পৃথিবীর সবচেয়ে ভালো মানুষ কে: পৃথিবীর সবচেয়ে ভালো মানুষ হলেন হযরত মুহাম্মদ (স.), ইনি হলেন মানবজাতির উত্তম আদর্শের প্রতীক। মানবজাতির শুরু থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত অসংখ্য নর-নারী এই পৃথিবীতে বিচরণ করে গেছেন।
তবুও হযরত মুহাম্মদ (স.) হলেন মুসলমান ধর্ম অনুযায়ী সর্বশেষ নবী ও রাসুল এবং তিনি সর্বশেষ নবী ও রাসুল হওয়া সত্বেও পূর্বের রাসুলগণের চেয়েও অনেক বেশি উত্তম ছিলেন। তিনি তিনার জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত উত্তম আদর্শ এবং আখলাক সহিত কাটিয়ে গিয়েছেন।
পৃথিবীর সবচেয়ে ভালো মানুষ হওয়ার জন্য অবশ্যই জ্ঞান, দক্ষতা, আচরণ সহ প্রত্যেকটি বিষয় উত্তম হতে হবে।
আর আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (স.) ছিলেন সকল বিষয়ে অনেক উন্নত আদর্শের প্রতীক এবং ব্যবহার ছিল অনেক উন্নত।
ইনি এমন নবী ছিলেন জিনাকে দুজাহানের বাদশা হিসেবে আল্লাহ পৃথিবীতে প্রেরণ করেন এবং সেই সাথে নবী, রাসুল হিসেবে গণ্য করেছেন।
দুজাহানের বাদশা হওয়া সত্ত্বেও আমাদের প্রিয় নবী কখনো খেজুরের পাতার বিছানা ত্যাগ করেননি এবং বান্দার জন্য দোয়া করতে ভুলেননি।
তিনি জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত এমন ভাবে পৃথিবীতে বিচরণ করেছেন যে তা শুনলে মানুষ নিজের চরিত্র সম্পর্কে প্রথমে অবগত হয় এবং পরে তার উন্নতি ঘটাতে চেষ্টা করে। আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (স.) যখন তায়েফের ভ্রমণ করেন তখন সেখানকার মানুষেরা তিনার উপর পাথর নিক্ষেপ করে রক্তপাত ঘটিয়েছিলেন।
একজন মানুষকে কেউ যদি মারে তাহলে অবশ্যই সেই ব্যক্তির অনেক রাগ উঠবে এবং প্রতিশোধ নেওয়ার চেষ্টা করবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু জ্ঞান, বিচার এবং আচরণের দিক দিয়ে সর্বশ্রেষ্ঠ এই ব্যক্তি এত বেশি উন্নত ছিল যে তিনি আঘাত পাওয়ার পর আল্লাহ তাআলার নিকট দোয়া করেছিলেন হে আল্লাহ তুমি এই ব্যক্তিদেরকে হেদায়েত দান করো এবং আজাব গজব থেকে রক্ষা করো।
তাহলে বুঝুন কত উন্নত চরিত্রের অধিকারী ছিলেন এই ব্যক্তি জিনাকে সর্বশ্রেষ্ঠ খেতাবের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে সকল কিতাবে এবং বইয়ে।
তাহলে পৃথিবীর সবচেয়ে ভালো মানুষকে এই প্রশ্নটির উত্তর হল প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (স.)।
হযরত মুহাম্মদ (স.) কে কেন সবচেয়ে ভালো মানুষ বলা হয়?
হযরত মুহাম্মদ (স.) কে যে কারণে সবচেয়ে ভালো মানুষ বা শ্রেষ্ঠ মানুষ হিসেবে বলা হয়, কতিপয় কারণ উল্লেখ করা হলো:
সত্যবাদিতা
হযরত মুহাম্মদ (স.) ছিলেন সত্যবাদিতার অনেক বড় গুণের অধিকারী এবং ইনি ইনার জীবনের প্রতিটি মুহূর্তের সত্যবাদী তার দিকে অগ্রগামী ছিলেন।
ইনার মুখ হতে কখনো মিথ্যে কথা বের হয়েছে এমন কোন দলিল কেউ দিতে পারেনি এবং পারবেও না।
সত্যবাদিতা অবলম্বন করার জন্য আমাদেরকে সবসময় সত্য কথা বলতে হয় কিন্তু, এমন কোন ব্যক্তি খুঁজে পাওয়া যাবে না এমনকি নবী-রাসুলও খুঁজে পাওয়া যাবে না যারা তিনাদের জীবনে একটা মিথ্যা কথা বলেননি। প্রায় প্রত্যেকটি তিনার জীবনে মিথ্যা কথা বলেছেন এবং একবার হলেও বলেছেন।
কিন্তু আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (স.) ছিলেন এমন একজন ব্যক্তি যিনি কিনা তিনি জীবনে একটা মিথ্যা কথা বলেননি এবং এর চেয়ে ভালো গুণ আর একজন ব্যক্তির মধ্যে কিবা থাকতে পারে।
জবানের হেফাজত এবং আমানতের রক্ষা
আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (স.) কখনো কথা দিয়ে কথা রাখেননি এমন দলিল পাওয়া যায়নি এবং ভবিষ্যতে পাওয়া যাবে না।
তিনি যে বিষয়ে জবাব দিতে পারবে সে বিষয়ে সম্মতি দিয়েছেন এবং যেখানে কোন করতে পারবেন না সেখানে অযথা জবান দেননি।
তিনি তিনার জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত এমন ভাবে অবলম্বন করেছেন যেন তিনার একটি জবানের দ্বারা অন্য আরেকজন ব্যক্তি কষ্ট না পায় এবং জবানের হেফাজত ভঙ্গ না হয়। তিনি টিনা জীবন আদর্শে আমানত নিয়েও অনেক বেশি সজাগ ছিলেন এবং কখনো খেয়ানত করেননি।
দলিল পাওয়া গেছে কাফের মুশরিকরা পর্যন্ত আমানত রক্ষা করতে নবীজিকে দিয়ে যেতেন এবং এটি শুধুমাত্র সম্ভব হয়েছিল তিনার আচরণের কারণে।
প্রত্যেক কাফের মুশরিকদের লিডার ছিলেন আবু জাহেল এবং কাফেররা তিনাকে বিশ্বাস করতেন না।
তাহলে বুঝেন, কাফের মুশরেকরা পর্যন্ত নিজের লিডারকে আমানতের জন্য বিশ্বাস না করে আমাদের প্রিয় হযরত মুহাম্মদ (স.) কে বিশ্বাস করতেন।
হযরত মুহাম্মদ (স.) এর আচরণ
হযরত মুহাম্মদ (স.) এর আচরণ ছিল ফুলের মত পবিত্র কেননা তিনার আচরণে কেউ মনে আঘাত পেয়েছে এমন দলিল পাওয়া যায়নি।
তিনি তিনা জীবনে প্রতিটি মুহূর্তেই অন্যের সুরক্ষা নিয়ে চিন্তাভাবনা করেছেন এবং কাউকে কষ্টের থাকতে দেননি।
তিনি তিনার জীবনে কাউকে কটু কথা বলেননি এবং এর চেয়ে ভালো অভ্যাস আর কি হতে পারে যে কিনা তিনার জীবনে একটাও কটু কথা বলেননি অন্যকে উদ্দেশ্য করে। হযরত মুহাম্মদ (স.) আচরণ ছিল এতই বেশি মুগ্ধকর যে কিনা কাফেরদের মন সহ জয় করেছিল।
কাফেরদের মন জয় না করলে কিভাবে মুসলমানের সৃষ্টি হল এবং শত শত কাফের মুসলমান ধর্মে ফিরে আসলো।
আবার ফিরে আসলো তো আসলোই সাথে নবীজির হেফাজত করার জন্য নিজের জীবনসহ উৎসর্গ করে দিয়েছে এমন দলিল সহ পাওয়া যায়।
তাহলে বুঝুন কি পরিমান জীবনাদর্শ ছিল তিনার জিনার আচরণের ফলে এবং ইসলামের জন্য নবীজির জীবন হিফাজতের ক্ষেত্রে নিজের জীবন পর্যন্ত উৎসাহ করে ফেলেছেন। এমন অনেক যুদ্ধ হয়েছে কাফিরদের বিরুদ্ধে মুসলমানদের সাথে এবং এই সকল ক্ষেত্রে আমাদের প্রিয় নবী তিনার আচরণ দ্বারা কাফেরদেরকে পরাজিত করে অপমান করেননি।
বর্তমান সমাজের মানুষ আমরা অন্যকে বিপদে দেখে অনেক বেশি হাসি কিন্তু আমাদের প্রিয় নবী অন্যের বিপদে কাঁদেতেন এবং আল্লাহর নিকট কেঁদে কেঁদে দোয়া করতেন। এর চেয়ে উত্তম চরিত্র আর কি হতে পারে এবং একজন মানুষকে শ্রেষ্ঠ বলার জন্য এর চেয়ে ভাল দিক আর কি হতে পারে।
শেষ কথা:
পৃথিবীর সবচেয়ে ভালো মানুষ কে, তিনাকে কেন সবচেয়ে ভালো মানুষ বলা হয় এ বিষয়ে আমি পরিপূর্ণ জ্ঞান দিতে সক্ষম হয়েছি।
পূর্বে আমরা যা করেছি তা ভুলে যায় এবং বর্তমান থেকে প্রিয় নবীর জীবন আদর্শ নিজের জীবনে প্রতিফলন করার চেষ্টা করি।
জীবনে আর কি থাকে জীবন্ত সামান্য সময় কিন্তু কীর্তিত সারা জীবনের যা জীবনের একটি মুহূর্ত হলেও রেখে যাওয়ার চেষ্টা করে।
আমাদের প্রিয় নবী হলেন সেই সকল কৃতিমান ব্যক্তিদের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ যিনি কিনা মানুষের মুখের বুলি দ্বারা সকলের কাছে পৌঁছে গিয়েছে।
তিনাকে নিয়ে অসংখ্য হাদিস বর্ণিত হয়েছে এবং তিনার প্রত্যেকটি জীবন আদর্শ নিয়ে খুঁটিনাটি উল্লেখ করা হয়েছে ইসলাম ধর্মের গ্রন্থে।
তিনি তিনার জীবনে কিভাবে শিশুর সঙ্গে সদাচরণ করতে হয় এবং আদর যত্ন করতে হয় তা দেখিয়ে গিয়েছেন।
কিভাবে গুরুজনদেরকে সম্মান করতে হয় এবং প্রদান করতে হয় সে সম্পর্কে অবগত করে চলে গিয়েছেন যা আমাদেরকে পালন করতে হবে।
আমরা বিষ যুদ্ধ বীরশ্রেষ্ঠদের নাম জানি কিন্তু বর্তমান সময় ছেলেপেলেরা যুদ্ধ সম্পর্কে অবগত নয়।
বরং বই থেকে কিছু জ্ঞান অর্জন করার মাধ্যমে শুধুমাত্র বাংলাদেশের জনগণ এ বিষয়ে অন্তর্ভুক্ত।
কিন্তু আমাদের প্রিয় নবী ছিলেন এমন একজন ব্যক্তি যিনার জন্য কোন বই পুস্তক লিখতে হয়নি বরং মানুষই ইনাকে প্রচার করেছেন তিনার ব্যবহারের জন্য। এটি শুধুমাত্র বাংলাদেশে নয় বরং প্রত্যেকটি দেশে প্রচলিত আছে তিনার নাম এবং গুণের কথা।
আরও পড়ুন: মানুষের বৈজ্ঞানিক নাম কি?