প্রোটন কাকে বলে? প্রোটনের বৈশিষ্ট্য, আবিষ্কারক, চার্জ, ভর, অবস্থান, প্রতীক

প্রোটন কাকে বলে: পরমাণুর নিউক্লিয়াসে উপস্থিত ধনাত্মক চার্জযুক্ত মূল কণিকাকে প্রোটন বলা হয়। প্রোটনের মধ্যে পরমাণুর সমস্ত ধনাত্মক বা পজেটিভ চার্জ কেন্দ্রীভূত থাকে, এর ফলে নিউক্লিয়াসও ধনাত্মক চার্জযুক্ত হয়। নিউক্লিয়াসে উপস্থিত প্রোটন সংখ্যা উক্ত মৌলের পারমাণবিক পারমাণবিক সংখ্যার সমান হয়।

আমরা একটি পরমাণুর বা মৌলের পারমাণবিক সংখ্যা পর্যায় সারণী থেকে পাই তবে এই সংখ্যাটি পর্যায় সারণীতে প্রোটন সংখ্যার উপর ভিত্তি করে লেখা হয়েছে। আর পর্যায় তৈরি করতে পারমাণবিক সংখ্যার ভূমিকা অনেক বেশি রয়েছে যা প্রোটন সংখ্যার উপর ভিত্তি করে লেখা হয়।

প্রোটন কাকে বলে
প্রোটন কাকে বলে?

পরমাণুতে উপস্থিত প্রোটন সর্বদা নিউক্লিয়াসে অবস্থান করে এবং নিউক্লিয়াসে অবস্থান করার জন্য এটি পুরো নিউক্লিয়াস কে ধনাত্মক চার্জ যুক্ত করে। অর্থাৎ পরমাণুতে উপস্থিত নিউক্লিয়াসের নিজস্ব কোন আধান নেই বরং প্রোটনের ধনাত্মক আধান দ্বারা নিউক্লিয়াস ধনাত্মক আধান প্রাপ্ত হয়।

পরমাণুতে ধনাত্মক চার্জ বিশিষ্ট মূল কণিকার নাম প্রোটন এবং প্রোটন সংখ্যার উপর ভিত্তি করে পারমাণবিক নির্ধারণ হয়। কোন মৌলের প্রোটন সংখ্যা এবং পারমাণবিক সংখ্যার সমান হয়ে যা প্রোটন সংখ্যার উপর নির্ধারণ করে বিবেচনা করা হয়ে থাকে এবং বৈজ্ঞানিকভাবে মৌলের প্রোটন সংখ্যা বের করা হয়।

প্রোটনের বৈশিষ্ট্য

আমরা ইতিমধ্যে প্রোটনের সংজ্ঞা থেকে এটি বুঝতে পারি যে প্রোটনের একটি বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এটি ধনাত্মক চার্জ বিশিষ্ট। তবে পরমাণুতে উপস্থিত প্রোটনের যে শুধুমাত্র একটি বৈশিষ্ট্য রয়েছে এমনটি না বরং আমরা প্রোটনের আরো অনেকগুলো বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করতে পারি।

নিচে উল্লেখযোগ্য কিছু প্রোটনের বৈশিষ্ট্য সমূহ আপনার জন্য উল্লেখ করা হলো:

  • প্রোটন হচ্ছে পরমাণুর ধনাত্মক চার্জযুক্ত পারমাণবিক সংখ্যা নির্দেশক একটি মূল কণিকা।
  • পরমাণুতে উপস্থিত প্রোটন সংখ্যার উপর ভিত্তি করে মৌলের পারমাণবিক সংখ্যা পাওয়া যায়।
  • মৌলের সম্পূর্ণ ধনাত্মক চার্জ প্রোটনের মাধ্যমে নিউক্লিয়াসে উপস্থিত থাকে।
  • প্রোটনে উপস্থিত ধনাত্মক চার্জ উক্ত মৌলের ইলেকট্রনের সাথে তড়িৎ চৌম্বক ক্ষেত্র তৈরি করে।

এগুলো হলো প্রোটনের কিছু বৈশিষ্ট্য যা নমুনা ও ক্রমিক আকারে উপরে উল্লেখ করেছি আপনার মাঝে সহজে উপস্থাপন করার জন্য। পরমাণুর মধ্যে এবং নিউক্লিয়াসের মধ্যে যে প্রোটন নামক কণিকা রয়েছে এটি আবিষ্কার করেছেন একজন বিজ্ঞানী।

প্রোটনের আবিষ্কারক কে?

প্রোটনের আবিষ্কারক হলেন বিজ্ঞানী রাদারফোর্ড এবং ইনি নিউক্লিয়াসের সাথে প্রোটন সংখ্যা আবিষ্কার করেন।

একটি পরমাণুর ভেতরে নিউক্লিয়াস থাকে এবং এই নিউক্লিয়াসের ভিতরে আবার প্রোটন নামক কণিকা থাকে যা আবিষ্কার করেছেন রাদারফোর্ড। রাদারফোর্ড তার বিখ্যাত আলফা কণা পরীক্ষা দ্বারা নিউক্লিয়াস আবিষ্কার করেছিলেন এবং সেই সাথে নিউক্লিয়াসের আবিষ্কারের মাধ্যমে প্রোটন সংখ্যার ধারণা দেন।

যেহেতু রাদারফোর্ডের প্রথম প্রোটন সংখ্যা ধারণা দিয়েছিলেন এবং প্রোটন আবিষ্কার করেছিলেন তাই তিনাকে প্রোটনের আবিষ্কারক বলে।

আমরা প্রোটনের আধান ধনাত্মক জানার কারণে হয়তোবা শুধুমাত্র (+) চিহ্ন ব্যবহার করি কিন্তু এর নির্দিষ্ট একটি আধানের মান রয়েছে।

প্রোটনের আধান বা চার্জ কত?

প্রোটনের আধান বা চার্জ হচ্ছে +1.6X10-19 (কুলম্ব), অর্থাৎ এর চার্জ ধনাত্মক বা পজেটিভ।

এটি হচ্ছে প্রোটনের আধান এবং আপনাকে প্রোটনের আধার লেখার সময় (+) চিহ্ন দিতে হবে এবং সেই সাথে কুলম্ব এককে লিখতে হবে।

যেহেতু এখানে আধান বা চার্জের কথা রয়েছে প্রোটনের তাই অবশ্যই আপনাকে আমাকে উপরোক্ত মান লেখার পর কুলম্ব একক দিতে হবে।

যদি ইলেকট্রনের আধান জানতে চান তাহলে প্রোটনের আধানের সামনে (-) চিহ্ন ব্যবহার করলে হয়ে যাবে কেননা এদের আধান মান সমান।

প্রোটনের ভর কত?

প্রোটনের ভর হলো 1.673X10-24 kg কিংবা 1.6X10-27 g.

এটি হলো প্রোটনের ভরের মান এবং এখানে দুটি আলাদা একক ব্যবহার করে প্রোটনের ভর উল্লেখ করা হয়েছে। যেহেতু আমরা এখানে দুটি আলাদা একক ব্যবহার করে প্রোটনের মান উল্লেখ করেছি তাই স্বাভাবিকভাবেই মান ভিন্ন রকম দেখাচ্ছে।

ইলেকট্রনের মত পরমাণুর ভেতরে প্রোটন একটি নির্দিষ্ট স্থানে অবস্থান করে, চলুন প্রোটনের অবস্থান তাহলে জেনে নেই।

প্রোটনের অবস্থান কোথায়?

প্রোটনের অবস্থান হচ্ছে নিউক্লিয়াসে এবং এই কণিকা দ্বারা নিউক্লিয়াস ধনাত্মক চার্জওযুক্ত হয়।

এটি হচ্ছে প্রোটনের অবস্থান এবং এ প্রোটনের অবস্থান দ্বারা একটি নিশ্চিত যে প্রোটন সর্বদা পরমাণুর মধ্যে উপস্থিত নিউক্লিয়াসে বিদ্যমান থাকে।

আবার আরো একটি কথা সেটি হচ্ছে নিউক্লিয়াসের মধ্যে প্রোটন একাই অবস্থান করে এমনটা না বরং এখানে নিউট্রন উপস্থিত থাকে।

লেখার সময় আমরা প্রোটনকে একটি প্রতীক দ্বারা চিহ্নিত করে লিখে থাকে এবং আমরা প্রতীক ব্যবহার করে সহজে প্রোটন সূচিত করি।

প্রোটনের প্রতীক কি?

প্রোটনের প্রতীক হলো p (অবশ্যই ছোট হাতের হতে হবে), ধনাত্মক বা পজেটিভ চার্জযুক্ত হওয়ায় একে p- দ্বারা প্রকাশ করা হয়।

এটি হচ্ছে প্রোটনের প্রতীক এবং আমরা যখন প্রোটন লিখতে যাই তখন সামনে এ প্রতীক ব্যবহার করে প্রোটনের মান লেখার চেষ্টা করি। আর যখন আমরা শুধুমাত্র প্রতীক ব্যবহার করি তখন আমাদেরকে প্রোটন নামটি উল্লেখ করতে হয় না বরং প্রতীক দ্বারাই প্রোটন বোঝানো যায়।

আরও পড়ুন: ইলেকট্রন কাকে বলে?

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top