কৃষি কাকে বলে: মাটির উপর পদ্ধতিগতভাবে ফসল উৎপাদন করাকে কৃষি বলে। যে পদ্ধতি অবলম্বন করে কৃষক ফসল উৎপাদন করে থাকে তাকে কৃষি বলে। আবার, জীবিকা নির্বাহ করার তাগিদে মানুষ যে পদ্ধতিতে জমি চাষ করে থাকে এবং চাষকৃত জমি হতে ফসল উৎপাদন করে জীবিকা নির্বাহ করে, কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করার এই পদ্ধতিকে কৃষি বলে।
প্রকৃতপক্ষে, উৎপাদন লাভের উদ্দেশ্যে কৃষক যখন নির্দিষ্ট জমিতে ফসল উৎপাদন করে এবং সেই সাথে বিভিন্ন ধরনের পশু পাখি পালন করে করার তাগিদে নিজের বাসা বাড়ি ও দালানে কাজ করে তাকে কৃষি বলে।
বাংলাদেশ সম্পূর্ণরূপে কৃষির উপর নির্ভর করে এমনটা অনেক ক্ষেত্রে আখ্যায়িত করা হয়েছে এবং এটি সত্য। বাংলাদেশের প্রতিটি অঞ্চলে ভ্রমণ করলে দেখা যাবে যে সর্বত্র সামান্য একটু জমিও ফাঁকা না রেখে চাষ করেছে।
তবে আমরা এই চাষাবাদকে মূলত কৃষি কাজ বলে থাকে এবং সেই সাথে বীজ ও চারা রোপন করাকেও কৃষিকাজ বলে থাকে।
তবে আসলে শুধুমাত্র জমিতে কাজ করে নয় বরং পশুপালন করার মাধ্যমে উৎপাদন লাভ করাকে কৃষি বলা হয় এবং কৃষির অন্তর্ভুক্ত।
কোন কৃষক বা খামারে পরিশ্রম করার মাধ্যমে উৎপাদন বৃদ্ধির ফলে মুনাফা অর্জন করার সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াকে কৃষি বলে। অর্থাৎ বলা যায় যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করে উৎপাদন লাভ করার মাধ্যমে মুনাফা অর্জন করার পর পুরো প্রক্রিয়াই হচ্ছে কৃষি।
কৃষির উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য
কৃষি কাকে বলে এ বিষয়টি নিয়ে বিশ্লেষণ করতে গেলে কৃষির কিছু উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য আমাদের মাঝে পরিলক্ষিত হয় বিবেচনা করতে। তাই আমাদেরকে কৃষির এই সকল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য জানতে হবে যেগুলোর জন্য কৃষি কাজ করা হয় আমাদের দেশে।
আর এ সকল লক্ষ্য উদ্দেশ্য পূরণ করাই হচ্ছে একমাত্র কৃষির কাজ যা কৃষক দ্বারা সংঘটিত হয় উন্নতির জন্য। আবার সেই সাথে এ সকল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য গুলো সম্পূর্ণরূপে নির্ধারণ করার মাধ্যমে কৃষক পরিশ্রম করে থাকে তার চাষযোগ্য একটি জমির মধ্যে।
নিচে কৃষির উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য আপনাদের মাঝে উল্লেখ করা হলো:
- ফসল উৎপাদন করা
- গোবাদি পশু পালন করা
- বিভিন্ন পশুর খামার তৈরিতে উদ্যোগী করা
- কৃষি এর মাধ্যমে বাংলাদেশকে শিল্পপ্রধান দেশ হিসেবে গড়ে তোলা
- কৃষি কাজে বাংলাদেশকে অগ্রগতি প্রদান করা
- ভালোভাবে জীবিকা নির্বাহ করা
- চাষ কৃত জমের উর্বরতা বৃদ্ধি করা
- জমিকে পরিত্যক্ত না করে তা চাষের যোগ্য স্থানে পরিণত করা
- কৃষিতে মাছের উৎপাদন করে দেশে মাছের চাহিদা পূরণ করা
- কৃষির মাধ্যমে দেশের মধ্যে খাদ্য চাহিদা পূরণ করা
এগুলো হলো কৃষির কিছু লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য, আর এই সকল লক্ষ্য উদ্দেশ্য পূরণের জন্য কৃষকের মাঠে কঠোর পরিশ্রম করে। কৃষি হচ্ছে এমন একটি ব্যবস্থা যার মাধ্যমে কৃষক এবং রাষ্ট্র উভয় লাভবান হয় এবং লক্ষ্য পূরণ করে।
মূলত কৃষি কাজ মানুষ তার জীবন নির্বাহের জন্য করে থাকে তবে, ইহার মধ্যেও লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য পরিলক্ষিত হয়। আর এই লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হচ্ছে জীবনে নির্বাহ করা এবং ন্যূনতম এক বছরের জন্য খাবারের যোগান দেওয়া।
কৃষি কাজ করার পূর্বে করণীয়
কৃষি কাজ শুধু করলেই হয় না বরং কৃষি কাজ করার পূর্বে আমাদেরকে কিছু করণীয় করতে হয় উৎপাদন লাভের জন্য। আর এই সকল করণীয় গুলো অবলম্বন করার মাধ্যমে কৃষক তার কৃষিকাজে সার্থক হয় লক্ষ্য উদ্দেশ্য পূরণ করে।
তা আমাদের এখন জানা উচিত যে কৃষি কাজ করতে গেলে আমাদেরকে কি কি করনীয় অবলম্বন করতে হবে সার্থক হওয়ার জন্য।
আর কি কি কাজ বা করণীয় আমাদেরকে অবলম্বন করতে হয় কৃষি কাজ করতে গেলে তা আমরা এখানে উল্লেখ করব।
কৃষি কাজ করার পূর্বে করণীয় কি বা কি কি করতে হবে তা নিচে বিশেষভাবে উল্লেখ করা হলো:
- জমি প্রস্তুত করতে হবে ফসল উৎপাদনের জন্য।
- ভূমিক্ষয় রোধের কার্যকরী উপায় সমূহ অবলম্বন করতে হবে।
- শস্যবীজ সংরক্ষণ করতে হবে।
- মাছ ও পশুপাখি পালনের ক্ষেত্রে তাদের খাদ্য সংরক্ষণ করতে হবে।
- জমি চাষ করার পূর্বে ফসল অনুযায়ী প্রয়োজনীয় জমিতে চাষের ব্যবস্থা করতে হবে।
- আবহাওয়া অনুযায়ী বা মৌসুম অনুযায়ী ফসল রোপন করতে হবে।
- চাষ ক্ষেত্র জমিতে প্রয়োজনীয় সেচের ব্যবস্থা রাখতে হবে।
- বীজের জীবিকা শক্তি বৃদ্ধিতে প্রয়োজনীয় পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে।
- প্রয়োজন মতো সমস্যা অনুযায়ী পোকামাকড় দমন করার জন্য কীটনাশক দেওয়ার ব্যবস্থা করে রাখতে হবে।
প্রত্যেকটি কৃষক কৃষি কাজ করার পূর্বে যদি এই সকল করণীয় অবলম্বন করে তাহলে উৎপাদনের বৃদ্ধি করা অনেক সহজ হবে।
তবে অধিকাংশ কৃষক আছেন যারা এই সকল পদ্ধতি অবলম্বন করেন এবং অবগত থাকার কারণে অধিক মুনাফা অর্জন করেন।
উৎপাদন বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে কৃষি কাজ করা এবং ফলন লাভ করার জন্যই বীজ ও চারা রোপন করা। তাই আপনাকে অবশ্যই আপনার লক্ষ্য পূরণ করার জন্য এই সকল নিয়ম বা করণীয় অবলম্বন করতে হবে যথাযথ ভাবে কৃষি কাজ করার ক্ষেত্রে।
আরও পড়ুন: শিক্ষক নিবন্ধন কি?