বিজ্ঞান কি: বিজ্ঞান হচ্ছে বিশ্বের যাবতীয় ভৌত বিষয়াবলী পর্যবেক্ষণ, পরীক্ষণ, যাচাই, নিয়মসিদ্ধ, বিধিবদ্ধ ও গবেষণালদ্ধ পদ্ধতি যা জ্ঞানকে তৈরিপূর্বক সুসংগঠিত করার কেন্দ্রস্থল। বিজ্ঞান হলো একটি গবেষণা তথ্যভাণ্ডার যেখানে সকল সমস্যার সমাধানের জন্য কিছু না কিছু নীতি বা সূত্র রয়েছে।
(Science) বিজ্ঞান শব্দের ইংরেজি অর্থ হলো সাইন্স এবং বর্তমানে এটি বাংলাদেশের অন্যতম একটি শিক্ষা শাখা। আর আমাদের দেশে বিজ্ঞানকে অনেক বেশি প্রাধান্য দেওয়া হয় শিক্ষার দিক দিয়ে এবং এজন্য বিজ্ঞান সম্পর্কে জানতে হবে।
আমাদেরকে বিজ্ঞান সম্পর্কে জানতে হবে এই বিষয়টি বিশ্লেষণ করতে গেলে প্রথমেই বিজ্ঞান কি এই বিষয়টি সামনে দাঁড়ায়।
আর সামনে দাঁড়া এই বাধাটি আপনার অতিক্রম করতে গেলে অবশ্যই আমাদেরকে বিজ্ঞান কি এর উত্তর জানতে হবে যা এখানে পাবেন।
এটি তো ছিল বিজ্ঞান কি এর একটি তথ্য তবে বিজ্ঞান কাকে বলে এই বিষয়ের উপর সংজ্ঞা তৈরি করা হয়েছে। আর আমাদেরকে এখন উচিত হবে বিজ্ঞানের সংজ্ঞা সম্পর্কে কিছু ধারণা লাভ করার এবং ব্যাখ্যা সম্পর্কে জানার বিজ্ঞানের বিভিন্ন ব্যবস্থার।
বিজ্ঞান কাকে বলে?
বিজ্ঞান কাকে বলে: “বি” অর্থ বিশেষ আর “জ্ঞান” অর্থ হলো সম্মুখ ধারণা। পরীক্ষা নিরীক্ষা, গবেষণা ও বিশ্লেষণের মাধ্যমে যে সঠিক নীতি বা সূত্র বের করা হয়ে তাকে বিজ্ঞান বলে। বিজ্ঞান কি এবং বিজ্ঞান কাকে বলে দুইটি সংজ্ঞা ভালোভাবে প্রদান করা হয়েছে।
- বিজ্ঞানের প্রথম কাজ হলো সুনির্দিষ্ট তথ্য সংগ্রহ করা।
- দ্বিতীয় কাজ হলো সংগ্রহকৃত তথ্য বিশ্লেষণ করা।
- তৃতীয় কাজ হলো বিশ্লেষিত তথ্যের মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ সিদ্ধান্তে বা চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছানো।
Science বিজ্ঞান হচ্ছে গবেষণা কেন্দ্র এবং এখানে রয়েছে সকল প্রকার গবেষণার তথ্য, নীতি এবং সূত্র।
যার প্রয়োগ করা হয় নিত্য নতুন সমস্যার সমাধানের ক্ষেত্রে এবং চিকিৎসা ক্ষেত্রে।
বিজ্ঞান আমাদের এই আধুনিক পৃথিবীর জন্য সর্বদাই হয়ে থাকবে একটি চিরস্থায়ী আশীর্বাদ। বিজ্ঞান ব্যবহার করে বর্তমান মানুষ আজ অসম্ভব কাজকে সম্ভব করে তুলেছে এবং পরিশ্রম হ্রাস করতে সক্ষম হয়েছে।
বিজ্ঞানের আবিষ্কার বা প্রভাব না দেখা দিলে বর্তমানের মানুষ হয়তো বা আমরা এখনো সেই গুহায় অবস্থান করতাম এবং সেখানে নিজের বাসস্থান গড়ে তুলতাম।
বিজ্ঞানের শাখা কয়টি ও কি কি?
শুধুমাত্র বিজ্ঞান বললেই যে বিজ্ঞানের ধারণা শেষ হয়ে গেল এমনটি না বরং বিজ্ঞান আবার বিভিন্ন শাখায় কাজ করে থাকে। অর্থাৎ শাখার উপর ভিত্তি করে বিজ্ঞানের মাঝে বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষা নিরীক্ষার উপর বিশ্লেষণ করে তথ্য উপস্থাপন করা হয় জনগণের মাঝে।
তাই এখন আমাদেরকে বিজ্ঞানের এই সকল শাখা সম্পর্কে জানতে হবে যেখানে পৃথকভাবে গবেষণা করা হয় আলাদা আলাদা বিষয়ের উপর।
আর এই সকল বিষয়ের উপর ভিত্তি করে বিজ্ঞানকে আমরা সঠিকভাবে প্রয়োগ করতে পারে বিভিন্ন পার্থক্য জনিত বিজ্ঞানীদের দ্বারা।
যুগের পর্যায়ক্রমে মানুষ বিজ্ঞানকে বিভিন্ন শাখায় বিভক্ত করে ফেলেছে। তবে বিশিষ্ট বিজ্ঞানীরা বিজ্ঞানকে সাধারণত তিনটি শাখায় ভাগ করেছেন, যথা:
- সামাজিক বিজ্ঞান
- প্রাকৃতিক বিজ্ঞান
এছাড়া বিজ্ঞানের শাখায় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে:
— জীববিজ্ঞান
— পদার্থবিজ্ঞান এবং রসায়ন বিজ্ঞান
এগুলো হচ্ছে বিজ্ঞানের শাখা এবং এই শাখার উপর ভিত্তি করে নির্দিষ্ট বিজ্ঞানের নির্দিষ্ট বিষয় নিয়ে বিশ্লেষণ করে উপস্থাপন করে বিজ্ঞানী।
তবে এখানে যেমন পার্থক্য রয়েছে বা শাখা রয়েছে বিজ্ঞানের দিক অনুরূপভাবে বিজ্ঞানীদের শাখা রয়েছে নির্দিষ্ট কাজের উপর ভিত্তি করে।
অর্থাৎ কোন বিজ্ঞানী কোন শাখায় কাজ করে বা গবেষণা করে তার ওপর ভিত্তি করে ওই বিজ্ঞানের নাম এর সামনে টাইটেল দেওয়া হয়। যেমন আমরা অনেকেই শুনে থাকবো যন্ত্রবিদ বিভিন্ন বিজ্ঞানীদের নাম এবং ইহা দ্বারা বোঝা যায় বিজ্ঞানের যন্ত্র বিভাগে এ বিজ্ঞানীরা কাজ করে।
পৃথিবীর প্রথম বিজ্ঞানীর নাম কি?
যেহেতু আমরা বিজ্ঞান নিয়ে কথা বলতেছি এবং বিজ্ঞান আমাদের জীবনকে অনেক বেশি উন্নত করে তুলেছে। তাই আমাদেরকে পৃথিবীর প্রথম বিজ্ঞানী কে ছিলেন এ বিষয়ে ধারণা রাখা উচিত কেননা, ইনার দ্বারায় প্রথম বিজ্ঞানের সূচনা হয়েছে।।
পৃথিবীর প্রথম বিজ্ঞানী ছিলেন পাশ্চাত্য গ্রিক পন্ডিত থেলিস। বিজ্ঞান কি এবং এ বিষয়ে ধারণা কিরূপ বিষয়ে প্রথম ধারণা তিনি দিয়েছেন।
আর বাংলাদেশের দিকে যদি চিন্তাভাবনা করা যায় তাহলে আরো একটি বিষয় আমাদের জানা উচিত।
সেটি হলো বাংলাদেশের প্রথম বিজ্ঞানী কে ছিলেন বা তিনার নাম কি?
বাংলাদেশের প্রথম বিজ্ঞানী ছিলেন স্যার জগদীশচন্দ্র বসু, এবং বেতার কেন্দ্র নিয়ে ইনি গবেষণা করেছিলেন।
বিজ্ঞানের নানা বিষয় আমাদেরকে অনেক বেশি উন্নত করে তুলেছে এবং জীবনযাত্রার মান প্রতিনিয়তই পরিবর্তন করে তুলতেছে। এখন অনেকেরই প্রশ্ন বিজ্ঞানের আবিষ্কার কে আমাদের আসলেই ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
এই প্রশ্নটির উত্তর হলো “হ্যাঁ” অবশ্যই বিজ্ঞানের আবিষ্কার আমাদের জন্য ঝুঁকের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে, এমন কেউ হয়ে দাঁড়িয়েছেও।
বিজ্ঞানের এমন অনেক আবিষ্কার রয়েছে যেগুলো মানুষের জন্য বিপদ ডেকে এনেছে এবং মহামারীর মত সমস্যা দেখা দিয়েছে।
এমন অনেক গবেষণা করতে গিয়ে মানুষ জানতে কিংবা অজান্তে ক্ষতিকারক ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়া কিংবা অনুজীব আবিষ্কার করে ফেলেছে। আর অবশ্যই এগুলো মানুষের জন্য হুমকির কারণ এবং এগুলোর দ্বারা মহামারী পর্যন্ত দেখা দিয়েছে।
যাই হোক বিজ্ঞানের আবিষ্কার যেমন আমাদের জীবনের মান উন্নত করেছে ঠিক পক্ষান্তরে কিছু কিছু বিজ্ঞানের অস্বাভাবিক কার্যকলাপে বিপথগামী হয়ে উঠেছে।
বিজ্ঞানের আবিষ্কার আমাদেরকে যে যে বিষয় গবেষণা করতে অনুপ্রেরণিত করেছে?
বর্তমানে বিজ্ঞানের অনুসন্ধান এত বেশি দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে যে যেকোনো ধরনের ভৌতিক অবস্থা ও রাসায়নিক ব্যবস্থা নিয়ে মানুষ অবগত। আর মানুষের এই অবগতির পেছনে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ যেহেতু বিজ্ঞান তাই আমাদেরকে বিজ্ঞানের অনুপ্রেরণা দেখতে হবে।
বিজ্ঞানের আবিষ্কার আমাদেরকে যে যে বিষয় গবেষণা করতে অনুপ্রেরিত করেছে, নিচে সেগুলো উল্লেখ করা হলো:
- মহাকাশ গবেষণা এবং মহাকাশের যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ ও আবদ্ধ করতে অনুপ্রেরিত করেছে।
- সমুদ্রে গবেষণার কাজে চালানোর জন্য এবং গভীর সমুদ্রের ইতিহাস জানার জন্য অনুপ্রেরণিত করেছে।
- জীবের সৃষ্টি এবং ধ্বংস আবার পৃথিবীর সৃষ্টি এবং ধ্বংস সকল বিষয়ে অনুপ্রেরিত করেছে।
- সভ্যতার নির্মাণ ও সভ্যতার ধ্বংসের কারণ নির্বাচন করতে অনুপ্রেরিত করেছে।
- মানুষের চক্ষু ঠিক কতটুকু দেখতে সক্ষম এবং কতটুকু দেখতে সক্ষম না সে সম্পর্কে ধারণা প্রদান করেছে।
- মানুষের অভ্যন্তরীণ যাবতীয় বিষয় সম্পর্কে সম্মুখ ধারণা প্রদান করেছে ও জ্ঞান প্রদান করেছে।
- চিকিৎসা ক্ষেত্রে মানোন্নয়ন ও গবেষণার ক্ষেত্রে বিজ্ঞান অতুলনীয় ভূমিকা পালন করেছে।
- ভূগর্ভস্থ ও আকাশের যাবতীয় তথ্য নিয়ে গবেষণা করতে অনুপ্রেরণিত করেছে।
ধন্যবাদ, বিজ্ঞান কি এই বিষয়ে তৈরি করা আজকের এই পোস্টের মাঝে আপনার রিয়েক্ট শেষ পর্যন্ত লক্ষ্য করতে পারার জন্য। তাহলে বিজ্ঞান হচ্ছে এমন একটি ব্যবস্থা যেখানে অনুসন্ধান, গবেষণা এবং পরীক্ষা ও বিচারের মাধ্যমে স্পষ্ট ধারণা লাভ করা হয়।
আরও পড়ুন: ব্যবস্থাপনা কাকে বলে?