কুকুরের জলাতঙ্ক রোগের লক্ষণ, কারণ, প্রতিকার ও প্রতিরোধ

কুকুরের জলাতঙ্ক রোগের লক্ষণ সাধারণত সর্বক্ষেত্রে কুকুর কামড়ানোর জন্য হবে এমনটি না বরং আরো অনেক কারণ থাকতে পারে যা আমরা এই প্রশ্নটা উল্লেখ করব।

কুকুর আক্রমণের ফলে যদি ক্ষত সৃষ্টি হয় এবং কোন চিকিৎসা গ্রহণ না করা হয় তাহলে জলাতঙ্ক রোগ মানুষের শরীরে দেখা দেয়। আর এই কুকুর থেকে সৃষ্ট জলাতঙ্ক রোগ আমাদের শরীরে সৃষ্টির সময় নানা রকম লক্ষণ প্রতিফলন করে।

যে লক্ষণ গুলো দেখার মাধ্যমে আমরা উচিৎ সময় জলাতঙ্ক রোগ কে চিহ্নিত করতে পারব এবং সেই সাথে চিকিৎসা গ্রহণ করতে পারব। সঠিক সময়ে চিকিৎসা গ্রহণ করার মাধ্যমে এবং জলাতঙ্ককে চিহ্নিত করার মাধ্যমে আমরা সুস্থ হতে পারি।

কুকুরের জলাতঙ্ক রোগের লক্ষণ
কুকুরের জলাতঙ্ক রোগের লক্ষণ

আপনি যদি কোন কারণে জলাতঙ্ক রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকেন বা অনুভব করে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনাকে লক্ষণ সম্পর্কে জানতে হবে।

কুকুরের জলাতঙ্ক রোগের লক্ষণ সমূহ নিচে উল্লেখ করা হলো:

  • কোন ব্যক্তির জলাতঙ্ক রোগ হলে তার জ্বর হয়।
  • খুদা লোপ পায় বা ক্ষুধা থাকে না।
  • ক্ষতস্থানে ব্যথা হয় আর সেই সাথে চুলকানি হয়।কখনো কখনো হায়ার এন্টিবায়োটিক খাওয়ার কারণে ব্যথা হয় না কিন্তু চুলকানি হতে পারে।
  • বিভিন্ন প্রকারের অনিয়ন্ত্রিত উত্তেজনার সৃষ্টি হয়।
  • রোগীর  লালারস ক্ষরণের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়।
  • উজ্জ্বল আলো কিংবা  কোলাহলে অনেক বিরক্ত হয়ে পড়ে।
  • পানি পান করার চেষ্টা করলে বা অন্য কিছু পান করার চেষ্টা করলে গোলায় প্রচন্ড চাপে বা  ব্যথার অনুভূত হয়।
  • যার কারনে রোগীর মধ্যে পানির প্রতি বা পানি খাওয়ার প্রতি একটি ভয়ের সৃষ্টি হয়।
  • রোগের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের পাগলামি মূলক আচরণ লক্ষ্য করা যায়।

এগুলো হলো কিছু লক্ষণ যেগুলোর মাধ্যমে আপনারা চিহ্নিত করতে পারবেন যে আপনার জলাতঙ্ক হয়েছে কিনা। আর যদি উপযুক্ত লক্ষণ আপনার শরীরে প্রতিফলিত হয় তাহলে অবশ্যই আপনাকে সঠিক সময় সঠিক চিকিৎসা গ্রহণ করে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।

আমাদের শরীরে বিভিন্ন কারণে জলাতঙ্ক রোগ ছড়াতে পারে এবং এ কারণগুলো জানার মাধ্যমে আপনাকে বিরত থাকতে হবে।

তাই আপনাকে কিছু কারণ আমরা এই প্রশ্নের মাধ্যমে উল্লেখ করব যেগুলোর মধ্যে দিয়ে জলাতঙ্ক রোগ আমাদের শরীরে পৌঁছায়।

জলাতঙ্ক রোগের কারণ

কুকুর, বানর, বিড়াল, বাদুড়, বেজি , ইত্যাদি প্রাণী রে-বিজ ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হয়ে থাকলে এবং এরা মানুষ কিংবা অন্যান্য প্রাণীদেরকে কামড়ালে এই  জলাতঙ্ক রোগ হয়ে থাকে।

আমাদের অনেকেরই ধারণা রয়েছে যে শুধুমাত্র কুকুর কামড়ানোর জন্যই বা আক্রমণ করার ফলে আমাদের মাঝে জলাতঙ্ক ছড়ায়।

তবে মনে রাখবেন এ ধরনের সম্পূর্ণরূপে ভুল কেননা জলাতঙ্ক বিভিন্ন মাধ্যমে আমাদের শরীরে ছড়াতে পারে এবং অসুস্থ করে দিতে পারে।

এ পর্যন্ত জলাতঙ্ক রোগের কারণে অনেক মানুষ মারা গিয়েছে, নিজের রোগ চিহ্নিত করতে না পারার কারণে। আর বর্তমানে এই রোগ এত বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে তার মূল কারণ হলো বাসা বাড়িতে আক্রমণাত্মক পশুপাখি পালন করার জন্য।

আমি বলব না যে আপনারা আক্রমণাত্মক প্রাণী পালন করা বন্ধ করে দেন বরং আমি এটি বলব যে, ডাক্তার পরামর্শ অনুযায়ী তাদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে পালতে শুরু করুন। জলাতঙ্ক একটি মরণঘাতী রোগ এবং এই রোগের মাধ্যমে মানুষ নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকে শারীরিকভাবে।

আপনি যদি জলাতঙ্ক রোগ থেকে নিজেকে বাঁচাতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে উপরে থাকার কারণগুলো থেকে নিজেকে রক্ষা করতে হবে।

আপনি জলাতঙ্ক রোগ থেকে মুক্তি পাবেন যদি আপনি নিজের উপর যত্নশীল হন এবং উপরে দেওয়া কারণগুলো থেকে বিরত থাকতে পারেন।

জলাতঙ্ক রোগের প্রতিকার ও প্রতিরোধ

আপনি যদি সঠিক নিয়ম অনুযায়ী সঠিক প্রতিকার পাওয়ার মাধ্যমে জীবন যাপন করতে পারেন তাহলে দেখা যাবে আপনি আর কখনো জলাতঙ্কে আক্রমণ হবেন না। আর জলাতঙ্কে আক্রমণ না হলে এ বিষয় নিয়ে আপনার কোন চিন্তা থাকবে না এবং শারীরিকভাবে কোন দুর্বলতা সহজে দেখা দিবে না।

আমাদের মধ্যে অনেকেই রয়েছেন যারা জলাতঙ্কে ইতিমধ্যে আক্রান্ত হয়ে যেতে পারেন এবং সেই সাথে শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে যেতে পারে।

আর এখন জলাতঙ্কা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য আপনার দরকার সঠিক পরামর্শ এবং সঠিক প্রতিকার ও প্রতিরোধ।

উল্লেখযোগ্য কিছু জলাতঙ্ক রোগের পত্রিকার ও প্রতিরোধ সমূহ উল্লেখ করা হলো:

  • জলাতঙ্ক রোগের প্রতিকারের জন্য ক্ষতস্থানে ১৫ মিনিট ধরে ভালোভাবে সাবান  দিয়ে এবং বিভিন্ন প্রকারের অ্যান্টিসেপটিক দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে।
  • ধুয়ে নেওয়ার পর আক্রান্ত স্থানে এলকোহল অথবা  পভিডন আয়োডিন লাগাতে হবে।
  • এরপর আপনাকে জলাতঙ্ক রোগের টিকা দিতে হবে। টিটেনাস ও রেবিস এ দুটোর জন্যই আপনাকে টিকা দিতে হবে।
  • আপনি যদি সচেতন হয়ে থাকেন তাহলে আপনি এই মারাত্মক রোগ থেকে বাঁচতে পারবেন।
  • আক্রান্ত হওয়ার পর সর্বোচ্চ আটচল্লিশ ঘন্টার মধ্যে আপনাকে টিকা দিতে হবে।

এগুলো হলো সাধারণ কিছু প্রতিকার ও প্রতিরোধে যেগুলো অবলম্বন করার মাধ্যমে আপনারা খুব সহজে জলাতঙ্ক থেকে মুক্তি পেতে পারেন। আপনি যদি জলাতঙ্ক থেকে মুক্তি পেতে চান এবং যেন আপনার শরীরে আক্রমণ না করে সেজন্য আপনি প্রতিরোধ গুলো অবলম্বন করুন।

জলাতঙ্ক হচ্ছে অনেক খারাপ রোগ এবং এই রোগের মাধ্যমে মানুষ মানসিকভাবে অনেক দুর্বল হয়ে পড়ে এবং পশুর মত আচরণ করে।

সুতরাং বলা যায় যে এই রোগটি অনেক বেশি ক্ষতিকর আমাদের জন্য, তাই উপরে থাকা প্রতিকার ও প্রতিরোধ অবলম্বন করুন।

আরও পড়ুন: কুকুর কামড়ালে কত দিনের মধ্যে টিকা দিতে হয়

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top