নিষ্ক্রিয় গ্যাস কাকে বলে? নিষ্ক্রিয় গ্যাসের সংজ্ঞা দাও

নিষ্ক্রিয় গ্যাস কাকে বলে: যে সকল মৌলের সর্বশেষ শক্তিস্তরে প্রয়োজনীয় ইলেকট্রন পূর্ণ থাকে ও রাসায়নিকভাবে কোন বিক্রিয়া অংশগ্রহণ করে না সেই সকল মৌলগুলোকে নিষ্ক্রিয় গ্যাস বলা হয়।

পর্যায় সারণির ১৮ নম্বর গ্রুপে অবস্থিত যতগুলো মৌল রয়েছে প্রত্যেকটি মৌলকে একত্রে নিষ্ক্রিয় গ্যাস বলা হয়। অর্থাৎ পর্যায় সারণির গ্রুপ ১৮ এর প্রত্যেকটি মৌলই হচ্ছে নিষ্ক্রিয় গ্যাস এবং এই গ্যাস গুলো সর্বাধিক সংখ্যক পরিমাণ ইলেকট্রন ধারণ করে পূর্ণ থাকে।

নিষ্ক্রিয় গ্যাস কাকে বলে
নিষ্ক্রিয় গ্যাস কাকে বলে?

অভিজাত বা নিষ্ক্রিয় গ্যাসের সংজ্ঞা: যে সকল মৌল ইলেকট্রন বিনিময় বা ভাগাভাগি করতে চায় না এবং যৌগ গঠন করে না তাদেরকে নিষ্ক্রিয় গ্যাস বলা হয়। এরা সাধারণত যেকোন বিক্রিয়া প্রভাবক হিসেবে কাজ করে এবং প্রায় নিয়নকে বিক্রিয়ার উৎপাদক হিসেবে দেখা দেয়

নিষ্ক্রিয় গ্যাস বলতে ওই সকল গ্যাসকে বা মৌলকে বোঝানো হয় যে সকল গ্যাস বা মৌল কোন প্রকার কাজে অংশগ্রহণ করতে চায় না। আর এখানে মনে রাখবেন কাজ বলতে বিক্রিয়াকে বোঝানো হয়েছে অর্থাৎ এরা কখনো বিক্রয়ায় অংশগ্রহণ করে না।

অভিজাত বা নিষ্ক্রিয় মৌলকে নিষ্ক্রিয় গ্যাস বলা হয় এর মূল কারণ হলো এরা সাধারণ তাপমাত্রায় গ্যাসে অবস্থায় বিরাজমান করে আমাদের পরিবেশে। সাধারণ তাপমাত্রায় গ্যাসীয় অবস্থায় বিরাজমান থাকার কারণে এই সকল মৌলকে নিষ্ক্রিয় গ্যাস নামে অবহিত করা হয়।

নিষ্ক্রিয় গ্যাসের বৈশিষ্ট্য

পর্যায় সারণীতে বিভিন্ন প্রকার মৌল রয়েছে এবং এদের ধর্মের উপর ভিত্তি করে নিষ্ক্রিয় গ্যাস বা মৌল অন্যতম একটি শাখা।

সারণির এই ব্লকে উপস্থিত মৌল গুলোর কিছু নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্য রয়েছে যেগুলো দ্বারা এদেরকে নিষ্ক্রিয় গ্যাস বলে ডাকা হয়।

আর অবশ্যই আমাদেরকে এই সকল নিষ্ক্রিয় গ্যাসের বৈশিষ্ট্য গুলো সম্পর্কে অবগত হতে হবে পর্যায় সারণির জন্য। আমরা যদি পর্যায় সারণি থেকে নিষ্ক্রিয় গ্যাস গুলো সনাক্ত করে তাহলে অবশ্যই এর জন্য বৈশিষ্ট্য প্রয়োজন হবে আমাদের পক্ষে জানা।

অভিজাত বা নিষ্ক্রিয় গ্যাসের কতিপয় বৈশিষ্ট্য নিচে উল্লেখ করা হলো:

  • রাসায়নিকভাবে এরা নিষ্ক্রিয় হয় এবং জারণ মান শূন্য হয়।
  • সর্বশেষ শক্তিস্তরে ধারণযোগ্য পরিপূর্ণ ইলেকট্রন বিদ্যমান থাকে এবং স্থিতি অবস্থান করে।
  • সাধারণ তাপমাত্রায় প্রায় প্রত্যেকটি পরিবেশে এদেরকে গ্যাস হিসেবে খুঁজে পাওয়া যায়।
  • এদেরকে বিভিন্ন বিক্রিয়ায় প্রভাবক রূপে লক্ষ্য করা যায় এবং বিক্রিয়ার রূপ পরিবর্তন করতে পারে।
  • এরা যেহেতু সাধারণ তাপমাত্রায় গ্রীষ্ম অবস্থায় পরিলক্ষিত হয় তাই এদের স্ফুটনাঙ্ক ও গলনাঙ্ক অতি ক্ষুদ্র।
  • নিষ্ক্রিয় গ্যাস গুলোর জারণ মান শূন্য হয়, অর্থাৎ তারা বিক্রিয়া করে না।

এগুলো হলো নিষ্ক্রিয় গ্যাসের কিছু বৈশিষ্ট্য এবং এ বৈশিষ্ট্য গুলো সর্বদা নিষ্ক্রিয় গ্যাসের জন্য বিবেচিত হয় রসায়নে ও গবেষণায়।

আর অবশ্যই আপনাকে নিষ্ক্রিয় গ্যাসের এই সকল বৈশিষ্ট্য মনে রাখতে হবে পর্যায় সারণির মৌল গুলো সম্পর্কে জ্ঞান বিকাশিত করার জন্য।

পর্যায় সারণিতে উপস্থিত নিষ্ক্রিয় গ্যাস গুলোকে আমরা আরো বেশ কয়েকটি নামে ডাকতে পারে ও সম্বোধন করতে পারি। তাই চলুন এবার তাহলে দেখে নেওয়া যাক পর্যায় সারণীতে উপস্থিত নিষ্ক্রিয় গ্যাস গুলোকে আমরা অন্য কি নামে ডাকতে পারি।

নিষ্ক্রিয় গ্যাসের অন্য নাম

আমি যেমন পূর্বে বলেছিলাম যে পর্যায় সারণিতে উপস্থিত নিষ্ক্রিয় গ্যাস গুলোকে আমরা বেশ কয়েকটি নামে চিনতে পারি। তবে অনেকেই আছেন যারা নিষ্ক্রিয় গ্যাসের ব্যতিক্রমী নাম বা অন্য নাম গুলো সম্পর্কে জানেন না তাই এখানে তথ্য রয়েছে নিষ্ক্রিয় গ্যাসের অন্য নামের।

নিষ্ক্রিয় গ্যাসের অন্য নাম দ্বারা আপনার মাঝে যদি প্রশ্ন এসে যায় তাহলে আপনি খুব সহজে বুঝতে পারবেন এটি নিষ্ক্রিয় গ্যাস।

কেননা নিষ্ক্রিয় গ্যাসকে পরীক্ষায় আরো বেশি জটিল করার জন্য আপনাকে এ সকল অন্য নাম দিয়ে পরীক্ষা করতে পারে শিক্ষক পরীক্ষায়।

নিষ্ক্রিয় গ্যাসগুলোকে বিভিন্ন নামে ডাকা হয়, যেমন:

  • নিষ্ক্রিয় গ্যাস
  • অভিজাত গ্যাস
  • নোবেল গ্যাস
  • রেয়ার গ্যাস
  • জড় গ্যাস বা ইনার্ট গ্যাস

অভিজাত বা নিষ্ক্রিয় গ্যাস গুলোকে এই সকল ব্যতিক্রমে নামে ডাকা হয় এবং এগুলোর নাম ডাকার পিছনে কিছু কারণ রয়েছে।

নিষ্ক্রিয় গ্যাস: নিষ্ক্রিয় গ্যাস নামে এই সকল মৌলকে ডাকার মূল কারণ হলো এরা রাসায়নিকভাবে বেশ নিষ্ক্রিয় হয়ে থাকে তাই।

অভিজাত গ্যাস: বিভিন্ন বিক্রিয়ায় ও যৌগের মধ্যে এরা অভিজাত হিসেবে পরিলক্ষিত হয় বলে এদেরকে অভিজাত বলা হয়।

নোবেল গ্যাস: এই সকল গ্যাসগুলো প্রকৃতিতে খুব কম পরিমাণ পাওয়া যায় এবং পাও খুব দুর্লভ হয় এদেরকে নোবেল গ্যাস বলা হয়।

রেয়ার গ্যাস: অনেক খোঁজাখুঁজি করার পর এবং পরিবেশে এই সকল গ্যাসের বিদ্যমান অতি নগণ্য হওয়ায় এদেরকে রেয়ার গ্যাস বলা হয়।

জড় গ্যাস বা ইনার্ট গ্যাস: এরা কোন বিক্রিয়া অংশগ্রহণ করেনা অর্থাৎ এরা জড় অবস্থায় থাকে বলে এই সকল দেশগুলোকে জড় গ্যাস বা ইনার্ট গ্যাস বলা হয়।

তবে জৈব যৌগে বা জৈব রসায়নে এদেরকে অবশ্যই ব্যবহার করা হয় কেননা এরাই মূলত সেখানে প্রভাবক রূপে ক্রিয়া করে।

একটি বিক্রিয়া প্রভাবক কতটুকু ভূমিকা পালন করে তা সকলেরই জানা এবং এক্ষেত্রে অবশ্যই আমাদেরকে এই সকল গ্যাসের বিষয়ে জানতে হবে।

এটি ছিল নিষ্ক্রিয় গ্যাস কাকে বলে বিষয়টি নিয়ে একটি খুব ভালো এবং তথ্যপূর্ণ পোষ্ট।

আরও পড়ুন: মুদ্রা ধাতু কাকে বলে?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!