কুকুর পালা কি জায়েজ: কোন কারণ ছাড়া কুকুর পালা জায়েজ নয়, কিন্তু কারণ থাকেলে আপনি কুকুর পালতে পারবেন। কুকুর পালা জায়েজ হবে কিনা এ বিষয়ে ইসলামে বিভিন্ন প্রকার ব্যাখ্যা রয়েছে এবং ব্যাখ্যা অনুযায়ী আপনি কুকুর পালতে পারেন। যদি ব্যাখ্যা অনুযায়ী আপনার উপযুক্ত কারণ থাকে এবং আপনি শুধুমাত্র ওই কারণের জন্য কুকুর পালতে চান তাহলে জায়েজ হিসেবে গণ্য হবে।
বিভিন্ন সময় আপনারা প্রশ্ন করে থাকেন যে ইসলামে কুকুর পালা জায়েজ আছে কিনা। শখের বসে আমরা অনেকেই বর্তমানে কুকুর পালন করে থাকি এবং তাদের যত্ন নিয়ে থাকি।
আমাদের অনেকেরই জানা নেই যে কুকুর পালনে বা পোষা করার মধ্যে ইসলামের বিধান কি।
বেশি দেরি না করে চলুন বন্ধুরা আমরা জেনে নেই হাদিসের আলোকে কিছু জ্ঞান, কুকুর পালন নিয়ে।

আল্লাহ তাআলা অসংখ্য মাখলুকাত সৃষ্টি করেছেন এবং কুকুর হচ্ছে আল্লাহর সৃষ্টির মধ্যে একটি। কিন্তু এই কুকুর পালন করার জন্য ইসলামের রয়েছে কিছু বিধান ও বিধি নির্দেশ। একজন মুসলিম হিসেবে এ বিষয়ে জ্ঞান রাখা আমাদের প্রত্যেক মুমিন ব্যক্তিদের জন্য।
সৌখিনতা হচ্ছে মানবজাতির এক বিশেষ স্বভাব তবে, এই স্বভাব মহান রাব্বুল আলামীনের বিধানের বাইরে যাওয়া উচিত নয়।
কেননা ইসলাম হচ্ছে এমন একটি ধর্মের নাম যেখানে রয়েছে প্রত্যেকটি কাজের জন্য পরিপূর্ণ দিক নির্দেশনা।
আর এই সকল বিধি-বিধান হতে যে কোন একটি অপসারণ করা কিংবা যোগ করা হচ্ছে অনেক বড় গুনাহের কাজ।
কুকুর পালন নিয়ে ইসলামিক হাদিস
কোরআন সুন্নাতে এর মত অনুযায়ী, শখ করে ঘরে কুকুর রাখা, মানুষের চেয়ে কুকুরের যত্ন বেশি নেওয়া এবং কুকুরের সাথে মানবীয় সম্পর্ক স্থাপন করা ইসলাম হতে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (স.) বলেছেন, যে ব্যক্তি শিকার করা, গবাদি পশু পাহারা দেওয়া কিংবা শস্য ক্ষেত্র পাহারা দেওয়া ব্যতীত সৌখিনতার কারণে কুকুর লালন পালন করে, তাহলে প্রতিনিয়তই তার আমলনামা হতে দুই কেরাত পরিমাণ সওয়াব বা আমলনামা বা নেকি অপসারণ হতে থাকে। (সহীহ মুসলিম ১৫৭৫, সহীহ তিরমিজি ১৪৮৭)
অন্যত্রে বলা হয়েছে, ঘরে কুকুর রেখে লালন-পালন করা ইসলাম হতে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
কেননা শুধুমাত্র শখের বসে ঘরে কুকুর রেখে লালন পালন করা শরীয়তের বিধি-বিধানের অংশ নয়।
আর অন্য এক হাদীসে উল্লেখ হয়েছে যে, যে ঘরে বা বাসা বাড়িতে কুকুর রয়েছে সে বাসা বাড়িতে রহমতের ফেরেশতা প্রবেশ করতে পারে না। (সহীহ বুখারী শরীফ ৫৫২৫)।
অধিকাংশ ক্ষেত্রেই প্রায় অধিকাংশ হাদিসে কুকুর পালন নিয়ে নিষিদ্ধতা প্রদান করা হয়েছে।
শরীয়ত অনুযায়ী কোন কোন কারনে কুকুর পালা জায়েজ
আপনি যদি শুধুমাত্র শখের বসে কুকুর পালতে চান তাহলে অবশ্যই এটি ইসলামের শরীয়তের বিধানের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হবে না।
আর কোন কারণ না থাকার কারণে অবশ্যই আপনার এ কারণে শাস্তি হতে পারে এবং সেই সাথে গুনাহ হতে পারে।
কিছু কিছু উদ্দেশ্যে বা লক্ষ্যে কুকুর পালা নিয়ে বৈধতা দিয়ে ইসলাম, এগুলো হলো:
- শিকার করার উদ্দেশ্যে কুকুর পালা জায়েজ রয়েছে।
- ফসল হেফাজত ও রক্ষণাবেক্ষণ কিংবা পাহারা দেওয়ার জন্য কুকুর পালা জায়েজ রয়েছে।
- বাসা বাড়ির পাহারাদার ও নিরাপত্তা রক্ষার ক্ষেত্রে কুকুর পালা জায়েজ রয়েছে।
- গবাদিপ পশু পাখির নিরাপত্তা রক্ষা ও পাহাদারের জন্য কুকুর পালা জায়েজ রয়েছে।
- দোকান কিংবা অফিস কিংবা কর্মক্ষেত্র পাহারা দেওয়ার জন্য কুকুর পালা জায়েজ রয়েছে।
- অপরাধের উৎস, সন্ধান এবং তদন্ত করার ক্ষেত্রে কুকুর পালা জায়েজ রয়েছে।
আপনি যদি কুকুর পালন করতে চান তাহলে অবশ্যই উপরে থাকা কারণগুলো আপনার মাঝে থাকা প্রয়োজন জায়েজ হওয়ার জন্য।
মুসলমান হিসেবে অবশ্যই অবৈধ বা যে বিষয়ের উপর জায়েজ করা হয়নি সে সকল বিষয় হতে বিরত থাকাই সবচেয়ে বেশি ভালো।
তবে কারণ হিসেবে আপনি প্রতিরক্ষার জন্য বা নিজের সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য কুকুর অবশ্যই পালন করতে পারবেন। এক্ষেত্রে কোন বিরোধিতা নেই এবং ইসলাম এ বিষয়ে জায়েজ প্রদান করেছে যে সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য আপনি কুকুর পালতে পারেন এবং আমি উপরে এ বিষয়ে উল্লেখ করেছি।
আরও পড়ুন: কুকুরের জলাতঙ্ক রোগের লক্ষণ।