কিয়াস কি? কিয়াস কাকে বলে? কিয়াসের নীতিমালা

কিয়াস কি: ইসলামী শরীয়তের পরিভাষায়, কুরআনুল কারীম ও সুন্নাহর আইন কিংবা নীতির সাদৃশ্যের উপর ভিত্তি করে বিচার বুদ্ধির প্রয়োগ করার মাধ্যমে যেকোনো ধরনের অদ্ভুত সমস্যা সমাধান করে দেওয়ার নামই হচ্ছে কিয়াস।

অর্থাৎ কিয়াস এমন একটি প্রক্রিয়া যেখানে জটিল সমস্যার সমাধান করার জন্য কুরআন ও সুন্নাহর আলোকে বিচার বিশ্লেষণ করা হয়।

অর্থাৎ অনুমানের ওপর ভিত্তি করে কোন সমস্যার সঠিক সমাধান ও মতামত পেশ করার নামই হচ্ছে কিয়াস।

কিয়াস কি
কিয়াস কি?

আমরা এমন অনেক ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে পারি যার কোন ব্যাখা সুন্নতে বা হাদিসে উল্লেখ হয়নি। আর সে ক্ষেত্রে আমরা অনুমানের উপর ভিত্তি করে যদি একটি সঠিক সমাধান বের করতে পারে এবং সকলের তাতে ঐক্যবদ্ধ হয় তাহলে এটি কিয়াসের অন্তর্ভুক্ত হবে।

মোট কথা বলতে গেলে কিয়াস একটি পদ্ধতি যেখানে, হাদিসে স্পষ্ট ব্যাখ্যা না থাকলে অনুমান অনুযায়ী সঠিক বিচার বিশ্লেষণ করা হয়।

আর যেহেতু সমাধান করতেই হবে তাই ব্যাখ্যা না থাকলেও অনুমান করে কাজে চালাতে হবে আমাদের জীবনের সমস্যা সমাধানের জন্য।

কিয়াস কাকে বলে?

কিয়াস কাকে বলে: সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রে হাদিস বা সুন্নাহে উপযুক্ত ব্যাখ্যা না পাওয়ার কারণে অনুমান অনুযায়ী সঠিক বিচার বিশ্লেষণ করাকে কিয়াস বলে। তবে মনের ইচ্ছে মতো বিচার-বিশ্লেষণ করলে কিয়াস হবে না বরং কয়েকজনের সম্মতি থাকার মাধ্যমে কিয়াস সংঘটিত হতে পারে।

আর অবশ্যই কিয়াস হতে হলে আপনার নেওয়ার সিদ্ধান্ত ইসলাম শরীয়তের বিধান অনুযায়ী সঠিক হতে হবে বা কাছাকাছি হতে হবে।

অর্থাৎ আপনার সমাধান বা সকলের মিলিত সমাধান যদি ইসলামের আলোকে সঠিক এর কাছাকাছি হয় তাহলে অবশ্যই এটি কিয়াসের অন্তর্ভুক্ত হবে।

এই কিয়াস দ্বারা সমস্যার সমাধান করার বিষয়টি অনেক আগে থেকে প্রচলিত হয়ে আসছে এবং সমস্যার সমাধান করে যাচ্ছে মানুষ।

মানুষ তার জীবনের সমস্যার সমাধান করার ক্ষেত্রে এবং বিভিন্ন অন্যায় দূর করার ক্ষেত্রে কিয়াসের এর আশ্রয় গ্রহণ করে থাকে।

আর ইসলামে কিয়াস এর অস্তিত্ব রয়েছে এবং এই কাজ করার ক্ষেত্রে কোন বাধা প্রদান করা হয়নি ইসলামী শরীয়তে। আর এ সকল কারণে আমরা নির্দ্বিধায় নিজের বিচার বিশ্লেষণ করার মাধ্যমে কয়েকজন জ্ঞানী লোকের মতামত নিয়ে কিয়াস দ্বারা সমস্যা সমাধান করতে পারি।

কিয়াস শব্দের অর্থ কি?

ইসলাম ধর্মের যে সকল শরীয়ত রয়েছে তার মধ্যে কিয়াস হচ্ছে চতুর্থতম উৎস।

কিয়াস শব্দের অর্থ: কিয়াস একটি আরবি শব্দ যার বাংলা প্রতিশব্দ হলোঃ অনুমান করা, ধারণা করা, তুলনা করা এবং পরিমাপ করা ইত্যাদি।

কিয়াস হচ্ছে আরবি শব্দ আর অবশ্যই আমাদেরকে এর সঠিক অর্থ সম্পর্কে জানা উচিত ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা পরীক্ষার জন্য। কেননা বিভিন্ন সময় পরীক্ষায় এ বিষয়ের উপর ভিত্তি করে একটি বহুনির্বাচনি বা জ্ঞানমূলক প্রশ্ন এসে থাকে।

আবার বিভিন্ন ক্ষেত্রে দেখা যায় যে সৃজনশীল প্রশ্ন অনুধাবনমূলক হিসেবে গ অথবা ঘ নম্বরে কিয়াসের বর্ণনা দিতে বলে।

আপনি যেন সঠিক উত্তর দিতে পারেন তাই এই পোস্টটি পুরো পড়তে হবে ও জ্ঞান অর্জন করে সৃজনশীলতা জাগ্রত করতে হবে।

ইসলামী শরীয়তের একটি বিষয় এবং ইহার মাধ্যমে জটিল সমস্যার সমাধান করা সম্ভব হবে মেধা বৃদ্ধির মাধ্যমে। অবশ্যই আমি বলব যে কিয়াসের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালনের জন্য আপনাকে সৃজনশীল মনোভাবের ব্যক্তি হতে হবে এবং আপনার নেওয়া সিদ্ধান্ত ইসলামী শরীয়তের কাছাকাছি হতে হবে। 

কিয়াসের নীতিমালা

কিয়াস কি, কিয়াস কাকে বলে এ বিষয়ের উপর ভিত্তি করে আজকের এই পোস্টটি সাজানো এবং আশা করি তথ্য দিতে পেরেছি।

আপনি চাইলে ইসলামী বিচার-বিশ্লেষণের মাধ্যমে যে কোন জটিল সমস্যার সমাধান করতে পারেন কয়েকজনের ইসলামিক বিষয়ে জ্ঞানী লোকের সম্মতি পাওয়ার মাধ্যমে।

শরীয়তের ঈমানদারগণ কিয়াস করার ব্যাপারে কতিপয় নীতি নির্ধারণ করেছেন, যেন কিয়াস করতে গিয়ে কোন বেদাআত সৃষ্টি না হতে পারে। যথা:

  1. ওই সব বিষয়ে কিয়াস করা যাবে না, যে সকল বিষয়ের সমাধান কোরআন, হাদিস ও ইজমার মধ্যে উপস্থিত রয়েছে।
  2. কোরআন-সুন্নাহ ও ইসমার বিরোধীতা করে কখনো কিয়াস গঠন করা যাবে না।
  3. কিয়াসের পদ্ধতি, আইন এবং নীতি অবশ্যই মানুষের জ্ঞানের পরিসীমার মধ্যে উপস্থিত থাকতে হবে।
  4. ঐ সকল বিরোধিতা কিয়াস আওতাভুক্ত নয়, যেগুলো কুরআন, হাদিস ও ইজমা দ্বারা প্রবর্তিত আইনের মূলনীতি হয়ে রয়েছে। এবং সেই সাথে ইজমা, হাদিস ও কুরআনের বিরোধী কোন আইন কিংবা নীতি তৈরি করা যাবে না।

এগুলো হলো কিয়াসের নীতিমালা এবং কিয়াস সম্পূর্ণরূপে পালন করার জন্য অবশ্যই আপনাকে এই নীতিমালা অবলম্বন করতে হবে।

আপনি যদি কিয়াসের নীতিমালা গুলো অবলম্বন করতে পারেন তাহলে অবশ্যই আপনি খুব সহজে সঠিক সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারবেন।

আরও পড়ুন: ইজমা কি?

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top