নাউজুবিল্লাহ অর্থ কি: নাউজুবিল্লাহ অর্থ হচ্ছে আল্লাহ না করুন, অর্থাৎ নাউজুবিল্লাহ বলতে আল্লাহর না করুন এমন কিছু বুঝায়।
কিন্তু এমনটি নয়, কেননা আউজুবিল্লাহ শব্দের অর্থ হচ্ছে আমি আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাই, এবং নাউজুবিল্লাহ শব্দের অর্থ হচ্ছে আমরা আল্লাহর কাছ থেকে আশ্রয় চাই। অর্থাৎ আউজু বলতে শুধুমাত্র আমি আশ্রয় চাই কে বোঝানো হয়। এবং নাউজু বলতে আমরা সকলেই বা আমরা আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাই বোঝানো হয়।
এক কথায় বলতে গেলে নাউজুবিল্লাহ হচ্ছে আউযুবিল্লাহ শব্দের বহুবচন, যেখানে আউযুবিল্লাহ বলতে শুধুমাত্র আমাকে বোঝানো হয় এবং নাউজুবিল্লাহ বলতে আমাদের সকলকে বোঝানো হয়।
আমাদেরকে অবশ্যই আল্লাহর নিকট হতে আশ্রয় প্রার্থনা করতে হবে এবং সব সময় আল্লাহর আশ্রয় কামনা করতে হবে।
যেকোনো ধরনের বিপদ-আপদ বালা মুসিবত থেকে একমাত্র হেফাজত করার মালিক হচ্ছে মহান রাব্বুল আলামীন।
সেই মহান রাব্বুল আলামীনের নিকট হতে যেকোনো ধরনের বিপদ আপদ বালা মুসিবত থেকে হেফাজত কামনার জন্য আমাদেরকে নাউজুবিল্লাহ পড়তে হয়। নাউজুবিল্লাহ পাঠ করার মাধ্যমে আমরা সকলের জন্য হেফাজতের কামনা করতে পারে এবং আশ্রয় গ্রহণ করতে পারি।
এখন অনেকে বলবেন মহান রাব্বুল আলামীনের কাছে আমরা না চাইতেই তো আশ্রয় গ্রহণ করার জন্য অশেষ নেয়ামত দিয়েছেন।
ওই নেয়ামত গুলো গ্রহণ করার মাধ্যমে আমরা নিজের আশ্রয় তৈরি করতে পেরেছি এবং সুস্থভাবে জীবন পরিচালনা করতেছি।
আসলে আপনি যদি এমনটি ভাবেন তাহলে ভুল, হয়তো বা আপনি নাউজুবিল্লাহ পাঠ করেন না কিন্তু পুরো বিশ্বের যে কোন একজন প্রতিনিয়তই একবার হলেও নাউজুবিল্লাহ পাঠ করে। আর সেই পাশ করার মাধ্যমে পুরো বিশ্বের প্রত্যেকটি মানুষের জন্য আশ্রয় চাওয়ার দোয়া হয়ে যায়।
তাহলে কিভাবে আপনি সত্য বললেন কেননা, নাউজুবিল্লাহ প্রতিনিয়তায় পাঠ করা হয় এবং ইহার মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা আমাদের আশ্রয় প্রদান করেন।
নাউজুবিল্লাহ পাঠ করা আমাদের জন্য অনেক বেশি তাৎপর্যময় কেননা ইহার মাধ্যমে আমরা আল্লাহ তাআলার নিকট হতে আশ্রয় লাভ করতে পারি।
মনে রাখবেন, আমাদেরকে আশ্রয় প্রদান করার একমাত্র মালিক হলেন সেই মহান রাব্বুল আলামীন যিনার দোয়ায় আমরা জীবিত।
নাউজুবিল্লাহ কখন বলতে হয়?
যেকোনো মন্দ কাজ বা গুনাহের কাজ দেখলে অথবা শুনলে তা থেকে নিজেকে এবং সকলকে বাঁচার জন্য এটি বলা হয়। অর্থাৎ চোখের সামনে কোন গুনাহের কাজ হলো এবং আমি তার বাধা করতে পারলাম না বা বাধা করতে পারলাম ঠিক এক্ষেত্রে নাউজুবিল্লাহ পড়তে হয়।
যেখানে আমরা আল্লাহ তাআলার নিকট হতে এই সকল গুনাহের কাজ হতে বিরত থাকার জন্য আশ্রয় কামনা করি।
আবার আমরা যদি কখনো কোন মন্দ কাজের সমালোচনা শুনি বা জানতে পারে তাহলে আমাদেরকে নাউজুবিল্লাহ পড়তে হয়।
কেননা সে মন্দ কাজ শোনার পর আমাদেরকে চেষ্টা করতে হবে যেন আমাদের দ্বারা সেই রকম কোন মন্দ কাজ না হয়।
আর চেষ্টা করা পাশাপাশি আল্লাহ তাআলা নিকট হতে নিজেকে এবং আমাদের সবাইকে আশ্রয় চাইতে হয় মহান রাব্বুল আলামিনের কাছ থেকে।
আমাদের সকলের জন্য একসঙ্গে মহান রাব্বুল আলামিনের কাছে আশ্রয় চাওয়ার সবচেয়ে ভালো উপায় হচ্ছে নাউজুবিল্লাহ পাঠ করা।
অর্থাৎ আপনি যেকোনো সময় যদি মন্দ কাজের কোন আহ্বান পান, বা দেখতে পান, বা শুনতে পান তাহলে নাউজুবিল্লাহ পাঠ করুন।
নাউজুবিল্লাহ পাঠ করার মাধ্যমে আমরা আল্লাহ তাআলার নিকট হতে আশ্রয় কামনা করি। আর আমরা যখন আল্লাহ তাআলার নিকট হতে আশ্রয় কামনা করে তখন অবশ্যই আল্লাহ তা’আলা আমাদের দোয়া কবুল করেন এবং আমাদেরকে আশ্রয় প্রদান করেন।
আমাদেরকে যেকোন বিষয় হতে আশ্রয় প্রদান করা এবং মন্দ কাজ হতে বিরত রাখার একমাত্র মালিক হলেন মহান রাব্বুল আলামীনের।
রহমত এবং করুনায় ভরপুর করে যে আল্লাহ তায়ালা আমাদের সৃষ্টি করেছেন অবশ্যই তিনার নিকট আশ্রয় গ্রহণ করাতে কামনা করতে হবে।
নাউজুবিল্লাহ পাঠ করার মাঝে রয়েছে আশ্রয় কামনার দোয়া এবং আমরা সকলেই বিনা আশ্রয় জীবিত থাকতে পারবো না।
আল্লাহ যদি আমাদেরকে আশ্রয় প্রদান না করেন তাহলে আমরা কোন ধরনের নিয়ামত গ্রহণ করতে পারবো না, যেগুলো আল্লাহর প্রদত্ত।
আর যেহেতু আমরা কোন প্রকার নিয়ামত গ্রহণ করতে পারবো না সে ক্ষেত্রে অবশ্যই আমাদের জীবিত থাকার কোন সম্ভাবনা থাকবে না।
উপসংহার:
নাউজুবিল্লাহ অর্থ কি এবং নাউজুবিল্লাহ কখন বলতে হয় সকল কিছুর উপর ভিত্তি করে এই পোস্টটি ভালোভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।
নাউজুবিল্লাহ শব্দের অর্থ কি এবং ইহার দ্বারা কি বুঝানো হয়েছে তা প্রথমে আলোচনা করা হয়েছে।
পরবর্তীতে নাউজুবিল্লাহ কখন পাঠ করতে হবে বা বলতে হবে সে নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। নাউজুবিল্লাহ শব্দটি দ্বারা যেহেতু আল্লাহর নিকট হতে আশ্রয় কামনার কথা বলা হয়েছে তাই অবশ্যই আমাদেরকে একটি তেলাওয়াত করতে হবে।
যেহেতু আল্লাহ তায়ালার আশ্রয় না পাওয়া ছাড়া আমরা জীবিত থাকতে পারবো না সেহেতু আমাদেরকে অবশ্যই নাউজুবিল্লাহ তেলাওয়াত করতে হবে।
সকল কিছুর কিছু না কিছু তাৎপর্য থাকেই এবং ঠিক এক্ষেত্রে নাউজুবিল্লাহ শব্দটির তাৎপর্য রয়েছে।
নাউজুবিল্লাহ শব্দটি তাৎপর্য এটাই যে ইহার দ্বারা আমরা আল্লাহর নিকট হতে আশ্রয় গ্রহণ করতে পারে এবং আল্লাহ তা’আলা আমাদেরকে আশ্রয় প্রদান করেন। আল্লাহ তাআলার নিকট হতে আশ্রয় গ্রহণ করার মাধ্যমে আমরা যাবতীয় নেয়ামত গ্রহণ করতে পারে যা আল্লাহ তাআলা থেকে প্রদত্ত।
আল্লাহ তাআলা সবকিছু বান্দার জন্য সৃষ্টি করেছেন এবং বান্দা যদি আল্লাহর নিকট আশ্রয় গ্রহণে কামনা না করে তাহলে কেমন হয়।
তাই সব কিছুর উপর বিবেচনা করে অবশ্যই আমাদেরকে নাউজুবিল্লাহ তেলাওয়াত করতে হবে আল্লাহ তাআলার নিকট থেকে আশ্রয় লাভের উদ্দেশ্যে।
নাউজুবিল্লাহ সম্পর্কিত আরো অনেক ধরনের প্রশ্ন আমাদের মাঝে উল্লেখ চলে আসে যে নাউজুবিল্লাহ পাঠ করার কি কোন সুনির্দিষ্ট সময় রয়েছে। এ প্রশ্নটির উত্তর হলো না মোটেই না কেননা আপনি যখনই কোন দুঃসংবাদ পাবেন কিংবা মন্দ কাজ দেখতে ও শুনতে পারবেন তখনই আপনি পড়তে পারবেন নাউজুবিল্লাহ।
আরও পড়ুন: পৃথিবীর সবচেয়ে ভালো মানুষ কে?