তাকওয়া অর্থ কি? তাকওয়ার গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা

তাকওয়া অর্থ কি: তাকওয়া শব্দের অর্থ বিরত থাকা, বেঁচে থাকা, ভয় করা, নিজেকে রক্ষা করা, মাসুম ও নিষ্পাপ হওয়া। ব্যবহারিক অর্থে তাকওয়া শব্দের অর্থ পরহেজগার, আত্মশুদ্ধি, খোদাভিতি, পাপাচার থেকে নিজেকে রক্ষা করা।

বান্দা যখন আল্লাহ তাআলার ভয়ে যাবত পাপ কাজ থেকে বিরত থাকতে পারে এবং নিষ্পাপ হয় তখন একে তাকওয়া বলে।

যেকোনো পাপ কাজ থেকে বিরত থেকে তাকওয়া অর্জন করা কোন সাধারণ বিষয় নয় বরং এটি ধৈর্যের বিষয়। পাপ কাজ করার জন্য আপনি শয়তানের পক্ষ হতে অনেক বেশি ধোঁকা পেতে পারেন এবং এর জন্য আপনাকে ধৈর্যের সাথে বিরত থাকতে হবে।

তাকওয়া অর্থ কি
তাকওয়া অর্থ কি?

ধৈর্যের সাথে যে কোন পাপ কাজ থেকে নিজেকে বিরত রাখার এই প্রচেষ্টা বা প্রক্রিয়াকে আরবি ভাষায় তাকওয়া বলে। তাকওয়া হচ্ছে ঈমানের একটি অন্যতম মূল বিষয় এবং তাকওয়া অর্জনের মাধ্যমে ঈমানের মজবুতি বৃদ্ধি পায় ও আল্লাহ তায়ালার উপর বিশ্বাস স্থাপন হয়।

যদি আপনার আমার বিশ্বাস আল্লাহ তাআলার উপর পরিপূর্ণরূপে না থাকে তাহলে তাকওয়া আমাদের দ্বারা সম্ভব নয়।

যখন আমরা আল্লাহ তাআলাকে পরিপূর্ণ বিশ্বাস করতে পারব এবং তিনার ভয় অন্তরে আনতে পারব তখন তাকওয়া হবে। এই ভয় আমাদেরকে যেকোনো পাপ কাজ থেকে বিরত রাখার জন্য যথেষ্ট হবে এবং পাপ কাজ থেকে বিরত থাকার মাধ্যমে তাকওয়া পালন হবে।

তাকওয়ার গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা

আমাদের জীবনে তাকওয়ার গুরুত্ব এবং প্রয়োজনীয়তা অনেক বেশি রয়েছে যা আমাদের জীবন সহজ করে তোলে ইসলামে।

ইসলামের জীবন সহজ করে গড়ে তোলার জন্য তাকওয়া অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনকারী বৈশিষ্ট্য হিসেবে আখ্যায়িত হতে পারে।

ইসলাম অনুযায়ী জীবন পরিচালনা করতে মূলত পাপ কাজ থেকে বিরত থাকা বেশি প্রয়োজন হয়ে থাকে। আর পাপ কাজ থেকে বিরত থাকার জন্য অবশ্যই তাকওয়ার প্রয়োজনীয়তা অনেক বেশি আমাদের জীবন এ পরিবর্তন আনার জন্য বিরত থাকার মাধ্যমে।

নিচে উল্লেখযোগ্য কিছু তাকওয়ার গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা সমূহ উল্লেখ করা হলো:

  • আল্লাহ তাআলার প্রতি আমাদের অনুগত্য এবং ভয়-ভীতি অনেক বেশি জাগ্রত করে থাকে।
  • যে কোন প্রকার পাপ কাজ থেকে বিরত থাকার মাধ্যমে নিষ্পাপ হওয়া যায় যা জান্নাতে প্রবেশ করার মাধ্যম।
  • শুধুমাত্র বিরত থাকা নয় সেই সাথে ইবাদত করার মত একটি প্রক্রিয়া চালু হয় তাকওয়া অর্জনের মাধ্যমে।
  • নিজেকে ইসলাম অনুযায়ী সঠিকমত পরিচালনা করা যায় এবং সে অনুযায়ী কল্যাণ লাভ করা যায় জীবনে।
  • এই তাকওয়া অর্জনের মাধ্যমে আল্লাহ তা’আলা সন্তুষ্টি অর্জন করা যায় যা আমাদের কল্যাণ নিহিত করতে পারে।

এগুলো হলো তাকওয়া অর্জনের গুরুত্ব প্রয়োজনীয়তা এবং এছাড়াও আরো অনেক গুরুত্ব রয়েছে আমাদের জীবনে তাকওয়ার।

তাই তাকওয়ার গুরুত্বের উপর বিবেচনা করে অবশ্যই আমাদেরকে তাকওয়া অর্জন করার চেষ্টা করতে হবে এবং বিরত থাকতে হবে পাপ থেকে।

একমাত্র সহজে পাপ থেকে বিরত থাকার মাধ্যমে আমরা তাকওয়া অর্জন করতে পারে এবং আল্লাহর ভয় সৃষ্টি করতে পারি।

তাকওয়া কত প্রকার ও কি কি?

তাকওয়ার কিছু প্রকারভেদ রয়েছে এবং এই প্রকারভেদ গুলো অনুযায়ী তাকওয়া বিভিন্নভাবে আমাদেরকে বিরত করে থাকে। অবশ্যই আমাদেরকে তাকওয়া অর্জন করার পূর্বে তাকুয়ার এই সকল প্রকারভেদ গুলো সম্পর্কে জেনে নিতে হবে বিরত থাকার জন্য।

আমরা বিভিন্নভাবে পাপ কাজে লিপ্ত হয়ে পড়ে এবং এই পাপ কাজ অনুযায়ী তাকওয়ার পরিবর্তন হয়ে থাকে বিরত থাকার জন্য।

প্রত্যেকটি পাপ কাজ থেকে বিরত থাকার জন্য আমাদেরকে বিভিন্ন উপায়ে তাকওয়া অর্জন করতে হয় এবং পাপ অনুযায়ী বিরত থাকতে হয়।

তাকওয়া তিন প্রকার, যথা:

  • কুফর, শিরক এবং অন্যান্য পাপ কাজ থেকে বিরত করা।
  • আল্লাহ ও তাঁর রাসূল কর্তৃক অপছন্দনীয় কাজ হতে বিরত থাকা।
  • অন্তরে আল্লাহ তায়ালার বিশ্বাস ব্যতীত যাবতীয় দুনিয়া চিন্তা ভাবনা দূর করা।

এই তিনটি হচ্ছে তাকওয়ার প্রকারভেদ বা স্তর যার মাধ্যমে মানুষের অন্তরের মধ্যে তাকওয়া প্রতিষ্ঠিত হয়।

তাকওয়া তিন প্রকার যার মধ্যে প্রথম তাকওয়া হচ্ছে কুফরশীল থেকে বিরত থাকা।

অর্থাৎ কুফর এবং শিরক থেকে নিজেকে বিরত রাখার ফলে তাকওয়া অর্জন করা যায়। দ্বিতীয়ত অপছন্দনীয় যাবতীয় কাজ থেকে বিরত থাকার ফলে তাকওয়া অর্জন হয়।

তৃতীয়ত ও অন্তরে আল্লাহ তায়ালার বিশ্বাস পরিপূর্ণভাবে অর্জনের মাধ্যমে তাকওয়া অর্জন হয়। যেহেতু এই তিন মাধ্যমে তাকওয়া অর্জন হয় তাই তাকওয়া তিন প্রকার।

আরও পড়ুন: আখলাকে হামিদা অর্থ কি?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!