ওয়াজিব কাকে বলে? ওয়াজিবের সংজ্ঞা ও বিধি বিধান

ওয়াজিব কাকে বলে: ফরজের কাছাকাছি অবশ্য পালনীয় ইবাদত সমূহকে ওয়াজিব বলে।

আবার, ফরজের কাছাকাছি, অকাট্য দলিল দ্বারা প্রমাণিত না হলেও যে সকল ইবাদত মানবজাতির জন্য অবশ্য পালনীয় কর্তব্য সেগুলোকে ওয়াজিব বলে। ফরজের মতো ওয়াজিবের মূল্য দিতে হবে কেননা, এটি ফরজের সমতুল্য তবে ফরজের পরের ইবাদত।

ফরজ এবং ওয়াজিবের মধ্যে সবচেয়ে বড় পার্থক্য হলো: ফরজ ছেড়ে দিলে কাফির হয়ে যায়, তবে ওয়াজিব ছেড়ে দিলে কাফির হয় না তবে জাহান্নামে যাওয়ার মতো অপরাধী হয়।

ওয়াজিব কাকে বলে
ওয়াজিব কাকে বলে?

এখানে উল্লেখ্য যে ফরজ ইবাদত পালন না করলে যে রোগ পরিমাণ গুনাহ হবে ঠিক অনুরূপভাবে ওয়াজিব ছেড়ে দিলে তত পরিমাণ গুনাহ হতে পারে। ফরজ ইবাদতের মত ওয়াজিবের ক্ষেত্রেও কঠোর নিয়ম রয়েছে এবং ওয়াজিব বাদ দেওয়ার মতো কোনো সুযোগ আমাদের নেই।

যেহেতু ওয়াজিব হচ্ছে ফরজের সমতুল্য ইবাদত কিন্তু ফরজ নয়, তবুও এই ওয়াজিব ত্যাগ করার ফলে ফরজের মত গুনাহ হবে।

এখানে উল্লেখ্য হয়েছে যে অবশ্য পালনীয় এবং এই কথার অর্থ হলো ওয়াজিবকে আমাদের ফরজের মতোই অবশ্যই পালন করতে হবে।

আর অবশ্যই আপনাকে আমাকে ওয়াজিব পালন করতে হবে এবং ইসলামে অনেক বেশি ওয়াজিব রয়েছে এমনটি না বরং কয়েকটি ওয়াজিব ইবাদত রয়েছে। আর এ কয়েকটি ইবাদত করা তেমন কোন কষ্টের কাজ নয় বরং যারা আল্লাহর জন্য ইবাদত করে তারা ইবাদত করতে শান্তি পায়। 

ওয়াজিবের কাজের উদাহরণ

আমরা তো ওয়াজিব সম্পর্কে জানলাম তবে ওয়াজিব ইবাদত কোনগুলো সে সম্পর্কে জানিনা এবং ফলস্বরূপ আমাদের মাঝে অনেকের ওয়াজিব বাদ হয়ে যায়। যেহেতু এটি অবশ্য পালন একটি ইবাদত তাই অবশ্যই আপনাকে আমাকে এই ইবাদতগুলো সম্পর্কে জানতে হবে ওয়াজিবের।

নিচে উল্লেখযোগ্য কিছু ওয়াজিবের কাজের উদাহরণ বা ওয়াজিব ইবাদত সমূহ বিশেষভাবে উপস্থাপন করা হলো:

  • প্রতি বছর দুই ঈদের সালাত সুন্নত তরিকা মেনে আদায় করা।
  • প্রতি বছর সঠিক পরিমাণে সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে ফেতরা প্রদান করা।
  • এশার নামাজের শেষে তিন রাকাত বেতের নামাজ আদায় করা।
  • সালাত আদায় করার সময় প্রথমে সূরা ফাতিহা তেলাওয়াত করা।
  • সালাতের সময় রুকু শেষে সোজা হয় দাঁড়িয়ে থাকা এক তসবি পরিমাণ সময়।
  • সালাতের সময় দুই সিজদার মাঝখানে সোজা হয় এক তসবি পরিমাণ সময় বসা।

এগুলো হলো ওয়াজিবের কিছু কাজের উদাহরণ এবং আপনাকে আমাকে অবশ্যই এগুলো পালন করতে হবে কেননা এগুলো অবশ্য পালনীয়।

আর ইবাদত অর্থাৎ ওয়াজিব ইবাদত যেহেতু অবশ্য পালনীয় সেহেতু আপনাকে আমাকে এটিকে ফরজের মতো গুরুত্ব দিতে হবে।

এখান থেকে এটি ধারণা পাওয়া যায় যে ফরজ ইবাদতের মাঝে বা নামাজের মাঝে কিছু ওয়াজিব রয়েছে যা পালন করতে হয়। তবে অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় যে অনেকের ওয়াজিব মাঝে মাঝে বাদ হয়ে যায় বা কোনো কারণবশত ভুল হয়ে যায়।

যদি সালাতের মধ্যে কোন ওয়াজিব এর ব্যতিক্রম হয় কিংবা বাদ পড়ে যায় তাহলে সাহু সিজদা দেওয়ার মাধ্যমে শুদ্ধ করতে হয়।

ওয়াজিবের বিধি বিধান

আমরা জানি যে, ইসলামের প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে কিছু না কিছু বিধান রয়েছে যেগুলো দ্বারা জীবন সুনির্দিষ্ট ভাবে সহজে প্রচারণা করা যায়। আর ঠিক অনুরূপভাবে ওয়াজিব ইবাদতের ক্ষেত্রে কিছু বিধি-বিধান রয়েছে যেগুলো পালন করে আপনাকে আমাকে ওয়াজিব সম্পন্ন করতে হয়।

ওয়াজিব পালন করার ক্ষেত্রে যে সকল বিধি-বিধান আপনাকে জানতে হবে বা অবলম্বন করতে হবে চলুন সেগুলো জেনে নেই।

ওয়াজিব ইবাদতের ক্ষেত্রে কিছু বিধি-বিধান রয়েছে, সেগুলো হলো:

  • ফরজের মতো ওয়াজিব পালন করাও অবশ্য কর্তব্য।
  • ওয়াজিব না পালন করলে জাহান্নামে যাওয়ার মত বড় রকমের গুনাহগার হতে হবে।
  • ওয়াজিব ও স্বীকার করলে কাফের হয় না তবে বড় রকমের শাস্তি প্রদান করা হয়।
  • ওয়াজিবের কোন অংশ ভুলক্রমে বাদ কিংবা ব্যতিক্রম হলে সাহু সিজদার মাধ্যমে সংশোধন করা সম্ভব।
  • ওয়াজিব ছেড়ে দেওয়ার মাধ্যমে বান্দা ফাসেক হয়ে যায়।
  • ওয়াজিবের মাধ্যমে ফরজের পরিপূর্ণতা লাভ হয়।

এগুলো হলো ওয়াজিবের কিছু বিধি-বিধান এবং অবশ্যই ওয়াজিব পালনের ক্ষেত্রে এই সকল বিধি-বিধান লক্ষ্য রাখতে হবে।

তবে আপনি যদি ওয়াজিবের বিধিবিধানগুলো সঠিকভাবে পালন করে ইবাদত করতে পারেন তাহলে অবশ্যই এটি আল্লাহর নিকট অধিক প্রিয় হতে পারে। আর আপনার ইবাদতে যদি আল্লাহর নিকট প্রিয় হয় তাহলে অবশ্যই আপনি ইহকাল এবং পরকাল উভয় স্থানে অনেক বেশি কল্যাণ লাভ করবেন।

আরও পড়ুন: ফরজ অর্থ কি?

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top