযোগিতা যা উল্লেখ করেছে এবং এগুলোর দ্বারা বৃত্তিমূলক শিক্ষার গুরুত্ব সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়।
কেউ যদি বৃত্তিমূলক শিক্ষার গুরুত্ব সম্পর্কে জানতে চায় তাহলে অবশ্যই এই কয়েকটি পয়েন্ট মাথায় রাখলেই হয়ে যাবে।
এর কারণ হচ্ছে বৃত্তিমূলক শিক্ষার উপযোগিতা গুলোই হচ্ছে মূলত বৃত্তিমূলক শিক্ষার গুরুত্ব যা আমাদের জীবনে ভালো প্রভাব ফেলে। এই বৃত্তিমূলক শিক্ষার কিছু উদাহরণ রয়েছে যেগুলো বিভিন্ন শাখায় বিভক্ত হয়েছে এবং আপনি আপনার ইচ্ছেমতো যে কোন একটি শাখা নির্বাচন করতে পারেন।
বৃত্তিমূলক শিক্ষার উদাহারণ
এই বৃত্তিমূলক শিক্ষায় বিভিন্ন বিষয়ের উপর শিক্ষার্থীদের কে হাতের দক্ষতা প্রদান করা হয় কর্মসংস্থান নির্ধারণের জন্য। আর আপনি যদি এই সকল শাখা সম্পর্কে না জানেন তাহলে কিভাবে আপনার জীবনের জন্য একটি সঠিক বৃত্তিমূলক শিক্ষার শাখা নির্ধারণ করবেন।
তাই আপনি যেন আপনার মনের ইচ্ছামত যেকোনো একটি শাখা নির্ধারণ করে আপনার কর্মসংস্থান ব্যবস্থা ঠিক করতে পারেন।
তাই আমরা এখানে বৃত্তিমূলক শিক্ষায় যে সকল বিষয়ের উপর দক্ষতা প্রদান করা হয় তার কয়েকটি নমুনা বিশেষভাবে উল্লেখ করবো।
নিচে উল্লেখযোগ্য কিছু বৃত্তিমূলক শিক্ষার উদাহরণ বা শাখা বা কাজ সমূহ উল্লেখ করা হলো:
- কৃষি শিক্ষা, ক্ষুদ্র এবং বৃহৎ নানা ধরনের শিল্পের কাজ।
- কুটির শিল্প, চারু ও কারুশিল্প এবং কামার শিল্প।
- পোশাক শিল্প, আসবাবপত্র শিল্প, বাণিজ্যিক ব্যবস্থাপনা।
- যন্ত্র প্রস্তুতির কাজ, যন্ত্র পরিচালনার কাজ, যন্ত্র চালানোর কাজ।
- আইন বিদ্যা, সাংবাদিকতা, সেবামূলক বৃত্তি।
- হস্তশিল্প, সেলাইয়ের কাজ, ডিজাইন তৈরির কাজ।
এগুলো হলো বৃত্তিমূলক শিক্ষার কিছু উদাহরণ এবং উদাহরণ বলে ভুল হবে বরং এগুলো হচ্ছে বৃত্তিমূলক শিক্ষার কিছু শাখা।
আপনি যদি বৃত্তিমূলক শিক্ষায় অংশগ্রহণ করতে চান তাহলে উপরোক্ত যেকোনো একটি শাখায় আপনার দক্ষতা অর্জন করতে পারেন।
আর এই সকল বিষয় দক্ষতা অর্জন করার মাধ্যমে আপনি খুব সহজেই বৃত্তিমূলক শিক্ষার সাহায্যে কর্মসংস্থান পরিচালনা করতে পারেন। অবশ্যই এর জন্য দরকার হবে ব্যবস্থাপনার যে ব্যবস্থাপনা গুলো আপনাকে বৃত্তিমূলক শিক্ষা দ্বারা অর্জন করতে হবে সঠিক মত নিয়ন্ত্রণের জন্য।
বৃত্তিমূলক শিক্ষার বৈশিষ্ট্য
বৃত্তিমূলক শিক্ষার কিছু বৈশিষ্ট্য রয়েছে এবং এ বৈশিষ্ট্য গুলোর উপর ভিত্তি করে আমাদেরকে বৃত্তিমূলক শিক্ষা প্রদান করা হয়। আর অবশ্যই এই কয়েকটি বৈশিষ্ট্য প্রত্যেকটি বৃত্তিমূলক শিক্ষায় অবধারিত রূপে সঠিক মতো পালন করা হয়ে থাকে।
যদি বৃত্তিমূলক শিক্ষা কি এ বিষয়ে সম্পূর্ণ জ্ঞান অর্জন করতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে বৃত্তিমূলক শিক্ষার বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে জানতে হবে।
নিচে উল্লেখযোগ্য কিছু বৃত্তিমূলক শিক্ষার বিশেষ বৈশিষ্ট্য সমূহ উল্লেখ করা হলো:
- লক্ষ্য: বৃত্তিমূলক যে কোন কাজে সহায়তা করা হচ্ছে এর লক্ষ্য।
- শিক্ষাগত যোগ্যতা: বৃত্তিমূলক কাজে বিশেষ যোগ্যতা পর্যালোচনা করে এর শিক্ষাগত যোগ্যতা প্রদান করা হয়।
- তথ্য সংগ্রহ: শিক্ষার্থীর সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করা এবং বিস্তার ঘটানো।
- ব্যাপ্তিকাল: অপেক্ষাকৃত বৃত্তিমূলক শিক্ষা অধিক বয়সে গিয়ে শুরু হলেও চলে দীর্ঘকাল।
- দলগত নির্দেশনা: দলগত নির্দেশনা সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয় বৃত্তিমূলক শিক্ষায়।
- শিক্ষার্থীকে সার্থক অভিযোজনে সহায়তা প্রদান করা।
- যোগাযোগ ব্যবস্থা: বৃত্তিমূলক শিক্ষার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে এবং শিল্প কারখানায় যোগাযোগের মাধ্যম।
- বিশেষ ব্যবস্থাপনায়: শিক্ষার্থীদের বিশেষ কিছু ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে বৃত্তিমূলক শিক্ষা প্রদান করা হয়।
- কর্তৃপক্ষের ভূমিকা: বৃত্তিমূলক শিক্ষায় অভিভাবক এবং শিক্ষকের ভূমিকা হচ্ছে কর্তৃপক্ষের ভূমিকা।
এগুলো হলো বৃত্তিমূলক শিক্ষার কিছু বৈশিষ্ট্য এবং এ বৈশিষ্ট্যগুলো দ্বারা আমরা বৃত্তিমূলক শিক্ষার লক্ষ্য উদ্দেশ্য প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে অবগত হই। কেননা আপনি যদি লক্ষ্য করেন তাহলে দেখতে পাবেন আমরা বৈশিষ্ট্য গুলোর মধ্যে লক্ষ্য এবং প্রয়োজনীয়তা সহ উল্লেখ করেছি।
আপনি যেন বৃত্তিমূলক শিক্ষার সম্পর্কে সম্পূর্ণ জ্ঞান অর্জন করতে পারেন সেজন্য আমি একটি বিষয়ের মধ্যে সকল তথ্য উল্লেখ করেছি বৃত্তিমূলক শিক্ষা নিয়ে। আপনি যদি বৃত্তিমূলক শিক্ষায় অংশগ্রহণ করতে চান বা শিক্ষা গ্রহণ করতে চান তাহলে অবশ্যই আপনি আপনার কর্মসংস্থান ভালোভাবে গঠন করতে পারবেন।
আরও পড়ুন: সমাজকর্ম শিক্ষা কি?