কারিগরি শিক্ষা কি: যে শিক্ষা ব্যবস্থায় শিক্ষার্থীদেরকে তাদের নির্দিষ্ট শিল্প ও পেশাগত ব্যস্ততায় লিপ্ত করে ফেলে, তাই কারিগরি শিক্ষা। কারিগরি শিক্ষা হচ্ছে ইঞ্জিনিয়ারিং এবং মেডিকেল এর মত বহুল পরিচিত ফর্মগুলোর বিকল্প সমাধান।
সহজ ভাষায়, কারিগরি শিক্ষা হচ্ছে: প্রযুক্তি এবং শিল্প বিষয়ক ব্যবহারিক জ্ঞান ও দক্ষতা প্রদানকারী শিক্ষাপদ্ধতি বা শিক্ষা ব্যবস্থা।
এটি এমন ধরনের শিক্ষার্থীদের জন্য একটি শিক্ষা ব্যবস্থা যারা ইঞ্জিনিয়ারিং করতে চেয়েছিল কিন্তু ভালো কোন প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হতে পারেননি। আর এই সকল শিক্ষার্থীদের জন্য এই ব্যবস্থাটি প্রস্তাব করা হয় এবং ইহার দ্বারা অনেক শিক্ষার্থী নিজের ইঞ্জিনিয়ারিং ক্যারিয়ার গড়ে তুলেছে।
আবার, কারিগরি শিক্ষা ব্যবস্থা হচ্ছে এমন একটি শিক্ষা ব্যবস্থা যেখানে শিক্ষার্থীদেরকে প্রযুক্তি, ব্যবসা এবং কারুশিল্পে পারদর্শী করে গড়ে তুলে।
বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষার ভূমিকা ও তাৎপর্য
বাংলাদেশের কারিগরি শিক্ষার ভূমিকা ও তাৎপর্য অত্যাধিক বেশি এটি আপনাকে এবং আমাদেরকে সকলকেই মানতে হবে।
বর্তমান ডিজিটাল বাংলাদেশে নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করার জন্য প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রযুক্তিবিদদের প্রয়োজন এবং কারিগরি শিক্ষা হচ্ছে প্রযুক্তিবিদদের জন্য।
বিভিন্ন কলকারখানা, শিল্প প্রতিষ্ঠা্ন, ইন্ডাস্ট্রি, কোম্পানি, বেকারি এবং খাদ্য মিল তৈরিতে প্রযুক্তিবিদদের প্রয়োজন। এমন কি বর্তমানে বিভিন্ন ধরনের রাস্তা, সেতু, বিমানবন্দর এবং বড় বড় দালান বা বিল্ডিং তৈরিতে প্রযুক্তিবিদের প্রয়োজন।
আর কারিগরি শিক্ষা ব্যবস্থা হচ্ছে এমন একটি শিক্ষা ব্যবস্থার যে শিক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে দেশে শত শত প্রযুক্তিবিদদেরকে প্রস্তুত করা হচ্ছে।
আর যেহেতু একটি দেশের মূল চালিকাশক্তি হচ্ছে শিল্প ব্যবস্থার উন্নতি, সেহেতু কারিগরি শিক্ষার ভূমিকা ও তাৎপর্য অপরিসীম।
আবার একটি দেশের উন্নতি পরিলক্ষিত করার জন্য রাস্তাঘাট এবং বিমানবন্দর ও বড় বড় দালান বা নির্মাণ কার্য দেখানো প্রয়োজন, আর এদিক দিয়েও কারিগরি শিক্ষার ভূমিকা অত্যাধিক বেশি। আবার শিল্প প্রতিষ্ঠান, এবং ইন্ডাস্ট্রি চালানোর জন্য অবশ্যই বিদ্যুতের প্রয়োজন হয়, আর এ দিক দিয়েও এগিয়ে রয়েছে আমাদের কারিগরি শিক্ষা ব্যবস্থা।
কেননা কারিগরি শিক্ষার মাধ্যমে শিক্ষিত শিক্ষার্থীগণ গড়ে ওঠে বড় বড় প্রযুক্তিবিদ, আর প্রযুক্তিবিদে গড়ে ওঠার মাধ্যমে তারা দেশের পর্যাপ্ত বিদ্যুতের চাহিদা পূরণ করে।
কারিগরি শিক্ষার সুবিধা সমূহ কি কি?
কারিগরি শিক্ষা কি এ বিষয়ে বিশ্লেষণ করতে গেলে কারিগরি শিক্ষা সুবিধা সমূহ কি কি এ বিষয়টি আমাদের মাঝে পরিলক্ষিত হয়। আর এজন্য আমাদেরকে জানতে হবে যে এই কারিগরি শিক্ষা অর্জন করার মাধ্যমে আমরা কি কি সুযোগ-সুবিধা উপভোগ করি।
নিচে কারিগরি শিক্ষার কিছু সুবিধা সমূহ বিশেষভাবে উল্লেখ করা হলোঃ
- কম খরচে ভালো শিক্ষা পদ্ধতি।
- বেকারমুক্ত দেশ গঠন এবং বেকারত্বের পরিমাণ কমানো।
- যেকোনো ব্যবসা নির্ভরযোগ্যতা বৃদ্ধি করে।
- অর্থনৈতিকভাবে দেশকে শক্তিশালী করে।
- বাংলাদেশে প্রযুক্তির অভাব পূরণ করা।
- প্রয়োজন অনুযায়ী বিদ্যুৎ উৎপাদন করা।
- দেশের উন্নয়নে বিভিন্ন ধরনের বিমানবন্দর ও রাজধানীর মান করা।
- শিক্ষার্থীদের মাঝে দেশের উন্নয়নের অনুপ্রেরণা প্রদান করা।
- শিক্ষার্থীদের ক্যারিয়ার ভালোভাবে গড়ে তোলা।
- পেশাগত ভাবে দুর্বল শিক্ষার্থীদেরকে ভালো একটি পেশায় লিপ্ত করা দেশের শিল্প ব্যবস্থার উন্নতি ঘটানো।
বলতে গেলে কারিগরি শিক্ষার সুবিধা এবং যে সকল সুবিধা শিক্ষার্থী এবং দেশ ভোগ করে এই শিক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে তা বলে ঠেকানো অসম্ভব। কেননা একটি সুবিধার কথা না বলতে আরো একটি সুবিধার কথা আমাদের মাঝে চলে আসে যা কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত শিক্ষার্থীরা আমাদেরকে প্রতিনিয়তই দিয়ে যাচ্ছেন ।
কারিগরি শিক্ষার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য
কারিগরি শিক্ষা কি এ বিষয়ে দৃষ্টিপাত করতে গেলে প্রথমে কারিগরি শিক্ষার লক্ষ্য কি এ বিষয়টি আমাদের মাঝে বেশি করে পরিলক্ষিত হয়। আর তাই আমাদেরকে কারিগরি শিক্ষার এই সকল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে কিছুটা আলোকপাত করতে হবে এই পোস্টে।
যেন আপনি কারো ঘরে শিক্ষার লক্ষ্য উদ্দেশ্য সম্পর্কে জানার মাধ্যমে কারিগরি শিক্ষার বিশেষ ধারণা লাভ করেন। তবে এজন্য আপনাকে এই সকল লক্ষ্য উদ্দেশ্য নিজের চেষ্টায় একবার পড়ে নিতে হবে এবং কারিগরি শিক্ষার লক্ষ্য উদ্দেশ্য জানতে হবে।
নিচে কারিগরি শিক্ষার লক্ষ্য সমূহ নিয়ে কিছু উল্লেখযোগ্য লক্ষ্যসমূহ উল্লেখ করা হলো:
- দেশে বেকার ছেলে ও মেয়েদের পরিমাণ কমিয়ে ফেলা।
- বেকার ছেলেমেয়েদের পরিমাণ কমিয়ে ফেলার সাথে সাথে শিল্প ব্যবস্থার উন্নতি করা।
- প্রযুক্তি নির্ভর দেশ হিসেবে নিজের দেশকে প্রস্তুত করা।
- দেশের মধ্যে শিল্প ব্যবস্থার উন্নতি খুব দ্রুত সাধন করা।
- বিমানবন্দর এবং আরো উল্লেখযোগ্য বড় বড় নির্মাণ কার্য খুব দ্রুত তৈরি করা।
- নিত্য নতুন শিল্প পদ্ধতি আবিষ্কার করা শিল্প ব্যবস্থার উন্নতির জন্য।
- কৃষি শিল্পে উন্নতি সাধনের জন্য নিত্যনতুন উপকারি প্রযুক্তি আবিষ্কার করা।
- আর্থিকভাবে দেশকে সচ্ছলতা প্রদান করা।
- অর্থনৈতিক উন্নতি সাধন করা শিল্প ব্যবস্থার মাধ্যমে।
- ব্যবসায় নির্ভরযোগ্যতা বৃদ্ধি করা এবং চাহিদার মত দেশের সকল অভাব পূরণ করা।
এগুলো হলো কারিগরি শিক্ষার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য এবং এই সকল ও লক্ষ্য উদ্দেশ্য পূরণের জন্য কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশে কারিগরি শিক্ষা অনেক বেশি প্রভাব ফেলেছে শিল্প কারখানা ও বিভিন্ন প্রকার উন্নয়নমূলক কাজের নির্দেশনা প্রদানের ক্ষেত্রে।
বাংলাদেশ সহ প্রত্যেকটি দেশে কারিগরি শিক্ষা অনেক বেশি প্রচলিত রয়েছে এবং সেই সাথে ইহার মাধ্যমে উন্নয়ন করার পরিকল্পনা বৃদ্ধি পাচ্ছে। কারিগরি শিক্ষার মাধ্যমে যে সকল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য পরিপূর্ণরূপে সংগঠিত হয় তা উপরে উল্লেখ করেছে, ধন্যবাদ।
আরও পড়ুন: এরিস্টটলের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নাম কি?