দানাদার খাদ্য কাকে বলে: যে সকল খাদ্যে খুব কম পরিমাণ আঁশ থাকে এবং বিপাক হওয়ার পর বেশি পরিমাণে শক্তি পাওয়া যায় তাকে দানাদার খাদ্য বলে। দানাদার খাদ্যে খুব কম পরিমাণ আঁশ থাকে এবং কম পরিমাণে আঁশ থাকার ফলে খুব দ্রুত বিপাক প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়।
দ্রুত বিপাক সম্পন্ন হওয়ার ফলে কম শক্তি খরচে বিপাক প্রক্রিয়া ঘটে। আবার পরিপাককৃত খাদ্য হতে বেশি পরিমাণে শক্তি পাওয়া যায়। সহজ ভাষায়, খুব কম পরিমাণ আঁশ এবং বেশি শক্তি উৎপাদনকারী খাদ্যকে বলা হয় দানাদার খাদ্য।
গবাদি পশুর জন্য কেবলমাত্র আমরা দানাদার খাদ্য ব্যবহার করে থাকি, কেননা ইহার মাধ্যমে পশু খুব দ্রুত বিপাক প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারে এবং বেশি শক্তি উৎপাদন করতে পারে। ফলস্বরূপ বেশি উৎপাদনকৃত শক্তির মধ্যে প্রয়োজনীয় শক্তি কাজে লাগিয়ে অতিরিক্ত শক্তি সঞ্চয় করে রাখতে পারে আমাদের গবাদি পশু।
সঞ্চয় করে শক্তি রাখার ফলে আমাদের গোবাদী পশু গুলো খুব দ্রুত উৎপাদন বৃদ্ধি করতে পারে এবং মোটাতাজা হয়।
ফলস্বরূপ খামার ব্যবসায়ীরা অনেক বেশি লাভবান হয় দানাদার খাদ্য পরিবহন করার মাধ্যমে।
বর্তমান সময় দানাদার খাদ্যটি এত বেশি উপকারী যা বলা সাধ্যের বাইরে।
দুধাল এবং মাংসাশী গবাদি পশুদেরকে শুধুমাত্র আঁশ জাতীয় খাবার সরবরাহ করলে কাঙ্খিত ভাল উৎপাদন লাভ করা যায় না। কাঙ্খিত ভালো উৎপাদন লাভের উদ্দেশ্যে এবং কম পরিশ্রমের দ্রুত উৎপাদন লাভ করতে দানাদার খাদ্য ব্যবহার করা হয়।
দানাদার খাদ্য কয় প্রকার ও কি কি?
সংজ্ঞা বা দানাদার খাদ্য কাকে বলে এ বিষয়ে বিস্তারিত জ্ঞান অর্জনের জন্য আমাদেরকে দানাদার খাদ্য কয় প্রকার ও কি কি এ বিষয়ে ধারণা অর্জন করা উচিত। তাই আপনাদের ধারণা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে নিচে দানাদার খাদ্য কয় প্রকার ও কি কি এ বিষয়ে উল্লেখ করা হলো:
দানাদার খাদ্যকে প্রধানত দুই ভাগে ভাগ করা যায়। যথা:
১.) প্রাণিজ উৎস বা প্রাণিজ দানাদার খাদ্য: ফিস মিল, ব্লাডমিল, ফেদার মিল, শামুকের গুড়া এবং অন্যান্য মিল ইত্যাদি।
২.) উদ্ভিদ উৎস বা উদ্ভিদের দানাদার খাদ্য: ভুট্টা, ভুট্টার গুঁড়া, চালের গুড়া, খৈল, ভুষি, খুদি, গমের গুড়া এবং ছোলা বুট ইত্যাদি।
দানাদার খাদ্য হিসেবে, এই খাদ্যকে যতগুলো ভাগে ভাগ করা যেতে পারে তা উপরে উল্লেখ করেছি এবং উদাহরণসহ দিয়েছি।
দানাদার খাদ্য হিসেবে আপনি যেকোনো ধরনের খাদ্য প্রদান করতে পারেন এবং উভয় খাদ্য প্রদান করতে পারেন কোন সমস্যা নেই।
আমরা আমাদের পশুকে যদি দানাদার খাদ্য প্রদান করি তাহলে আমাদের পালনকৃত পশু হতে অনেক মুনাফা অর্জন করা সম্ভব।
আবার সেই সাথে আমাদের পশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে চিকিৎসার জন্য কম খরচ করতে হবে, যা অবশ্যই ভালো।
দানাদার খাদ্যের তালিকা:
আপনার পালনকৃত পশু হতে অধিক উৎপাদন লাভ ও অধিক মুনাফা লাভ করতে দানাদার খাদ্য অনেক বেশি প্রয়োজন। আবার এই দানাদার খাদ্য খাওয়ার ফলে আপনার পালনকৃত পশুর শক্তি বৃদ্ধি পায় যা পশুকে রোগবালাই থেকে রক্ষা করতে পারে।
দানাদার খাদ্য আপনার পশুর জন্য হিসেবে কর্তৃক খাদ্য মিলিয়ে একটি তালিকা তৈরি করা যেতে পারে যা আপনার পশুর জন্য উপকারী।
আপনার পশুর জন্য দানাদার খাদ্য হিসেবে যে খাদ্য তালিকা উল্লেখ করা যেতে পারে তা নিচে উল্লেখ করা হলো:
- ফিস মিল, ব্লাডমিল, ফেদার মিল, শামুকের গুড়া, ফিট ইত্যাদি।
- ভুট্টা, ভুট্টার গুড়া, চালের গুড়া, ভুসি, খুদি, ছোলা বুট, ধানের গুড়া, গমের গুড়া এবং খৈল ইত্যাদি।
- ব্রন, এসিআই ফিট, চক্কর এবং খোদ্দা ইত্যাদি।
দানাদার খাদ্যের তালিকা এবং দানাদার খাদ্যকে কয় ভাগে ভাগ করা হয়েছে ও কি কি এ বিষয়ে বিস্তারিত জ্ঞান লাভের পর আশা করি আমরা সবাই দানাদার খাদ্য কাকে বলে এ বিষয়ে বিস্তারিত জ্ঞান লাভ করতে পেরেছি।
অবশ্য দানাদার খাদ্যের ভিতরে এই বিষয়বস্তুগুলো পড়ে তাই এ বিষয়ে আমার পক্ষ হতে আপনাকে জ্ঞান দেওয়ার জরুরি মনে হয়েছে।
আরও পড়ুন: ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্য তালিকা।