পর্যায় সারণি কাকে বলে? পর্যায় সারণির গুরুত্ব

পর্যায় সারণি কাকে বলে: মৌলসমূহের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মের মাধ্যমে পারমাণবিক সংখ্যার উপর ভিত্তি করে মৌলসমূহকে ক্রমান্বয়ে সারিবদ্ধ করে তৈরি করা সারণিকে পর্যায় সারণি বলে। আন্তর্জাতিক রসায়ন এবং ফলিত রসায়ন সংস্থা সনাক্তকরণ অনুযায়ী এ পর্যন্ত মোট ১১৮ টি মৌল আবিষ্কার হওয়ার মাধ্যমে অবস্থান করেছে।

আমরা এ পর্যন্ত যতগুলো মৌল আবিষ্কার করতে পেরেছি এবং ব্যবহার করতে পেরেছি তার প্রত্যেকটি পর্যায় সারণিতে উল্লেখ রয়েছে।

তাহলে আমরা বলতেই পারি, পর্যায় সারণি হচ্ছে এ পর্যন্ত আবিষ্কৃত প্রত্যেকটি মৌল সন্নিবেশভাবে অবস্থান করা একটি সারণী।

এবং এই সারণীতে এমনভাবে মৌলগুলোকে অবস্থান করা হয়েছে যেন এদের প্রাণের সংখ্যা পরিবর্তন হওয়ার সাথে সাথে ধর্ম পর্যায়ক্রমে আবর্তন হয়।

পর্যায় সারণি কাকে বলে
পর্যায় সারণি কাকে বলে?

এপর্যন্ত প্রায় ১১৮ টি মৌল আবিষ্কারিত হয়েছে এবং এর প্রত্যেকটি মৌল বিভিন্ন ক্ষেত্রে রসায়নে ব্যবহার হয় বিক্রিয়ায়। আর এই সকল মৌলের ভৌত এবং রাসায়নিক সকল ধর্ম সম্পর্কে জানার জন্য আমাদেরকে এ পর্যায় সারণির ধারণা নিতে হবে।

পর্যায় সারণির ধারণা জানার মাধ্যমে আমরা যে কোন মালের ইলেকট্রন বিন্যাস করে উক্ত মৌলের ধর্ম জানতে পারি।

মৌলের যে কোন বিষয় জানার জন্য সবচেয়ে বেশি উত্তম পন্থা অবলম্বন করা হয়েছে এ পর্যায় সারণি তৈরি করে। কেননা এ পর্যায় সারণীটি নির্দিষ্ট ভাগে ভাগ করা হয়েছে এবং প্রত্যেকটি ভাগে অবস্থিত মৌলসমূহ নির্দিষ্ট একটি ধর্ম বিদ্যমান রয়েছে যা আমাদেরকে সহজে বোঝাতে পারে মৌলগুলো সম্পর্কে।

পর্যায় সারণির গুরুত্ব

আমরা তো অনেক তথ্য ইতিমধ্যে পর্যায় সারণি সম্পর্কে পেলাম উপরে উল্লেখিত আমাদের দেওয়া লেখাগুলো পড়ার মাধ্যমে।

তবে প্রশ্ন হচ্ছে এই পর্যায় সারণিকে কেন তৈরি করা হয়েছে এবং পর্যায় সারণী তৈরির পেছনে কি কি মূল কারণ রয়েছে।

পর্যায় সারণি তৈরি করার পেছনে কি কি মূল কারণ রয়েছে এটি আমরা পর্যায় সারণি গুরুত্ব থেকে বুঝতে পারব।

অর্থাৎ যখন গুরুত্ব জানব তখন স্পষ্টভাবে বুঝতে পারব এ পর্যায় সারণি কি কি কারণের জন্য তৈরি করা হয়েছে মৌলগুলো নিয়ে।

পর্যায় সারণির গুরুত্ব অপরিসীম এবং এ পর্যায়ে সারণির মাধ্যমে আমরা নানা ধরনের তথ্য লাভ করতে পারি।

  • পর্যায় সারণির মাধ্যমে আমরা যে কোন মৌলের পর্যায় এবং গ্রুপ উভয় খুব সহজে বের করতে পারি।
  • পর্যায় সারণী দেখার মাধ্যমে আমরা মৌলের ভৌত এবং রাসায়নিক ধর্ম সম্পর্কে জানতে পারি।
  • পর্যায় সারণির মাধ্যমে আমরা মৌলের সনাক্তকরণ খুব সহজেই করতে পারি।
  • মৌলের ভৌত এবং রাসায়নিক ধর্ম বলে কিভাবে পর্যায়ক্রমে আবর্তিত হচ্ছে তা জানতে পারি।
  • পর্যায় সারণির মাধ্যমে আমরা মৌলের ইলেকট্রন বিন্যাস করতে পারি, এবং ইলেকট্রন সংখ্যা সম্পর্কে জানতে পারি।

এগুলো ছিল কিছু গুরুত্ব আমাদের পর্যায় সারণির এবং আমাদের পর্যায় সারণি মূলত এই গুরুত্বের উপর তৈরি করা হয়েছে। পর্যায় সারণির গুরুত্ব আসলেই যে অনেক বেশি তা আমরা এই সকল গুরুত্ব থেকে বুঝতে পারে এবং পর্যায় সারণি থেকে আমরা মৌল গুলোর ধারনা পাই।

আমরা যদি কোন মৌলের সম্পর্কে ধারণা রাখতে না পারি তাহলে কিভাবে উক্ত মৌল নিয়ে কাজ করতে পারব রসায়ন অধীনে।

আর এ পর্যায় সারণি থাকার মাধ্যমে আমরা এ পর্যন্ত আবিষ্কৃত প্রত্যেকটি মৌলের নাম থেকে খুব সহজে পেতে পারি।

উপসংহার:

পর্যায় সারণি কাকে বলে এবং পর্যায় সারণির গুরুত্ব এর উপর ভিত্তি করে আজকের পোস্টটি আপনার মাঝে উপস্থাপন করা হয়েছে। আর অবশ্যই আমি বলতে চাই যে রসায়নের সম্পূর্ণ বিষয় বুঝতে গেলে আমাদেরকে প্রথমে এ পর্যায় সারণি বুঝতে হবে এবং মৌলের অবস্থান বুঝতে হবে।

পর্যায় সারণির অযথা কোন কারণ ছাড়া তৈরি করা হয়নি বরং এটি নির্দিষ্ট কিছু ব্যবস্থা দ্বারা গঠন করা হয়েছে।

অর্থাৎ পর্যায় সারণিতে উপস্থিত প্রত্যেকটি মৌল নির্ধারিত কিছু নিয়ম অবলম্বন করার মাধ্যমে অবস্থান করানো হয়েছে।

আর এদেরকে এমন ভাবে অবস্থান করা হয়েছে যে একই ধর্ম বিশিষ্ট মৌলকে একটি নির্দিষ্ট ব্লগে বিভক্ত করা হয়েছে পর্যায় সারণিতে। আর নির্দিষ্ট ব্লকে একই ধর্ম বিশিষ্ট কিছু মৌল যুক্ত করার কারণে আমরা মৌলগুলো সম্পর্কে সহজে বুঝতে পারি, ধারণা অর্জন করতে পারি।

আবার সেই সাথে এ পর্যায় সারণির ব্যবহার করে আমরা যে কোন মৌলের পারমাণবিক সংখ্যা সম্পর্কে ধারণা পায়।

আর পারমাণবিক সংখ্যা ব্যবহার করে আমরা মৌলের ধর্ম সম্পর্কে বুঝতে পারি এবং ক্যাটায়ন ও অ্যানায়ন এ নিয়ে গবেষণা করতে পারি।

পর্যায় সারণি হচ্ছে আজ পর্যন্ত আবিষ্কৃত প্রত্যেকটি মৌলের সমন্বয়ে গঠিত একটি সুবিন্যস্ত সারণি। রসায়নের এই পর্যায় সারণিতে প্রত্যেকটি মৌল নিজেদের গঠন এবং ধর্মের উপর ভিত্তি করে সঠিকভাবে বিন্যস্ত করা আছে।

আরও পড়ুন: তেজস্ক্রিয় আইসোটোপ কাকে বলে?

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top