বর্তমান পুলিশ প্রধানের নাম কি: বর্তমান পুলিশ প্রধানের নাম হলো চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন ।৩০ সেপ্টেম্বর ২০২২ সালে তিনি বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর পুলিশ প্রধান হিসেবে নিয়োগ লাভ করেন।
২২ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার তিনাকে নিয়োগ দিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।আর এই প্রজ্ঞাপনের মধ্যে উল্লেখ করা হয় যে এই নিয়োগ আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর কার্যকর করা হবে।
তিনি এই সময় হতে শুরু করে পরবর্তী চার বছর পর্যন্ত বাংলাদেশ পুলিশবাহিনীর পুলিশপ্রধান থাকবেন।
আর এই পদে আসার আগে তিনি রেপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন বা র্যাবের মহাপরিচালক ছিলেন।
বর্তমানে চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন হলেন দেশের ৩১ তম পুলিশ প্রধান। আর তিনার আগে পুলিশ প্রধান পুলিশ প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন বেনজির আহমেদ ।
পুলিশপ্রধান অথবা পুলিশ বাহিনীর প্রধান কে সংক্ষেপে বলা হয় (আই জি পি )।
বাংলাদেশ পুলিশ মহাপরিদর্শক বা আই জি পি হলো বাংলাদেশ পুলিশের জ্যেষ্ঠ তম এবং সর্বোচ্চ পদবী।
এই আইজিপি শব্দটির সম্পূর্ণ অর্থ হচ্ছে পুলিশ ইন্সপেক্টর জেনারেল (Police inspector general)। ছয় ফনিক্স রোড ফুলবাড়িয়া ঢাকার মধ্যে অবস্থিত পুলিশবাহিনীর প্রধান কার্যালয় থেকে একজন পুলিশপ্রধান তার কার্যাবলী সমূহ পরিচালনা করেন।
পুলিশপ্রধান শুধুমাত্র প্রধানমন্ত্রী এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর কাছে জবাবদিহি করবে পুলিশপ্রধান অন্য কোন মন্ত্রীর কাছে বা অন্য করো কাছে জবাবদিহি করবে না। আর কখনো অন্য কোন মন্ত্রী বা সরকারি কর্মকর্তা তিনাকে জবাব দিহি করার জন্য বাধ্য করতে পারবেন না।
তিনার কথা অনুযায়ী সমস্ত পুলিশ বাহিনীকে চলতে হয় এবং সমস্ত পুলিশ বাহিনীকে তিনার কথা অনুযায়ী কাজ করতে হয়।
আর একজন আইজিপি বা পুলিশ আইজিপি হলেন পুলিশের মধ্যে সবচেয়ে সিনিয়র সচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তা। আর সেনাবাহিনীর সাথে যদি আইজিপির তুলনা করা হয় তাহলে সেনাবাহিনীর সর্বোচ্চ পদ লেফটেন্যান্ট জেনারেল পদ হচ্ছে আইজিপির পদ।
একজন পুলিশ আইজিপি থ্রি স্টার জেনারেল পদমর্যাদার অধিকারী হন অর্থাৎ তিনার স্টার তিনটি থাকে।
তিনার জয়েন্ট থেকে শুরু করে তিনি চার বছর ধরে এই পদমর্যাদার অধিকারী থাকবেন এবং এরপর তিনার চাকরির বয়স শেষ হবে।
চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন এর জন্ম এবং শিক্ষাজীবন
১৯৬৪ সালের বারই জানুয়ারি সুনামগঞ্জ জেলার একটি সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তিনার জন্ম স্থানীয় উপজেলার নাম শাল্লা উপজেলা এবং জন্ম স্থানীয় গ্রামের নাম হচ্ছে শ্রীহাইল গ্রাম।
১৯৭৯ সালের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় অবস্থিত বাংলাদেশ রেলওয়ে গভমেন্ট হাই স্কুল থেকে তিনি এসএসসি পাস করেন।
আর তিনি এইচএসসি পাশ করেন ১৯৮১ সালের ঢাকার আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজ থেকে।
তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনার লেখাপড়া শেষ করেছিলেন। চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন ১৯৮৬ সালে বিসিএস ক্যাডার পাস করেন বা বিসিএস ক্যাডারে উন্নীত হন।
এরপর ১৯৮৯ সালে তিনি বাংলাদেশ পুলিশের অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপারিনটেনডেন্ট বা এএসপি পদে যোগদান করেছিলেন।
চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন দেশে এবং দেশের বাইরে কতগুলো সম্মানজনক পেশাগত প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করেছেন।
যার মধ্যে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ব্রামশিলে ইন্টারন্যাশনাল কমান্ডারস প্রোগ্রাম।
তিনি থাইল্যান্ডের ব্যাংককে ইউএস এম্বেসিতে অনুষ্ঠিত প্রশিক্ষণ এর মধ্যে দক্ষতার সহিত অংশগ্রহণ করেছিলেন।আর এই সকল করছে অংশগ্রহণ করার মাধ্যমে তিনার দক্ষতা অনেক বেশি রয়েছে শান্তি রক্ষা বিষয়।
এফবিআই কর্তৃক আয়োজিত ২৩ তম প্যাসিফিক ট্রেনিং কোর্স এর মধ্যেও তিনি অংশগ্রহণ করেছিলেন।
এই কোর্সটির নাম ছিল প্যাসিফিক ট্রেনিং ইনিশিয়েটিভ পিটিআই এন্ড গ্লোবাল চ্যালেঞ্জ ল এনফোর্সমেন্ট কোর্স।
চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন এর জাতিসংঘ মিশন
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পাশাপাশি বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনী ও জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে অংশগ্রহণ করে থাকেন।আর বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এবং বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর সহ অন্যান্য বাহিনী দক্ষতার সহিত বহু বছর ধরে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে অংশগ্রহণ করেছে।
আর আমরা সকলে জানি যে, ১৯৮৮ সালে প্রথম বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে দেওয়া হয়েছিাল।
আর সে বছর বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে শান্তি রক্ষার জন্য ইরাক এবং নামিবিয়া এই দেশ দুটিতে মোতায়েন করা হয়েছিল।
এই সকল বিভিন্ন শান্তিরক্ষা মিশন পরিচালনা করতে গিয়ে এবং শান্তি ফিরিয়ে আনতে ৮৮ জন সেনাবাহিনী নিহত হয়েছে।
জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পাশাপাশি সকল বাহিনির অবস্থান সর্বোচ্চ প্রশংসনীয়।
চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন জাতিসংঘের অত্যন্ত ৩ টি শান্তিরক্ষা মিশনে অংশগ্রহণ করেছেন এবং পরিচালনা করেছেন।
আর বৈশ্বিক শান্তিরক্ষায় অত্যন্ত দক্ষতার শরীরে কাজ করেছেন এবং তিনার গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন।
তিনি বসনিয়া হার্জেগোভিনা, লাইবেরিয়া এবং দরফ জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে অংশগ্রহণ করেছিলেন। বর্তমান বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর প্রধান চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে তিনার গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন।
আর বর্তমানে তিনি বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর উন্নয়নের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছেন।
তিনি চেষ্টা করে যাচ্ছেন যে কিভাবে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীকে বিশ্বস্ত বাহিনী হিসেবে পরিণত করা যায়।
তিনি যে সকল দেশে গিয়েছিলেন সে সকল দেশে তিনি শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য বিভিন্ন যুদ্ধ করেছেন এবং অপরাধী ধরেছেন। সেই সাথে সেই সকল দেশের শান্তি ফিরিয়ে আনার জন্য তিনি যথাসাধ্য চেষ্টা করে গেছেন।
সেই সব দেশে গিয়ে তিনি চেয়েছেন সেই দেশের অপরাধসমূহকে দমন করতে এবং এর জন্য তিনি তার দায়িত্ব অনুযায়ী কাজ করেছেন।
তিনাকে যে সকল দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছিল তিনি সে সকল দায়িত্বের সঠিক ব্যবহার এবং সঠিক কাজ করে দেখিয়েছেন।
আমি মনে করি এই সকল কিছু বিষয় সম্পর্কে জানার মাধ্যমে আপনি বুঝতে পেরেছেন বাংলাদেশ পুলিশ প্রধানের নাম কি? আর তিনি জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের জন্য কি কি দায়িত্ব পালন করেছেন এবং কাজ করেছেন।
চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন ব্যক্তিগত জীবন এবং চাকরি জীবন
ব্যক্তিগত জীবনে চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন এর জীবন সঙ্গিনী হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী একটি স্ত্রী রয়েছে। আর চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন এর স্ত্রীর নাম হচ্ছে ডক্টর তৈয়বা মুসারারজাহা চৌধুরী।
আর বর্তমানে তিনাদেরে দুইটি পুত্র সন্তান রয়েছে এবং একটি কন্যা সন্তান রয়েছে।
আর এই সকল মিলে হচ্ছে আমাদের বর্তমান পুলিশ প্রধানের নাম কি এর পরিবার।
বর্তমান পুলিশ প্রধান তিনার গৌরবময় পেশাজীবনে বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন পদে চাকরি করেছেন।
তিনি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ বা ডিএমপি এর এসিস্ট্যান্ট কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন এর এএসপি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সদর সার্কেলের এএসপি এএসপি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
আর সেই সাথে সিরাজগঞ্জ জেলার রায়গঞ্জ সার্কেলের ও চাঁদপুর জেলার হবিগঞ্জ সার্কেলের এএসপি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
এরপর তিনি চাঁদপুর জেলার এডিশনাল এসপি এবং ডিএমপির এডিসি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন।
সেই সাথে তিনি নীলফামারী জেলার এসপি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন।
তিনি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ডেপুটি কমিশনার বা ডিসি এবং পুলিশ সদর দপ্তর ঢাকার এআইজি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। আর পদোন্নতি পেয়ে তিনি বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর বিভিন্ন পদে আসীন হন যেগুলো নিচে রয়েছে।
তিনি ময়মনসিংহ রেঞ্জের ডিআইজি এবং পুলিশ সদর দপ্তর ঢাকার ডিআইজি অপারেশন এর মত গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন হন।
আর এগুলোর পাশাপাশি তিনি বাংলাদেশ পুলিশের আরো অনেক পদে এবং বহু জায়গায় কাজ করেছেন।
বাংলাদেশ পুলিশের মধ্যে অসাধারণ সেবা এবং বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ টিনাকে বাংলাদেশ পুলিশ থেকে পুরস্কার প্রদান করা হয়েছে। তিনাকে বাংলাদেশ পুলিশ থেকে বাংলাদেশ পুলিশের সম্মানজনক পুরস্কার প্রেসিডেন্সি পুলিশ মেডেল বা পিপিএম প্রদান করা হয়।
আর ধীরে ধীরে পদোন্নতি পেয়ে বিভিন্ন মাধ্যমে বিভিন্ন পদে চাকরি করার মাধ্যমে তিনি বর্তমানে পুলিশ প্রধান হয়েছেন।
আর এখন পর্যন্ত কেউই একবারে পুলিশ প্রধান হতে পারেনি আর স্বাধীনতার পর থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত এটি সম্ভব হয়নি।
শেষ কথা:
আশা করি আমাদের লেখায় এই পোস্টটি আপনি সম্পূর্ণভাবে পড়েছেন এবং পড়ে বর্তমান পুলিশ প্রধানের নাম কি জানতে পেরেছেন। বর্তমান পুলিশ প্রধান সম্পর্কে এই সকল তথ্য আমরা বিভিন্ন মাধ্যম থেকে খোঁজাখুঁজি করে নিয়ে এসেছি।
আর অত্যন্ত পরিশ্রম করে আপনাদের সঠিক এবং নির্ভুল তথ্য প্রদান করার চেষ্টা করেছি।
এই পোস্টের মধ্যে আমি তিনার জীবন এবং এক কোথায় সব কিছু বিষয়ে উল্লেখ করেছি।
অনেক সময় পুলিশের যোগদান করার সময় এই প্রশ্নটি করা হয়ে থাকে যার কারণে আপনি এই প্রশ্নটির উত্তর জানতে পারলেন।
এখন আপনার পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি এসে থাকে তাহলে আপনি সহজে এর উত্তর দিতে পারবেন।
আর তিনার সম্পর্কে এই সকল বিষয় নিয়ে জানার মাধ্যমে আমরা বুঝতে পারলাম যে কেন তিনাকে পুলিশ প্রধান করা হয়েছে।
আর পুলিশ প্রধান হওয়ার জন্য তিনি কি কি জাতিসংঘ মিশনে অংশগ্রহণ করেছেন কি কি ট্রেনিং কোর্স অংশগ্রহণ করেছেন।
আপনাদের মধ্যে কেউ যদি পুলিশ প্রধান হতে চায় তাহলে তাকে তিনার চেয়ে কঠোর পরিশ্রম করতে হবে।
কেননা দিন দিন এই পদটি পাওয়া অনেক কঠিন হয়ে যাচ্ছে এবং এই পদের জন্য অনেকেই চেষ্টা করে যাচ্ছে।
আরো পড়ুন: শেখ হাসিনার স্বামীর নাম কি?