৫টি সেরা পায়খানা ক্লিয়ার করার ট্যাবলেট এর নাম নিচে উল্লেখ করা হলো:
- এভোল্যাক সিরাপ (Avolac Syrup),
- লুবিলাক্স (Lubilax),
- ডুরালাক্স (Duralax),
- ডুলকোলাক্স (Dulcolax),
- ল্যাকটুলোজ (Lactulose)।
এই কয়েকটি ঔষধের সেবন করার মাধ্যমে আপনারা আপনাদের পায়খানা ক্লিয়ার করা এবং কষ্টকাঠিন্য খুব সহজে দূর করতে পারবেন।
তবে এই সকল ঔষধের কিছু পার্শ্ববর্তী প্রতিক্রিয়া রয়েছে যা অধিক সেবনের ফলে দেখা যায়।
কোন ঔষধে কি পরিমাণে সেবন করলে আপনার আমার কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হবে এবং পায়খানা কিলিয়ার হয়ে যাবে তা নিচে আলোচনা করব। তবে উপরোক্ত যে কয়েকটি ওষুধের নাম লিখেছে তার প্রত্যেকটি একসাথে গ্রহণ করবেন না, এতে স্বাস্থ্য ঝুঁকি দেখা দিবে।

প্রয়োজন অনুযায়ী আপনি যেকোনো একটি ঔষধ সেবন করতে পারেন, তবে ডাক্তাররা বলবে যে সর্বোচ্চ দুইটি ঔষধে সেবন করতে। যা আপনাদেরকে মানা উচিত নয় কেননা এতে পার্শ্ববর্তী ক্রিয়া বেশি দেখা দিবে, তবে পায়খানার দ্রুত ক্লিয়ার হবে।
পার্শ্ববর্তী ক্রিয়া একটি অনেক বেশি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থা তাই এমনটি করবেন না এবং করার চেষ্টাও করবেন না।
তো চলুন এবার এক এক করে প্রত্যেকটি ঔষধের পার্শ্ববর্তী ক্রিয়া থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায় এবং সঠিক অনুপাতে খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে আলোচনা করি।
পায়খানা ক্লিয়ার করার ট্যাবলেট সঠিক অনুপাতে খাওয়ার নিয়ম
১.) ডুরালাক্স (Duralax)
পায়খানা ক্লিয়ার করার জন্য অধিক কার্যকারী উপায় হল ডুরালাক্স ট্যাবলেট এবং এই ট্যাবলেটটি আপনি স্বল্পমূল্যে বাজার অনুযায়ী পেয়ে যাবেন। বাজার যেহেতু দ্রুত পরিবর্তন হয় তাই আমি এর সঠিক মূল্য বললাম না।
এই সিরাপটি দিনে দুইবার খাবেন এবং শুধুমাত্র ওই সময় খাবেন যখন একবার আপনার কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দিবে। এই ট্যাবলেট সর্বোচ্চ ২ দিন সেবন করবেন এবং তারপর বাদ দিয়ে দিবেন। কেননা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে আপনার পাকস্থলী তার কর্মশক্তি হারিয়ে ফেলে এবং ঔষধ ছাড়া চলে না।
২.) ডুলকোলাক্স (Dulcolax)
পায়খানা ক্লিয়ার করার জন্য ডুলকোলাক্স ট্যাবলেট অধিকার্য করে এবং এই ঔষধটি গ্রহণ করার ফলে আপনার আমার কষ্টকাঠিন্য দ্রুত দূর হয়ে যায়। তবে মনে রাখবেন এই ওষুধটিও বেশি সেবন করবেন না বরং দিনে দুইবার খাবার পূর্বে সেবন করবেন।
সর্বোচ্চ দুই দিন সেবন করবেন এবং তারপর বাদ দিয়ে দিবেন, কেননা ইহার ফলে আপনার পাকস্থলী বিকলাঙ্গ হয়ে যেতে পারে।
৩.) ল্যাকটুলোজ (Lactulose)
বাজারে ল্যাকটুলোজ না পেলেও এ অনুযায়ী অনেক ধরনের ঔষধ পাওয়া যায় যা ল্যাকটুলোজ এর মতই কাজ করে।
আপনি চাইলে সে ওষুধ গুলো সেবন করতে পারেন তবে ল্যাকটুলোজ এই ওষুধের পার্শ্ববর্তী ক্রিয়া অতি সীমিত।
তবুও পরিস্থিতি যাই হোক না কেন আমাদেরকে সতর্ক থাকতে হবে এবং সঠিক অনুপাতে ওষুধ গ্রহণ করতে হবে। দিনের সর্বোচ্চ একবারে ওষুধ দুটি গ্রহণ করলে আপনার পায়খানা সহজ হয়ে যাবে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হবে।
বেশি দিন ধরে এই ওষুধের সেবন করা উচিত নয় এবং এই ওষুধটি বাচ্চাদের জন্য উপযোগী কিনা তা জেনে কিনুন।
৪.) সেনা ট্যাবলেট (Senna Tablets)
ডাক্তার পরামর্শ অনুযায়ী এই ট্যাবলেট অনেক বেশি কার্যক করে এবং আপনি কোন প্রেসক্রিপশন ছাড়াই এই ওষুধটি গ্রহণ করতে পারেন।
এই ওষুধটি পেটে উপস্থিত সকল প্রকার জ্বালা-যন্ত্রণা এবং পায়খানা ক্লিয়ার করার ব্যবস্থা করে দেয়।
তবে অবশ্যই মনে রাখবেন যে কোন ধরনের পাতলা পায়খানা ক্লিয়ার করার ঔষধ সর্বোচ্চ দুই দিন এবং সর্বোচ্চ দিনে দুইবার গ্রহণ করবেন। এতে আপনার কোন পার্শ্ববর্তী ক্রিয়া পরিলক্ষিত হবে না এবং সুস্থ অনুভব করবেন।
বিসাকোডিল (Bisacodyl)
বিসাকোডিল এই ঔষধটির নাম আলাদা ভাবে উল্লেখ করা যেতে পারে কেননা এটি কোন ট্যাবলেট নয় বরং এটি এক ধরনের সিরাপ। এই সিরাপটি আপনি খাবার পর খাবেন এবং আপনার পায়খানা খুব তাড়াতাড়ি ক্লিয়ার হয়ে যাবে।
পায়খানা ক্লিয়ার করার জন্য সবচেয়ে বেশি কার্যকরী এবং শরীর উপযোগে ঔষধ হিসেবে বিসাকোডিলকে চিহ্নিত করা হয়ে থাকে। এ ঔষধ এতে এমন কোন সাইড ইফেক্ট আমাদের চোখে আসে না এবং স্বাস্থ্যহানি দেখা দেয় না।
এই ঔষধ এটি আপনি দুই দিনে নিয়মিত সেবন করার ফলে পুরো এক বছরের মত সময় নির্দ্বিধায় পায়খানা করতে পারেন।
এই ঔষধ দুটি এত বেশি কাজ করে যে, এটি সকল প্রকার প্রাকৃতিক ঔষধি গুন দিয়ে তৈরি করা হয়েছে।
আপনি চাইলে এই শিরাতে গ্রহণ করতে পারেন এবং আপনার পায়খানা ক্লিয়ার করতে পারেন খুব সহজেই।
এই সিরাপটি প্রথমত আপনার পেটের সকল সমস্যার সমাধান করে যেমন এসিডিটি এবং ময়লা আবর্জনা।
তারপর পিচ্ছিল জাতীয় পদার্থ শরীরে উৎপন্ন করে যারা পায়খানা খুব নরম হয় এবং দ্রুত অপসারণ হয়।
এগুলো হলো পায়খানা ক্লিয়ার করার ট্যাবলেটের নাম এবং এখানে আমি শুধুমাত্র একটি সিরাপের কথা উল্লেখ করেছি যা অর্ধেক কার্যকরী আপনার আমার শরীরের জন্য।
পায়খানা ক্লিয়ার করার ঘরোয়া উপায়

কোষ্ঠকাঠিন্য বা পায়খানা কিলিয়ার করার জন্য সবচেয়ে বেশি উপযোগী হচ্ছে ঘরোয়া পদ্ধতি অবলম্বন করা এবং সুস্থ থাকা। ঘরোয়া পদ্ধতি অবলম্বন করে আমরা আমাদের পায়খানা চিরতরের জন্য ক্লিয়ার করতে পারে এবং কোন ধরনের ঝামেলা ছাড়াই কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে পারে।
- কতিপা ঘরোয়া উপায় অবলম্বন করার মাধ্যমে আমরা আমাদের পায়খানা ক্লিয়ার করতে পারি, যেমন:
- নিয়মিত শরীর নাড়াচড়া করা বা হাটা চলা করার মাধ্যমে (সর্বনিম্ন ৩০ মিনিট)।
- পরিমাণ মতো পানি গ্রহণ করা এবং কিছু সময় পরিমাণের অধিক গ্রহণ করা (দুই লিটার)।
- পেটের গ্যাস দূর করার জন্য সকালে ঘুম থেকে উঠে প্রথমে এক গ্লাস পানি পান করা (খালি পেটে)।
- অধিক আঁশযুক্ত খাদ্য গ্রহণ করা এবং আঁশযুক্ত খাদ্য গ্রহণ করে হজম শক্তি বৃদ্ধি করা।
- ইসবগুলের ভুষি গ্রহণ করা এবং এই পদ্ধতিটি অনেক বেশি কাজও করে প্রাচীনকাল থেকে চলে আসছে।
শুধুমাত্র এক একটি ঘরা পদ্ধতি অবলম্বন করার মাধ্যমে আপনি পায়খানা ক্লিয়ার করতে পারবেন খুব সহজেই।
ঘরোয়া পদ্ধতি হচ্ছে এমন একটি পদ্ধতির যার মাধ্যমে আমরা আমাদের পায়খানা চিরতরের জন্য ক্লিয়ার করতে পারি।
নিয়মিত শরীর নাড়াচাড়া করা বা হাটা চলা করার মাধ্যমে
নিয়মিত সরে নাড়াচাড়া করা বা হাঁটাচলা করার মাধ্যমে আমরা আমাদের পায়খানা ক্লিয়ার করতে পারি এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে পারি।
আমাদের মুখ হতে পুরো পাকস্থলী মোট ৩০ ফুট লম্বা নালি দ্বারা গঠিত। যা আমাদের শরীরের উচ্চতার ৫-৬ গুণ হতে পারে।
আরে পুরো নালে যাতে সঠিক মত কাজ করতে পারে এবং দ্রুত হজম করতে পারে সেজন্য আমাদেরকে নাড়াচড়া করতে হবে বা হাঁটাচলা করতে হবে। এই পদ্ধতি অবলম্বন করার মাধ্যমে আমরা দ্রুত আমাদের পায়খানা ক্লিয়ার করতে পারব।
পরিমাণ মতো পানি গ্রহণ করা এবং কিছু সময় পরিমাণের অধিক গ্রহণ করা (দুই লিটার)।
পায়খানা ক্লিয়ার না হওয়ার বা কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দেওয়ার আরো একটি বড় কারণ হলো সঠিক অনুপাতে পানি পান না করা।
আমাদের মধ্যে অনেকেই আছে যারা খুব কম পরিমাণে পানি পান করে এবং অধিক পরিমাণে যে কোন খাদ্য গ্রহণ করে।
এর ফলস্বরূপ আমাদের খাদ্যগুলো হজম হয়ে ঠিকই তবে অনেক বেশি আঠালো হয়ে যায় এবং পায়খানা হওয়ার সময় জমাট বেধে যায়। ঠিক এ কারণে আমাদের পায়খানা ক্লিয়ার হতে সমস্যা দেখা দেয়।
অধিক আঁশযুক্ত খাদ্য গ্রহণ করা এবং আঁশযুক্ত খাদ্য গ্রহণ করে হজম শক্তি বৃদ্ধি করা
অধিক আঁশযুক্ত খাবার খেলে আমাদের হজম শক্তি বৃদ্ধি পায় এবং আমরা দ্রুত হজম করতে সক্ষম হই।
আমরা যত দ্রুত হজম করতে পারব আমাদের পায়খানা তত বেশি ক্লিয়ার হবে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে তত তাড়াতাড়ি মুক্তি পাব।
তাই আপনি বেশি আঁশযুক্ত খাদ্য গুলো গ্রহণ করুন এবং হজম বৃদ্ধি করুন। অধিক আঁশযুক্ত খাবার হিসেবে আপনি ইসবগুলের ভুসি খেতে পারেন কেননা এতে অধিক পরিমাণে আঁশ থাকে এবং গ্যাসীয় সমস্যা দূর করে।
এই ছিল আজকের আমাদের পায়খানা ক্লিয়ার করার ট্যাবলেট এর নাম নিয়ে একটি তথ্যপূর্ণ পোষ্ট আশা করি আপনাকে ভালো লেগেছে।
আরও পড়ুন: প্রসাব ক্লিয়ার করার ঔষধ।