শরীরে কোলেস্টেরল বেড়ে যাওয়ায় কোলেস্টেরল কমানোর খাদ্য তালিকা নিয়ে প্রশ্ন করে থাকে অনেক ধরনের ব্যক্তি। আর আপনিও যদি কোলেস্টেরল কমানোর জন্য পরিশ্রম করতে চান এবং সঠিক খাদ্য মানতে চান তাহলে অবশ্যই ডায়েট চার্ট মানতে হবে।
অর্থাৎ আপনার শরীরে যত সকল অতিরিক্ত কোলেস্টেরল রয়েছে সে সকল কোলেস্টেরল দূর করার জন্য ডায়েট চার্ট মানতে হবে। আর কোলেস্টেরল কমানোর জন্য আপনাকে ভিন্ন এক ধরনের খাদ্য তালিকা অবলম্বন করে নিজেকে সুস্থ রাখে কোলেস্টেরল কমাতে হবে।
কোলেস্টেরল কমাতে গেলে আপনি যে খাওয়া বন্ধ করে দেবেন এমন না বরং এতে আপনার শরীর অনেক বেশি দুর্বল হতে পারে। তাই আপনাকে সঠিক খাদ্য তালিকা অবলম্বন করে খাদ্য গ্রহণ করার মাধ্যমে শরীর সবল করে কোলেস্টেরল দূর করতে হবে।
নিচে কোলেস্টেরল কমানোর খাদ্য তালিকা বা ডায়েট চার্ট উল্লেখ করা হলো:
- কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে খাদ্য তালিকায় রাখতে হবে প্রচুর পরিমাণ শাকসবজি, মনে রাখবেন শাকসবজিতে উপস্থিত ফাইবার কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে।
- বার্লি ডালিয়া রক্তে কোলেস্টেরলের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।
- ঢেঁড়স ও বেগুনের প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকার কারণে এগুলো কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে।
- বিন্স জাতীয় খাবারে উপস্থিত ফাইবার শরীরের কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে।
- সয়াবিন তেল ও মাখন পরিহার করে সরিষার তেল ব্যবহার করা ও খাওয়া শুরু করুন।
- আপেল, নাশপাতি ও পেয়ারা ইত্যাদিতে প্রচুর পরিমাণে প্যাক্টিন থাকায় এগুলো কোলেস্টেরল পরিমাণ দ্রুত কমিয়ে ফেলে।
- আমলকি এবং লেবু কোলেস্টেরল কমাতে অনেক বেশি ভূমিকা পালন করে।
- এছাড়াও কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে প্রতিদিন তিন লিটার পানি পান করা অতি জরুরী।
আপনি যদি আপনার শরীরের কোলেস্টেরল কমাতে চান তাহলে উপরে উল্লেখিত খাদ্য তালিকা অনুসরণ করতে পারেন এবং এটি কার্যকর। তবে আপনাকে বলে নেই কোলেস্টেরল কমানোর ক্ষেত্রে শুধুমাত্র উপরে থাকা খাদ্য তালিকা অনুসরণ করলে চলবে না বা কোলেস্টেরল কমবে না।
শরীরে থাকা কোলেস্টেরল কমাতে হলে আপনাকে প্রতিনিয়ত ব্যায়াম করতে হবে অথবা আশেপাশে থাকা যে কোন জিমে ব্যায়াম করতে হবে।
কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে যা যা খাবেন না
আপনার শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে গেছে এবং এই কোলেস্ট্রল দূর করার জন্য আপনাকে খাদ্য তালিকা নিতে হবে। তবে আবার কিছু বাধা রয়েছে যে সকল বাধা জনিত খাবার আপনাকে গ্রহন করা যাবে না কোলেস্টেরল কমানোর জন্য।
আর আপনি কি কি খাবার কখনো গ্রহণ করবেন না নিজের অতিরিক্ত ক্ষতিকর কোলেস্টেরল শরীর থেকে দূর করার জন্য। সে সকল খাদ্যের নাম আমরা উল্লেখ করব যেন আপনি নিজেকে সে সকল খাবার থেকে বিরত রাখতে পারেন এবং কোলেস্ট্রল দূর করে স্বাভাবিক করতে পারেন।
নিচে কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করার জন্য যে সকল খাবার পরিহার করতে হবে তার একটি তালিকা তৈরি করা হলো:
- অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত বা স্নেহ জাতীয় খাবার পরিহার করতে হবে।
- অতিরিক্ত পরিমাণে তেলেভাজা জাতীয় খাবার পরিহার করতে হবে।
- মাত্রার অধিক ডিম বা প্রাকৃতিক মাল্টিভিটামিন খাওয়া ঠিক হবে না।
- গরু ও মহিষের দুধ বা দুগ্ধ জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলতে হবে।
- ভাত ও রুটির মত শর্করা জাতীয় হাই কার্বোহাইড্রেট খাওয়ার এরিয়া চলতে হবে।
- রান্না করার সময় তেল বেশি দিয়ে রান্না করা উচিত নয়।
শুধুমাত্র খাদ্য অভ্যাস এর পরিবর্তন করার মাধ্যমে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে ফেলা যায় এমনটি মনে করা যাবে না। কেননা শুধুমাত্র খাদ্য অভ্যাসের পরিবর্তন করার মাধ্যমে কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ আনা সম্ভব নয় এক্ষেত্রে আমাদেরকে অবশ্যই নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত ব্যায়াম করতে হবে।
কোলেস্টেরল হচ্ছে শারীরিক অসুস্থতা সৃষ্টি করার জন্য অনেক বেশী ক্ষতিকর একটি পদার্থ এবং ইহার মাধ্যমে শরীরের কর্মদক্ষতা কমে যায়।
আর অবশ্যই এর জন্য আমাদেরকে কোলেস্টেরল কমাতে হবে এবং কোলেস্টেরল কমানোর জন্য আপনি উপরের খাবারগুলো খাবেন না।
কোলেস্টেরল কমাতে লেবু
আমরা অনেক ক্ষেত্রে যখন কোলেস্টেরল নিয়ে চিন্তা ভাবনা ও দুশ্চিন্তায় পড়ে তখন অনেকের কাছে আমরা এর প্রতিকার হিসেবে লেবু ফলটির নাম উল্লেখ পায়। আর এক্ষেত্রে অবশ্যই লেবু অনেক বেশি কাজ করে কোলেস্টেরল কমানোর জন্য।
তাই লেবু এর উপকারিতা কি কি কোলেস্টেরল কমানোর জন্য এবং নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য চলুন এ বিষয়ে বিস্তারিত জ্ঞান অর্জন করে।
- সকালে এক গ্লাস হালকা গরম জলের সঙ্গে লেবুর শরবত, চিনি ছাড়া খাওয়া ফলে শরীরে হজম শক্তি ও পাকস্থলীর সুস্থ থাকে।
- এছাড়াও লেবু গ্রহণ করার ফলে পাকস্থলীতে উপস্থিত উপকারী ব্যাকটেরিয়া তাদের কর্মদক্ষতা বৃদ্ধি করতে পারে।
- এর ফলে উৎপাদনকৃত খাদ্যের শক্তি পরিপূর্ণভাবে কাজে লেগে যায়, পরিপূর্ণ শক্তি কাজে লাগার জন্য শরীরে কোলেস্টেরলের পরিমাণ বেড়ে যায় না।
- লেবুতে উপস্থিত এসিড আমাদের শরীরের কোলেস্টেরল ক্ষয় করতে সাহায্য করে।
- লেবুতে উপস্থিত অন্যান্য উপকারী উপাদান আমাদের শরীরের ফ্যাট কমাতে সাহায্য করে।
- আবার লেবু গ্রহণ করার মাধ্যমে কর্মদক্ষতা বৃদ্ধি পায়, কর্মদক্ষতা বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে আমাদের অতিরিক্ত পুষ্টি কাজে লেগে যায়।
অবশ্যই লেবু একটি অতি প্রয়োজনীয় উপাদান আমাদের শরীরে কোলেস্টেরল কমানোর জন্য। তাই আপনি আপনার শরীরের কোলেস্টেরল কমানোর ক্ষেত্রে লেবুকে একটি অপরিহার্য উপাদান হিসেবে ধরে রাখতে পারেন।
অতিরিক্ত কোলেস্টেরল কমাতে লেবু কিরূপ ভূমিকা পালন করে আশা করে সে সম্পর্কে আপনারা সঠিকভাবে জানতে পেরেছেন।
তাহলে অবশ্যই আপনি যদি আপনার শরীরের অতিরিক্ত চর্বি বা কোলেস্টেরল কমাতে চান তাহলে লেবু গ্রহণ করতে হবে বা খেতে হবে।
আরও পড়ুন: উদ্ভিদের পুষ্টি উপাদান কয়টি