ওয়াদা কাকে বলে? যে ওয়াদা পালন করে তাকে কি বলে?

ওয়াদা কাকে বলে: ওয়াদাকে আরবি ভাষায় বলা হয় আল-আহাদু, যার অর্থ অঙ্গীকার করা, প্রতিশ্রুতি দেওয়া, চুক্তি করা, কাউকে কোন কথা দেওয়া বা কোন কাজ করার জন্য প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হওয়া। ইসলামী পরিভাষায় কাউকে প্রতিশ্রুতি কিংবা অঙ্গীকার দিলে তা যথাযথভাবে রক্ষা করাকে ওয়াদা বলা হয়।

ওয়াদা নামটি হয়তোবা আমরা ছোটকাল থেকেই শুনে আসতে ছিলাম কিন্তু এই ওয়াদা শব্দের অর্থ ও সংজ্ঞা নিয়ে জানতাম না।

প্রতিশ্রুতি দেওয়া, কথা দিয়ে কথা রাখা, প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হওয়া, কাজ করতে দিতে চেয়ে কাজ করে দেওয়া এগুলো হচ্ছে ওয়াদার উদাহরণ।

বর্তমানে আমরা ওয়াদা শব্দটিকে ভিন্নভাবে ব্যবহার করে থাকে যদিও বা এই শব্দের অর্থ হচ্ছে অঙ্গীকারে বদ্ধ হওয়া।

ওয়াদা কাকে বলে
ওয়াদা কাকে বলে?

আমরা কথা বলার সময় বিভিন্ন সময় বলে থাকে, আচ্ছা তোকে ওয়াদা দিলাম আমি তোর সাথে উক্ত স্থানে গমন করব। আসলে ওয়াদা দেওয়ার এই নিয়মটি সর্বদা ভালো নয়, বরং আপনি অঙ্গীকারে সীমাবদ্ধ হলেন এবং যেতে চাইলেন এটাই যথেষ্ট এখানে ওয়াদা উল্লেখ করার প্রয়োজন হয় না।

আপনি যদি শুধুমাত্র বলেন, যে আমি আপনার সঙ্গে অবশ্যই আল্লাহ দিলে কালকে যাব এক্ষেত্রে এটি ওয়াদার অন্তর্ভুক্ত হবে।

এজন্য ওয়াদা শব্দটি অযথা ব্যবহার করার প্রয়োজন নেই আমাদেরকে, বরং তাকে বলা মানে হচ্ছে ওয়াদা দেওয়া যা পালন করতে হবে।

কথা দিয়ে কথা রাখার পদ্ধতি হচ্ছে ওয়াদা এবং এই ওয়াদা পালন করা অবশ্যই ইসলামের দ্বারা নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

যে ওয়াদা পালন করে তাকে কি বলে?

ওয়াদা পালন করে তাকে সবাই বিশ্বাস করে এবং সমাজের বুকে সে বিশ্বাসই বলে গণ্য হয়। বিশ্বাসই বলে গণ্য হওয়ার মাধ্যমে তার মধ্যেই ঈমানের জ্যোতি ফুটে উঠে। আর এই কথা অনুযায়ী যে ওয়াদা পালন করে থাকে ঈমানদার বলা যেতে পারে।

তবে এ বিষয়ে কোন সুস্পষ্ট হাদিস ও দলিল এখনো পাওয়া যায়নি।

যে ব্যক্তি কথা দিয়ে কথা পালন করবে এবং প্রতিশ্রুতি দেওয়া মাত্র সে তার দেওয়া প্রতিশ্রুতি পালনের জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়বে। ব্যক্তির এই রকম প্রতিশ্রুতি পালনের বা অঙ্গীকার পালনের আগ্রহ, ইচ্ছা এবং যথাযথভাবে পালন করার পদ্ধতিকে ওয়াদা বলা হয়।

যেসকল ব্যক্তিগণ ওয়াদা পালন করে থাকে তিনাকে আমরা বিশ্বাসে বলে থাকি এর মূল কারণ তিনি কথা দিয়ে কথা রাখেন।

আর এই সকল বিষয়ের উপর ভিত্তি করে বিশ্বাস হচ্ছে ঈমানের মূল এবং আমরা সেজন্য ওয়াদা পালনকারীকে ঈমানদার বলতে পারি।

তবে আমি আবার বলে নিচ্ছি, এই বিষয়ের উপর কোন সুস্পষ্ট হাদিস নেই যে ওয়াদা পালনকারীকে কি বলা হয়। আর যদিওবা থাকে তাহলে আমার চোখে হয়তোবা পড়েনি এবং এজন্যই আমি আপনাকে বলব আপনি ওয়াদা পালন করুন বিশ্বাসী হওয়ার জন্য।

অবশ্যই কথা দিয়ে কথা রাখা মানুষের বৈশিষ্ট্যের মধ্যে একটি শ্রেষ্ঠ বৈশিষ্ট্য হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে বিশ্বাসের দিকে।

ইহার দ্বারা বিশ্বাস অর্জন করতে পারি এবং এটি প্রশংসনীয় কাজ হবে যদি আমরা আল্লাহ তাআলার ভয়ে কথা দিয়ে কথা রাখি।

উপসংহার:

ওয়াদা কাকে বলে এবং ওয়াদা পালন কারীকে কি বলে এ বিষয়ের উত্তর নিয়ে আজকের এই পোস্টটিতে উত্তর দেওয়া হয়েছে।

আর অবশ্যই ওয়াদা কাকে বলে এটি জানার মাধ্যমে আশা করা যায় আপনারা ওয়াদা পালনে বিশ্বাসী হয়ে উঠেছেন।

যেহেতু ওয়াদা পালন করা একটি মহৎ গুণ এবং আমাদের চারিত্রিক বিকাশ ঘটায় তাই ওয়াদা পালন করা অবশ্যই শ্রেষ্ঠ। ওয়াদা পালন করা অবশ্যই শ্রেষ্ঠ হওয়ার পেছনে মূল কারণ হচ্ছে ইহার দ্বারা বিশ্বাস অর্জন করা যায়, যা আমাদের চরিত্র প্রশংসনীয় করে।

বিশ্বাস বিষয়টি যদিওবা অর্জন করা কঠিন কিন্তু যখন আমরা এ বিশ্বাস অর্জন করে তখন অবশ্যই আমরা শ্রেষ্ঠ হয়।

শ্রেষ্ঠ হওয়া শুধু আল্লাহর নিকট এমনটি না বরং আমরা সমাজের বুকেও আল্লাহ তাআলার অনুমতিতে শ্রেষ্ঠ হয়ে যাই ওয়াদা পালন করে।

কথা দিয়ে কথা রাখা অর্থাৎ ওয়াদা পালন করা অবশ্য আমাদের জন্য কল্যাণকরণ হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। আমরা যেহেতু ওয়াদা পালনকারীকে ঈমানদারের অন্তর্ভুক্ত করতে পারে সে তো অবশ্যই একজন ঈমানদার এর গুনাগুন কত ভাল হয় তা বুঝতে পেরেছি।

আল্লাহ তায়ালার বিশ্বাস অর্জনের জন্য এবং সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য অবশ্যই ওয়াদা পালন করতে হবে আমাদের সকলকে।

তাহলে কথা দিয়ে কথা রাখা, প্রতিশ্রুতি পালন করা, অঙ্গীকারের সীমাবদ্ধ হওয়া এবং বিশ্বাস অর্জন করা হচ্ছে ওয়াদা পালন করা।

আরও পড়ুন: তাকওয়া কাকে বলে?

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top