প্রকৃত কোষ কাকে বলে: সুগঠিত নিউক্লিয়াসযুক্ত কোষকে প্রকৃত কোষ বলে। সুগঠিত নিউক্লিয়াস অর্থাৎ নিউক্লিয়ার ঝিল্লি দিয়ে নিউক্লিয় বস্তু বেষ্টিত এমন নিউক্লিয়াস বোঝানো হয়। এই প্রকৃত কোষ কে সুকেন্দ্রিক কোষ বা ইউক্যারিওটিক সেল বলা হয়।
প্রকৃত কোষে রাইবোজোম সহ সকল প্রকার অঙ্গাণু যেমন মাইটোকন্ড্রিয়া, প্লাস্টিড, এন্ডোপ্লাজমিক রেটিকুলাম ইত্যাদি বিদ্যমান থাকে। এই প্রকৃত কোষের ক্রোমোজোমে ডিএনএ, প্রোটিন, এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় উপাদান বিদ্যমান থাকে। জীবজগতের অধিকাংশ জীব প্রকৃত কোষ দ্বারা গঠিত হয়েছে বা এ কোষের অন্তর্ভুক্ত।
আমরা মূলত পর্দা দিয়ে আবৃত কোষ এবং সুগঠিত নিউক্লিয়াস দ্বারা গঠিত কোষ কে প্রকৃত কোষ বলে থাকি সর্বদা।
যদিওবা সংগাঠন সঠিক কিন্তু এতটুকুতে প্রকৃত কোষের ধারণা অর্জন করার সমাপ্ত নয় কেননা প্রকৃত কোষের আরো আলোচনা আছে।

যে সকল প্রাণী ও উদ্ভিদ প্রকৃত কোষ দ্বারা গঠিত হয় তাদেরকে আমরা বৈজ্ঞানিক ভাষায় প্রকৃতকোষী জীব বা উদ্ভিদ বলে ডাকি। তাই বলে এই সকল প্রাণী বা উদ্ভিদের যে শুধুমাত্র কোষ হিসেবে প্রকৃত কোষ থাকে এবং এর মধ্যে কোন উপাদান থাকে না এমন কিন্তু সঠিক নয়।
কেননা নিউক্লিয়ার পর্দা দ্বারা আবৃত নিউক্লিয়াস হলে শুধুমাত্র প্রকৃত কোষ গঠন সম্ভব হয় না সম্পূর্ণরূপে কোন কিছুতে।
বরং প্রকৃত কোষে উপস্থিত থাকতে হয় কোষের সকল উপাদান, রাইবোজোমের সকল উপাদান এবং আরো অন্যান্য যাবতীয় বিষয় সমূহ কোষের।
অর্থাৎ প্রকৃত কোষ বলতে ওই কোষ কে বোঝায় যার মধ্যে কোষের সকল উপাদান বিদ্যমান থাকে এবং পর্দা দিয়ে আবৃত থাকে। আবার সেই সাথে এই প্রকৃত কোষের কিছু বৈশিষ্ট্য রয়েছে যে বৈশিষ্ট্যগুলো দ্বারা প্রকৃত কোষ গঠিত হয়েছে এবং প্রকৃত কোষ ধারণ করে আছে।
প্রকৃত কোষের বৈশিষ্ট্য
প্রকৃত কোষী জীবের সংখ্যা অনেক রয়েছে আমাদের পৃথিবীতে এবং এই প্রকৃত কোষী জীবের কিছু বৈশিষ্ট্য রয়েছে। আসলে এই প্রকৃত কোষ আলাদা আলাদা প্রজাতির উদ্ভিদ প্রাণীর মধ্যে বিদ্যমান থাকলেও এদের অভ্যন্তরীণ কিছু সাধারণ বৈশিষ্ট্য রয়েছে প্রকৃত কোষ গুলির।
নিচে প্রকৃত কোষের বৈশিষ্ট্য সমূহ উল্লেখ করা হলো:
- প্রকৃত কোষের মধ্যে সুগঠিত নিউক্লিয়াস, নিউক্লিয়াস ঝিল্লি দ্বারা বেষ্টিত হয় উপস্থিত থাকে।
- এদের ক্রোমোজোমে ডিএনএ সহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় উপাদান যথাযথভাবে উপস্থিত থাকে।
- প্রকৃত কোষে রাইবোজোম সহ সকল অঙ্গাণু যথাযথভাবে বিদ্যমান থাকে।
- এদের নিউক্লিয়াস সুগঠিত হওয়ার কারণে নিউক্লিয়াস সাইটোপ্লাজমে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকে না।
- এই ধরনের কোষে দেহকোষ ও জনন কোষ দুই ধরনের কোষ পাওয়া যায়।
এগুলো ছিল প্রকৃত কোষের কিছু বৈশিষ্ট্য এবং এই বৈশিষ্ট্য গুলো প্রত্যেকটি প্রকৃত কোষের জন্য সমর্থন করে।
অর্থাৎ যতগুলো প্রকৃত কোষী ভিন্ন প্রজাতির জীব রয়েছে তাদের প্রত্যেকের মাঝে প্রকৃত কোষের এ বৈশিষ্ট্য গুলো উপস্থিত এবং হাজির রয়েছে।
প্রকৃত কোষের প্রকারভেদ
প্রকৃত কোষের ধারণাটি এখনো শেষ হয়নি বরং এই প্রকৃত কোষ কে আবার দেহের উপর ভিত্তি করে ভাগ করা হয়েছে। অর্থাৎ গঠনগত এবং কার্যগত কিছু প্রকারভেদ রয়েছে যেগুলোর উপর ভিত্তি করে আমরা প্রকৃত কোষকে বিভিন্নভাবে উপস্থাপন করতে পারি ভাগ করে।
কাজের ভিত্তিতে প্রকৃত কোষকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে, যেমন:
- দেহকোষ
- এবং জনন কোষ
দেহকোষ: বহুকোষী জীবের দেহ গঠনের ক্ষেত্রে যে সকল কোষ অংশগ্রহণ করে তাদের দেহ কোষ বলে।
জনন কোষ: বহুকোষী জীবের যৌন প্রজনন ও যৌনক্রম পরিচালনার জন্য যে কোষ অংশগ্রহণ করে তাকে জনন কোষ বলে।
এগুলো হলো প্রকৃতজ্ঞ আসার কিছু প্রকারভেদ এবং প্রকৃত কোষে উপস্থিত এই সকল প্রকারভেদ ভিন্ন কাজে অংশগ্রহণ করে।
অর্থাৎ প্রকৃত কোষের এই অংশ দুটি মানব শরীরে বিভিন্ন কাজে আলাদা আলাদা ভাবে নিযুক্ত থাকে এবং প্রকৃত কোষ কাজ করে।
শেষ কথা:
প্রকৃত কোষ কাকে বলে এবং প্রকৃত কোষের সংজ্ঞা বৈশিষ্ট্য ও প্রকারভেদ নিয়ে সম্পূর্ণরূপে আলোচনা করেছি। আশা করি আপনারা পুরো পোস্ট জুড়ে আলোচনা উপস্থিত ছিলেন এবং জ্ঞান অর্জন করেছেন। আপনাকে প্রকৃত কোষ সম্পর্কে জ্ঞান প্রদান করাই ছিল মূলত আমাদের প্রধান লক্ষ্য ও কাজ।
আশা করি আমরা আমাদের লক্ষ্য পরিপূর্ণরূপে প্রদান করতে পেরেছি এবং আপনাকে উপকৃত করতে পেরেছি।
প্রকৃত কোষী জীবের সংখ্যা আমাদের এই পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি এবং এরাই পুরো পৃথিবী জুড়ে বিস্তৃত।
এদের মধ্যে যৌন জনন এবং অযৌন জনন উভয় প্রক্রিয়া দেখা যায় তবে অযৌন প্রক্রিয়া কম দেখা যায়।
যেহেতু আমাদের পুরো পৃথিবী জুড়ে প্রকৃত কোষের সংখ্যা অনেক বেশি সুতরাং এটি আমাদেরকে মনে রাখতে হবে। অনেক ক্ষেত্রে বেশিরভাগ পরীক্ষার প্রকৃত কোষ সম্পর্কে বেশি বেশি করে প্রশ্ন দিয়ে থাকে। আমাদের সাথে শেষ পর্যন্ত থাকার জন্য আপনাকে অনেক বেশি ধন্যবাদ এবং শুভকামনা রইল আপনার জন্য।
আরও পড়ুন: আদি কোষ কাকে বলে?