কঠিন পদার্থ কাকে বলে: যে সকল পদার্থের নির্দিষ্ট ভর, আকার ও আয়তন রয়েছে এবং অভ্যন্তরীণ কণাগুলোর আন্তঃকণা আকর্ষণ বল সবচেয়ে বেশি, তাদেরকে কঠিন পদার্থ বলে।
অন্যান্য পদার্থের তুলনায় কঠিন পদার্থের আন্তঃকণা আকর্ষণ শক্তি অনেক বেশি হয়ে থাকে এবং এরা অনেক বেশি শক্ত হয়। মন চাইলে নিজের ইচ্ছামতো আমরা কঠিন পদার্থকে বিকৃত করতে পারব না বরং এর জন্য আমাদেরকে পর্যাপ্ত শক্তি প্রয়োজন পদার্থের অনুপাতে।
অর্থাৎ কঠিন পদার্থ বলতে যে শক্ত বোঝাবে সবচেয়ে বেশি এমনটি নয় বরং কিছু কিছু কঠিন পদার্থ রয়েছে অনেক বেশি শক্ত ও উচ্চ গলনাংক। আবার কিছু কিছু কঠিন পদার্থ আছে যেগুলো উচ্চ গলনাঙ্ক না হলেও অনেক বেশি শক্ত হয়ে থাকে এবং বিকৃতি করতে অনেক শক্তির প্রয়োজন হয়।
যেহেতু কঠিন পদার্থের আকৃতি সহজে পরিবর্তন করতে পারি না, তাই বলা যায় কঠিন পদার্থ উচ্চ গলনাঙ্ক ও স্ফুটনাঙ্ক বিশিষ্ট হয়।
কঠিন পদার্থ বলতে আমরা সাধারণত লোহাকে বুঝে থাকি কিন্তু লোহা পেতে তো আরো অনেক কঠিন পদার্থ রয়েছে আমাদের পৃথিবীতে।
আর আপনি কিভাবে পৃথিবীতে উপস্থিত কঠিন পদার্থ গুলোকে সনাক্ত করতে পারবেন এর জন্য কিছু বৈশিষ্ট্য রয়েছে কঠিন পদার্থের। অবশ্যই আপনাকে আমি মনে করি কঠিন পদার্থের এই বৈশিষ্ট্য গুলো আয়ত্ত করে নিতে হবে পরবর্তীতে নিজের মেধার যোগ্যতা উপস্থাপন করার জন্য।
তবে বলে নেই, কঠিন পদার্থ বলতেই এদের আন্তঃকণা আকর্ষণ শক্তি অনেক বেশি থাকবে এই বিষয়টি সর্বদা সত্য এবং প্রমাণিত।
কঠিন পদার্থের বৈশিষ্ট্য
কঠিন পদার্থের কিছু বৈশিষ্ট্য রয়েছে এবং এই বৈশিষ্ট্য গুলোর উপর ভিত্তি করে আমরা কঠিন পদার্থকে যাচাই করতে পারি।
যাচাই করা বলতে কোনটি কঠিন পদার্থ বা কোনটি কঠিন পদার্থ নয় এবং সেই সাথে ধারণা লাভ করতে পারি পদার্থটি সম্পর্কে।
নিচে উল্লেখযোগ্য কিছু কঠিন পদার্থের বৈশিষ্ট্য গুলো উল্লেখ করা হলো:
- এদের নির্দিষ্ট ভর রয়েছে, যা গ্রাম এককে পরিমাপ করা সম্ভব।
- এদের নির্দিষ্ট আকার রয়েছে, যার পরিবর্তন ঘটানো বেশ জটিল।
- এদের নির্দিষ্ট আয়তন রয়েছে এবং এদের আকার অনুযায়ী দখল হয়।
- অন্যান্য পদার্থের তুলনায় এদের আন্তঃকণা আকর্ষণ বল অনেক বেশি শক্তিশালী হয়।
- এরা সব সময় কঠিন অবস্থায় থাকে এবং তরলের রূপান্তর করতে বেশ পরিশ্রম করতে হয়।
এগুলো হলো কঠিন পদার্থের কিছু বৈশিষ্ট্য, যে বৈশিষ্ট্য গুলো প্রত্যেকটি কঠিন পদার্থের মধ্যে নিয়ম মতো উপস্থিত থাকে।
কঠিন পদার্থের আরো অনেকগুলো বৈশিষ্ট্য থাকতে পারে তবে এই কয়েকটি বৈশিষ্ট্য জানলে কঠিন পদার্থ সম্পর্কে আপনার যথেষ্ট ধারণা বিদ্যমান হবে।
শেষ কথা:
কঠিন পদার্থ কাকে বলে এবং কঠিন পদার্থের বৈশিষ্ট্যের উপর এখানে যতগুলো তথ্য উপস্থাপিত হয়েছে এসব আপনার জন্য। আমরা সর্বদা চেষ্টা করেছে আপনাকে কঠিন পদার্থের সঠিক উত্তর প্রদান করার জন্য এবং সে জন্য আমরা অত্যাধিক জ্ঞান না দিয়ে সঠিক জ্ঞানটি দিয়েছে।
কঠিন পদার্থ বলতে আমরা যে একে তরল করতে পারবো না এমনটা না বরং নির্দিষ্ট গলনাংক আমরা এটিকে তরলে আনতে পারব।
তবে একটি কঠিন পদার্থকে গলাতে আমাদেরকে প্রচুর শক্তের প্রয়োজন হয় এবং এক্ষেত্রে শক্তি হিসেবে তাপ শক্তি প্রয়োগ করা হয়ে থাকে।
যেহেতু কঠিন পদার্থের আন্তঃকণা আকর্ষণ শক্তি অনেক বেশি হয়ে থাকে তাই এতে উপস্থিত কণা গুলো সহজে বিচ্ছিন্ন হতে চায় না। আর পদার্থের উপস্থিত কোনগুলো সহজে বিচ্ছিন্ন না হতে চাওয়ার এই ধর্ম হচ্ছে কঠিন পদার্থের বিশেষ একটি ধর্ম বা ধর্মের উদাহরণ।
আমরা আমাদের জীবনে বিভিন্ন ক্ষেত্রে লোহা তৈরি, বা অ্যালুমিনিয়াম বা অন্যান্য শক্ত আসবাবপত্র নিজের চাহিদা ব্যবহার করে থাকি।
এই সকল শক্ত উপাদানগুলো কঠিন পদার্থের অন্তর্ভুক্ত এবং সেই সাথে একটি বরফ যেটা পানি দিয়ে তৈরি সেটাও কঠিন পদার্থের অন্তর্ভুক্ত।
ইহার দ্বারা বলা যায়, আমরা যে শুধুমাত্র কঠিন কেউ অন্যান্য পদার্থের রূপান্তর করতে পারে এমনটি না বরং অন্যান্য পদার্থ কঠিন এর রূপান্তর করা যায়। তবে এর জন্য আমাদেরকে অনেক বেশি চাপের প্রয়োজন হবে যে চাপ প্রয়োগ করার মাধ্যমে আমরা অন্যান্য পদার্থ কঠিনে রূপান্তর করতে পারবো।
আরও পড়ুন: যৌগিক পদার্থ কাকে বলে?